মাচায় মাচায় শুঁটকি: জীবন-জীবিকায় হাজারো মানুষ by ফরহান অভি
বাঁশের
মাচায় ঝুলছে সারি সারি ছুরি মাছ। ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বিশাল আকারের কোরাল।
নারিকেল পাতার পাটিতে বিছানো লইট্টা। জালের ওপর রাখা হয়েছে ফাঁইস্যা।
কদমনী, বাটি, পোয়া, চাপা, চামিলা, টেকচাঁদা, চিংড়ি, ফেরকি মাছ ধোয়া হচ্ছে
লবণপানিতে। বাকলিয়া থানার বাস্তুহারা এলাকার কর্ণফুলী নদী পাড়ের দৃশ্য এটি।
শুঁটকি শুকানোর এ মহাযজ্ঞ ঘিরে নদীপাড়ের ৫ হাজার বাস্তুহারা মানুষের
জীবন-জীবিকা চলছে। এখানকার ১২০টি মাচা থেকে বছরে বিক্রি হয় প্রায় ১০ কোটি
টাকার শুঁটকি।
আবরার হোসেন। দুই মেয়ে আর স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। পেশায় জেলে। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ভেঙে বিলীন হয়েছে পৈতৃক জমি। গ্রামের এক বন্ধুর সহায়তায় পরিবারসহ চট্টগ্রামে আসা। কর্ণফুলীর পাড়ে জেগে ওঠা চরে বাঁশ আর বেড়ার তৈরি ছোট কুঁড়েঘরই এখন তার মাথা গোঁজার একমাত্র জায়গা। নদী আর সাগর থেকে জেলেদের ধরে আনা মাছ রোদে শুকিয়ে তৈরি করেন শুঁটকি। বিনিময়ে দৈনিক পান ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ভিটেমাটি হারানো আবরারের এ টাকায় মিলে সংসারের ভরণ-পোষণ। শুধু আবরারই নয়, কর্ণফুলী নদীর পাড়ের বাস্তুহারা এলাকায় গেলেই দেখা মিলবে এমন হাজারো আবরারের। জীবিকার তাগিদে শুঁটকি উৎপাদন করেন তারা।
কথা হয় শুঁটকি উৎপাদনকারী শ্রমিক শিল্পী রানীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ভিটেমাটি হারিয়েছি অনেক দিন আগে। নদীর পাড়ের কয়েক হাত জায়গায় বাঁশ-বেড়া দিয়ে তৈরি ঘরই এখন একমাত্র ঠিকানা। শুঁটকি উৎপাদনের পদ্ধতি বিষয়েও কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে শুঁটকি উৎপাদন করা হয় এখানে। লবণপানিতে মাছ ধুয়ে রোদে শুকাতে দেয়া হয়। ব্যবহার করা হয় না কোনো ধরনের কীটনাশক। ছোট ছোট মাছ তিন থেকে চার দিনের কড়া রোদে শুঁটকি হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ছোট মাছগুলো বাঁশের মাচায় বিছিয়ে রোদে শুকানো যায়। ছুরি মাছ আর লইট্যা মাছগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে বেঁধে বাঁশে দুই পাশ থেকে ঝুলিয়ে দেয়া যায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, একেকটি মাচায় (শুঁটকি শুকানোর স্থান) প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ জন কাজ করেন। বড় বড় মাচায় কাজ করতে দেখা গেছে ৪০ থেকে ৫০ জনকেও। পানির জন্য প্রতিটি মাচার পাশেই রয়েছে পুকুর কিংবা টিউবওয়েল। সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করে বড় বড় ড্রামে পানির সঙ্গে লবণ মিশিয়ে মাছ ধোয়া হয়। ছুরি, লইট্যা, কদমনী, বাটা, পোয়া, চাপিলা, টেকচাঁদা, চিংড়িসহ নানা মাছের শুঁটকি তৈরি হয় এখানে।
শুঁটকি উৎপাদনের কাজে সম্পৃক্তরা মিলে এখানে একটি সমবায় সমিতিও গঠন করেছে। নাম শুঁটকি উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতি। কথা হয় এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শফিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে এ কর্ণফুলীর পাড়ে জেগে ওঠা এ চরে শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। এখানকার ১২০টি মাচাংয়ে দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এসব শ্রমিকের বেশিরভাগই বাস্তুহারা। তিনি আরও জানান, প্রতি শনি ও মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের শুঁটকিপট্টিতে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় এখানকার শুঁটকি। সেখানে চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ী শুঁটকি কিনতে আসেন। প্রতি টন শুঁটকির দাম পড়ে প্রায় ১ লাখ টাকা। এখানকার ১২০টি মাচা থেকে বছরে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়ে থাকে।
আবরার হোসেন। দুই মেয়ে আর স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। পেশায় জেলে। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ভেঙে বিলীন হয়েছে পৈতৃক জমি। গ্রামের এক বন্ধুর সহায়তায় পরিবারসহ চট্টগ্রামে আসা। কর্ণফুলীর পাড়ে জেগে ওঠা চরে বাঁশ আর বেড়ার তৈরি ছোট কুঁড়েঘরই এখন তার মাথা গোঁজার একমাত্র জায়গা। নদী আর সাগর থেকে জেলেদের ধরে আনা মাছ রোদে শুকিয়ে তৈরি করেন শুঁটকি। বিনিময়ে দৈনিক পান ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ভিটেমাটি হারানো আবরারের এ টাকায় মিলে সংসারের ভরণ-পোষণ। শুধু আবরারই নয়, কর্ণফুলী নদীর পাড়ের বাস্তুহারা এলাকায় গেলেই দেখা মিলবে এমন হাজারো আবরারের। জীবিকার তাগিদে শুঁটকি উৎপাদন করেন তারা।
কথা হয় শুঁটকি উৎপাদনকারী শ্রমিক শিল্পী রানীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ভিটেমাটি হারিয়েছি অনেক দিন আগে। নদীর পাড়ের কয়েক হাত জায়গায় বাঁশ-বেড়া দিয়ে তৈরি ঘরই এখন একমাত্র ঠিকানা। শুঁটকি উৎপাদনের পদ্ধতি বিষয়েও কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে শুঁটকি উৎপাদন করা হয় এখানে। লবণপানিতে মাছ ধুয়ে রোদে শুকাতে দেয়া হয়। ব্যবহার করা হয় না কোনো ধরনের কীটনাশক। ছোট ছোট মাছ তিন থেকে চার দিনের কড়া রোদে শুঁটকি হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ছোট মাছগুলো বাঁশের মাচায় বিছিয়ে রোদে শুকানো যায়। ছুরি মাছ আর লইট্যা মাছগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে বেঁধে বাঁশে দুই পাশ থেকে ঝুলিয়ে দেয়া যায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, একেকটি মাচায় (শুঁটকি শুকানোর স্থান) প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ জন কাজ করেন। বড় বড় মাচায় কাজ করতে দেখা গেছে ৪০ থেকে ৫০ জনকেও। পানির জন্য প্রতিটি মাচার পাশেই রয়েছে পুকুর কিংবা টিউবওয়েল। সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করে বড় বড় ড্রামে পানির সঙ্গে লবণ মিশিয়ে মাছ ধোয়া হয়। ছুরি, লইট্যা, কদমনী, বাটা, পোয়া, চাপিলা, টেকচাঁদা, চিংড়িসহ নানা মাছের শুঁটকি তৈরি হয় এখানে।
শুঁটকি উৎপাদনের কাজে সম্পৃক্তরা মিলে এখানে একটি সমবায় সমিতিও গঠন করেছে। নাম শুঁটকি উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতি। কথা হয় এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শফিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে এ কর্ণফুলীর পাড়ে জেগে ওঠা এ চরে শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। এখানকার ১২০টি মাচাংয়ে দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এসব শ্রমিকের বেশিরভাগই বাস্তুহারা। তিনি আরও জানান, প্রতি শনি ও মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের শুঁটকিপট্টিতে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় এখানকার শুঁটকি। সেখানে চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ী শুঁটকি কিনতে আসেন। প্রতি টন শুঁটকির দাম পড়ে প্রায় ১ লাখ টাকা। এখানকার ১২০টি মাচা থেকে বছরে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়ে থাকে।
No comments