'কীভাবে আছি কেউ খবরও রাখে নাই' by জিয়াউল হক
২০১৭
সালের ১ জুন লংগদুর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়নকে হত্যা করে
দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে লংগদু উপজেলায় পাহাড়িদের বাড়িঘরে
অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। দুই শতাধিক বাড়িঘর ও দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই
ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাড়ি বানানোর বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। কিন্তু যার
মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এত কিছু ঘটে গেছে, সেই নয়নের স্ত্রী জাহেরা খাতুন দুই
শিশু সন্তান নিয়ে অসহায় দিন কাটাচ্ছেন। স্বামীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে গত
বছরের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘সরকার তো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য
বাড়ি দিচ্ছে। আমার জন্য তো কিছুই করলো না। আমার ছোট ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে
কীভাবে আছি কেউ কোনোদিন খবরও রাখে নাই।’
স্বামীর মৃত্যুর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সেদিন (গত বছর ১ জুন) সকালে অল্প অল্প বৃষ্টি হচ্ছিল। আমার স্বামী নয়ন তখন বাসায়, মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। বাচ্চাদের সঙ্গে দুষ্টুমি করছিল সে। তখন বাইরে থেকে কে যেন ডাক দেয়- ও নয়ন দা, নয়ন দা, হুদু তুই? (নয়ন ভাই, কোথায় তুমি?)। তখন তিনি (নয়ন) বাসা থেকে একটা শার্ট ও জিন্স পরে বের হয়ে যান।’ এরপর সেদিন বিকালেই খাগড়াছড়ির চারমাইল এলাকায় তার লাশ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
জানা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও সদর যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন গত ১ জুন লংগদু সদর থেকে মোটরসাইকেল ভাড়ায় খাগড়াছড়ি যান। দুর্বৃত্তের হাতে তিনি প্রাণ হারান বলে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।
নুরুল ইসলাম নয়নের স্ত্রী জাহেরা খাতুন সেই স্মৃতি মনে করে বলেন, ‘চার বছরের ছোট মেয়েটা প্রায়ই বলে- মা, বাবা কেন আসে না। বাবা কই? বাবাকে কল দাও। তখন কোনও জবাব দিতে পারি না ওরে। ছেলেটার পড়ালেখা করানো এখন কঠিন হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বড় মেয়ের বিয়ে হওয়ার কারণে সে এখন শ্বশুরবাড়িতে থাকে। স্বামী ছাড়া আমার আর আয় করার মতো লোক নাই। একবেলা খেলে আরেক বেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। দলীয়ভাবে যা কিছু পেয়েছি তা দিয়ে বিভিন্ন এনজিওর ঋণ ছিল, বাজারের দোকানেও টাকা বাকি ছিল, সেগুলো দিয়ে এখন একেবারে হাত খালি। সরকার যদি আমার কোনও সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিত তাহলে আমিসহ আমার বাচ্চা দুইটার জীবনটা বেঁচে যেত। না হলে এই ছোট দুইটা বাচ্চা নিয়ে কয়েকদিন পর না খেয়ে মরে যেতে হবে।’
পাহাড়িদের সঙ্গে তার স্বামী নয়নের সুসম্পর্ক ছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামীর সঙ্গে এই এলাকার পাহাড়ি-বাঙালি সবার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি অনেক দিন রাতে বাড়ি ফিরতেন না। তখন ফোন দিলে বলতো অমুক পাহাড়ি বন্ধুর বাসায় থাকবে। আমি নিশ্চিন্ত থাকতাম। কিন্তু তাকে কেন মারলো এখনও জানি না। আমার স্বামীর কোনও শত্রু ছিল কিনা আমার জানা নাই। ওনার সঙ্গে সবার ভালো সম্পর্ক ছিল জানতাম।’
স্বামীর মৃত্যুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যতটুকু জানতাম, জেএসএস-এর কালেক্টরের সঙ্গে তার একটু কথাকাটাকাটি হয়েছিল। সেটাও ওনার মৃত্যুর কয়েক মাস আগে। কারণ, তিনি লাইনের প্রধান ছিলেন। কী কারণে তাদের সঙ্গে ঝামেলা হয় তা এখনও জানি না।’
নয়নের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এভাবে পাহাড়িদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে কীভাবে দেখেন, এমন প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম নয়নের স্ত্রী জাহেরা খাতুন বলেন, ‘এটা কেন হলো, কীভাবে হলো, আমি কিছুই জানি না। হতে পারে অনেকে তার মৃত্যুকে মেনে নিতে পারে নাই।’ পাহাড়িদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে জাহেরা খাতুন জানান, ‘২ জুন সকালে আমার স্বামীর মরদেহের গোসল দিয়ে বিদায় দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে শুনি ‘আগুন, আগুন’। আমরা তখনও বাসায় ছিলাম। কী করবো, কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুন লংগদু সদর ইউনিয়নের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়ন ভাড়া নিয়ে খাগড়াছড়ি যাওয়ার পর বিকালে সেখানকার চার মাইল এলাকায় তার লাশ পাওয়া যায়। ২ জুন নয়নের লাশ নিয়ে জানাজার জন্য বাইট্টাপাড়া থেকে লংগদু উপজেলা পরিষদ মাঠে রওনা দিলে তিনটিলা পাড়ায় মিছিল আসার পর মিছিল থেকে হঠাৎ করে পাহাড়িদের বসতঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ৩টি গ্রামের ২১৩টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে সরকার মোট ১৭৬টি বসতঘর নির্মাণ করার জন্য মোট ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এসব বসতঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয় ৩০ মে।
স্বামীর মৃত্যুর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সেদিন (গত বছর ১ জুন) সকালে অল্প অল্প বৃষ্টি হচ্ছিল। আমার স্বামী নয়ন তখন বাসায়, মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। বাচ্চাদের সঙ্গে দুষ্টুমি করছিল সে। তখন বাইরে থেকে কে যেন ডাক দেয়- ও নয়ন দা, নয়ন দা, হুদু তুই? (নয়ন ভাই, কোথায় তুমি?)। তখন তিনি (নয়ন) বাসা থেকে একটা শার্ট ও জিন্স পরে বের হয়ে যান।’ এরপর সেদিন বিকালেই খাগড়াছড়ির চারমাইল এলাকায় তার লাশ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
জানা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও সদর যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন গত ১ জুন লংগদু সদর থেকে মোটরসাইকেল ভাড়ায় খাগড়াছড়ি যান। দুর্বৃত্তের হাতে তিনি প্রাণ হারান বলে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।
নুরুল ইসলাম নয়নের স্ত্রী জাহেরা খাতুন সেই স্মৃতি মনে করে বলেন, ‘চার বছরের ছোট মেয়েটা প্রায়ই বলে- মা, বাবা কেন আসে না। বাবা কই? বাবাকে কল দাও। তখন কোনও জবাব দিতে পারি না ওরে। ছেলেটার পড়ালেখা করানো এখন কঠিন হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বড় মেয়ের বিয়ে হওয়ার কারণে সে এখন শ্বশুরবাড়িতে থাকে। স্বামী ছাড়া আমার আর আয় করার মতো লোক নাই। একবেলা খেলে আরেক বেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। দলীয়ভাবে যা কিছু পেয়েছি তা দিয়ে বিভিন্ন এনজিওর ঋণ ছিল, বাজারের দোকানেও টাকা বাকি ছিল, সেগুলো দিয়ে এখন একেবারে হাত খালি। সরকার যদি আমার কোনও সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিত তাহলে আমিসহ আমার বাচ্চা দুইটার জীবনটা বেঁচে যেত। না হলে এই ছোট দুইটা বাচ্চা নিয়ে কয়েকদিন পর না খেয়ে মরে যেতে হবে।’
পাহাড়িদের সঙ্গে তার স্বামী নয়নের সুসম্পর্ক ছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামীর সঙ্গে এই এলাকার পাহাড়ি-বাঙালি সবার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি অনেক দিন রাতে বাড়ি ফিরতেন না। তখন ফোন দিলে বলতো অমুক পাহাড়ি বন্ধুর বাসায় থাকবে। আমি নিশ্চিন্ত থাকতাম। কিন্তু তাকে কেন মারলো এখনও জানি না। আমার স্বামীর কোনও শত্রু ছিল কিনা আমার জানা নাই। ওনার সঙ্গে সবার ভালো সম্পর্ক ছিল জানতাম।’
স্বামীর মৃত্যুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যতটুকু জানতাম, জেএসএস-এর কালেক্টরের সঙ্গে তার একটু কথাকাটাকাটি হয়েছিল। সেটাও ওনার মৃত্যুর কয়েক মাস আগে। কারণ, তিনি লাইনের প্রধান ছিলেন। কী কারণে তাদের সঙ্গে ঝামেলা হয় তা এখনও জানি না।’
নয়নের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এভাবে পাহাড়িদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে কীভাবে দেখেন, এমন প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম নয়নের স্ত্রী জাহেরা খাতুন বলেন, ‘এটা কেন হলো, কীভাবে হলো, আমি কিছুই জানি না। হতে পারে অনেকে তার মৃত্যুকে মেনে নিতে পারে নাই।’ পাহাড়িদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে জাহেরা খাতুন জানান, ‘২ জুন সকালে আমার স্বামীর মরদেহের গোসল দিয়ে বিদায় দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে শুনি ‘আগুন, আগুন’। আমরা তখনও বাসায় ছিলাম। কী করবো, কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুন লংগদু সদর ইউনিয়নের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়ন ভাড়া নিয়ে খাগড়াছড়ি যাওয়ার পর বিকালে সেখানকার চার মাইল এলাকায় তার লাশ পাওয়া যায়। ২ জুন নয়নের লাশ নিয়ে জানাজার জন্য বাইট্টাপাড়া থেকে লংগদু উপজেলা পরিষদ মাঠে রওনা দিলে তিনটিলা পাড়ায় মিছিল আসার পর মিছিল থেকে হঠাৎ করে পাহাড়িদের বসতঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ৩টি গ্রামের ২১৩টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে সরকার মোট ১৭৬টি বসতঘর নির্মাণ করার জন্য মোট ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এসব বসতঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয় ৩০ মে।
No comments