পুলিশের ভুল না নির্মমতা! by সেরাজুল ইসলাম সিরাজ
পুলিশের ভুল না নির্মমতা কিছুই বুঝতে পারছি না! ভুল হলেও মেনে নেওয়া যায় না, নির্মমতা হলে বাকরূদ্ধ হতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশি হামলায় আহত সিপিবির কর্মী আরাফাতুল কবির রিজভী।
রোববার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্সূচিতে অংশ নিতে গিয়ে মারাত্মক আহত রিজভী বাংলানিউজকে এ আক্ষেপ জানান।
পুলিশের টিয়ার শেল সরাসরি তার মুখে আঘাত লাগায় ৮টি দাত ভেঙ্গে যায়। মুখ থেতলে গেছে, ওপর ও নিচের চোয়াল ফেটে গেছে। যা চিকিৎসায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক কাজী বিল্লুর রহমানের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রিজভী।
কমিউনিস্ট পার্টির সংস্কৃতি শাখার এই সদস্যের দু’দফায় অপরেশন করা হয়েছে। মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় অপারেশন করা হবে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।
রিজভী আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে উপর দিকে। যার ধোয়ায় মানুষ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। কিন্তু আমার কয়েক ফুট দূর থেকে মুখ তাক করে টিয়ারশেল ছেড়েছে পুলিশ।’’
‘‘আমি তো কোন চিহ্নিত সন্ত্রাসী না। যে কারণে আমাকে এভাবে আঘাত করতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমার সহকর্মীরা যদি আমাকে দ্রুত হাসপাতালে না নিতেন, তাহলে রক্তক্ষরণের কারণেই আমার মৃত্যু হতো।’’
‘‘পুলিশ যদি ভুলে আমার মুখ সোজা টিয়ারশেল ছুড়ে থাকে তাহলে তার চাকরি করার নৈতিক অধিকার নেই। আর যদি বুঝে-শুনেই ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলেও ওই পুলিশের চাকরি থাকা উচিত নয়’’ বলেও মনে করেন তিনি।
টিয়ারশেলটি তার চোখে না লাগায় বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে মনে করছেন তিনি।
অনেক সময় গুলি করার মতোও পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কিন্তু রোববারের কর্সূচিতে এমন পরিস্থিতি ছিল না যার জন্য টিয়ারশেল নিক্ষেপ করার প্রয়োজন ছিল। পুলিশ বিনা উস্কানিতে এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ফ্যাঁসিস্ট হয়ে গেছে। এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।
হাসপাতালে দেখা হয় যুব ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এভাবে হামলা মেনে নেওয়া কষ্টকর। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে এ ধরনের হামলা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না।
রিজভীকে একজন দক্ষ সংগঠক ও শান্তিপ্রিয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফরিদপুরে জন্মস্থান হওয়ায় রাজেন্দ্র কলেজে তার পড়াশোনা। আর সেখানে অনার্স পড়া অবস্থায় ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। সেখানে অনার্স শেষ করে ঢাকায় এসে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিষয়ে মাস্টার্স করেন।
ছাত্র ইউনিয়ন জেলা শাখার সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন রিজভী। বর্তমানে কমিউনিস্ট পার্টির সংস্কৃতি শাখার সদস্য ও রণেশ দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
অসাম্প্রদায়িত চেতনার রিজভী গণতান্ত্রিক সব আন্দোলনে প্রথম সারিতে থেকেছেন। তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সব কর্মসূচিতে তার সরব উপস্থিতি থাকে।
‘‘তার এই অবস্থা দেখে নিজেকে সামলে নিতে পারছি না’’ বলেও মন্তব্য করেন যুব ইউনিয়নের এই নেতা।
তিনি বলেন, শিগগিরই নতুন কর্সূচি দেওয়া হবে। সেখানে হরতালও থাকতে পারে।
হাসপাতালে রিজভীর সেবায় রয়েছেন ছাত্র ও যুব ইউনিয়নের ৩ কর্মী। যার মধ্যে রয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের মহানগর শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা ফয়েজ আদর। তিনি মিছিলেও ঠিক রিজভীর পাশেই ছিলেন।
ফাতেমা ফয়েজ আদর বলেন, ‘‘মাত্র কয়েক ফুট দূর থেকে ভাইয়ার মুখ তাক করে টিয়ারশেলটি ছোড়া হয়। সেখানেই তার ৪টি দাঁত পড়ে যায় ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আমরা তাকে দ্রুত রিকশায় তুলে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই।’’
‘‘এভাবে একজন সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ হামলা চালাতে পারে আমার ভাবতেও কষ্ট হয়।’’
সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’’
‘‘রিজভীর রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আমরা আমাদের দাবি থেকে সামান্য পরিমাণে সরে আসবো না। অবিলম্বে কঠোর কমর্সূচি দেওয়া হবে।’’
‘‘বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করা হবে।’’
তেল-গ্যাস কমিটি সূত্র জানায়, রোববারের কর্মসূচিতে পুলিশের টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জে ৫০ জন কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর ১১ জনকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তারা হলেন, জান্নাতুল মরিয়ম তানিয়া, নাহিদ আহমেদ, উম্মে হাবিবা, বেনজির, কাকন বিশ্বাস, সুলতান মাহমুদ, লুৎফুন নাহার সুমনা, বিথী আফরোজ, মলয় সরকার ও সঞ্জীব দাশ।
প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে ওরাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক কাজী বিল্লুর রহমানের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রিজভী।
কমিউনিস্ট পার্টির সংস্কৃতি শাখার এই সদস্যের দু’দফায় অপরেশন করা হয়েছে। মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় অপারেশন করা হবে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।
রিজভী আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে উপর দিকে। যার ধোয়ায় মানুষ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। কিন্তু আমার কয়েক ফুট দূর থেকে মুখ তাক করে টিয়ারশেল ছেড়েছে পুলিশ।’’
‘‘আমি তো কোন চিহ্নিত সন্ত্রাসী না। যে কারণে আমাকে এভাবে আঘাত করতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমার সহকর্মীরা যদি আমাকে দ্রুত হাসপাতালে না নিতেন, তাহলে রক্তক্ষরণের কারণেই আমার মৃত্যু হতো।’’
‘‘পুলিশ যদি ভুলে আমার মুখ সোজা টিয়ারশেল ছুড়ে থাকে তাহলে তার চাকরি করার নৈতিক অধিকার নেই। আর যদি বুঝে-শুনেই ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলেও ওই পুলিশের চাকরি থাকা উচিত নয়’’ বলেও মনে করেন তিনি।
টিয়ারশেলটি তার চোখে না লাগায় বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে মনে করছেন তিনি।
অনেক সময় গুলি করার মতোও পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কিন্তু রোববারের কর্সূচিতে এমন পরিস্থিতি ছিল না যার জন্য টিয়ারশেল নিক্ষেপ করার প্রয়োজন ছিল। পুলিশ বিনা উস্কানিতে এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ফ্যাঁসিস্ট হয়ে গেছে। এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।
হাসপাতালে দেখা হয় যুব ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এভাবে হামলা মেনে নেওয়া কষ্টকর। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে এ ধরনের হামলা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না।
রিজভীকে একজন দক্ষ সংগঠক ও শান্তিপ্রিয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফরিদপুরে জন্মস্থান হওয়ায় রাজেন্দ্র কলেজে তার পড়াশোনা। আর সেখানে অনার্স পড়া অবস্থায় ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। সেখানে অনার্স শেষ করে ঢাকায় এসে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিষয়ে মাস্টার্স করেন।
ছাত্র ইউনিয়ন জেলা শাখার সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন রিজভী। বর্তমানে কমিউনিস্ট পার্টির সংস্কৃতি শাখার সদস্য ও রণেশ দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
অসাম্প্রদায়িত চেতনার রিজভী গণতান্ত্রিক সব আন্দোলনে প্রথম সারিতে থেকেছেন। তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সব কর্মসূচিতে তার সরব উপস্থিতি থাকে।
‘‘তার এই অবস্থা দেখে নিজেকে সামলে নিতে পারছি না’’ বলেও মন্তব্য করেন যুব ইউনিয়নের এই নেতা।
তিনি বলেন, শিগগিরই নতুন কর্সূচি দেওয়া হবে। সেখানে হরতালও থাকতে পারে।
হাসপাতালে রিজভীর সেবায় রয়েছেন ছাত্র ও যুব ইউনিয়নের ৩ কর্মী। যার মধ্যে রয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের মহানগর শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা ফয়েজ আদর। তিনি মিছিলেও ঠিক রিজভীর পাশেই ছিলেন।
ফাতেমা ফয়েজ আদর বলেন, ‘‘মাত্র কয়েক ফুট দূর থেকে ভাইয়ার মুখ তাক করে টিয়ারশেলটি ছোড়া হয়। সেখানেই তার ৪টি দাঁত পড়ে যায় ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আমরা তাকে দ্রুত রিকশায় তুলে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই।’’
‘‘এভাবে একজন সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ হামলা চালাতে পারে আমার ভাবতেও কষ্ট হয়।’’
সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’’
‘‘রিজভীর রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আমরা আমাদের দাবি থেকে সামান্য পরিমাণে সরে আসবো না। অবিলম্বে কঠোর কমর্সূচি দেওয়া হবে।’’
‘‘বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করা হবে।’’
তেল-গ্যাস কমিটি সূত্র জানায়, রোববারের কর্মসূচিতে পুলিশের টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জে ৫০ জন কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর ১১ জনকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তারা হলেন, জান্নাতুল মরিয়ম তানিয়া, নাহিদ আহমেদ, উম্মে হাবিবা, বেনজির, কাকন বিশ্বাস, সুলতান মাহমুদ, লুৎফুন নাহার সুমনা, বিথী আফরোজ, মলয় সরকার ও সঞ্জীব দাশ।
No comments