‘গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ by সিরাজুস সালেকিন
স্থানীয়
সরকারের সব নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
ব্যক্ত করেছেন বিশেজ্ঞরা। তারা মনে করছেন, এ প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হলে
সহিংসতা, কালো টাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব বাড়তে পারে। দলীয় প্রতীক ব্যবহার
করায় একই প্রতীক বারবার নির্বাচিত হওয়ার প্রবণতা বাড়বে। ফলে গণতন্ত্র
ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রশাসক নিয়োগের ফলে উন্নয়ন
ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করেছেন তারা। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন
এ প্রসঙ্গে বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে নতুন কিছু হবে না।
এটা অনানুষ্ঠানিক ছিল, এখন আনুষ্ঠানিক হয়েছে। আমাদের এখানে প্রশ্ন হলো,
এভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা। আগেও হয়নি। এখানে দলীয়ভাবে নির্বাচন
সুষ্ঠু না হলে মারামারি হবে। দলের ভেতরে কোন্দল হবে। মনোনয়ন-বাণিজ্য হবে।
এগুলো ঠেকিয়ে যদি নির্বাচন করতে পারে তবে ভাল হবে। দলীয়ভাবে তবে নির্বাচন
হতে অসুবিধা নেই। ছোট দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছোট
দল, বড় দল সবার অংশগ্রহণ করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমানে যেসব দল
নিবন্ধিত শুধু তারাই যেন নির্বাচন না করে। ছোট দলগুলোর নাম নিবন্ধন করে
তাদের গঠনতন্ত্র ও সাংগঠনিক সংবিধান তৈরি করাতে হবে। আর যারা আরপিও অনুযায়ী
আছেন তারা তো থাকবেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য আলাদা একটা ক্যাটাগরি
না করলে ছোট দলগুলো অংশ নিতে পারবে না। ইলেকশন কমিশন যদি এগুলো আইন করতে
পারে তবে ভাল হবে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক
নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তো গণতান্ত্রিক বিষয় নয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার
আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। এখন মন্ত্রিসভা, সংসদ এই আইন নিয়ে কী বলে
সেটা দেখার বিষয়। তারা আদৌ নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ নিয়েছে কিনা- এটাও
দেখার বিষয়।
দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে তা সুফল বয়ে আনবে না বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। এ প্রসঙ্গে বলেন, এভাবে নির্বাচন করলে পরিস্থিতির ভয়াবহ হবে। একই প্রতীক বারবার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হবে। অতীতেও এটা আমরা দেখেছি জাতীয় নির্বাচনে। এর ফলে মনোনয়ন-বাণিজ্য, টাকার খেলা, পেশিশক্তির ব্যবহার বাড়বে। এতে গণতন্ত্র দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ড. মজুমদার আরও বলেন, দলীয়ভাবে নির্বাচন করার যুক্তি হিসেবে যুক্তি হিসেবে দলের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা বলা হলেও তা হবে না। আমাদের দেশে এমনিতেই দলীয় কোন শৃঙ্খলা নেই। আমরা দেখেছি, দলের কেউ অপকর্ম করলে তার শাস্তি হয় না। কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। দলীয় প্রধানদের বিষয়ে কেউ কোন কথা বলতে পারে না। প্রতিবাদ করতে পারে না। ধর্ম নিয়ে বা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বললে কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে এটা হবে রাজনৈতিক নির্বাচন। সাধারণত নির্দলীয়ভাবে হলে অরাজনৈতিক। কিন্তু এটা সঠিক নয়। আমাদের দেশে সব ক্ষেত্রে নির্বাচন রাজনৈতিক হয়। মেয়াদ শেষে প্রশাসক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেয়াদ শেষ হলে ক্ষমতা প্রশাসকের হাতে যাবে, প্রশাসকের অভিজ্ঞতাও আমরা দেখেছি। আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি। কিন্তু ক্ষমতা প্রশাসকের হাতে দিতে চাই। জাতীয়ভাবে তো সরকারের মেয়াদ শেষ হলে ক্ষমতা প্রশাসকের হাতে যায় না। এক দেশে দুই আইন, এটা চলতে পারে না।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্থানীয় সরকারের স্পিরিটের সঙ্গে অবশ্যই সংগতিপূর্ণ। সংবিধান বা আইনে কোন বিধান নাই যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হতে পারবে না। কিন্তু পুরো বিষয়টি আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও সরকারের মনোভাবের ওপর নির্ভর করছে যে, এখান থেকে জনগণ কতটুকু সুফল পাবে। তিনি আরও বলেন, এ প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হলে ফলাফলে বড় কোন পার্থক্য হবে না। দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন কারণে আমাদের নির্বাচনব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে না, সহিংসতা হয়। দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে এসব সংস্কৃতিতে পরিবর্তন হবে না। রাজনীতিতে গুণগত কোন পরিবর্তন আসবে না। এজন্য রাজনীতিতে পরিশুদ্ধি দরকার। নির্বাচনে সরকার নিরপেক্ষ থাকবে কিনা। আইনের শাসন থাকবে কিনা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে কিনা। এবার প্রথমবার হচ্ছে, তাই এসব দেখার বিষয়। এ প্রক্রিয়ার ইতিবাচক দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, দুই দল তাদের অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের সুযোগ পাবে। আমাদের স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক দলগুলোতে ঐক্য নেই। অনেক এলাকায় দলগুলোর কমিটি নেই। তাই রাজনৈতিক দলগুলো সুযোগ পাবে তাদের দল গোছানোর। মেয়াদ শেষে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেয়াদ শেষ হলে প্রাকৃতিক কারণ ছাড়া নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কোন কারণ থাকতে পারে না। মেয়াদ শেষ হলে প্রশাসকরা ক্ষমতা নিয়ে তা ছাড়তে চান না। বর্তমানে জেলা পরিষদগুলো প্রশাসকদের হাতে রয়েছে। অন্যদিকে আমরা দেখেছি, ঢাকার দুই সিটি প্রশাসকরা ১৮০ দিনের কথা বলে দীর্ঘদিন চালিয়েছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) নির্বাহী ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বিষয়টা বেশ আলোচনা হয়েছে। এটা অরাজনৈতিক হওয়ার পেছনে বেশ কিছু যুক্তি ছিল। স্থানীয় উন্নয়নকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখা এর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু এ প্রত্যাশা রক্ষা হয়নি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন সব সময় দলীয়ভাবে হয়েছে। একটা অসত্যকে সত্য বলতে বলতে সেটা সত্য হয়েছে। এ রকম হলে দৃষ্টান্ত ভাল হবে না। অন্য আইনের ক্ষেত্রে যেন এমনটা না হয়। ভবিষ্যতে এ রকম আইন না মানার অভ্যেস থেকে আইন পরিবর্তনের ধারা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এ প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের ইতিবাচক দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে নির্দলীয় ও দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়। দুই রকম অভিজ্ঞতাই রয়েছে। দুটোরই ভালমন্দ দিক রয়েছে। এটাকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে হবে। মূল সুফল হচ্ছে এখান থেকে জাতীয়ভাবে সরকার পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের প্রশিক্ষণ হতে পারে। আমাদের দেশে একসময় ছাত্র রাজনীতি ছিল প্রশিক্ষণের মাধ্যম। কিন্তু এখন ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা এখান থেকে জাতীয় রাজনীতিতে উঠে আসতে পারবেন।
মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যেন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় সে বিষয়ে তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসকের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এমনভাবে পরিকল্পনা করা যেন মেয়াদ শেষের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
বিরোধী জোটকে দূরে রাখতেই দলীয় প্রতীকে নির্বাচন: বিএনপি
বিরোধী জোটকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই ৫ই জানুয়ারির মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দলীয় প্রতীকে করতে সরকার মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিরোধী জোটের জাতীয় নির্বাচনের দাবি পাশ কাটাতে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনে সরকারের মহাদূরভিসন্ধি কাজ করছে। সরকারকে এই আইনটি পাস করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে দলটি। একইসঙ্গে বিরোধী জোটের তরফে দেশে অবরোধ কর্মসূচি বহাল নেই বলে জানিয়েছে দলটি। গতকাল বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামীতে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। কারণ ক’দিন আগে সরকারের এমন ভাবনার প্রতিবাদে দাবি জানিয়েছিলাম- বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় যেন সংশ্লিষ্ট সকল মহলের মতামত যাচাই করা হয়। কিন্তু সরকার আমাদের সে দাবিকে পাশ কাটিয়ে একগুঁয়েমি মনোভাব দেখিয়েছে। এ সংক্রান্ত পাঁচটি আইনের সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করে তড়িঘড়ি করে অনুমোদন করেছে। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করা প্রসঙ্গে এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বর্তমান অর্ধেক নারী জনপ্রতিনিধি দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনের বিরোধিতা করেছেন। আমরাও মনে করি, এর ফলে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ হ্রাস পাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্র-সমাজ ব্যবস্থা-এতটাই রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত এবং নির্বাচন ব্যবস্থা এতটা ত্রুটিপূর্ণ যেখানে দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র-সমাজ আরও বেশি বিভাজিত হয়ে পড়বে। এছাড়া, বর্তমান নতজানু ও সরকারের আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে ভোটারদের অবাধে ভোট দেয়ার অধিকার রক্ষা করতে সমর্থ নন। দলবাজ প্রশাসন সরকারের আজ্ঞাবাহী হিসেবে সরকারের নীল-নকশার বাইরে স্বাধীনভাবে কাজ করতে অক্ষম। এ পরিস্থিতিতে দলীয় প্রতীকে ভবিষ্যতে যারা নির্বাচিত হবেন- তাদের কাছ থেকে ভিন্ন মতাবলম্বীরা সহযোগিতা পাবেন না এবং বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হবেন ব্যাপকভাবে। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সম্পত্তির ওয়ারিশ নির্ধারণ, নাগরিক সনদ ও চারিত্রিক প্রত্যয়নপত্রসহ দৈনন্দিন সাধারণ নাগরিক সুবিধা প্রাপ্তিতে নাগরিকদের দলীয় পরিচয়ের কারণে ভোগান্তিরও এতে আশঙ্কা থাকবে। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর অনেকেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকেই করে থাকেন। কিন্তু সেসব দেশে আমাদের দেশের মতো রাজনীতির অপচর্চা হয় না। সেখানে নিরপেক্ষ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেন। বাংলাদেশে এই চিত্র বিপরীত। সরকারের সমালোচনা রিপন বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের পর সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্রুত একটি জাতীয় নির্বাচনের জোরালো দাবি সব মহল। কিন্তু ওই দাবিকে পাশ কাটিয়ে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজনের পেছনে সরকারের এক মহাদুরভিসন্ধি কাজ করছে। সরকারের মেকি কৌশল জাতিকে আরও বিভাজিত করবে। তিনি বলেন, সরকারের দমন-নিপীড়নের কৌশলে বিরোধী জোটের হাজার হাজার কর্মী ঘরছাড়া, কারারুদ্ধ এবং সরকার বিরোধী রাজনীতিকে ন্যূনতম ডেমোক্রেটিক স্পেস দেয় না। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিরোধী দলের পক্ষে সমান সুযোগ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া দুরূহ হয়ে উঠবে। সরকার সেই সুযোগটিকেই কাজে লাগিয়ে রাজনীতির এক অসমান্তরাল ময়দানে ফাঁকা মাঠে গোল করতে হীন প্রচেষ্টায় এগুচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সরকার প্রমাণ করতে চেষ্টা করবে- জাতীয় নির্বাচন বিরোধী দলগুলো বর্জন করলেও সকল পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনে তাদের প্রতি তথাকথিত সমর্থন রয়েছে। এটা একটি অসৎ পরিকল্পনা ছাড়া অন্য কোন কিছুই নয়। এ সংক্রান্ত নির্বাচনী আইন অধ্যাদেশ আকারে জারি থেকে সরকারকে বিরত থাকার আহ্বান জানান রিপন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত যে পাঁচটি আইন অনুমোদন করা হয়েছে- তাও সাংঘর্ষিক। কেননা জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বা শপথ নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত সংসদ সদস্যরা পদে বহাল থাকতে পারলেও মেয়াদোত্তীর্ণ হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। এতে স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকার ধারাবাহিকতাও ক্ষুণ্ন হবে। এই অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পর, যেসব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন উপযোগী হয়নি সেসব প্রতিষ্ঠানে পূর্বে নির্বাচিত মেয়র, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও মেম্বারগণের পদে থাকার বৈধতারও প্রশ্ন উঠবে। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিত প্রস্তাব মোটেই বাস্তবসম্মত নয়, সাংঘর্ষিক ও বাংলাদেশের জনগণের সামাজিক সম্প্রীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, আমরা আইনটি পাস করা থেকে সরকারকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছি। ওই সময় পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করবো। তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। জানুয়ারিতে ঘোষিত বিরোধী জোটের অবরোধ প্রত্যাহার না করায় যুক্তরাজ্যের শঙ্কার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএপির মুখপাত্র বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি রয়ে গেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগেও বলেছেন- বিরোধী জোটের তরফে কোন কর্মসূচি নেই। আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। আমিও একই কথা বলছি- বিএনপির তরফে এখন দেশে হরতাল-অবরোধ-ধর্মঘট এ জাতীয় কোন কর্মসূচি নেই। সংবাদ সম্মেলনে যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে তা সুফল বয়ে আনবে না বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। এ প্রসঙ্গে বলেন, এভাবে নির্বাচন করলে পরিস্থিতির ভয়াবহ হবে। একই প্রতীক বারবার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হবে। অতীতেও এটা আমরা দেখেছি জাতীয় নির্বাচনে। এর ফলে মনোনয়ন-বাণিজ্য, টাকার খেলা, পেশিশক্তির ব্যবহার বাড়বে। এতে গণতন্ত্র দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ড. মজুমদার আরও বলেন, দলীয়ভাবে নির্বাচন করার যুক্তি হিসেবে যুক্তি হিসেবে দলের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা বলা হলেও তা হবে না। আমাদের দেশে এমনিতেই দলীয় কোন শৃঙ্খলা নেই। আমরা দেখেছি, দলের কেউ অপকর্ম করলে তার শাস্তি হয় না। কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। দলীয় প্রধানদের বিষয়ে কেউ কোন কথা বলতে পারে না। প্রতিবাদ করতে পারে না। ধর্ম নিয়ে বা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বললে কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে এটা হবে রাজনৈতিক নির্বাচন। সাধারণত নির্দলীয়ভাবে হলে অরাজনৈতিক। কিন্তু এটা সঠিক নয়। আমাদের দেশে সব ক্ষেত্রে নির্বাচন রাজনৈতিক হয়। মেয়াদ শেষে প্রশাসক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেয়াদ শেষ হলে ক্ষমতা প্রশাসকের হাতে যাবে, প্রশাসকের অভিজ্ঞতাও আমরা দেখেছি। আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি। কিন্তু ক্ষমতা প্রশাসকের হাতে দিতে চাই। জাতীয়ভাবে তো সরকারের মেয়াদ শেষ হলে ক্ষমতা প্রশাসকের হাতে যায় না। এক দেশে দুই আইন, এটা চলতে পারে না।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্থানীয় সরকারের স্পিরিটের সঙ্গে অবশ্যই সংগতিপূর্ণ। সংবিধান বা আইনে কোন বিধান নাই যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হতে পারবে না। কিন্তু পুরো বিষয়টি আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও সরকারের মনোভাবের ওপর নির্ভর করছে যে, এখান থেকে জনগণ কতটুকু সুফল পাবে। তিনি আরও বলেন, এ প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হলে ফলাফলে বড় কোন পার্থক্য হবে না। দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন কারণে আমাদের নির্বাচনব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে না, সহিংসতা হয়। দলীয়ভাবে নির্বাচন হলে এসব সংস্কৃতিতে পরিবর্তন হবে না। রাজনীতিতে গুণগত কোন পরিবর্তন আসবে না। এজন্য রাজনীতিতে পরিশুদ্ধি দরকার। নির্বাচনে সরকার নিরপেক্ষ থাকবে কিনা। আইনের শাসন থাকবে কিনা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে কিনা। এবার প্রথমবার হচ্ছে, তাই এসব দেখার বিষয়। এ প্রক্রিয়ার ইতিবাচক দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, দুই দল তাদের অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের সুযোগ পাবে। আমাদের স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক দলগুলোতে ঐক্য নেই। অনেক এলাকায় দলগুলোর কমিটি নেই। তাই রাজনৈতিক দলগুলো সুযোগ পাবে তাদের দল গোছানোর। মেয়াদ শেষে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেয়াদ শেষ হলে প্রাকৃতিক কারণ ছাড়া নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কোন কারণ থাকতে পারে না। মেয়াদ শেষ হলে প্রশাসকরা ক্ষমতা নিয়ে তা ছাড়তে চান না। বর্তমানে জেলা পরিষদগুলো প্রশাসকদের হাতে রয়েছে। অন্যদিকে আমরা দেখেছি, ঢাকার দুই সিটি প্রশাসকরা ১৮০ দিনের কথা বলে দীর্ঘদিন চালিয়েছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) নির্বাহী ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বিষয়টা বেশ আলোচনা হয়েছে। এটা অরাজনৈতিক হওয়ার পেছনে বেশ কিছু যুক্তি ছিল। স্থানীয় উন্নয়নকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখা এর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু এ প্রত্যাশা রক্ষা হয়নি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন সব সময় দলীয়ভাবে হয়েছে। একটা অসত্যকে সত্য বলতে বলতে সেটা সত্য হয়েছে। এ রকম হলে দৃষ্টান্ত ভাল হবে না। অন্য আইনের ক্ষেত্রে যেন এমনটা না হয়। ভবিষ্যতে এ রকম আইন না মানার অভ্যেস থেকে আইন পরিবর্তনের ধারা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এ প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের ইতিবাচক দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে নির্দলীয় ও দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়। দুই রকম অভিজ্ঞতাই রয়েছে। দুটোরই ভালমন্দ দিক রয়েছে। এটাকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে হবে। মূল সুফল হচ্ছে এখান থেকে জাতীয়ভাবে সরকার পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের প্রশিক্ষণ হতে পারে। আমাদের দেশে একসময় ছাত্র রাজনীতি ছিল প্রশিক্ষণের মাধ্যম। কিন্তু এখন ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা এখান থেকে জাতীয় রাজনীতিতে উঠে আসতে পারবেন।
মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যেন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় সে বিষয়ে তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসকের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এমনভাবে পরিকল্পনা করা যেন মেয়াদ শেষের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
বিরোধী জোটকে দূরে রাখতেই দলীয় প্রতীকে নির্বাচন: বিএনপি
বিরোধী জোটকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই ৫ই জানুয়ারির মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দলীয় প্রতীকে করতে সরকার মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিরোধী জোটের জাতীয় নির্বাচনের দাবি পাশ কাটাতে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনে সরকারের মহাদূরভিসন্ধি কাজ করছে। সরকারকে এই আইনটি পাস করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে দলটি। একইসঙ্গে বিরোধী জোটের তরফে দেশে অবরোধ কর্মসূচি বহাল নেই বলে জানিয়েছে দলটি। গতকাল বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামীতে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। কারণ ক’দিন আগে সরকারের এমন ভাবনার প্রতিবাদে দাবি জানিয়েছিলাম- বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় যেন সংশ্লিষ্ট সকল মহলের মতামত যাচাই করা হয়। কিন্তু সরকার আমাদের সে দাবিকে পাশ কাটিয়ে একগুঁয়েমি মনোভাব দেখিয়েছে। এ সংক্রান্ত পাঁচটি আইনের সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করে তড়িঘড়ি করে অনুমোদন করেছে। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করা প্রসঙ্গে এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বর্তমান অর্ধেক নারী জনপ্রতিনিধি দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনের বিরোধিতা করেছেন। আমরাও মনে করি, এর ফলে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ হ্রাস পাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্র-সমাজ ব্যবস্থা-এতটাই রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত এবং নির্বাচন ব্যবস্থা এতটা ত্রুটিপূর্ণ যেখানে দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র-সমাজ আরও বেশি বিভাজিত হয়ে পড়বে। এছাড়া, বর্তমান নতজানু ও সরকারের আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে ভোটারদের অবাধে ভোট দেয়ার অধিকার রক্ষা করতে সমর্থ নন। দলবাজ প্রশাসন সরকারের আজ্ঞাবাহী হিসেবে সরকারের নীল-নকশার বাইরে স্বাধীনভাবে কাজ করতে অক্ষম। এ পরিস্থিতিতে দলীয় প্রতীকে ভবিষ্যতে যারা নির্বাচিত হবেন- তাদের কাছ থেকে ভিন্ন মতাবলম্বীরা সহযোগিতা পাবেন না এবং বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হবেন ব্যাপকভাবে। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সম্পত্তির ওয়ারিশ নির্ধারণ, নাগরিক সনদ ও চারিত্রিক প্রত্যয়নপত্রসহ দৈনন্দিন সাধারণ নাগরিক সুবিধা প্রাপ্তিতে নাগরিকদের দলীয় পরিচয়ের কারণে ভোগান্তিরও এতে আশঙ্কা থাকবে। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর অনেকেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকেই করে থাকেন। কিন্তু সেসব দেশে আমাদের দেশের মতো রাজনীতির অপচর্চা হয় না। সেখানে নিরপেক্ষ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেন। বাংলাদেশে এই চিত্র বিপরীত। সরকারের সমালোচনা রিপন বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের পর সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্রুত একটি জাতীয় নির্বাচনের জোরালো দাবি সব মহল। কিন্তু ওই দাবিকে পাশ কাটিয়ে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজনের পেছনে সরকারের এক মহাদুরভিসন্ধি কাজ করছে। সরকারের মেকি কৌশল জাতিকে আরও বিভাজিত করবে। তিনি বলেন, সরকারের দমন-নিপীড়নের কৌশলে বিরোধী জোটের হাজার হাজার কর্মী ঘরছাড়া, কারারুদ্ধ এবং সরকার বিরোধী রাজনীতিকে ন্যূনতম ডেমোক্রেটিক স্পেস দেয় না। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিরোধী দলের পক্ষে সমান সুযোগ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া দুরূহ হয়ে উঠবে। সরকার সেই সুযোগটিকেই কাজে লাগিয়ে রাজনীতির এক অসমান্তরাল ময়দানে ফাঁকা মাঠে গোল করতে হীন প্রচেষ্টায় এগুচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সরকার প্রমাণ করতে চেষ্টা করবে- জাতীয় নির্বাচন বিরোধী দলগুলো বর্জন করলেও সকল পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনে তাদের প্রতি তথাকথিত সমর্থন রয়েছে। এটা একটি অসৎ পরিকল্পনা ছাড়া অন্য কোন কিছুই নয়। এ সংক্রান্ত নির্বাচনী আইন অধ্যাদেশ আকারে জারি থেকে সরকারকে বিরত থাকার আহ্বান জানান রিপন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত যে পাঁচটি আইন অনুমোদন করা হয়েছে- তাও সাংঘর্ষিক। কেননা জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে বা শপথ নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত সংসদ সদস্যরা পদে বহাল থাকতে পারলেও মেয়াদোত্তীর্ণ হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। এতে স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকার ধারাবাহিকতাও ক্ষুণ্ন হবে। এই অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পর, যেসব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন উপযোগী হয়নি সেসব প্রতিষ্ঠানে পূর্বে নির্বাচিত মেয়র, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও মেম্বারগণের পদে থাকার বৈধতারও প্রশ্ন উঠবে। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিত প্রস্তাব মোটেই বাস্তবসম্মত নয়, সাংঘর্ষিক ও বাংলাদেশের জনগণের সামাজিক সম্প্রীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, আমরা আইনটি পাস করা থেকে সরকারকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছি। ওই সময় পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করবো। তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। জানুয়ারিতে ঘোষিত বিরোধী জোটের অবরোধ প্রত্যাহার না করায় যুক্তরাজ্যের শঙ্কার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএপির মুখপাত্র বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি রয়ে গেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগেও বলেছেন- বিরোধী জোটের তরফে কোন কর্মসূচি নেই। আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। আমিও একই কথা বলছি- বিএনপির তরফে এখন দেশে হরতাল-অবরোধ-ধর্মঘট এ জাতীয় কোন কর্মসূচি নেই। সংবাদ সম্মেলনে যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
No comments