আকাশে ওড়ার আর কোনও সম্ভাবনাই থাকলো না জেট এয়ারওয়েজের

ঋণের ভারে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে ভারতের একসময়ের অন্যতম বড় বিমান সংস্থা জেট এয়ারওয়েজ। প্রায় ২৫ বছর পর ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকেই বন্ধ হয়ে যায় উড়ান। সংস্থার কর্ণধার নরেশ গোয়েলের বিরুদ্ধেও একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গত বছর কানাড়া ব্যাংকের ৫৩৮ কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে নরেশকে গ্রেপ্তার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কর্মীদের বেতন, বিনিয়োগকারীদের বকেয়া সব মিলিয়ে সংকটের পরিস্থিতি। ২০২০ সালে লন্ডনের সংস্থা কালরক ক্যাপিটাল জেট কিনতে আগ্রহ দেখায়। জালান গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কালরক ক্যাপিটাল জেট অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু করে। কর্মীদের বেতন-সহ সংস্থার যাবতীয় ঋণ মিটিয়ে নতুন করে জেটের উড়ান চালুর প্রতিশ্রুতি দেয় তারা। জেট এয়ারকে ফের আকাশে ওড়াতে ৪৭৮৩ কোটির প্যাকেজের দর হেঁকেছিল জালান-কালরক কনসোর্টিয়াম। পাঁচ বছরে দফায় দফায় সেই টাকা দেয়ার কথা ছিল জালান-কালরকের।

এদিকে এসবিআই-এর নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম জানায়, জালান-কালরকের সেই দর গৃহীত হওয়ার দুই বছর পরও প্রথম দফার ৩৫০ কোটি পায়নি তারা। পরে সেই মামলা গড়িয়েছিল আদালতে। এরই মাঝে গত মার্চ মাসে ন্যাশনাল কোম্পানি ল' অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল নির্দেশ দিয়েছিল, পার্ফর্ম্যান্স ব্যাংক গ্যারান্টি বাবদ ১৫০ কোটি টাকা দিতে হবে জালান-কালরক কনসোর্টিয়ামকে। আর ৯০ দিনের মধ্যে সম্পত্তি হস্তান্তরেরও নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইবুনাল। তবে ট্রাইবুনালের নির্দেশ খারিজ করে দিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, জেট এয়ারওয়েজের লিকুইডেশন করতে হবে এবং সম্পত্তি নিলাম করে দিতে হবে। সংবিধানে উল্লিখিত ১৪২ ধারা প্রয়োগ করে জেটের সম্পত্তি বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঝুলে থাকা ওই মামলায় 'সম্পূর্ণ ন্যায়' যাতে মেলে, তার জন্যই সংবিধান প্রদত্ত অধিকার প্রয়োগ করেছে আদালত। পাঁচ বছর আগে যেখানে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে গিয়েছিল, এত দিনেও কেন তার প্রয়োগ হলো না, আজ তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে আদালত। ঘটনাক্রমকে 'অদ্ভুত এবং উদ্বেগজনক' বলে উল্লেখ করা হয়। আদালত বলে, এর সম্পত্তি বিক্রি ছাড়া আর রাস্তা নেই। ফলে পুরোপুরি অস্তিত্বহীন হয়ে যাচ্ছে জেট এয়ারওয়েজ। ফলে জেটের  আকাশে ওড়ার স্বপ্ন ভেঙে গেল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে।

সূত্র : livemint

mzamin

No comments

Powered by Blogger.