আলেপ্পোর পর হামা শহরও দখলে নিলেন বিদ্রোহীরা

সিরিয়ার বিদ্রোহীরা আলেপ্পোর পর দেশটির মধ্যাঞ্চলের শহর হামাও দখলে নিয়েছেন। হামা শহর থেকে সরকারি বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই গুরুত্বপূর্ণ শহর হারিয়ে বড় ধরনের চাপে পড়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এবং তাঁর মিত্রদেশ রাশিয়া ও ইরান।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও তার মিত্ররা গত সপ্তাহে দ্রুতগতিতে হামলা চালিয়ে আলেপ্পো দখল করে নেয়। লেবাননে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হওয়ার পরপরই এ ঘটনা ঘটে। হিজবুল্লাহ আসাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত।

উত্তরাঞ্চলের আলেপ্পো দখলের পর বিদ্রোহীরা মধ্যাঞ্চলের হামা শহরের দিকে যাত্রা শুরু করেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, বুধবার রাতে হামা শহরে আসার পথে আসাদ বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের বিভিন্ন সড়কে যুদ্ধ হয়। বিদ্রোহীরা ‘কয়েক দিক থেকে’ হামা শহরে হামলা চালান।

বিদ্রোহীরা জানিয়েছেন, তাঁরা হামার কেন্দ্রীয় কারাগার নিজেদের আয়ত্তে নিয়েছেন এবং বন্দীদের ছেড়ে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিরিয়ার সেনাবাহিনী হামার নিয়ন্ত্রণ হারানোর কথা স্বীকার করেছে। হামা আলেপ্পো ও রাজধানী দামেস্কের মধ্যে অবস্থিত কৌশলগতভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর।

চিন্তক গোষ্ঠী সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনালের একজন ফেলো অ্যারন লুন্দ হামার দখল হারানোকে ‘সিরিয়া সরকারের জন্য একটি বিশাল ও ব্যাপক ধাক্কা’ বলে অভিহিত করেছেন। কারণ, সেখানে যদি সেনাবাহিনী থেকে যেত, তাহলে বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা ঠেকানো সহজ হতো, কিন্তু ‘তারা তা পারেনি।’

বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ৪০ বছর ধরে সিরিয়ার যে ক্ষত, তা দূর করতে তাঁর যোদ্ধারা হামায় ঢুকেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি ১৯৮২ সালের মুসলিম ব্রাদারহুডকে দমনের নামে যে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল সেটির ইঙ্গিত করেন।

২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। গৃহযুদ্ধের পুরোটা সময় হামা শহর আসাদ সরকারের হাতে ছিল। কিন্তু এখন শহরটির পতন হওয়া দামেস্কের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াল। হামার পতনের পর বিদ্রোহীদের হোমস শহরের দিকে এগোনোর পথ খুলে গেল।

রাস্তায় গুলি ছুড়ছেন এক বিদ্রোহী। সিরিয়ার হামা শহরে, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
রাস্তায় গুলি ছুড়ছেন এক বিদ্রোহী। সিরিয়ার হামা শহরে, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ছবি : এএফপি

No comments

Powered by Blogger.