পাওয়ারড ডিপ্লোম্যাসি
কাঠমান্ডুতে
বিমসটেক সম্মেলনের অব্যাবহিত পরেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কে
গুরুত্বপূর্ণ মাত্রায় নড়চড় হয়েছে। এখনও তিস্তার ‘অস্থির’ পানি পূর্বাঞ্চলীয়
প্রতিবেশীদের কাছে প্রবাহিত নাও হতে পারে, তবু এ ইস্যুটি সবচেয়ে
বিবাদমুলক। এ নিয়ে আলোচনা ভিডিও-কনফারেন্সের বাইরে ছিল। এমনকি উচ্চ
পর্যায়ের আলোচনায়ও এ ইস্যুতে তেমন অগ্রগতি হয় নি।
একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ও অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেগম হাসিনার মধ্যে ওই সংলাপ হয়েছে সোমবার। এর প্রধান নির্যাস হলো বাংলাদেশে তিনটি অবকাঠামোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার আর তিন মাস সময় আছে এমন সময়ে এটা করা হয়েছে।
পানির পরিবর্তে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এমন একটি অবস্থানে থাকবেন যাতে নির্বাচনের আগে তিনি ভাবমূর্তি উজ্বল করতে পারেন। আর তা করতে পারেন (সীমান্তের ওপারে) ভেড়ামারা ও মুর্শিদাবাদ জেলা সদর দপ্তরের বেহরামপুর গ্রিডের মাধ্যমে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহের মাধ্যমে।
এখানে জোর দিয়ে কানেকটিভিটি বা সংযুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করা যায়। এ বিষয়টি ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদির ঢাকা সফরের সময় বিবেচনা করা হয়েছিল। তিন বছরে পরেও ভৌগোলিকভাবে অবরুদ্ধ আগরতলা ও আখাউড়ার মধ্যে রেল সংযোগের বিষয়টি আলোচনার টেবিলে রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের আখাউড়া ছিল একটি স্টর্ম সেন্টার বা প্রবল উত্তেজনাপূর্ণ এলাকা। এ ঘটনা দু’দেশের আন্তঃসীমান্ত সংযোগের ক্ষেত্রে একটি উদ্দীপনা যোগাবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুরোপুরি সংশ্লিষ্ট নয় এমন একটি বিষয় হলো বাংলাদেশ রেলওয়ের কুলাউড়া-শাহবাজপুর অংশ পুনর্গঠন বা মেরামত করা।
রেলওয়েতে যৌথ উদ্যোগ অবশ্যই হবে একটি আকর্ষণীয় বিষয়। এটা হলো উভয় দেশের জন্যই একটি লাইফলাইন বা প্রাণশক্তি। ঢাকা ও শিয়ালদাহর মধ্যে রেল সংযোগ পুনরুজ্জীবিত করার কথা এখন জোর দিয়ে বিবেচনা করছে দিল্লি ও ঢাকা। এই রেল সংযোগ এখনও দেশ ভাগের আগের প্রজন্মের কাছে এক নষ্টালজিক স্মৃতি জাগিয়ে তোলে। সোমবার রেল নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে তাতে বাণিজ্য শক্তিশালী করবে, মানুষে-মানুষে সম্পর্ক বৃদ্ধি করবে। মোদি বলেছেন ‘পাওয়ার কানেকটিভিটি’ তার থেকে এটা কম কিছু নয়।
বর্তমানে থেকে বাংলাদেশে মোট ১.১৬ গিগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী মোদি হিসাব বুঝিয়ে দেয়ার মানসিকতায় এই বৃদ্ধি। এক্ষেত্রে সরবরাহ বাড়িয়ে মেগাওয়াট থেকে গিগাওয়াটে নেয়া হয়েছে। এটা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বর্ণালী যুগের একটি প্রতীক।
নজরে পড়ার মতো বিষয় হলো, বাংলাদেশকে বিদ্যুত সরবরাহ বাড়িয়ে ১০০০ মেগাওয়াট করার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তিস্তার পানির স্থাে বিদ্যুতকে বসানো যায় না, তবুও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার আলোচনার প্রাক্কালে বিদ্যুত সরবরাহ পরিকল্পনা অনুমোদন হওয়ার আশা করা যায়।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, সোমবার আমরা আমাদের বিদ্যুত সংযোগ বৃদ্ধি করেছি। রেল সংযোগ বৃদ্ধির জন্য দুটি প্রকল্প শুরু হয়েছে। এর পরের বিষয় হলো প্রযুক্তি। যখন ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আমরা প্রকল্প উদ্বোধন করেছি, তখন তা ভিআইপিদের সফরের ওপর নির্ভর করে আটকে থাকবে না।
এই দিক থেকে আলোচনার টেবিলে মুখোমুকি আলোচনার চেয়ে সোমবারের ভিডিও কনফারেন্স অধিক ফলপ্রসূ ছিল।
আরো অনেক অর্জন করতে হবে। অনেক কিছু এখনও অর্জিত হয় নি।
(ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য স্টেটসম্যানে প্রকাশিত সম্পাদকীয় ‘পাওয়ারড ডিপ্লোম্যাসি’র অনুবাদ)
একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ও অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেগম হাসিনার মধ্যে ওই সংলাপ হয়েছে সোমবার। এর প্রধান নির্যাস হলো বাংলাদেশে তিনটি অবকাঠামোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনে যাওয়ার আর তিন মাস সময় আছে এমন সময়ে এটা করা হয়েছে।
পানির পরিবর্তে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এমন একটি অবস্থানে থাকবেন যাতে নির্বাচনের আগে তিনি ভাবমূর্তি উজ্বল করতে পারেন। আর তা করতে পারেন (সীমান্তের ওপারে) ভেড়ামারা ও মুর্শিদাবাদ জেলা সদর দপ্তরের বেহরামপুর গ্রিডের মাধ্যমে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহের মাধ্যমে।
এখানে জোর দিয়ে কানেকটিভিটি বা সংযুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করা যায়। এ বিষয়টি ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদির ঢাকা সফরের সময় বিবেচনা করা হয়েছিল। তিন বছরে পরেও ভৌগোলিকভাবে অবরুদ্ধ আগরতলা ও আখাউড়ার মধ্যে রেল সংযোগের বিষয়টি আলোচনার টেবিলে রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের আখাউড়া ছিল একটি স্টর্ম সেন্টার বা প্রবল উত্তেজনাপূর্ণ এলাকা। এ ঘটনা দু’দেশের আন্তঃসীমান্ত সংযোগের ক্ষেত্রে একটি উদ্দীপনা যোগাবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুরোপুরি সংশ্লিষ্ট নয় এমন একটি বিষয় হলো বাংলাদেশ রেলওয়ের কুলাউড়া-শাহবাজপুর অংশ পুনর্গঠন বা মেরামত করা।
রেলওয়েতে যৌথ উদ্যোগ অবশ্যই হবে একটি আকর্ষণীয় বিষয়। এটা হলো উভয় দেশের জন্যই একটি লাইফলাইন বা প্রাণশক্তি। ঢাকা ও শিয়ালদাহর মধ্যে রেল সংযোগ পুনরুজ্জীবিত করার কথা এখন জোর দিয়ে বিবেচনা করছে দিল্লি ও ঢাকা। এই রেল সংযোগ এখনও দেশ ভাগের আগের প্রজন্মের কাছে এক নষ্টালজিক স্মৃতি জাগিয়ে তোলে। সোমবার রেল নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে তাতে বাণিজ্য শক্তিশালী করবে, মানুষে-মানুষে সম্পর্ক বৃদ্ধি করবে। মোদি বলেছেন ‘পাওয়ার কানেকটিভিটি’ তার থেকে এটা কম কিছু নয়।
বর্তমানে থেকে বাংলাদেশে মোট ১.১৬ গিগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী মোদি হিসাব বুঝিয়ে দেয়ার মানসিকতায় এই বৃদ্ধি। এক্ষেত্রে সরবরাহ বাড়িয়ে মেগাওয়াট থেকে গিগাওয়াটে নেয়া হয়েছে। এটা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বর্ণালী যুগের একটি প্রতীক।
নজরে পড়ার মতো বিষয় হলো, বাংলাদেশকে বিদ্যুত সরবরাহ বাড়িয়ে ১০০০ মেগাওয়াট করার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তিস্তার পানির স্থাে বিদ্যুতকে বসানো যায় না, তবুও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার আলোচনার প্রাক্কালে বিদ্যুত সরবরাহ পরিকল্পনা অনুমোদন হওয়ার আশা করা যায়।
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, সোমবার আমরা আমাদের বিদ্যুত সংযোগ বৃদ্ধি করেছি। রেল সংযোগ বৃদ্ধির জন্য দুটি প্রকল্প শুরু হয়েছে। এর পরের বিষয় হলো প্রযুক্তি। যখন ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আমরা প্রকল্প উদ্বোধন করেছি, তখন তা ভিআইপিদের সফরের ওপর নির্ভর করে আটকে থাকবে না।
এই দিক থেকে আলোচনার টেবিলে মুখোমুকি আলোচনার চেয়ে সোমবারের ভিডিও কনফারেন্স অধিক ফলপ্রসূ ছিল।
আরো অনেক অর্জন করতে হবে। অনেক কিছু এখনও অর্জিত হয় নি।
(ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য স্টেটসম্যানে প্রকাশিত সম্পাদকীয় ‘পাওয়ারড ডিপ্লোম্যাসি’র অনুবাদ)
No comments