সংবিধানের আওতায়ই নির্বাচন চাই by নুরুল ইসলাম বিএসসি
বিএনপির
দাবি মেনে নির্দলীয় সরকার করলে জামায়াত-শিবির অস্ত্রের ভাষায় কথা বলে,
ভোটকেন্দ্র দখল করে নির্বাচনে যদি জিতে যায়, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের
শক্তির আত্মহননের পথ প্রশস্ত হবে। খালেদা জিয়া এ মুহূর্তে সেটাই
চান। বিএনপি নিজেরা এতই দুর্বল যে, জামায়াত, হেফাজত ছাড়া নির্বাচনে যেতে ভয়
পায়। আর জামায়াত-শিবিরের এ দেশের প্রতি বিশ্বাস নেই, এ দেশের মানুষের
প্রতি তাদের আস্থা নেই। যেনতেন প্রকারে তারা ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগের
কর্মী, হিন্দু, বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে ’৭১ সালের মতো পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করতে
বদ্ধপরিকর। আগামী নির্বাচনকে শুধু ক্ষমতা বদলের রাজনীতি ভাবলে মহাদুর্যোগ
নেমে আসবে। প্রকৃত অর্থে আমরা এখন ’৭১ সালের অবস্থানে ঘুরেফিরে ফেরত
এসেছি। আমাদের সঠিক পথটি খুঁজে বের করতে হবে। বিএনপি, জামায়াতকে ভোট দিয়ে
’৭১ সালের পরাজিত শক্তিকে ক্ষমতায় বসাব, নাকি পরাজিত শক্তিকে চূড়ান্ত
পরাজিত করে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় বসাব। আগামীর নির্বাচনকে শুধু
নির্বাচন ভাবলে মহাভুল হবে। এই নির্বাচন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত
রাখার নির্বাচন। এখানে পরাজিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জঙ্গি উত্থানের
বিপক্ষে সবাইকে এ মুহূর্তে অবস্থান নিতে হবে। একতরফা নির্বাচন করে ফেলতে
হবে। বিএনপি যতই হুমকি-ধামকি দিক, নির্বাচন প্রতিহত করার শক্তি তাদের নেই।
যারা রাজনীতি করেন, যারা রাজনীতিকে পর্যালোচনা করেন, তারা নিশ্চয়ই এরই মধ্যে উপলব্ধি করেছেন, জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী দল। হেফাজত দল না হলেও ধ্যান-ধারণায় এরা এখন মধ্যযুগে বসবাস করছে। হেফাজতীরা এখন আবার মাথা তুলছে। ঢাকায় সমাবেশসহ সমগ্র দেশে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। কাণ্ডারিহীন জামায়াতের কাণ্ডারি এখন খালেদা জিয়া এবং হেফাজতের ১৩ দফা দাবির ঘোর সমর্থক। ভাবতে কষ্ট লাগে, বিএনপিতে যারা প্রগতিশীল বলে দাবি করেন, তারা কিসের ভরসায় হেফাজতকে সমর্থন করেন। হেফাজতের ফতোয়া হল- মহিলারা পঞ্চম শ্রেণীর ঊর্ধ্বে পড়তে পারবে না। আমি একটি বাস্তব ঘটনা দিয়ে হেফাজতীদের প্রশ্ন করতে চাই। আমার পুত্রবধূর সন্তান হবে, তাকে হাসপাতালে নেয়া হল। হাসপাতালে নেয়ার পর আমার প্রধান চয়েস থাকবে কোনো মহিলা ডাক্তার আমার পুত্রবধূর সন্তান প্রসবে সাহায্য করবে। যদি পঞ্চম শ্রেণীতে নারীদের শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হয়, আমি মহিলা ডাক্তার পাব কোথায়? মোদ্দা কথা, হেফাজতীদের ১৩ দফা দাবিই সংবিধান ও সভ্যতাবিরোধী। আবার তাদের দাবিগুলোকে সমর্থন করছে বিএনপি। এই হেফাজতী যারা মূলত ওহাবি, ধর্মের দোহাই দিয়েই সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
প্রকৃত অর্থে বিএনপি কোন দিকে যাবে, সঠিক সিদ্ধান্তই নিতে পারছে না। এদের ক্ষমতা চাই, প্রয়োজনে লাশের পাহাড় বিছিয়ে হলেও ক্ষমতায় যেতে হবেই এবং তারেক, কোকোর অপকর্ম উদ্ঘাটনকারীদের শায়েস্তা করতে হবে। এখনও মানুষ ২০০১ সালের ঘটনাগুলোর কথা ভুলেনি। পূর্ণিমাদের ওপর নির্যাতন, আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাড়িঘর পোড়ানো, লাঠিপেটা করে গ্রামছাড়া করা- এখনও এসব চোখের সামনে ভাসে। ওই ঘটনাগুলো ছিল সীমিত আকারে, এখন কিন্তু জামায়াত-শিবির আরও হিংস্র। একবার ক্ষমতায় যেতে পারলে কী যে অঘটন তারা ঘটাবে, বাস্তবে এক্ষুনি আন্দাজ করা যায়। তারা কোনো আইন মানে না। বিচারপতিদের ঘরে বোমা মারে, চলন্ত গাড়িতে আগুন দিয়ে ড্রাইভারকে পুড়িয়ে মারে। সন্ত্রাস করে অরাজকতা সৃষ্টি করে। দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করাই এখন তাদের মুখ্য কাজ। খালেদা জিয়া ওই কসাই-জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এখন মূল কথা হল, আমাদের সংবিধান কী বলে। সংবিধান দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলে। তবুও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় সরকার ব্যবস্থার প্রস্তাব রেখেছেন। তবে শর্ত থাকে যে, সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা হবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের থেকে। প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে। পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রিসভার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু ড্যান মজিনা নানা কৌশল করছেন। যাতে এ দেশটা আফগানিস্তানে পরিণত হয়, সে ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তিনি ভারতকে সঙ্গে পেতে চান। কিন্তু ভারত জানে, এ দেশে কারা এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। তাই মজিনার মিশন বিফলে গেছে। একটি দেশ চলে সংবিধানের আওতায়। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কিছু করতে গেলে সংশোধনীর প্রয়োজন হয়। এ মুহূর্তে যার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই এবং সময়ও নেই। সংসদ এখন শেষ পর্যায়ে। এখন নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা যেতে পারে। ঘোষণা এলেই অনেকে অংশগ্রহণ করবেন। এমনকি বড় দলগুলো থেকে বেরিয়ে এসে অনেকে নির্বাচন করবেন। এমপি কে না হতে চান?
শেষ করার আগে বলতে চাই, নির্বাচনই হল ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পথ। ওই পথেই সবাইকে আসতে হবে। বিএনপিরও এ মুহূর্তে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। যে কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করবে, যা আমরা কেউ চাই না।
খালেদা জিয়া চান শেখ হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ। এর অর্থ হল, শেখ হাসিনাই এখন জঙ্গি উত্থানে মূল বাধা। শেখ হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ এ দেশের মানুষ চায় না।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
যারা রাজনীতি করেন, যারা রাজনীতিকে পর্যালোচনা করেন, তারা নিশ্চয়ই এরই মধ্যে উপলব্ধি করেছেন, জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী দল। হেফাজত দল না হলেও ধ্যান-ধারণায় এরা এখন মধ্যযুগে বসবাস করছে। হেফাজতীরা এখন আবার মাথা তুলছে। ঢাকায় সমাবেশসহ সমগ্র দেশে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। কাণ্ডারিহীন জামায়াতের কাণ্ডারি এখন খালেদা জিয়া এবং হেফাজতের ১৩ দফা দাবির ঘোর সমর্থক। ভাবতে কষ্ট লাগে, বিএনপিতে যারা প্রগতিশীল বলে দাবি করেন, তারা কিসের ভরসায় হেফাজতকে সমর্থন করেন। হেফাজতের ফতোয়া হল- মহিলারা পঞ্চম শ্রেণীর ঊর্ধ্বে পড়তে পারবে না। আমি একটি বাস্তব ঘটনা দিয়ে হেফাজতীদের প্রশ্ন করতে চাই। আমার পুত্রবধূর সন্তান হবে, তাকে হাসপাতালে নেয়া হল। হাসপাতালে নেয়ার পর আমার প্রধান চয়েস থাকবে কোনো মহিলা ডাক্তার আমার পুত্রবধূর সন্তান প্রসবে সাহায্য করবে। যদি পঞ্চম শ্রেণীতে নারীদের শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হয়, আমি মহিলা ডাক্তার পাব কোথায়? মোদ্দা কথা, হেফাজতীদের ১৩ দফা দাবিই সংবিধান ও সভ্যতাবিরোধী। আবার তাদের দাবিগুলোকে সমর্থন করছে বিএনপি। এই হেফাজতী যারা মূলত ওহাবি, ধর্মের দোহাই দিয়েই সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
প্রকৃত অর্থে বিএনপি কোন দিকে যাবে, সঠিক সিদ্ধান্তই নিতে পারছে না। এদের ক্ষমতা চাই, প্রয়োজনে লাশের পাহাড় বিছিয়ে হলেও ক্ষমতায় যেতে হবেই এবং তারেক, কোকোর অপকর্ম উদ্ঘাটনকারীদের শায়েস্তা করতে হবে। এখনও মানুষ ২০০১ সালের ঘটনাগুলোর কথা ভুলেনি। পূর্ণিমাদের ওপর নির্যাতন, আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাড়িঘর পোড়ানো, লাঠিপেটা করে গ্রামছাড়া করা- এখনও এসব চোখের সামনে ভাসে। ওই ঘটনাগুলো ছিল সীমিত আকারে, এখন কিন্তু জামায়াত-শিবির আরও হিংস্র। একবার ক্ষমতায় যেতে পারলে কী যে অঘটন তারা ঘটাবে, বাস্তবে এক্ষুনি আন্দাজ করা যায়। তারা কোনো আইন মানে না। বিচারপতিদের ঘরে বোমা মারে, চলন্ত গাড়িতে আগুন দিয়ে ড্রাইভারকে পুড়িয়ে মারে। সন্ত্রাস করে অরাজকতা সৃষ্টি করে। দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করাই এখন তাদের মুখ্য কাজ। খালেদা জিয়া ওই কসাই-জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এখন মূল কথা হল, আমাদের সংবিধান কী বলে। সংবিধান দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলে। তবুও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় সরকার ব্যবস্থার প্রস্তাব রেখেছেন। তবে শর্ত থাকে যে, সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা হবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের থেকে। প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে। পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রিসভার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু ড্যান মজিনা নানা কৌশল করছেন। যাতে এ দেশটা আফগানিস্তানে পরিণত হয়, সে ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তিনি ভারতকে সঙ্গে পেতে চান। কিন্তু ভারত জানে, এ দেশে কারা এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। তাই মজিনার মিশন বিফলে গেছে। একটি দেশ চলে সংবিধানের আওতায়। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কিছু করতে গেলে সংশোধনীর প্রয়োজন হয়। এ মুহূর্তে যার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই এবং সময়ও নেই। সংসদ এখন শেষ পর্যায়ে। এখন নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা যেতে পারে। ঘোষণা এলেই অনেকে অংশগ্রহণ করবেন। এমনকি বড় দলগুলো থেকে বেরিয়ে এসে অনেকে নির্বাচন করবেন। এমপি কে না হতে চান?
শেষ করার আগে বলতে চাই, নির্বাচনই হল ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পথ। ওই পথেই সবাইকে আসতে হবে। বিএনপিরও এ মুহূর্তে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। যে কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করবে, যা আমরা কেউ চাই না।
খালেদা জিয়া চান শেখ হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ। এর অর্থ হল, শেখ হাসিনাই এখন জঙ্গি উত্থানে মূল বাধা। শেখ হাসিনাবিহীন বাংলাদেশ এ দেশের মানুষ চায় না।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
No comments