আসলেন, গুলি করলেন এ ধরনের কাহিনি সিনেমায় দেখতাম
সাংসদের গুলিতে রক্তাক্ত শিশু:
সাংসদ মন্জুরুলের জামিনের আবেদন নাকচ, আত্মসমর্পণের নির্দেশ হাইকোর্টের
শিশু শাহাদাত হোসেনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায়
করা দুটি মামলায় গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সাংসদ মন্জুরুল ইসলামের
আগাম জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৮ অক্টোবরের মধ্যে তাঁকে
বিচারিক আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ২
অক্টোবর সাংসদ মন্জুরুলের ছোড়া গুলিতে সুন্দরগঞ্জ গোপালচরণ সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শিশু শাহাদাত আহত হয়। দুই পায়ে
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সে এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল
হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও মামলার
এজাহার পর্যালোচনা করে আসামির আগাম জামিনের কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি।
তাই আবেদনটি খারিজ করা হলো। আসামিকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে বিচারিক আদালতে
আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হলো। তবে আত্মসমর্পণের নির্দেশনা-সংক্রান্ত
হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, সাংসদ মন্জুরুলের আগাম জামিন
আবেদন খারিজ হয়ে গেছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তিনি
বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা স্থগিতের আবেদন করবেন, যাতে পুলিশ
তাঁকে তৎক্ষণাৎ গ্রেপ্তার করতে পারে। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আপিল বিভাগের
সিদ্ধান্ত আছে জামিন না হলে আসামিকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর।
সাংসদ মন্জুরুল সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী তিনি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম গতকাল সকালে সাংসদ মন্জুরুলের আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু করেন। এ সময় আদালত সাংসদকে বেলা একটার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। এ সময় সাংসদকে হাজির করার ব্যাপারে মোকছেদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। এরপর একপর্যায়ে বেলা একটার কিছু আগে সাংসদকে নিয়ে তিনি আদালতে হাজির হন। শুনানির পুরো সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন সাংসদ।
সাংসদ মন্জুরুল সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী তিনি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম গতকাল সকালে সাংসদ মন্জুরুলের আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু করেন। এ সময় আদালত সাংসদকে বেলা একটার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। এ সময় সাংসদকে হাজির করার ব্যাপারে মোকছেদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। এরপর একপর্যায়ে বেলা একটার কিছু আগে সাংসদকে নিয়ে তিনি আদালতে হাজির হন। শুনানির পুরো সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন সাংসদ।
হাইকোর্টে গতকাল আগাম জামিন আবেদন নাকচ হওয়ার পর আদালত থেকে বেরিয়ে আসছেন সাংসদ মন্জুরুল ইসলাম -প্রথম আলো |
জামিনের
শুনানিতে মোকছেদুল ইসলাম বলেন, ‘আসামি একজন জনপ্রতিনিধি। শিশু গুলির
ঘটনায় মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। মিডিয়া ঘটনা নিয়ে সেনসেশন তৈরি করেছে। সাংসদের
বিরুদ্ধে এলাকায় প্রতিদিন মানববন্ধন হচ্ছে।’
এ সময় আদালত বলেন, ‘সুযোগ তো আপনার আসামি করে দিয়েছেন। এলাকায় প্রতিদিন মানববন্ধন হচ্ছে, তাতে সমস্যা কী? আদালতের কাজ আদালত করবেন। আসামি কেন বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি? পুলিশ কি আসামিকে হ্যারাজ (হয়রানি) করতে গেছে?’ আদালতে সাংসদ মন্জুরুলের জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি আদালতকে বলেন, ছোট্ট একটা শিশুকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মতো জঘন্য অপরাধের অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। এটা কি ভাবা যায়? একজন সাংসদ যদি এ ধরনের কাজ করেন? অ্যাটর্নি জেনারেল আসামি সাংসদ লিটনের আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করেন।
এ সময় আদালত বলেন, ‘সুযোগ তো আপনার আসামি করে দিয়েছেন। এলাকায় প্রতিদিন মানববন্ধন হচ্ছে, তাতে সমস্যা কী? আদালতের কাজ আদালত করবেন। আসামি কেন বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি? পুলিশ কি আসামিকে হ্যারাজ (হয়রানি) করতে গেছে?’ আদালতে সাংসদ মন্জুরুলের জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি আদালতকে বলেন, ছোট্ট একটা শিশুকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মতো জঘন্য অপরাধের অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। এটা কি ভাবা যায়? একজন সাংসদ যদি এ ধরনের কাজ করেন? অ্যাটর্নি জেনারেল আসামি সাংসদ লিটনের আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করেন।
সাংসদ মন্জুরুল ইসলামের ছোড়া গুলিতে আহত শিশু শাহাদাত, তার বাবা সাজু মিয়া ও মা সেলিনা বেগমের মুখে স্বস্তির হাসি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গতকাল রাত আটটায় তোলা ছবি -প্রথম আলো |
পরে
মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণমাধ্যমে খবর হওয়া মানে গণতন্ত্রের বিকাশ
হওয়া। আমাদের মিডিয়া এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেক খবর দিচ্ছে। গণতন্ত্রের সহায়ক
হিসেবে এটা দিচ্ছে।’
শুনানির একপর্যায়ে সাংসদ লিটনের আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে চাই। কিন্তু এলাকার অবস্থা বিবেচনা করে আত্মসমর্পণ করা হয়নি। তাই পালিয়ে ছিলাম। পালিয়ে থাকা কোনো অপরাধ না।’ অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ঘটনার পর সাংসদ পালিয়ে পালিয়ে থাকেন। আদালত তখন বলেন, ‘ল এনফোর্সিং এজেন্সি (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) কী করেছে?’ সাংসদ মন্জুরুলের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘শিশু গুলির ঘটনাকে হালকা করে দেখলে হবে না। সকাল বেলা একজন বেরিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছে পিস্তল। আসলেন, গুলি করলেন। আগে এ ধরনের কাহিনি সিনেমায় দেখতাম।’ আদালত আরও বলেন, জনপ্রতিনিধি হলে পক্ষে-বিপক্ষে লোক থাকবে। আপনাকে তো আইন অনুযায়ী চলতে হবে।
জামিন আবেদন খারিজের পর আইনজীবীর সঙ্গে আদালত থেকে বেরিয়ে আসেন সাংসদ মন্জুরুল। আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘আমার এলাকা জামায়াত-অধ্যুষিত। আমার দুটো অস্ত্র নিয়ে নিয়েছে। যে কারণে আমি সেফে (নিরাপদ) ছিলাম। এখন আপনারা আমাকে সব সময় পাবেন। মিডিয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো।’ এই ঘটনায় পর ৩ অক্টোবর তিনি তাঁর দুটি অস্ত্র (পিস্তল ও শর্ট গান) সুন্দরগঞ্জ থানায় জমা দেন।
সাংসদের পক্ষে সমাবেশ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, নাগরিক ঐক্যের নামে গতকাল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরে সাংসদ মন্জুরুল ইসলামের পক্ষে মিছিল-সমাবেশ করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা তিন সহস্রাধিক নেতা-কর্মী এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আহম্মেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা সাংসদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং বলেন, সাংসদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।
সমাবেশে উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, সাংসদ মন্জুরুল ইসলামের দ্বারা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে সাংদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।
শুনানির একপর্যায়ে সাংসদ লিটনের আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে চাই। কিন্তু এলাকার অবস্থা বিবেচনা করে আত্মসমর্পণ করা হয়নি। তাই পালিয়ে ছিলাম। পালিয়ে থাকা কোনো অপরাধ না।’ অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ঘটনার পর সাংসদ পালিয়ে পালিয়ে থাকেন। আদালত তখন বলেন, ‘ল এনফোর্সিং এজেন্সি (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) কী করেছে?’ সাংসদ মন্জুরুলের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘শিশু গুলির ঘটনাকে হালকা করে দেখলে হবে না। সকাল বেলা একজন বেরিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছে পিস্তল। আসলেন, গুলি করলেন। আগে এ ধরনের কাহিনি সিনেমায় দেখতাম।’ আদালত আরও বলেন, জনপ্রতিনিধি হলে পক্ষে-বিপক্ষে লোক থাকবে। আপনাকে তো আইন অনুযায়ী চলতে হবে।
জামিন আবেদন খারিজের পর আইনজীবীর সঙ্গে আদালত থেকে বেরিয়ে আসেন সাংসদ মন্জুরুল। আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘আমার এলাকা জামায়াত-অধ্যুষিত। আমার দুটো অস্ত্র নিয়ে নিয়েছে। যে কারণে আমি সেফে (নিরাপদ) ছিলাম। এখন আপনারা আমাকে সব সময় পাবেন। মিডিয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো।’ এই ঘটনায় পর ৩ অক্টোবর তিনি তাঁর দুটি অস্ত্র (পিস্তল ও শর্ট গান) সুন্দরগঞ্জ থানায় জমা দেন।
সাংসদের পক্ষে সমাবেশ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, নাগরিক ঐক্যের নামে গতকাল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরে সাংসদ মন্জুরুল ইসলামের পক্ষে মিছিল-সমাবেশ করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা তিন সহস্রাধিক নেতা-কর্মী এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আহম্মেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা সাংসদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং বলেন, সাংসদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।
সমাবেশে উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, সাংসদ মন্জুরুল ইসলামের দ্বারা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে সাংদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।
No comments