শিশুহত্যা, তিন কিশোর গ্রেপ্তার
নিহত আরাফাত রহমান |
শিশুটি
বাঁচল না। গত ২১ আগস্ট পাবনার বেড়া থেকে অপহরণ হয়েছিল সে। পরদিন স্বজনেরা
মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ১১ বছরের বাক্ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু আরাফাত
রহমানকে। ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা গেছে সে।
আরাফাতকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি ও হত্যার অভিযোগে তার প্রতিবেশী তিন স্কুলছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে বেড়া থানার পুলিশ। তিনজনই ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে পুলিশ বলেছে, শিশুটিকে খেলাচ্ছলে জংলায় নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে টান দিয়েছিল তিন স্কুলছাত্র। শিশুটি নড়াচড়া না করায় মারা গেছে ভেবে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। শিশুটির বাবার কাছে ফোন করে মুক্তিপণ চেয়ে ঘটনাটিকে অপহরণ হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করে তারা।
বেড়া পৌর এলাকার স্যান্ডালপাড়ার কাপড় ব্যবসায়ী আবদুল মাজেদের ছয় ছেলে এবং এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট আরাফাত। তার কথা জড়িয়ে যেত। বুদ্ধিও বয়সের তুলনায় বাড়েনি। তাই ১১ বছর বয়স হলেও পড়ত স্যান্ডালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে। সে ছিল সবার আদরের।
শিশুটির বড় ভাই মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ২১ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ির সামনে খেলতে গিয়ে আর ফেরেনি আরাফাত। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় অপরিচিত মুঠোফোন নম্বর থেকে তাঁদের বাবাকে ফোন করে বলা হয়, আরাফাতকে অপহরণ করা হয়েছে এবং ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরদিনও ওই ফোন থেকে টাকা চাওয়া হয়। ২২ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পেছনের জংলায় গলায় গামছা দিয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় আরাফাতকে উদ্ধার করা হয়। তার পা লেগে ছিল মাটিতে। ওই দিনই তাকে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিত্সা দিয়ে সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেলের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ৩ সেপ্টেম্বর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়। আরাফাতের গলায় ছিলার দাগ ছিল।
মনিরুল কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা মুক্তিপণ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মুক্তিপণ চাওয়া ফোনটি ২৩ সেপ্টেম্বর সকালের পর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়।’ অপহরণের ঘটনায় আরাফাতের বাবা ২৬ আগস্ট বেড়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পুলিশ অপহরণকারীদের ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বরের সূত্র ধরে ৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় ছয় বালককে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে তিনজন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় বাকি দুজনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আর এক কিশোরকে কারা হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ বলেছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজন স্থানীয় দুটি বিদ্যালয়ে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ে। এদের বাড়িও স্যান্ডালপাড়ায়। গত রোববার একজন ও গতকাল দুজন পাবনার আমলি আদালত-৩-এর বিচারিক হাকিম এ কে এম রওশন জাহানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে তারা বলেছে, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রটি ও আরাফাতদের বাড়ি পাশাপাশি। তারা একসময় একসঙ্গে খেলত। সেই ছেলেটি তার অন্য বন্ধুদের নিয়ে স্বল্পবুদ্ধির আরাফাতকে ভয় দেখানোর পরিকল্পনা করে। ২১ আগস্ট পেয়ারা পাড়ার কথা বলে আরাফাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পেছনের জংলা ও নির্জন জায়গায় পেয়ারাবাগানের কাছে নিয়ে যায় প্রতিবেশী ছেলেটি। অন্য দুজনও সেখানে আসে। বিকেল চারটার দিকে ভয় দেখাতে একটি গামছা দিয়ে আরাফাতের গলায় তিনজন মিলে পেঁচিয়ে ধরে। এতে সে নেতিয়ে পড়ে। সে মারা গেছে ভেবে তিন স্কুলছাত্র আরাফাতকে সেখানে লুকিয়ে রেখে চলে আসে। পরে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে তারা অপহরণের কাহিনি সাজানোর পরিকল্পনা করে। এর অংশ হিসেবে তারা একটি অনিবন্ধিত সিমকার্ড কেনে। সেটি দিয়ে আরাফাতের বাবাকে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায়। ওই রাতে তিনবার ও পরদিন একবার ফোন করে তারা। এর পর ওই সিমটি তারা ভেঙে নষ্ট করে ফেলে। গ্রেপ্তার তিন স্কুলছাত্রের একজনের বাবা রিকশা চালান এবং বাকি দুজনের বাবা তাঁতশ্রমিক।
বেড়া-সাঁথিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকির হোসাইন বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা শিশু ও স্কুলছাত্র হওয়ায় তাদের সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রাথমিক অবস্থাতেই বোঝা যায়, মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে তারা ঘটনাটি ঘটায়নি। মূলত শিশু আরাফাতকে ভয় দেখাতে গিয়েই ঘটনাটি ঘটে যায়। এরপর তারা মুক্তিপণের ঘটনা সাজায়। প্রথমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেওয়া হলেও শিশুটি মারা যাওয়ায় এর সঙ্গে এখন হত্যা মামলাও যুক্ত হবে।
আরাফাতকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি ও হত্যার অভিযোগে তার প্রতিবেশী তিন স্কুলছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে বেড়া থানার পুলিশ। তিনজনই ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে পুলিশ বলেছে, শিশুটিকে খেলাচ্ছলে জংলায় নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে টান দিয়েছিল তিন স্কুলছাত্র। শিশুটি নড়াচড়া না করায় মারা গেছে ভেবে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। শিশুটির বাবার কাছে ফোন করে মুক্তিপণ চেয়ে ঘটনাটিকে অপহরণ হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করে তারা।
বেড়া পৌর এলাকার স্যান্ডালপাড়ার কাপড় ব্যবসায়ী আবদুল মাজেদের ছয় ছেলে এবং এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট আরাফাত। তার কথা জড়িয়ে যেত। বুদ্ধিও বয়সের তুলনায় বাড়েনি। তাই ১১ বছর বয়স হলেও পড়ত স্যান্ডালপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে। সে ছিল সবার আদরের।
শিশুটির বড় ভাই মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ২১ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ির সামনে খেলতে গিয়ে আর ফেরেনি আরাফাত। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় অপরিচিত মুঠোফোন নম্বর থেকে তাঁদের বাবাকে ফোন করে বলা হয়, আরাফাতকে অপহরণ করা হয়েছে এবং ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরদিনও ওই ফোন থেকে টাকা চাওয়া হয়। ২২ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পেছনের জংলায় গলায় গামছা দিয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় আরাফাতকে উদ্ধার করা হয়। তার পা লেগে ছিল মাটিতে। ওই দিনই তাকে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিত্সা দিয়ে সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেলের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ৩ সেপ্টেম্বর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়। আরাফাতের গলায় ছিলার দাগ ছিল।
মনিরুল কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা মুক্তিপণ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মুক্তিপণ চাওয়া ফোনটি ২৩ সেপ্টেম্বর সকালের পর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়।’ অপহরণের ঘটনায় আরাফাতের বাবা ২৬ আগস্ট বেড়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পুলিশ অপহরণকারীদের ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বরের সূত্র ধরে ৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় ছয় বালককে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে তিনজন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় বাকি দুজনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আর এক কিশোরকে কারা হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ বলেছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজন স্থানীয় দুটি বিদ্যালয়ে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ে। এদের বাড়িও স্যান্ডালপাড়ায়। গত রোববার একজন ও গতকাল দুজন পাবনার আমলি আদালত-৩-এর বিচারিক হাকিম এ কে এম রওশন জাহানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে তারা বলেছে, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রটি ও আরাফাতদের বাড়ি পাশাপাশি। তারা একসময় একসঙ্গে খেলত। সেই ছেলেটি তার অন্য বন্ধুদের নিয়ে স্বল্পবুদ্ধির আরাফাতকে ভয় দেখানোর পরিকল্পনা করে। ২১ আগস্ট পেয়ারা পাড়ার কথা বলে আরাফাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পেছনের জংলা ও নির্জন জায়গায় পেয়ারাবাগানের কাছে নিয়ে যায় প্রতিবেশী ছেলেটি। অন্য দুজনও সেখানে আসে। বিকেল চারটার দিকে ভয় দেখাতে একটি গামছা দিয়ে আরাফাতের গলায় তিনজন মিলে পেঁচিয়ে ধরে। এতে সে নেতিয়ে পড়ে। সে মারা গেছে ভেবে তিন স্কুলছাত্র আরাফাতকে সেখানে লুকিয়ে রেখে চলে আসে। পরে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে তারা অপহরণের কাহিনি সাজানোর পরিকল্পনা করে। এর অংশ হিসেবে তারা একটি অনিবন্ধিত সিমকার্ড কেনে। সেটি দিয়ে আরাফাতের বাবাকে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায়। ওই রাতে তিনবার ও পরদিন একবার ফোন করে তারা। এর পর ওই সিমটি তারা ভেঙে নষ্ট করে ফেলে। গ্রেপ্তার তিন স্কুলছাত্রের একজনের বাবা রিকশা চালান এবং বাকি দুজনের বাবা তাঁতশ্রমিক।
বেড়া-সাঁথিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকির হোসাইন বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা শিশু ও স্কুলছাত্র হওয়ায় তাদের সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রাথমিক অবস্থাতেই বোঝা যায়, মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে তারা ঘটনাটি ঘটায়নি। মূলত শিশু আরাফাতকে ভয় দেখাতে গিয়েই ঘটনাটি ঘটে যায়। এরপর তারা মুক্তিপণের ঘটনা সাজায়। প্রথমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেওয়া হলেও শিশুটি মারা যাওয়ায় এর সঙ্গে এখন হত্যা মামলাও যুক্ত হবে।
No comments