মায়ের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা

মা’ হিসেবে নারীকে ইসলাম বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্থান দিয়েছে। মানবসম্পদের উন্নয়ন, শিশুর যথাযথ লালন-পালন ও রক্ষণাবেক্ষণে মায়ের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। পৃথিবীর আদিকাল থেকে একজন মা তঁার ভালোবাসা, স্নেহ, মায়া-মমতা বিলিয়ে দিয়ে সন্তানের জন্য যে অসামান্য, অমূল্য ও অপরিশোধ্য অবদান রেখে যাচ্ছেন, তা সর্বজনস্বীকৃত। তাই পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মমতাবশে তঁাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত করো এবং বলো: হে আমার প্রতিপালক! তঁাদের প্রতি দয়া করো, যেভাবে শৈশবে তঁারা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।’ (সূরা বিন ইসরাইল, আয়াত: ২৪) নয় মাস গর্ভে ধারণ করে মা তঁার নবজাতককে প্রসব বেদনার অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ করান। নবজাতকের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি আল্লাহ তাআলা মায়ের স্তনে রেখেছেন বিধায় মাকে সর্বোচ্চ মেয়াদকাল দুই বছর বিশেষ প্রয়োজনে আরও ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করিয়ে তিল তিল করে বড় করতে হয়। একজন মায়ের গর্ভকালীন কষ্টের কথা আল্লাহ তাআলা ব্যক্ত করেছেন, ‘আমি মানুষকে তার পিতামাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি, জননী সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে গর্ভে ধারণ করে এবং তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে, সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও।’ (সূরা: লুকমান, আয়াত: ১৪) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সঙ্গে এবং প্রসব করে কষ্টের সঙ্গে, তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়াতে লাগে ৩০ মাস।’ (সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ১৫)
সন্তানের ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কোমল ব্যবহার পিতামাতার অবশ্যই প্রাপ্য। বিশেষ করে সন্তানের আন্তরিক ভালোবাসা, ভক্তি-শ্রদ্ধা মা পাওয়ার বেশি অধিকারী। মাকে তিন গুণ অগ্রাধিকার দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো, অতঃপর মাতার সঙ্গে, অতঃপর মাতার সঙ্গে, অতঃপর পিতার সঙ্গে, অতঃপর নিকট-আত্মীয়ের সঙ্গে।’ একদা এক ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে অনেকবার জিজ্ঞাসা করল, আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশি অধিকারী কে? তিনি বললেন, তোমার মা। তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। তারপর? তিনি বললেন, তোমার মা। তারপর? তিনি চতুর্থবার বললেন, তোমার পিতা।’ (বুখারি) মাকে মহিমান্বিত করে প্রকৃতপক্ষে নারী জাতির মর্যাদাকেই ইসলাম সমুন্নত করেছে এবং মাতৃত্বের মর্যাদায় অভিষিক্ত করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীকে দিয়েছে সম্মানজনক মর্যাদা। মা হিসেবে একজন নারীর ন্যায্য প্রাপ্য মর্যাদা সর্বোচ্চ যতটুকু হতে পারে, তার পুরোপুরিই ইসলাম নারীকে দিয়েছে। সন্তানের সার্বক্ষণিক কল্যাণ কামনায় মায়েরা অনেক ত্যাগ করেন, যথাসম্ভব দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেন। সন্তানকে সুস্থ ও সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মায়েদের সাধনাকে অম্লান করতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মুখনিঃসৃত বাণীতে মা হিসেবে নারী জাতির সুউচ্চ মর্যাদা ঘোষিত হয়েছে, ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত।’ (আহমাদ, নাসাঈ) বয়োবৃদ্ধকালে মা-বাবা যখন শিশুর মতো হয়ে যান, তখন তঁাদের সেবাযত্ন করা অবশ্যকরণীয়। পিতামাতা বার্ধক্যে উপনীত হলে সন্তানের মুখাপেক্ষী হন এবং

No comments

Powered by Blogger.