পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনে আটক কিশোরীর জামিন

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার (ব্লাসফেমি) অভিযোগে আটক খ্রিস্টান কিশোরী রিমশা মাসিহকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। রাজধানী ইসলামাবাদের অতিরিক্ত আদালতের সেশন জজ মোহাম্মাদ আজম খান গতকাল শুক্রবার এ রায় দেন।


আদালতের এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাবি্লউ)।
আড়াই ঘণ্টার শুনানি শেষে বিচারক আজম খান পাঁচ লাখ রুপি (প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ডলার) করে দুজনের দেওয়া মুচলেকার বিনিময়ে রিমশার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। আজম খান তাঁর রায়ে বলেন, 'জামানতের বিপরীতে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।' ব্লাসফেমি আইনে আটকের পর জামিন দেওয়ার ঘটনা পাকিস্তানে এটাই প্রথম। এটি অজামিনযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। রিমশার আইনজীবী জানিয়েছেন, বয়স কম হওয়ায় তাঁর মক্কেলকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
ব্লাসফেমি আইনে গত ১৬ আগস্ট রিমশাকে আটক করা হয়। রিমশা কোরআন পুড়িয়েছে বলে অভিযোগ আনেন স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম হাজি মোহাম্মদ খালিদ চিশতি। তিনি দাবি করেন, রিমশার ব্যাগে কোরআন শরীফের পোড়া অংশ রয়েছে। ব্যাগ তল্লাশি করে তা পাওয়াও যায়। কিন্তু পরে জানা যায়, খালিদ ষড়যন্ত্র করে মেয়েটির ব্যাগে থাকা অন্যান্য কাগজ-পত্র সরিয়ে কোরআনের পোড়া কপিটি রেখে দিয়েছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে ব্যাপক সমালোচনাও হয়। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো অবিলম্বে রিমশার মুক্তির দাবি জানায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে ওই ইমামকে আটক করা হয়।
রিমশা বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে আটক রয়েছে। আটকের পর থেকেই তার বয়স এবং মানসিক ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক ওঠে। চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করে জানান, রিমশার শারীরিক বয়স ১৪ বছর হলেও মানসিক বয়স অনেক কম।
মানবাধিকার সংস্থা এইচআরডাবি্লউর এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'রিমশাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় এইচআরডাবি্লউ। সংস্থা সরকারের প্রতি আদালতের বাইরে তার (রিমশা) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।' সূত্র : বিবিসি, এএফপি, জিনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.