তিনি একজন ইউপি চেয়ারম্যান by মিজানুর রহমান
হাইস্কুলের
গণ্ডি পার হতে পারেননি। বখে যাওয়ায় অতিষ্ঠ শিক্ষক-বাবা বাড়ি থেকে বের করে
দিয়েছিলেন। অর্থকষ্টে দিন কেটেছে, বাসের হেলপারি করেছেন, আরো কত কি! কিন্তু
মাত্র কয়েক বছরে আজ তার দিন এমনই পাল্টে গেছে যে, কোটি টাকাও তার কাছে
তুচ্ছ। দামি গাড়ি হাঁকান তো বটেই, মডেল বদলান বছরান্তে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে
বিদেশ যান। অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ির সাজ-সজ্জার কাজ সদ্য শেষ করেছেন।
সাভার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সোহেল রানার ব্যক্তিগত বিলাসী
জীবন আর অর্থের পাহাড় নিয়ে কৌতূহলী ঢাকার উপকণ্ঠের শিল্প নগরীর মানুষজন।
নির্বাচন স্থগিত হওয়াসহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ২০১৬ সালে চেয়ারম্যান হওয়া
সোহেল হজ-ওমরাহ করেছেন কয়েক বার। হাজী মো. সোহেল রানা নামেই এখন তিনি
ব্যানার-ফেস্টুনে প্রচার চালাতে পছন্দ করেন।
তার চাঁদাবাজি, গ্যাংবাজিতে অতিষ্ঠদের ভাষ্য মতে, অবৈধ অর্থে রানার উত্থান রূপকথাকেও হার মানিয়েছে। ভুক্তভোগীদের অনেকে এখন মুখ খুলছেন। কেউবা পরবর্তী ঝামেলার ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তথ্য দিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, দালিলিক প্রমাণ, থানায় থাকা রেকর্ড এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা বিস্তর তথ্যে এটা নিশ্চিত যে, ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড ব্যবহারে রাজধানীসহ দেশব্যাপী যে নব্য লুটেরা গ্রুপ অবৈধভাবে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা-স্বর্ণালংকার এবং বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছে সোহেল রানা তাদের দলভুক্ত। সাভারের কলমা, সিএন্ডবি এলাকার ঝুট ব্যবসার একক নিয়ন্ত্রক তিনি। ওই এলাকায় চাঁদাবাজি আর জমি নিয়ে ছলচাতুরীতে তিনি সিদ্ধহস্ত। আর নারী? সেটি তার হাতের খেলনা। যাকে ইচ্ছা কাছে টানেন, ছুড়ে মারতেও ইতস্ততবোধ করেন না। তবে ঝামেলা যে হয়নি তা কিন্তু নয়। এ পর্যন্ত ৪টি বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। যাদের দু’জনকে ছেড়ে (ডিভোর্স) দিয়েছেন। চতুর্থজনকে ঘরেই তুলেননি। তবে সালিশে সন্তানের দায় নিতে বাধ্য হয়েছেন। স্ত্রীকে কিছু অর্থকড়িও দিয়েছেন-দিচ্ছেন। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী নিয়ে বেশ সুখে-শান্তিতে আছেন তিনি- বলছেন তার ঘনিষ্ঠজন ও পরিবারের সদস্যরা। তাদের দেয়া তথ্য মতে, ‘প্লে বয়’ সোহেলের বর্তমান স্ত্রী তারই বেয়াইন (বোনের ননদ)। স্বামী ছিলেন বিদেশ বিভূঁইয়ে। আত্মীয়তার সুবাদে তার জীবনে সোহেলের প্রবেশ। প্রেম গভীর থেকে গভীরতর হলে এক সন্তানকে নিয়ে প্রথম স্বামীকে ছেড়ে বন্ধু সোহেলের সংসারে চলে আসেন। অবশ্য তিনি স্থানীয় মাতব্বরের মেয়ে হওয়ায় স্ত্রীর মর্যাদা আদায় করেছেন বেশ সহজে। আর তার সংসারের হালও ধরেছেন বেশ শক্তভাবে। পরিচিত মহলে ওই নারীর প্রশংসাও শোনা যায়।
বর্তমানে ভারতে থাকা সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নিতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে পরিচয় পেয়ে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে অন্য নাম্বার থেকে দফায় দফায় চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি ধরেননি।
জনশ্রুতি আছে সোহেল ‘ব্যবসা’ এবং ‘অবস্থা’ বুঝে নেতা বদলান। বিএনপি জমানায় যখন প্রথম ঝুট ব্যবসায় নামেন তখন দলটির স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে চলতেন। পরবর্তীতে তার আত্মীয় মুরাদ জং সাভারের এমপি হলে তার নাম ভাঙ্গিয়ে কাজ চালাতেন। এক সময় মুরাদ জংয়ের ‘ব্যবসা দেখছেন’ বলেও প্রচার করতেন। জং-য়ের আমল শেষ হলে স্থানীয় এমপি এনামুর রহমানের কাছে ভিড়েন। এবার এনামুর রহমান ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে তাকে নিয়ে এলাকায় বেশক’টি প্রোগ্রাম করে ঘনিষ্ঠতা প্রচারের চেষ্টা করেন। ওই এলাকা থেকে এমপি মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হাসান তুহিনের সঙ্গেও সখ্য রয়েছে পরবর্তী রাজনীতির জন্য। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি রহস্য যে, সোহেল আসলে কার লোক? দলে তার পদ-পদবি-ই-বা কি? স্থানীয় কোনো নেতা এটা স্পষ্ট করতে পারেননি। সোহেলের ঘনিষ্ঠ মহলে প্রচার আছে ঢাকার ক্যাসিনোতেও তার অনিয়মিত যাতায়াত ছিল। এটা নিশ্চিত করা যায়নি। যুবলীগের এক নেতার হাত ধরে এই জগতে তার প্রবেশ।
সোহেল সাভার সদরে নিজ সাম্রাজ্য ধরে রাখতে কখন যে কাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন তা নিয়ে ভয়ে থাকেন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী এবং নেতারা। এক নেতা মানবজমিনকে বলেন, ফেসবুকে নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার প্রচার চালাতে তিনি বেতন দিয়ে কর্মচারী রেখেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে আছে তার ধন দৌলত আর গ্যাংবাজির নানা চিহ্ন। তিনি যে কত সম্পদের মালিক? সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারই এক কর্মচারী। ফেসবুকে দেয়া নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে হেলান নিয়ে পত্রিকা পড়া অবস্থার একটি ছবিতে ওই কর্মচারী লিখেছেন- স্যার আপনি এত ধনী?
অনুসন্ধান বলছে, সোহেল এখন অনেক পয়সাওয়ালা। কী নেই তার! টাকা পয়সা স্বর্ণালংকার বাড়ি, দামি গাড়ি (বর্তমানে ব্যবহার করছেন ল্যান্ড ক্রুজার, প্রাডো, টিএক্স টয়োটা) সবই আছে তার। কিন্তু তার ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলটি এখনো ততটা সমৃদ্ধ নয়। কারণ তার ‘মেসার্স সাদিয়া এন্টারপ্রাইজ’ নামের বৈধ যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেটার আয় তেমন একটা নয়। এলাকাবাসী জানিয়েছেন- এটি নামসর্বস্ব। সোহেল এবং তার ভাই নাসির উদ্দিনের কু-নজর পড়েছে কলমা এবং সিএন্ডবি এলাকার একজন জমির মালিকও তাদের ‘বখরা’ না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভূমি হস্তান্তর করতে পারেননি। গত ৬-৭ বছর ধরে এভাবেই চলছে। ’১৬ সালে সোহেল চেয়ারম্যান হওয়ার পর তার দখলধারীর কৌশল পাল্টেছে। জমি দখল করেন বড় ভাই, স্বত্ব দাবি করে সাইনবোর্ডও টানান তিনি। চেয়ারম্যান হিসাবে সালিশ করেন সোহেল। মধ্যস্থতায় দখল ছাড়তে একটি আপসনামা হয়। ধার্য্য করা অর্থ চেকে বা ক্যাশে পরিশোধ হলে জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়। কেবল জমিই নয়, ওই এলাকায় স্কুল-কলেজ চালাতেও তাকে ভাগ দিতে হয়। না হয় সোহেল ক্যাডারদের আঘাত-অত্যাচার চলতে থাকে অবিরত! ইতালিতে স্থায়ীভাবে বসবাসরত কলমার মীর ফ্যামিলির সন্তান মো. আবদুল হান্নান যেমনটি বলছিলেন। ২০১১ সালে বিয়ে করতে দেশে এসেছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করে বের হওয়া ক’জন যুবক তার এলাকায় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল করতে উদ্যোগী হন। হান্নান ছিলেন সহ-উদ্যোক্তা। সোহেল কিছুতেই এটি হতে দেবেন না। হুমকি-ধামকি, আর নানা অন্যায় আবদার। রাজি না হওয়ায় একদিন হামলা করে বসে তার সহযোগী ক্যাডাররা। সেলিম নামের এক ক্যাডারের আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে আবদুল হান্নানের বৃদ্ধ মা চোখে আঘাত পান। আজও সেই চোখ ভালো হয়নি। শনিবার টেলিফোনে রোমে থাকা হান্নান মানবজমিনকে বলছিলেন- কলমার স্থায়ী বাসিন্দাদের সঙ্গে একসময় নিয়মিত ঝামেলা হতো সোহেলের। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে তার প্রতিপত্তি এতটাই বেড়েছে যে, এখন তার গোষ্ঠীর লোকজনও তাকে সমীহ করে চলেন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে ওই এলাকায় সোহেলের কথাই শেষ কথা। বাইরের লোকজন তো তার কাছে রীতিমতো জিম্মি। কলমায় যে ক’টা কারখানা আছে তার ঝুটের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। ওই এলাকায় স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস, উইন্টার ড্রেস, হট ড্রেস লিমিটেডসহ অনেক কারখানা রয়েছে জানিয়ে হান্নান বলেন, ওই সব কারখানার জমি কেনা থেকে শুরু করে দখল বুঝিয়ে দেয়া, কারখানা প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসা পরিচালনায় সোহেল চেয়ারম্যানকে হয় ‘ব্যবসা’ না হয় ‘বখরা’ দিতে হয়। অনুসন্ধানে অতি সম্প্রতি দুই কোটি টাকার একটি এবং ৫০ লাখ টাকার অপরটি- তার মোট দুটি কমিশন আদায়ের তথ্য মিলেছে। যার দালিলিক প্রমাণও হাতে পেয়েছে মানবজমিন।
রেকর্ড বলছে, বহুবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। রানাপ্লাজা ধসের পর দুনিয়া জুড়ে কুখ্যাতি পাওয়া রানার নামের সঙ্গে সোহেল রানার নামের মিল থাকায় তার ছবি (ভুলবশত) ছাপা হয়েছিল একটি প্রতিষ্ঠিত জাতীয় দৈনিকে। ২০১৭ সালের ২৭শে জানুয়ারি দেশের প্রতিষ্ঠিত আরেকটি ইংরেজি দৈনিকে তিনি খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন সড়ক ও জনপথের কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই সাভার এলাকার মহাসড়কের পাশে থাকা গাছ কেটে নিয়ে। সেই সময়ে তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি হয়েছিল।
সোহেলের গ্যাংবাজিসহ যত অপকর্ম: ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বরে সাভারের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম সোহেলের। বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আতাউল্লাহ মাস্টার নামে তার খ্যাতি ইউনিয়নজুড়ে। তার ৩ ছেলের মধ্যে সবার ছোট সোহেল। অতি আদরের ছেলেটির আচরণে বিব্রত শিক্ষক বাবা বাধ্য হয়ে বাড়ি ছাড়তে হুকুম দেন। স্বজন-শুভানুধ্যায়ীদের হস্তক্ষেপে অবশ্য শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। কাছাকাছি সময়ে সিএন্ডবি এলাকায় ঘটে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। এতে নিহত হন আতাউল্লাহ মাস্টারের দ্বিতীয় ছেলে অর্থাৎ সোহেলের মেজ ভাই। ওই ঘটনার পর থেকে মুষড়ে পড়েন তিনি, নব্বই ছুঁইছুঁই ওই ব্যক্তিত্ব এখনো আছেন সেভাবেই। এলাকার লোকজন জানান, যে সিএন্ডবি এলাকায় ভাই হারিয়েছেন সোহেল এখন সেই এলাকার সমস্ত যানবাহনের নিয়ন্ত্রক তিনি। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ে তার বেতনধারী কর্মচারী রয়েছে। ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে সোহেল হেন কৌশল নেই যা গ্রহণ করেন না। ২০১৪ সালের ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে রাসেল নামে একজনকে তিনি গুলি করেছিলেন।
সে আজীবন পঙ্গুত্ববরণ করেছে। ওই ঘটনায় রাসেলের বড় ভাই আমিনুল সাভার মডেল থানায় মামলা করেছিলেন। অন্তত ৬ জন প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী দিয়েছেন। ওই মামলায় সোহেল গ্রেপ্তার হয়েছিল। থানায় থাকার রেকর্ড মতে, ওই ঘটনায় তার ৭ জন সহযোগীর নামে মামলা হয়েছিল। তার দু’জন ঘনিষ্ঠ সহযোগী (দুই সেলিম)সহ তাকে আটক করেছিল পুলিশ। অন্যরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিল। যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছিল। তারা হলেন- সোহেলের বড় ভাই, মো. নাছির উদ্দিন, রফিকুল ইসলামের ছেলে শহীদুল ইসলাম। তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মনির হোসেন, তফিজ উদ্দিন শিকদারের ছেলে মো. সিহাব, মৃত রাহাব (রায়হান) আলীর ছেলে সেলিম আহমেদ, পিয়ার আলীর ছেলে মো. সেলিম ওরফে জামাই সেলিম এবং বাচ্চু মিয়ার ছেলে ফরহাদ হোসেন। এরা সবাই কলমা এলাকার বাসিন্দা। সোহেলের সহযোগী ক্যাডার গ্রুপে দিনে দিনে নতুন নাম সংযোজিত হচ্ছে। গ্রুপের কলেবরও বাড়ছে। বাড়ছে ধান্ধাও। বর্তমানে তার জমি থেকে চাঁদাবাজিতে যে সহযোগীরা সক্রিয় তারা হলেন- রকমান আলীর ছেলে কামাল, খলিল উল্লাহ’র ছেলে মোহন, কিয়াম উদ্দিন কেবলার ছেলে সিরাজ, শাহাব উদ্দিনের ছেলে এবং জ্যোতিষী মোস্তফার ভাই সাহাব উদ্দিন, মৃত আবদুল গফুরের ছেলে জালাল উদ্দিন রুমি, আবু মিয়ার নাতি বাবু, মফিজুদ্দিনের ছেলে শুকুর আলী, সোহাগ, হাশেম প্রমুখ। কামাল, মনির দু’জন আগে বিএনপির সমর্থনকারী হলেও এখন তারা সোহেলের পঞ্চপাণ্ডব দলের গুরুত্বপূর্ণ। ওই দলের অপর ৩ জন হলেন- তার ভাই নাসির, জামাই সেলিম এবং শহীদুল ইসলাম। অভিযোগ আছে ওই এলাকায় সেলিম মণ্ডল নামে একজন ঝুট ব্যবসা করতো। তাকে নানাভাবে পঙ্গু করে এখন সেটি সোহেলের কব্জায়। থানা-পুলিশ আর আদালতের বারান্দাই এখন সেলিম মণ্ডলের ঠিকানা।
বৈশাখী আসরে চেয়ারম্যানের ভাইয়ের জুয়ার বোর্ড, অতঃপর পুলিশি অভিযান: অভিযোগ আছে গত ১৪ই এপ্রিল নববর্ষ উদ্যাপনে দক্ষিণ কলমায় বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। এতে এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। সপ্তাহব্যাপী আয়োজন ছিল এটি। কিন্তু চেয়ারম্যান সোহেলের ভাই নাসির উদ্দিনের জুয়ার বোর্ড বসানোর কারণে পুলিশ তৃতীয় দিনেই সেখানে অভিযান চালায় এবং মেলা ভণ্ডুল করে দেয়। স্থানীয় মেম্বার এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সাভার সার্কেলের এসপি জানান, ওই এলাকায় বিভিন্ন ঘটনাই আসে। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন।
তার চাঁদাবাজি, গ্যাংবাজিতে অতিষ্ঠদের ভাষ্য মতে, অবৈধ অর্থে রানার উত্থান রূপকথাকেও হার মানিয়েছে। ভুক্তভোগীদের অনেকে এখন মুখ খুলছেন। কেউবা পরবর্তী ঝামেলার ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তথ্য দিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, দালিলিক প্রমাণ, থানায় থাকা রেকর্ড এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা বিস্তর তথ্যে এটা নিশ্চিত যে, ক্ষমতাসীন দলের সাইনবোর্ড ব্যবহারে রাজধানীসহ দেশব্যাপী যে নব্য লুটেরা গ্রুপ অবৈধভাবে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা-স্বর্ণালংকার এবং বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছে সোহেল রানা তাদের দলভুক্ত। সাভারের কলমা, সিএন্ডবি এলাকার ঝুট ব্যবসার একক নিয়ন্ত্রক তিনি। ওই এলাকায় চাঁদাবাজি আর জমি নিয়ে ছলচাতুরীতে তিনি সিদ্ধহস্ত। আর নারী? সেটি তার হাতের খেলনা। যাকে ইচ্ছা কাছে টানেন, ছুড়ে মারতেও ইতস্ততবোধ করেন না। তবে ঝামেলা যে হয়নি তা কিন্তু নয়। এ পর্যন্ত ৪টি বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। যাদের দু’জনকে ছেড়ে (ডিভোর্স) দিয়েছেন। চতুর্থজনকে ঘরেই তুলেননি। তবে সালিশে সন্তানের দায় নিতে বাধ্য হয়েছেন। স্ত্রীকে কিছু অর্থকড়িও দিয়েছেন-দিচ্ছেন। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী নিয়ে বেশ সুখে-শান্তিতে আছেন তিনি- বলছেন তার ঘনিষ্ঠজন ও পরিবারের সদস্যরা। তাদের দেয়া তথ্য মতে, ‘প্লে বয়’ সোহেলের বর্তমান স্ত্রী তারই বেয়াইন (বোনের ননদ)। স্বামী ছিলেন বিদেশ বিভূঁইয়ে। আত্মীয়তার সুবাদে তার জীবনে সোহেলের প্রবেশ। প্রেম গভীর থেকে গভীরতর হলে এক সন্তানকে নিয়ে প্রথম স্বামীকে ছেড়ে বন্ধু সোহেলের সংসারে চলে আসেন। অবশ্য তিনি স্থানীয় মাতব্বরের মেয়ে হওয়ায় স্ত্রীর মর্যাদা আদায় করেছেন বেশ সহজে। আর তার সংসারের হালও ধরেছেন বেশ শক্তভাবে। পরিচিত মহলে ওই নারীর প্রশংসাও শোনা যায়।
বর্তমানে ভারতে থাকা সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নিতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে পরিচয় পেয়ে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে অন্য নাম্বার থেকে দফায় দফায় চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি ধরেননি।
জনশ্রুতি আছে সোহেল ‘ব্যবসা’ এবং ‘অবস্থা’ বুঝে নেতা বদলান। বিএনপি জমানায় যখন প্রথম ঝুট ব্যবসায় নামেন তখন দলটির স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে চলতেন। পরবর্তীতে তার আত্মীয় মুরাদ জং সাভারের এমপি হলে তার নাম ভাঙ্গিয়ে কাজ চালাতেন। এক সময় মুরাদ জংয়ের ‘ব্যবসা দেখছেন’ বলেও প্রচার করতেন। জং-য়ের আমল শেষ হলে স্থানীয় এমপি এনামুর রহমানের কাছে ভিড়েন। এবার এনামুর রহমান ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে তাকে নিয়ে এলাকায় বেশক’টি প্রোগ্রাম করে ঘনিষ্ঠতা প্রচারের চেষ্টা করেন। ওই এলাকা থেকে এমপি মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হাসান তুহিনের সঙ্গেও সখ্য রয়েছে পরবর্তী রাজনীতির জন্য। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি রহস্য যে, সোহেল আসলে কার লোক? দলে তার পদ-পদবি-ই-বা কি? স্থানীয় কোনো নেতা এটা স্পষ্ট করতে পারেননি। সোহেলের ঘনিষ্ঠ মহলে প্রচার আছে ঢাকার ক্যাসিনোতেও তার অনিয়মিত যাতায়াত ছিল। এটা নিশ্চিত করা যায়নি। যুবলীগের এক নেতার হাত ধরে এই জগতে তার প্রবেশ।
সোহেল সাভার সদরে নিজ সাম্রাজ্য ধরে রাখতে কখন যে কাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন তা নিয়ে ভয়ে থাকেন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী এবং নেতারা। এক নেতা মানবজমিনকে বলেন, ফেসবুকে নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার প্রচার চালাতে তিনি বেতন দিয়ে কর্মচারী রেখেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে আছে তার ধন দৌলত আর গ্যাংবাজির নানা চিহ্ন। তিনি যে কত সম্পদের মালিক? সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারই এক কর্মচারী। ফেসবুকে দেয়া নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে হেলান নিয়ে পত্রিকা পড়া অবস্থার একটি ছবিতে ওই কর্মচারী লিখেছেন- স্যার আপনি এত ধনী?
অনুসন্ধান বলছে, সোহেল এখন অনেক পয়সাওয়ালা। কী নেই তার! টাকা পয়সা স্বর্ণালংকার বাড়ি, দামি গাড়ি (বর্তমানে ব্যবহার করছেন ল্যান্ড ক্রুজার, প্রাডো, টিএক্স টয়োটা) সবই আছে তার। কিন্তু তার ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলটি এখনো ততটা সমৃদ্ধ নয়। কারণ তার ‘মেসার্স সাদিয়া এন্টারপ্রাইজ’ নামের বৈধ যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেটার আয় তেমন একটা নয়। এলাকাবাসী জানিয়েছেন- এটি নামসর্বস্ব। সোহেল এবং তার ভাই নাসির উদ্দিনের কু-নজর পড়েছে কলমা এবং সিএন্ডবি এলাকার একজন জমির মালিকও তাদের ‘বখরা’ না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভূমি হস্তান্তর করতে পারেননি। গত ৬-৭ বছর ধরে এভাবেই চলছে। ’১৬ সালে সোহেল চেয়ারম্যান হওয়ার পর তার দখলধারীর কৌশল পাল্টেছে। জমি দখল করেন বড় ভাই, স্বত্ব দাবি করে সাইনবোর্ডও টানান তিনি। চেয়ারম্যান হিসাবে সালিশ করেন সোহেল। মধ্যস্থতায় দখল ছাড়তে একটি আপসনামা হয়। ধার্য্য করা অর্থ চেকে বা ক্যাশে পরিশোধ হলে জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়। কেবল জমিই নয়, ওই এলাকায় স্কুল-কলেজ চালাতেও তাকে ভাগ দিতে হয়। না হয় সোহেল ক্যাডারদের আঘাত-অত্যাচার চলতে থাকে অবিরত! ইতালিতে স্থায়ীভাবে বসবাসরত কলমার মীর ফ্যামিলির সন্তান মো. আবদুল হান্নান যেমনটি বলছিলেন। ২০১১ সালে বিয়ে করতে দেশে এসেছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করে বের হওয়া ক’জন যুবক তার এলাকায় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল করতে উদ্যোগী হন। হান্নান ছিলেন সহ-উদ্যোক্তা। সোহেল কিছুতেই এটি হতে দেবেন না। হুমকি-ধামকি, আর নানা অন্যায় আবদার। রাজি না হওয়ায় একদিন হামলা করে বসে তার সহযোগী ক্যাডাররা। সেলিম নামের এক ক্যাডারের আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে আবদুল হান্নানের বৃদ্ধ মা চোখে আঘাত পান। আজও সেই চোখ ভালো হয়নি। শনিবার টেলিফোনে রোমে থাকা হান্নান মানবজমিনকে বলছিলেন- কলমার স্থায়ী বাসিন্দাদের সঙ্গে একসময় নিয়মিত ঝামেলা হতো সোহেলের। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে তার প্রতিপত্তি এতটাই বেড়েছে যে, এখন তার গোষ্ঠীর লোকজনও তাকে সমীহ করে চলেন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে ওই এলাকায় সোহেলের কথাই শেষ কথা। বাইরের লোকজন তো তার কাছে রীতিমতো জিম্মি। কলমায় যে ক’টা কারখানা আছে তার ঝুটের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। ওই এলাকায় স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস, উইন্টার ড্রেস, হট ড্রেস লিমিটেডসহ অনেক কারখানা রয়েছে জানিয়ে হান্নান বলেন, ওই সব কারখানার জমি কেনা থেকে শুরু করে দখল বুঝিয়ে দেয়া, কারখানা প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসা পরিচালনায় সোহেল চেয়ারম্যানকে হয় ‘ব্যবসা’ না হয় ‘বখরা’ দিতে হয়। অনুসন্ধানে অতি সম্প্রতি দুই কোটি টাকার একটি এবং ৫০ লাখ টাকার অপরটি- তার মোট দুটি কমিশন আদায়ের তথ্য মিলেছে। যার দালিলিক প্রমাণও হাতে পেয়েছে মানবজমিন।
রেকর্ড বলছে, বহুবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। রানাপ্লাজা ধসের পর দুনিয়া জুড়ে কুখ্যাতি পাওয়া রানার নামের সঙ্গে সোহেল রানার নামের মিল থাকায় তার ছবি (ভুলবশত) ছাপা হয়েছিল একটি প্রতিষ্ঠিত জাতীয় দৈনিকে। ২০১৭ সালের ২৭শে জানুয়ারি দেশের প্রতিষ্ঠিত আরেকটি ইংরেজি দৈনিকে তিনি খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন সড়ক ও জনপথের কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই সাভার এলাকার মহাসড়কের পাশে থাকা গাছ কেটে নিয়ে। সেই সময়ে তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি হয়েছিল।
সোহেলের গ্যাংবাজিসহ যত অপকর্ম: ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বরে সাভারের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম সোহেলের। বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আতাউল্লাহ মাস্টার নামে তার খ্যাতি ইউনিয়নজুড়ে। তার ৩ ছেলের মধ্যে সবার ছোট সোহেল। অতি আদরের ছেলেটির আচরণে বিব্রত শিক্ষক বাবা বাধ্য হয়ে বাড়ি ছাড়তে হুকুম দেন। স্বজন-শুভানুধ্যায়ীদের হস্তক্ষেপে অবশ্য শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। কাছাকাছি সময়ে সিএন্ডবি এলাকায় ঘটে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। এতে নিহত হন আতাউল্লাহ মাস্টারের দ্বিতীয় ছেলে অর্থাৎ সোহেলের মেজ ভাই। ওই ঘটনার পর থেকে মুষড়ে পড়েন তিনি, নব্বই ছুঁইছুঁই ওই ব্যক্তিত্ব এখনো আছেন সেভাবেই। এলাকার লোকজন জানান, যে সিএন্ডবি এলাকায় ভাই হারিয়েছেন সোহেল এখন সেই এলাকার সমস্ত যানবাহনের নিয়ন্ত্রক তিনি। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ে তার বেতনধারী কর্মচারী রয়েছে। ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে সোহেল হেন কৌশল নেই যা গ্রহণ করেন না। ২০১৪ সালের ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে রাসেল নামে একজনকে তিনি গুলি করেছিলেন।
সে আজীবন পঙ্গুত্ববরণ করেছে। ওই ঘটনায় রাসেলের বড় ভাই আমিনুল সাভার মডেল থানায় মামলা করেছিলেন। অন্তত ৬ জন প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী দিয়েছেন। ওই মামলায় সোহেল গ্রেপ্তার হয়েছিল। থানায় থাকার রেকর্ড মতে, ওই ঘটনায় তার ৭ জন সহযোগীর নামে মামলা হয়েছিল। তার দু’জন ঘনিষ্ঠ সহযোগী (দুই সেলিম)সহ তাকে আটক করেছিল পুলিশ। অন্যরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিল। যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছিল। তারা হলেন- সোহেলের বড় ভাই, মো. নাছির উদ্দিন, রফিকুল ইসলামের ছেলে শহীদুল ইসলাম। তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মনির হোসেন, তফিজ উদ্দিন শিকদারের ছেলে মো. সিহাব, মৃত রাহাব (রায়হান) আলীর ছেলে সেলিম আহমেদ, পিয়ার আলীর ছেলে মো. সেলিম ওরফে জামাই সেলিম এবং বাচ্চু মিয়ার ছেলে ফরহাদ হোসেন। এরা সবাই কলমা এলাকার বাসিন্দা। সোহেলের সহযোগী ক্যাডার গ্রুপে দিনে দিনে নতুন নাম সংযোজিত হচ্ছে। গ্রুপের কলেবরও বাড়ছে। বাড়ছে ধান্ধাও। বর্তমানে তার জমি থেকে চাঁদাবাজিতে যে সহযোগীরা সক্রিয় তারা হলেন- রকমান আলীর ছেলে কামাল, খলিল উল্লাহ’র ছেলে মোহন, কিয়াম উদ্দিন কেবলার ছেলে সিরাজ, শাহাব উদ্দিনের ছেলে এবং জ্যোতিষী মোস্তফার ভাই সাহাব উদ্দিন, মৃত আবদুল গফুরের ছেলে জালাল উদ্দিন রুমি, আবু মিয়ার নাতি বাবু, মফিজুদ্দিনের ছেলে শুকুর আলী, সোহাগ, হাশেম প্রমুখ। কামাল, মনির দু’জন আগে বিএনপির সমর্থনকারী হলেও এখন তারা সোহেলের পঞ্চপাণ্ডব দলের গুরুত্বপূর্ণ। ওই দলের অপর ৩ জন হলেন- তার ভাই নাসির, জামাই সেলিম এবং শহীদুল ইসলাম। অভিযোগ আছে ওই এলাকায় সেলিম মণ্ডল নামে একজন ঝুট ব্যবসা করতো। তাকে নানাভাবে পঙ্গু করে এখন সেটি সোহেলের কব্জায়। থানা-পুলিশ আর আদালতের বারান্দাই এখন সেলিম মণ্ডলের ঠিকানা।
বৈশাখী আসরে চেয়ারম্যানের ভাইয়ের জুয়ার বোর্ড, অতঃপর পুলিশি অভিযান: অভিযোগ আছে গত ১৪ই এপ্রিল নববর্ষ উদ্যাপনে দক্ষিণ কলমায় বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। এতে এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। সপ্তাহব্যাপী আয়োজন ছিল এটি। কিন্তু চেয়ারম্যান সোহেলের ভাই নাসির উদ্দিনের জুয়ার বোর্ড বসানোর কারণে পুলিশ তৃতীয় দিনেই সেখানে অভিযান চালায় এবং মেলা ভণ্ডুল করে দেয়। স্থানীয় মেম্বার এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সাভার সার্কেলের এসপি জানান, ওই এলাকায় বিভিন্ন ঘটনাই আসে। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন।
No comments