পবিত্র কোরআনের আলো-বনি ইসরাইলদের ব্যাপারে সর্বোপরি হতাশা
৭৫. আফাতাত্বমাউনা আইঁয়্যুমিনু-লাকুম ওয়াকাদ কা-না ফারিকুম মিনহুম ইয়াছমাউনা কালা-মাল্লাহি ছুম্মা ইউহাররিফু-নাহু মিম বাদি মা আকালু-হু ওয়াহুম ইয়া'লামুন।৭৬. ওয়াইজা-লাকুল্লাজিনা আ-মানু কা-লু আ-মান্না; ওয়াইজা-খালা- বা'দুহুম ইলা বা'দ্বিন কা-লু আতুহাদ্দিছু-নাহুম বিমা ফাতাহাল্লা-হু আ'লাইকুম লিইউহা-জ্জু-কুম বিহি ই'নদা রাবি্বকুম; আফালা-তা'কিলুন।
৭৭. আওয়ালা-ইয়া'লামু-না আন্নাল্লাহা ইয়া'লামু মা ইউছির্রু-না ওয়ামা- ইউ'লিনুন। (সুরা বাকারা, আয়াত ৭৫-৭৭)
অনুবাদ : ৭৫. তোমরা কি বনি ইসরাইলদের ব্যাপারে এখনো এই আশা পোষণ কর যে তারা তোমাদের সঙ্গে ইমান আনবে? (কার্যত তা হবে না) এদের একাংশ তো (যুগ যুগ ধরে) আল্লাহর বার্তা শুনে আসছে; অতঃপর তারা তাকে বিকৃত করেছে, অথচ এরা ভালো করেই তা জানে।
৭৬. এরা যখন ইমানদারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তখন বলে, আমরা ইমান এনেছি, এরাই আবার যখন নিজেরা পরস্পর মিলিত হয় তখন একে অপরকে বলে, তোমরা কি মুসলমানদের কাছে সেসব কথা প্রকাশ করে দাও, যা আল্লাহ তোমাদের কাছে ব্যক্ত করেছেন? (অর্থাৎ তাওরাতে মুহাম্মদের নবুয়ত সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, খবরদার! তা করো না) তাহলে তারা তোমাদের প্রভুর সামনে এটা দিয়েই তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য উত্থাপন করবে_তোমরা কি বুঝতে পার না!
৭৭. এরা কি জানে না যে আল্লাহ তায়ালা সবই জানেন, যা তারা গোপন করে আর যা প্রকাশ করে।
ব্যাখ্যা : বনি ইসরাইল গোত্রগুলোর সঙ্গে রাসুলে করিম (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলমানদের চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তি মদিনা চুক্তি নামে খ্যাত। মুসলমানরা আশা করছিল যে ইহুদিরা হয়তো প্রকৃত সত্য স্বীকার করে নেবে। তারা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়তের কথা স্বীকার করবে, ইসলাম ধর্ম কবুল করবে। কিন্তু দিন যত অতিবাহিত হতে থাকল, ইহুদিরা ততই আরো বেশি বিভ্রান্তিকর ঘটনা ঘটিয়ে যেতে থাকল। একপর্যায়ে তারা মক্কার কোরাইশদের সঙ্গে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলো। এই গোপন ষড়যন্ত্রের বিষয়টি মুসলমানদের সঙ্গে ইহুদিদের সম্পর্ক চিরশত্রুতায় পরিণত করার কারণ হয়েছিল।
বনি ইসরাইলদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে শেষ নবীর আগমনের বিষয়ে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত আছে। সেই নবী যে কোরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করবেন, সে কথাও বলা আছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির পর ইহুদি আলেমরা ভেতরে ভেতরে এ কথা বুঝে নিয়েছিল যে ইনিই তাওরাতে বর্ণিত শেষ নবী। কিন্তু তারা নিজের বংশের গৌরব ও আত্ম-অহমিকার কারণে সেটা মেনে নিতে পারছিল না_মেনে নেওয়াটা তাদের স্বার্থের জন্য সমীচীন হবে বলে মনে করছিল না। কোরাইশদের বংশের নবী নিজ বংশ থেকে বিতাড়িত হয়ে মদিনায় চলে আসায় ইহুদি গোত্রগুলো কিছুটা খুশি হয়ে উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা এ ধারায় অগ্রসর হয়নি। তারা বুঝতে পারছিল, ইসলাম কবুল করলে এবং কোরাইশ বংশীয় নবীকে স্বীকৃতি দিলে শেষ পর্যন্ত তাদের নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব হয়তো থাকবে না। এ অবস্থায় তারা মুসলমানদের প্রতি চূড়ান্তভাবেই বৈরী হয়ে উঠল। উপরোক্ত আয়াতগুলোর মাধ্যমে বনি ইসরাইলদের ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে হতাশা ব্যক্ত করেই মুসলমানদের এক প্রকারের সান্ত্বনা দেওয়া হচ্ছে। বনি ইসরাইলদের স্বার্থান্ধতা যে তাদের সত্যের পথে অগ্রসর হওয়া থেকে বিরত করবে, ওই ইঙ্গিত এখানে দেওয়া হয়েছে। কারণ বনি ইসরাইলদের যুগ-যুগান্তরের ইতিহাস এ রকমই। এর আগের আয়াতগুলোতেও তাদের স্বার্থপরতা ও অবাধ্যতার বেশ কিছু বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। তারা তাদের কৃতকর্মের পরিণতি হিসেবেই এ রকম হতাশাব্যঞ্জক পরিণতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ৭৫. তোমরা কি বনি ইসরাইলদের ব্যাপারে এখনো এই আশা পোষণ কর যে তারা তোমাদের সঙ্গে ইমান আনবে? (কার্যত তা হবে না) এদের একাংশ তো (যুগ যুগ ধরে) আল্লাহর বার্তা শুনে আসছে; অতঃপর তারা তাকে বিকৃত করেছে, অথচ এরা ভালো করেই তা জানে।
৭৬. এরা যখন ইমানদারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তখন বলে, আমরা ইমান এনেছি, এরাই আবার যখন নিজেরা পরস্পর মিলিত হয় তখন একে অপরকে বলে, তোমরা কি মুসলমানদের কাছে সেসব কথা প্রকাশ করে দাও, যা আল্লাহ তোমাদের কাছে ব্যক্ত করেছেন? (অর্থাৎ তাওরাতে মুহাম্মদের নবুয়ত সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, খবরদার! তা করো না) তাহলে তারা তোমাদের প্রভুর সামনে এটা দিয়েই তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য উত্থাপন করবে_তোমরা কি বুঝতে পার না!
৭৭. এরা কি জানে না যে আল্লাহ তায়ালা সবই জানেন, যা তারা গোপন করে আর যা প্রকাশ করে।
ব্যাখ্যা : বনি ইসরাইল গোত্রগুলোর সঙ্গে রাসুলে করিম (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলমানদের চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তি মদিনা চুক্তি নামে খ্যাত। মুসলমানরা আশা করছিল যে ইহুদিরা হয়তো প্রকৃত সত্য স্বীকার করে নেবে। তারা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়তের কথা স্বীকার করবে, ইসলাম ধর্ম কবুল করবে। কিন্তু দিন যত অতিবাহিত হতে থাকল, ইহুদিরা ততই আরো বেশি বিভ্রান্তিকর ঘটনা ঘটিয়ে যেতে থাকল। একপর্যায়ে তারা মক্কার কোরাইশদের সঙ্গে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলো। এই গোপন ষড়যন্ত্রের বিষয়টি মুসলমানদের সঙ্গে ইহুদিদের সম্পর্ক চিরশত্রুতায় পরিণত করার কারণ হয়েছিল।
বনি ইসরাইলদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে শেষ নবীর আগমনের বিষয়ে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত আছে। সেই নবী যে কোরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করবেন, সে কথাও বলা আছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির পর ইহুদি আলেমরা ভেতরে ভেতরে এ কথা বুঝে নিয়েছিল যে ইনিই তাওরাতে বর্ণিত শেষ নবী। কিন্তু তারা নিজের বংশের গৌরব ও আত্ম-অহমিকার কারণে সেটা মেনে নিতে পারছিল না_মেনে নেওয়াটা তাদের স্বার্থের জন্য সমীচীন হবে বলে মনে করছিল না। কোরাইশদের বংশের নবী নিজ বংশ থেকে বিতাড়িত হয়ে মদিনায় চলে আসায় ইহুদি গোত্রগুলো কিছুটা খুশি হয়ে উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা এ ধারায় অগ্রসর হয়নি। তারা বুঝতে পারছিল, ইসলাম কবুল করলে এবং কোরাইশ বংশীয় নবীকে স্বীকৃতি দিলে শেষ পর্যন্ত তাদের নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব হয়তো থাকবে না। এ অবস্থায় তারা মুসলমানদের প্রতি চূড়ান্তভাবেই বৈরী হয়ে উঠল। উপরোক্ত আয়াতগুলোর মাধ্যমে বনি ইসরাইলদের ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে হতাশা ব্যক্ত করেই মুসলমানদের এক প্রকারের সান্ত্বনা দেওয়া হচ্ছে। বনি ইসরাইলদের স্বার্থান্ধতা যে তাদের সত্যের পথে অগ্রসর হওয়া থেকে বিরত করবে, ওই ইঙ্গিত এখানে দেওয়া হয়েছে। কারণ বনি ইসরাইলদের যুগ-যুগান্তরের ইতিহাস এ রকমই। এর আগের আয়াতগুলোতেও তাদের স্বার্থপরতা ও অবাধ্যতার বেশ কিছু বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। তারা তাদের কৃতকর্মের পরিণতি হিসেবেই এ রকম হতাশাব্যঞ্জক পরিণতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments