প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান -সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সফররত
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ বলেছেন, নিরাপদ ও সম্মানজনক
প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান। তবে প্রত্যাবাসনের সঙ্গে
সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়টিও সমাধান হওয়া জরুরি। তা না হলে এ
সঙ্কট আরও জটিল হয়ে যেতে পারে। নিজেদের অনেক সমস্যা থাকার পরও লাখ লাখ
রোহিঙ্গাকে নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ যে মানবিকতা দেখিয়েছে তার
জন্য ঢাকার প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করা ছাড়াও তিনি নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে
মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান। বলেন কেবল মাত্র অঙ্গীকার নয়, রোহিঙ্গা
সংকটের বাস্তবসম্মত ও কার্যকর সমাধানে দৃশ্যমান পদক্ষেপ মিয়ানমানকেই নিতে
হবে। রাজধানীর একটি হোটেলে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপে মন্ত্রী এসব
কথা বলেন। সেখানে তিনি ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা,
মুসলিম বিশ্বের সংকট, কাশ্মীর ও আসামের এনআরসিইস্যুসহ সহ সম-সমায়িক বিষয়াদি
নিয়ে কথা বলেন। রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে বছরের পর
বছর ধরে লাখো আফগান শরনার্থীকে নিয়ে বিপাকে থাকা ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের বোঝা বিশ্ববাসী সবাই মিলে ভাগাভাগি করে নেয়া জরুরি।
ইরান শরানার্থী সংকট মোকাবিলায় প্রতি বছর প্রায় ১০ বিলিয়ল ডলার ব্যয় করে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক ওই শরনার্থীদের সব ভূমে প্রত্যাবাসন এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত বাংলাদেশের পাশে আরও শক্ত করে দাড়ানো। কাশ্মীর প্রশ্নে ইরানের অবস্থান সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সেখানে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি দেখতে চাই না। ভারত আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ট বন্ধু। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। কাশ্মীর এবং আসামের এনআরসি ইস্যু দুই ইস্যুতে ইরান উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্ধু হিসাবে এ দুই ইস্যুতে আমরা আরও বেশী ডায়ালগ দেখতে চাই। আমরা মনে করি যে কোন সমস্যায় সংলাপ সমাধান এনে দিতে পারে। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটাকে আমরা অবরোধ বলি না। এটা তাদের ‘বাড়াবাড়ি’ বলেই মনে করি। যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণ বন্ধের অনুরোধও জানান তিনি। তবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সঙ্গে তেহরানের কোন ধরণের দ্বিপক্ষীয় সংলাপ বা আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও মধ্যপ্রাচ্য সংকট উত্তরণে ইরান যে কোন সময় যেকোন স্থানে আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে জানান জাভাদ জারিফ। তিনি এ সংকটের জন্য সৌদি আরব এবং তার মিত্রদের দোষারোপ করেন। বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সকালের বৈঠকেও আমি বলেছি, মুসলিম বিশ্বের যে কোন সংকটের সমাধানে ইরান আন্তরিক। আমরা আলোচনার জন্য তৈরি। মন্ত্রী সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের অস্ত্র কেনা সংক্রান্ত ব্যয়ের পরিসংখ্যান নিয়ে বলেন, কোন দেশ যদি মনে করে অস্ত্র তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তবে ভুল করবে। আলোচনা এবং শান্তির মধ্যে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা রয়েছে। উদ্বোধনী স্টেটমেন্ট এবং প্রশ্নোত্তর সেশনে ইরানের মন্ত্রী একাধিকবার বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ যে কোন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে পারে, এটা বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার। তবে ইরান মনে করে ঢাকা- তেহরাণ বাণিজ্য দেশটির নিজস্ব মুদ্রায় হতে পারে। কিন্তু কিভাবে এটি হবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অবরোধ মোকাবিলা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং সেক্টরে ইনোভেশন নিয়ে এসেছে। এ ইস্যুতে তেহরাণ পিএইচডি করে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেন।
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ভাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে ওআইসির শক্তিশালী ভূমিকা পালনের আহবান প্রধানমন্ত্রীর: এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা’র (ওআইসি) মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সংহতি সৃষ্টি এবং ভাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে শক্তিশালী ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যকার ভাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে ওআইসি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে। সফররত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোহাম্মাদ জাভাদ জারিফ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তেঁজগাওস্থ কার্যালয়ে বুধবার সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিবদমান সংঘাতের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিমরা তাঁদের নিজেদের মধ্যকার বিভাজনের জন্যই রক্তপাতের শিকার হচ্ছে। এর ফলে তৃতীয় পক্ষ এর সুবিধা ভোগ করছে। প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় এমন অভিমত ব্যক্ত করেন যে, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যকার বিবাদমান সংঘাত দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি ইরানী মন্ত্রীকে অবহিত করেন, তিনি নিজেই দু’জন শিয়া বালিকাকে দত্তক নিয়েছেন, যারা ভয়াবহ নিমতলী অগ্নিকান্ডের শিকার হয়েছিল। বাংলাদেশ এবং ইরানের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে ঐতিহাসিক আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলা ভাষার বহু শব্দ ফার্সি থেকে এসেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জাভাদ জারিফ বুধবার থেকে রাজধানীতে শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী তৃতীয় (আইওআরএ) ব্লু-ইকোনমি মিনিষ্ট্রিয়াল কনফারেন্সে যোগদানের জন্য মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় আসেন। তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানীর শুভেচ্ছাও প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দেন।
ইরান শরানার্থী সংকট মোকাবিলায় প্রতি বছর প্রায় ১০ বিলিয়ল ডলার ব্যয় করে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক ওই শরনার্থীদের সব ভূমে প্রত্যাবাসন এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত বাংলাদেশের পাশে আরও শক্ত করে দাড়ানো। কাশ্মীর প্রশ্নে ইরানের অবস্থান সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সেখানে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি দেখতে চাই না। ভারত আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ট বন্ধু। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। কাশ্মীর এবং আসামের এনআরসি ইস্যু দুই ইস্যুতে ইরান উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্ধু হিসাবে এ দুই ইস্যুতে আমরা আরও বেশী ডায়ালগ দেখতে চাই। আমরা মনে করি যে কোন সমস্যায় সংলাপ সমাধান এনে দিতে পারে। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটাকে আমরা অবরোধ বলি না। এটা তাদের ‘বাড়াবাড়ি’ বলেই মনে করি। যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণ বন্ধের অনুরোধও জানান তিনি। তবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সঙ্গে তেহরানের কোন ধরণের দ্বিপক্ষীয় সংলাপ বা আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও মধ্যপ্রাচ্য সংকট উত্তরণে ইরান যে কোন সময় যেকোন স্থানে আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে জানান জাভাদ জারিফ। তিনি এ সংকটের জন্য সৌদি আরব এবং তার মিত্রদের দোষারোপ করেন। বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সকালের বৈঠকেও আমি বলেছি, মুসলিম বিশ্বের যে কোন সংকটের সমাধানে ইরান আন্তরিক। আমরা আলোচনার জন্য তৈরি। মন্ত্রী সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের অস্ত্র কেনা সংক্রান্ত ব্যয়ের পরিসংখ্যান নিয়ে বলেন, কোন দেশ যদি মনে করে অস্ত্র তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তবে ভুল করবে। আলোচনা এবং শান্তির মধ্যে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা রয়েছে। উদ্বোধনী স্টেটমেন্ট এবং প্রশ্নোত্তর সেশনে ইরানের মন্ত্রী একাধিকবার বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ যে কোন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে পারে, এটা বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার। তবে ইরান মনে করে ঢাকা- তেহরাণ বাণিজ্য দেশটির নিজস্ব মুদ্রায় হতে পারে। কিন্তু কিভাবে এটি হবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অবরোধ মোকাবিলা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে ব্যাংকিং সেক্টরে ইনোভেশন নিয়ে এসেছে। এ ইস্যুতে তেহরাণ পিএইচডি করে ফেলেছে বলেও মন্তব্য করেন।
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ভাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে ওআইসির শক্তিশালী ভূমিকা পালনের আহবান প্রধানমন্ত্রীর: এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা’র (ওআইসি) মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সংহতি সৃষ্টি এবং ভাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে শক্তিশালী ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যকার ভাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে ওআইসি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে। সফররত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোহাম্মাদ জাভাদ জারিফ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তেঁজগাওস্থ কার্যালয়ে বুধবার সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিবদমান সংঘাতের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিমরা তাঁদের নিজেদের মধ্যকার বিভাজনের জন্যই রক্তপাতের শিকার হচ্ছে। এর ফলে তৃতীয় পক্ষ এর সুবিধা ভোগ করছে। প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় এমন অভিমত ব্যক্ত করেন যে, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যকার বিবাদমান সংঘাত দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি ইরানী মন্ত্রীকে অবহিত করেন, তিনি নিজেই দু’জন শিয়া বালিকাকে দত্তক নিয়েছেন, যারা ভয়াবহ নিমতলী অগ্নিকান্ডের শিকার হয়েছিল। বাংলাদেশ এবং ইরানের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে ঐতিহাসিক আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলা ভাষার বহু শব্দ ফার্সি থেকে এসেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জাভাদ জারিফ বুধবার থেকে রাজধানীতে শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী তৃতীয় (আইওআরএ) ব্লু-ইকোনমি মিনিষ্ট্রিয়াল কনফারেন্সে যোগদানের জন্য মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় আসেন। তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানীর শুভেচ্ছাও প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দেন।
No comments