ইরানের ওপর অবরোধ আরোপ করলেন ট্রাম্প
হোয়াইট হাউসে বসার দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরানের ওপর অবরোধ আরোপ করলেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো ও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থনের ‘সাজা’ হিসেবেই গতকাল শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসন দেশটির বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নিল। ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই ঘোষণা দিয়েছিলেন, জয়ী হলে তিনি ইরানের ব্যাপারে কঠোর হবেন। এ ছাড়া পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে সই করা বিশ্বশক্তিগুলোর ঐতিহাসিক চুক্তিও বাতিল করবেন। তেহরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথমবারের মতো এ অবরোধের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে ইরান এবং বেইজিংয়ের কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে। এরা হলো ওই সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, যাদের তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে সহায়তাদানকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র চিহ্নিত করেছে। এ ছাড়া লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকেও। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে উপকরণ সরবরাহ করেছে এমন তিন বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক ও ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এঁদের একজন ইরানি ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আসগরজাদেহ। তিনি চীনের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও সরবরাহকারীর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আগেই অবরোধ আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আর নেটওয়ার্ক হলো উপসাগরীয় অঞ্চলভিত্তিক ‘রোস্টানিয়ান নেটওয়ার্ক’। অপরজন হলেন লেবাননভিত্তিক ব্যবসায়ী হাসান দেঘান এবরাহিমি। যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবমতে, ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কর্মকর্তা হাসান মুদ্রা পাচার ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীকে রসদ সরবরাহে জড়িত। এ অবরোধ আরোপের পক্ষে যুক্তি দিয়ে মার্কিন ট্রেজারি অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোলের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জন স্মিথ বলেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ইরানের অব্যাহত সমর্থন ও তার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উন্নয়ন এ অঞ্চল ও বিশ্বব্যাপী আমাদের অংশীদার এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি।’ গত রোববার ইরান মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। এ ঘটনাকে পরমাণু যুদ্ধাস্ত্র বহনের উপযোগী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা-সংক্রান্ত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরান ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন ঘোষণা দেন, তিনি ইরানকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করবেন। ইরানের ওপর নতুন করে এ অবরোধ আরোপের ফলে এখন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো প্রতিষ্ঠান ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে এমন মার্কিন কালোতালিকাভুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। ইতিমধ্যে তেহরান ঘোষণা দিয়েছে, সাত মুসলিম দেশের নাগরিক ও শরণার্থীদের জন্য সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্র তার দরজা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে ইরানও তার দেশে মার্কিন নাগরিকদের প্রবেশ ঠেকাবে।
No comments