তিস্তার বরফ গলছে নাকি দিল্লি বহুদূর? by আমীন আল রশীদ
কলকাতা
থেকে দিল্লির দূরত্ব এক হাজার ৪৯০ কিলোমিটার। কিন্তু ঢাকা থেকে কলকাতার
দূরত্ব মাত্র ৩১৩ কিলোমিটার। তার মানে কলকাতার জন্য দিল্লির চেয়ে ঢাকা অনেক
বেশি নিকটবর্তী। এই দূরত্বের সমীকরণ মাথায় রেখে আমরা বাংলাদেশ-ভারতের
অমীমাংসিত সমস্যা, বিশেষ করে অভিন্ন নদী তিস্তার পানি বণ্টনের রাজনীতিটা
বোঝার চেষ্টা করতে পারি।
সবাই জানেন, তিস্তা এখন আর বাংলাদেশ-ভারত কিংবা হাসিনা-মোদির ইস্যু নয়। বরং এটি ঘুরপাক খাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক টানাপড়েনের বৃত্তে। যে কারণে ঢাকা-কলকাতার দূরত্ব ৩১৩ কিলোমিটার হলেও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি অনেক সময়ই ‘দিল্লি বহুদূর’ বলেই প্রতীয়মান হয়।
এই বাস্তবতার পরও আমরা আশাবাদী হই। বিশেষ করে যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বন্ধুসুলভ বক্তৃতা দেন।
বিশ্বকবির প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে হাসিনা-মোদি ও মমতা একই সুরে এবং বন্ধুসুলভ বক্তৃতা দিয়েছেন। সেখানে পলিটিক্যাল রেটোরিক কিংবা বাহুল্য যাই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ইতিহাসে ২০১৮ সালের ২৫ মে তারিখটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হয়ে থাকবে। মনে রাখা দরকার, দিনটি ছিল বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী এবং যাঁর জন্ম এই পশ্চিমবঙ্গেই।
উল্লেখ করার মতো বিষয়, কোনও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দুটি দেশের প্রধামন্ত্রী এবং একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিও বিরল ঘটনা। এটি বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বেরই নিদর্শন, যে নিদর্শনের একটি বড় স্থাপনা বাংলাদেশ ভবন। কবিগুরুর প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনে এই ভবনটি শুধু বাংলাদেশেরই প্রতিনিধিত্ব করবে এমন নয়, বরং দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের একটি বড় প্রতীক হয়ে থাকবে।
মমতা বলেছেন, বাংলাদেশ সম্মত হলে তারা পশ্চিমবঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি ভবন করতে চান। তার মানে বাংলাদেশ-ভারত বিশেষ করে বাংলাদেশের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গ, যার সঙ্গে বাংলাদেশের ভাষা ও সংস্কৃতির মিল অনেকখানি, সেই রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কের নদীতে যদি একটু জোয়ার আসে, তাহলে একসময় তিস্তার জল নিয়ে এই বাংলার শুষ্ক মৌসুমে হাহাকার হবে না বলেই প্রত্যাশা করা যায়।
বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে নরেন্দ্র মোদি তার ভাষণে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থল সীমানার মতো জটিল সমস্যার সমাধান হয়েছে; যা একসময় অসম্ভব বলে মনে করা হতো। উপকূলীয় অঞ্চলে নৌ চলাচল ও যোগাযোগে দুই দেশের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মোদি বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সব রকম সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অন্যান্য দেশের জন্য একটি শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার বিষয় বলেও মোদি উল্লেখ করেন।
একই অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অতীতে অনেক জল গড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও গড়াবে, তবে আমি মনে করি দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরো জোরদার হবে। এ সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা পুরোপুরি কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের কৌশলগত বন্ধুত্ব বিশ্বের জন্য ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে যখনই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের কথা ওঠে, জোরেশোরে সামনে আসে তিস্তা ইস্যুটি। ভারতের সঙ্গে এরকম আরও অনেক অভিন্ন নদী থাকলেও তিস্তা এখন একটি সিম্বলে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ তিস্তা চুক্তিটা করে ফেলতে পারলে সেটি আওয়ামী লীগের কূটনৈতিক সাফল্যে যেমন আরও একটি পালক যুক্ত করবে, তেমনি এই সাফল্যের কৃতিত্ব নেবে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপিও। সমস্যাটা এখানেই। তিস্তার পানিবণ্টন ইস্যুতে প্রধান স্টেকহোল্ডার যে পশ্চিমবঙ্গ, তারা ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রতিপক্ষ। আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে হারানোর ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন মমতা। সুতরাং বিজেপির আমলে তিস্তাচুক্তি হয়ে গেলে তাতে বিজেপির যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সাফল্য আসবে, মমতা সেই পালে হাওয়া দেবেন কিনা, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। অর্থাৎ রাজনীতিটা এখন কেন্দ্র বনাম রাজ্যের; তৃণমূল কংগ্রেস বনাম বিজেপির। সেই জটিল সমীকরণ আর রাজনীতির মারপ্যাঁচে পড়ে তিস্তা শেষ পর্যন্ত দিল্লি বহুদূর হয়েই থাকবে নাকি বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে তিন নেতা যেরকম বন্ধু ও সুপ্রতিবেশীসুলভ বক্তৃতা দিয়েছেন, কূটনীতিতে তার প্রতিফলন ঘটবে, তা দেখার জন্য আমাদের হয়তো বাংলাদেশ ও ভারতের আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
তবে এ কথা বলা অত্যুক্তি হবে না যে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নদী বিগত কয়েক বছরে যথেষ্ট বেগবান হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় শান্তিনিকেতনে দুজন প্রধানমন্ত্রী এবং একজন মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে, যে টোনে, যে ভাষায় পরস্পরকে সম্বোধন করে কথা বলেছেন, সেটি অত্যন্ত ইতিবাচক। কূটনীতিতে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে হাসিনা-মোদি ও মমতার যে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আমরা দেখেছি, তাতে আগামীকালই অমীমাংসিত সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটি না ভাবলেও, দুদেশের সম্পর্ক যে ভালো যাচ্ছে, তাদের কথাবার্তায় সেটির ইঙ্গিত ছিল।
বাস্তবতা হলো, আন্তর্জাতিক নদী বলে এই নদীর জলে বাংলাদেশের যে অধিকার, ভারতেরও তাই। সুতরাং আমরা চাইলেই তারা তিস্তা চুক্তি করে ফেলবে এবং আমাদের খরার মৌসুমে গলগল করে পানি ছেড়ে দেবে, বিষয়টি এত সহজে হবে না। ফলে অভিন্ন নদীর চুক্তি হওয়া যেমন জরুরি, তার আগে জরুরি যেসব রাজ্য ও অঞ্চলের ভেতর দিয়ে নদীটি প্রবাহিত, সেই অঞ্চলসমূহের মানুষ যাতে চুক্তির বিরোধিতা না করে বা এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। অর্থাৎ সম্পর্ক ভালো হলে এবং সমঝোতা হলে শুধু নদীর পানি কেন, আরও অনেক কিছুই আদান-প্রদান সম্ভব।
লেখক: সাংবাদিক
সবাই জানেন, তিস্তা এখন আর বাংলাদেশ-ভারত কিংবা হাসিনা-মোদির ইস্যু নয়। বরং এটি ঘুরপাক খাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক টানাপড়েনের বৃত্তে। যে কারণে ঢাকা-কলকাতার দূরত্ব ৩১৩ কিলোমিটার হলেও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি অনেক সময়ই ‘দিল্লি বহুদূর’ বলেই প্রতীয়মান হয়।
এই বাস্তবতার পরও আমরা আশাবাদী হই। বিশেষ করে যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বন্ধুসুলভ বক্তৃতা দেন।
বিশ্বকবির প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে হাসিনা-মোদি ও মমতা একই সুরে এবং বন্ধুসুলভ বক্তৃতা দিয়েছেন। সেখানে পলিটিক্যাল রেটোরিক কিংবা বাহুল্য যাই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ইতিহাসে ২০১৮ সালের ২৫ মে তারিখটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হয়ে থাকবে। মনে রাখা দরকার, দিনটি ছিল বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী এবং যাঁর জন্ম এই পশ্চিমবঙ্গেই।
উল্লেখ করার মতো বিষয়, কোনও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে দুটি দেশের প্রধামন্ত্রী এবং একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিও বিরল ঘটনা। এটি বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বেরই নিদর্শন, যে নিদর্শনের একটি বড় স্থাপনা বাংলাদেশ ভবন। কবিগুরুর প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনে এই ভবনটি শুধু বাংলাদেশেরই প্রতিনিধিত্ব করবে এমন নয়, বরং দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের একটি বড় প্রতীক হয়ে থাকবে।
মমতা বলেছেন, বাংলাদেশ সম্মত হলে তারা পশ্চিমবঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি ভবন করতে চান। তার মানে বাংলাদেশ-ভারত বিশেষ করে বাংলাদেশের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গ, যার সঙ্গে বাংলাদেশের ভাষা ও সংস্কৃতির মিল অনেকখানি, সেই রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কের নদীতে যদি একটু জোয়ার আসে, তাহলে একসময় তিস্তার জল নিয়ে এই বাংলার শুষ্ক মৌসুমে হাহাকার হবে না বলেই প্রত্যাশা করা যায়।
বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে নরেন্দ্র মোদি তার ভাষণে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থল সীমানার মতো জটিল সমস্যার সমাধান হয়েছে; যা একসময় অসম্ভব বলে মনে করা হতো। উপকূলীয় অঞ্চলে নৌ চলাচল ও যোগাযোগে দুই দেশের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মোদি বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সব রকম সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অন্যান্য দেশের জন্য একটি শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার বিষয় বলেও মোদি উল্লেখ করেন।
একই অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অতীতে অনেক জল গড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও গড়াবে, তবে আমি মনে করি দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরো জোরদার হবে। এ সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা পুরোপুরি কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের কৌশলগত বন্ধুত্ব বিশ্বের জন্য ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে যখনই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের কথা ওঠে, জোরেশোরে সামনে আসে তিস্তা ইস্যুটি। ভারতের সঙ্গে এরকম আরও অনেক অভিন্ন নদী থাকলেও তিস্তা এখন একটি সিম্বলে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ তিস্তা চুক্তিটা করে ফেলতে পারলে সেটি আওয়ামী লীগের কূটনৈতিক সাফল্যে যেমন আরও একটি পালক যুক্ত করবে, তেমনি এই সাফল্যের কৃতিত্ব নেবে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপিও। সমস্যাটা এখানেই। তিস্তার পানিবণ্টন ইস্যুতে প্রধান স্টেকহোল্ডার যে পশ্চিমবঙ্গ, তারা ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রতিপক্ষ। আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে হারানোর ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন মমতা। সুতরাং বিজেপির আমলে তিস্তাচুক্তি হয়ে গেলে তাতে বিজেপির যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সাফল্য আসবে, মমতা সেই পালে হাওয়া দেবেন কিনা, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। অর্থাৎ রাজনীতিটা এখন কেন্দ্র বনাম রাজ্যের; তৃণমূল কংগ্রেস বনাম বিজেপির। সেই জটিল সমীকরণ আর রাজনীতির মারপ্যাঁচে পড়ে তিস্তা শেষ পর্যন্ত দিল্লি বহুদূর হয়েই থাকবে নাকি বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে তিন নেতা যেরকম বন্ধু ও সুপ্রতিবেশীসুলভ বক্তৃতা দিয়েছেন, কূটনীতিতে তার প্রতিফলন ঘটবে, তা দেখার জন্য আমাদের হয়তো বাংলাদেশ ও ভারতের আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
তবে এ কথা বলা অত্যুক্তি হবে না যে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নদী বিগত কয়েক বছরে যথেষ্ট বেগবান হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় শান্তিনিকেতনে দুজন প্রধানমন্ত্রী এবং একজন মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে, যে টোনে, যে ভাষায় পরস্পরকে সম্বোধন করে কথা বলেছেন, সেটি অত্যন্ত ইতিবাচক। কূটনীতিতে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে হাসিনা-মোদি ও মমতার যে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আমরা দেখেছি, তাতে আগামীকালই অমীমাংসিত সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটি না ভাবলেও, দুদেশের সম্পর্ক যে ভালো যাচ্ছে, তাদের কথাবার্তায় সেটির ইঙ্গিত ছিল।
বাস্তবতা হলো, আন্তর্জাতিক নদী বলে এই নদীর জলে বাংলাদেশের যে অধিকার, ভারতেরও তাই। সুতরাং আমরা চাইলেই তারা তিস্তা চুক্তি করে ফেলবে এবং আমাদের খরার মৌসুমে গলগল করে পানি ছেড়ে দেবে, বিষয়টি এত সহজে হবে না। ফলে অভিন্ন নদীর চুক্তি হওয়া যেমন জরুরি, তার আগে জরুরি যেসব রাজ্য ও অঞ্চলের ভেতর দিয়ে নদীটি প্রবাহিত, সেই অঞ্চলসমূহের মানুষ যাতে চুক্তির বিরোধিতা না করে বা এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। অর্থাৎ সম্পর্ক ভালো হলে এবং সমঝোতা হলে শুধু নদীর পানি কেন, আরও অনেক কিছুই আদান-প্রদান সম্ভব।
লেখক: সাংবাদিক
আমীন আল রশীদ |
No comments