ফাইনালেই উঠে গেল ফরাশগঞ্জ
সন্ধ্যা নেমেছে অনেক আগেই। বৃষ্টিস্নাত বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হাজার ওয়াটের ফ্লাডলাইট জ্বলছে। সেই আলোতে বড় উজ্জ্বল দেখায় ফরাশগঞ্জের ফুটবলারদের। শেখ জামালের নামী-দামি খেলোয়াড়দের মাথা নিচু। আলোতে মুখ ঢাকার চেষ্টাও ছিল কারও কারও!
এই বিপরীত ছবি ঘরোয়া ফুটবলে একটা ইতিহাসের নির্দেশক, যেটি গড়ল ফরাশগঞ্জ। ১৯৮৩ সালে ঢাকার সিনিয়র ডিভিশন ফুটবলে প্রবেশ করার পর এই প্রথম কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল পুরান ঢাকার দলটি। ফাইনালে খেলা শুধু বড় দলগুলোর একচেটিয়া অধিকার নয়, স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে উঠে এটাই বোঝাল ফরাশগঞ্জ।
ছোট দলের ‘বড়’ হয়ে ওঠা মানে হিসাবে গন্ডগোল। তারই প্রথম শিকার আবাহনী। দুই দিন আগে কোয়ার্টার ফাইনালে আকাশি-নীলদের টাইব্রেকারে হারিয়েছিল ফরাশগঞ্জ। উজ্জীবিত সেই ফরাশগঞ্জ ‘দৈত্যবধের’ তালিকায় টানা দ্বিতীয় ম্যাচে লিখল শেখ জামালের নাম। সেমিফাইনালে তারকাবহুল দলের বিপক্ষে ফরাশগঞ্জ জিতল ১-০ গোলে! জয়টা আরও উজ্জ্বল দেখাচ্ছে—মাঠ থেকে বেরোনোর সময় ফরাশগঞ্জ যে ৯ জনের দল ছিল!
ফুটবলের দুর্ভাগ্য। এই জয় দেখতে মাঠে দর্শক নেই। রঙিন গ্যালারি খাঁ খাঁ। দর্শকের চেয়ে সংবাদকর্মীই বেশি। ভালো ফুটবল হয় না বলে দর্শক আসে না—এমন ধারণাই চালু হয়ে গেছে। কিন্তু এই স্বাধীনতা কাপে রোমাঞ্চকর ফুটবলই হচ্ছে। দুটি কোয়ার্টার ফাইনাল শেষ হয়েছে টাইব্রেকারে। সাদামাটা মোহামেডান কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে দিয়েছে অন্যতম ফেবারিট মুক্তিযোদ্ধাকে। এরই মধ্যে চমক দেখিয়ে চলেছে ফরাশগঞ্জ।
আবাহনী, মুক্তিযোদ্ধা, শেখ জামাল—একে একে সব দেউটি নিভে গেল। ঘরোয়া টুর্নামেন্টের ফাইনালে নেই দেশের তিন সেরার কেউ। কে ভাবতে পেরেছিল এমন চিত্রনাট্য! আর ফাইনালের একদল কিনা ফরাশগঞ্জ! আজ মোহামেডান-শেখ রাসেল দ্বিতীয় সেমিফাইনালের জয়ী দলকে রোববার ফরাশগঞ্জ হারিয়ে দিতে পারলে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল এবার বড় এক ঘটনার সাক্ষী হবে।
কাল বিকেলে খেলা শুরুর কিছুক্ষণ পরই কালবৈশাখীর আঘাত। ঝড়-বৃষ্টিতে ২৫ মিনিট বন্ধ থাকা ম্যাচে উত্তপ্ত মুহূর্তটির জন্ম ৩৭ মিনিটে। জামালের ডিফেন্ডার আরিফকে বল ছাড়া লাথি মেরে লাল কার্ড দেখলেন ফরাশগঞ্জের কঙ্গোর ফরোয়ার্ড জুনাপিউ (অতিরিক্ত সময়ে লাল কার্ড দেখেন রনি)। ফরাশগঞ্জ জুনাপিউর লাল কার্ড মানতে পারেনি এবং রেফারির সঙ্গে বাদানুবাদের একপর্যায়ে খেলবে না বলেই সাইডলাইনে চলে আসেন খেলোয়াড়েরা। সে এক চিরাচরিত ছবি।
অনেক গাইগুই করে খেলায় ফেরা ফরাশগঞ্জ নিল গোল ঠেকাও নীতি। ১০ জনই থাকলেন নিজেদের অর্ধে। শেখ জামাল গোলের জন্য জায়গাই বের করতে পারল না। উল্টো গোল খেল। ৫২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে নারায়ণগঞ্জের তরুণ সোহেল রানা শেখ জামালের ডিফেন্ডার রেজাউলকে ছিটকে কোনাকুনি শটে আমিনুলকে পরাস্ত করলেন।
কুড়ি বছরের তরুণ হয়ে উঠলেন শেখ জামালের স্বপ্নের হন্তারক, যিনি এখন নিয়মিতই গোল করছেন বড় দলের বিপক্ষে। ‘এই আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না। মনে হচ্ছিল আরও গোল পাব’—সোহেল রানার আনন্দ যেন শেষই হচ্ছিল না ম্যাচের পর।
দারুণ খেলে সেমিফাইনালে আসা শেখ জামালের দিনটা খুবই বাজে গেছে। গোল শোধ করার অনেক সময় পেয়েও গোল নেই। জামালের খেলোয়াড়েরা তো প্রতিপক্ষের পোস্টেই বলার মতো শট নিতে পারলেন মাত্র একটি! সেটি গোল খাওয়ার পর এবং ঠেকিয়ে দেন ফরাশগঞ্জ গোলরক্ষক সুজন।
শেখ জামাল বেঞ্চের খেলোয়াড় নিয়েই একটা সেরা একাদশ নামাতে পারে। ১০ জনের দলকে হারাতে না পারা দলটির বড় ব্যর্থতাই। কী বলবেন অধিনায়ক আমিনুল? ‘লজ্জা লাগছে। কোনো অজুহাত নেই’—আমিনুল অস্ফুটস্বরে বলছিলেন। কিন্তু বিস্ময়করভাবে সাইড বেঞ্চে বসে কাটানো এক তারকা খেলোয়াড় দোষ দিয়ে গেলেন কোচ পাকির আলীকে!
ফরাশগঞ্জ তখন উৎসবে মাতোয়ারা। ভিড়ের মধ্যে কোচ কামাল বাবুর গলায় পরিতৃপ্তি, ‘কল্পনাও করিনি জিতব। অবিশ্বাস্য লাগছে।’ অবিশ্বাস্য লাগছে সবার কাছেই। ফরাশগঞ্জ মানেই এখন যেন এক রোমাঞ্চ!
এই বিপরীত ছবি ঘরোয়া ফুটবলে একটা ইতিহাসের নির্দেশক, যেটি গড়ল ফরাশগঞ্জ। ১৯৮৩ সালে ঢাকার সিনিয়র ডিভিশন ফুটবলে প্রবেশ করার পর এই প্রথম কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল পুরান ঢাকার দলটি। ফাইনালে খেলা শুধু বড় দলগুলোর একচেটিয়া অধিকার নয়, স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে উঠে এটাই বোঝাল ফরাশগঞ্জ।
ছোট দলের ‘বড়’ হয়ে ওঠা মানে হিসাবে গন্ডগোল। তারই প্রথম শিকার আবাহনী। দুই দিন আগে কোয়ার্টার ফাইনালে আকাশি-নীলদের টাইব্রেকারে হারিয়েছিল ফরাশগঞ্জ। উজ্জীবিত সেই ফরাশগঞ্জ ‘দৈত্যবধের’ তালিকায় টানা দ্বিতীয় ম্যাচে লিখল শেখ জামালের নাম। সেমিফাইনালে তারকাবহুল দলের বিপক্ষে ফরাশগঞ্জ জিতল ১-০ গোলে! জয়টা আরও উজ্জ্বল দেখাচ্ছে—মাঠ থেকে বেরোনোর সময় ফরাশগঞ্জ যে ৯ জনের দল ছিল!
ফুটবলের দুর্ভাগ্য। এই জয় দেখতে মাঠে দর্শক নেই। রঙিন গ্যালারি খাঁ খাঁ। দর্শকের চেয়ে সংবাদকর্মীই বেশি। ভালো ফুটবল হয় না বলে দর্শক আসে না—এমন ধারণাই চালু হয়ে গেছে। কিন্তু এই স্বাধীনতা কাপে রোমাঞ্চকর ফুটবলই হচ্ছে। দুটি কোয়ার্টার ফাইনাল শেষ হয়েছে টাইব্রেকারে। সাদামাটা মোহামেডান কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে দিয়েছে অন্যতম ফেবারিট মুক্তিযোদ্ধাকে। এরই মধ্যে চমক দেখিয়ে চলেছে ফরাশগঞ্জ।
আবাহনী, মুক্তিযোদ্ধা, শেখ জামাল—একে একে সব দেউটি নিভে গেল। ঘরোয়া টুর্নামেন্টের ফাইনালে নেই দেশের তিন সেরার কেউ। কে ভাবতে পেরেছিল এমন চিত্রনাট্য! আর ফাইনালের একদল কিনা ফরাশগঞ্জ! আজ মোহামেডান-শেখ রাসেল দ্বিতীয় সেমিফাইনালের জয়ী দলকে রোববার ফরাশগঞ্জ হারিয়ে দিতে পারলে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল এবার বড় এক ঘটনার সাক্ষী হবে।
কাল বিকেলে খেলা শুরুর কিছুক্ষণ পরই কালবৈশাখীর আঘাত। ঝড়-বৃষ্টিতে ২৫ মিনিট বন্ধ থাকা ম্যাচে উত্তপ্ত মুহূর্তটির জন্ম ৩৭ মিনিটে। জামালের ডিফেন্ডার আরিফকে বল ছাড়া লাথি মেরে লাল কার্ড দেখলেন ফরাশগঞ্জের কঙ্গোর ফরোয়ার্ড জুনাপিউ (অতিরিক্ত সময়ে লাল কার্ড দেখেন রনি)। ফরাশগঞ্জ জুনাপিউর লাল কার্ড মানতে পারেনি এবং রেফারির সঙ্গে বাদানুবাদের একপর্যায়ে খেলবে না বলেই সাইডলাইনে চলে আসেন খেলোয়াড়েরা। সে এক চিরাচরিত ছবি।
অনেক গাইগুই করে খেলায় ফেরা ফরাশগঞ্জ নিল গোল ঠেকাও নীতি। ১০ জনই থাকলেন নিজেদের অর্ধে। শেখ জামাল গোলের জন্য জায়গাই বের করতে পারল না। উল্টো গোল খেল। ৫২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে নারায়ণগঞ্জের তরুণ সোহেল রানা শেখ জামালের ডিফেন্ডার রেজাউলকে ছিটকে কোনাকুনি শটে আমিনুলকে পরাস্ত করলেন।
কুড়ি বছরের তরুণ হয়ে উঠলেন শেখ জামালের স্বপ্নের হন্তারক, যিনি এখন নিয়মিতই গোল করছেন বড় দলের বিপক্ষে। ‘এই আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না। মনে হচ্ছিল আরও গোল পাব’—সোহেল রানার আনন্দ যেন শেষই হচ্ছিল না ম্যাচের পর।
দারুণ খেলে সেমিফাইনালে আসা শেখ জামালের দিনটা খুবই বাজে গেছে। গোল শোধ করার অনেক সময় পেয়েও গোল নেই। জামালের খেলোয়াড়েরা তো প্রতিপক্ষের পোস্টেই বলার মতো শট নিতে পারলেন মাত্র একটি! সেটি গোল খাওয়ার পর এবং ঠেকিয়ে দেন ফরাশগঞ্জ গোলরক্ষক সুজন।
শেখ জামাল বেঞ্চের খেলোয়াড় নিয়েই একটা সেরা একাদশ নামাতে পারে। ১০ জনের দলকে হারাতে না পারা দলটির বড় ব্যর্থতাই। কী বলবেন অধিনায়ক আমিনুল? ‘লজ্জা লাগছে। কোনো অজুহাত নেই’—আমিনুল অস্ফুটস্বরে বলছিলেন। কিন্তু বিস্ময়করভাবে সাইড বেঞ্চে বসে কাটানো এক তারকা খেলোয়াড় দোষ দিয়ে গেলেন কোচ পাকির আলীকে!
ফরাশগঞ্জ তখন উৎসবে মাতোয়ারা। ভিড়ের মধ্যে কোচ কামাল বাবুর গলায় পরিতৃপ্তি, ‘কল্পনাও করিনি জিতব। অবিশ্বাস্য লাগছে।’ অবিশ্বাস্য লাগছে সবার কাছেই। ফরাশগঞ্জ মানেই এখন যেন এক রোমাঞ্চ!
No comments