এবার রোবট ‘আইনবিদ’
মামলা লড়ার জন্য আইনজীবীর চাই বিস্তর প্রস্তুতি। এ জন্য দক্ষ ও কার্যকর সহযোগী প্রয়োজন। সেই কাজে এবার রোবট নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইনি প্রতিষ্ঠান। তারা বলছে, এটিই ‘বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন আইনবিদ’। বেকারহোস্টেটলার নামের ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন সাধারণ আইনজীবীরা। দেউলিয়াপনার বিভিন্ন মামলায় তাঁদের সহায়তা করবে রস নামের একটি রোবট বা যন্ত্র। হাজারো দলিলপত্র ঘেঁটে প্রয়োজনীয় তথ্যটি খুঁজে বের করবে এটি। সদ্য স্নাতক আইনের ছাত্রদের অনেকে এ ধরনের কাজের মাধ্যমে পেশাজীবন শুরু করেন। আইবিএমের ওয়াটসন প্রযুক্তিতে তৈরি রোবট একজন আইন গবেষকের ভূমিকা পালন করবে। দেউলিয়াপনার মামলায় প্রয়োজনীয় আইনের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ চিহ্নিত করে সেগুলো ব্যক্তি আইনজীবীদের কাছে তুলে ধরবে এবং নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করবে। রোবটটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রস ইন্টেলিজেন্সের প্রধান নির্বাহী অ্যান্ড্রু অ্যারুডা বলেন, আইনজীবীরা এখন নিজেদের কাজের সুবিধার্থে কিছু সফটওয়্যার ব্যবহার করেন। কিন্তু এগুলো খুব বেশি কাজে লাগে না আর প্রয়োজনীয় তথ্য বের করতে সময়ও বেশি নেয়। তবে নতুন রোবটটিকে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে আইনি গবেষণামূলক কাজকর্মের জন্য।
কম্পিউটারনির্ভর এই রোবটের ব্যবহার হয়তো অচিরেই বাড়বে। আইনের অধ্যাপক রায়ান ক্যালো বলেন, ওয়াটসন প্রযুক্তির রোবট আসলে একটি সহায়ক যন্ত্র মাত্র—আইন বা চিকিৎসা পেশায় যুক্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করার উপযোগী। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে তৈরি বলে এটির সম্ভাবনা অনেক বেশি। আইনি পেশায় রোবট যুক্ত হলে ব্যক্তি আইনজীবীদের চাকরি ছাড়তে হবে কি না, সেই প্রশ্নও সংগত কারণেই উঠেছে। বেকারহোস্টেটলারের প্রধান আইন কর্মকর্তা বব ক্রেইগ বলেন, রস পুরোপুরি মানুষের সমান কাজ করতে পারবে না। এটি আইনজীবীদের কাজে বাড়তি গতিসঞ্চার করবে এবং গুণগত মানের উন্নতি ঘটাতে সহায়তা করবে। রস ইন্টেলিজেন্সও এ বিষয়ে একমত। তাদের ভাষ্য, রোবটের ওপর কাজের একটা ভার চাপিয়ে দেওয়ার ফলে আইনজীবীরা তাঁদের গ্রাহকদের চাহিদার প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারবেন। দলিলপত্র ঘাঁটার সময়টা বাঁচবে। শত শত পৃষ্ঠা পড়ার চেয়ে শুধু প্রয়োজনীয় অনুচ্ছেদটা পড়ে নিয়ে তাঁরা কাজ উদ্ধার করতে পারবেন। তাই নতুন ব্যবস্থাটির নিয়ন্ত্রণ মানুষের হাতেই থাকবে।
No comments