রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় মোশাররফ অভিযুক্ত
পাকিস্তানের সাবেক সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গতকাল সোমবার অভিযুক্ত করেছেনে বিশেষ আদালত। একই সঙ্গে আদালত পাঁচটি অভিযোগে সাবেক এই জেনারেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের সময় মোশাররফ কাঠগড়ায় ছিলেন। প্রতিটি অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রদ্রোহী নই, সরকারি অর্থ লুটপাটকারীরাই রাষ্ট্রদ্রোহী।’ তিনজন বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত বিশেষ আদালতে মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিচার চলছে। ২০০৭ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে অন্যায়ভাবে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করায় তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে মোশাররফের মৃত্যুদণ্ড হবে। গতকাল তিন সদস্যের বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি তাহিরা সাফদার মোশাররফের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ পড়ে শোনান। পরে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে কড়া নিরাপত্তায় মোশাররফকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁর নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়। আদালতে সব দোষ অস্বীকার করে মোশাররফ বলেন, ‘আমি আদালত ও বিচার-প্রক্রিয়াকে সম্মান করি। আইনের প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে। এ পর্যন্ত করাচি, রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদের আদালতে ১৬ বার হাজির হয়েছি আমি।’ আদালতে ৭০ বছর বয়সী মোশাররফকে বেশ চাঙা দেখা যায়। বক্তব্যের একপর্যায়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রদ্রোহী নই। আমার কাছে রাষ্ট্রদ্রোহী তারাই, যারা সরকারি অর্থ লুটপাট করে; রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য করে।’ মোশাররফ আরও বলেন, ‘আমাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলা হয়, আমি নয় বছর সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। সেনাবাহিনীতে ৪৫ বছর কাজ করেছি। দেশের জন্য দুটি যুদ্ধ করেছি। এটাই কী রাষ্ট্রদ্রোহিতা?’ পাকিস্তানের সাবেক কোনো জেনারেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিরল এক ঘটনা। তাই দেশটির বর্তমান বেসামরিক সরকারের জন্য একে একধরনের পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এএফপি ও বিবিসি।
No comments