মানবাধিকার নিয়ে ওবামা–কাস্ত্রো বিরোধ
রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় ওবামা ও রাউল কাস্ত্রো। এএফপি |
কিউবা সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দেশটির প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন গত সোমবার। হাভানায় প্যালেস অব দ্য রেভল্যুশনে দুই নেতার মধ্যে এই ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক-পরবর্তী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ওবামা বলেন, ফ্লোরিডা প্রণালির দুই পাশের দেশ দুটির মধ্যে ‘নতুন দিনের’ সূচনা হলো। তবে ওবামা প্রতিশ্রুত অর্থনৈতিক অবরোধ এখনো প্রত্যাহার না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে কিউবা। কিউবার মানবাধিকার ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে কিছুটা অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে। রাউল কাস্ত্রোকে যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিকেরা রাজনৈতিক বন্দীদের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘কিউবায় কোনো রাজনৈতিক বন্দী নেই।
বৈঠকের পর আপনারা আমাকে রাজনৈতিক বন্দীদের তালিকা দিতে পারেন। যদি এ ধরনের কোনো বন্দী থাকে, তবে তাদের আজ রাতের মধ্যেই মুক্তি দেওয়া হবে।’ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নারীর সম-অধিকারে কিউবার ভালো অবস্থানের কথা উল্লেখ করে রাউল যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা সমালোচনা করেন। তিনি মার্কিন সমাজের বর্ণবাদ, পুলিশি সহিংসতা ও গুয়ানতানামো কারাগারে বিনা বিচারে আটক রাখা বন্দীদের ওপর নির্যাতনের বিষয় তুলে ধরেন। কিউবার ভূখণ্ড গুয়ানতানামোর সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিও করেছেন রাউল। সংবাদ সম্মেলনে বারাক ওবামা বলেন, ‘বৈঠকে আমি কাস্ত্রোকে বলেছি, যদি আপনারা ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতি কম অসহিষ্ণু হতেন, তাহলে রাষ্ট্র পরিচালনা উন্নত হতো এবং কিউবার মানুষদের কাছে সরকারের বৈধতা আরও বেশি হতো।’ সফরের শেষ দিনে গতকাল মঙ্গলবার কিউবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দেন ওবামা। হাভানার গ্র্যান্ড থিয়েটার থেকে দেওয়া এই ভাষণে তিনি কিউবার গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য কমিউনিস্ট সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ওবামা বলেন, তিনি কিউবা এসেছেন স্নায়ুযুদ্ধকালীন তিক্ততা মুছে ফেলার জন্য। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা আগামীকাল দেশটির ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলেও ফেলি, তবু কিউবানরা এর স্বাদ পাবেন না, যতক্ষণ না দেশটির গণতান্ত্রিক পরিবর্তন আসছে।’ এরপরই হাভানায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে ভিন্নমতাবলম্বীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা ওবামার। ওই বৈঠকে কারা উপস্থিত থাকবেন, সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
No comments