শামীম হত্যার নেপথ্যে by রুদ্র মিজান
প্রতিবেশী
মোহাম্মদ কফিলকে ঢাকায় এনেছিলেন নিরাপত্তাকর্মী মোহাম্মদ শামীম। নিজের
বাসায় রেখে সিকিউরিটি কোম্পানীতে চাকরিও দেন তাকে। শেষ পর্যন্ত সেই
ছেলেটির হাতেই জীবন দিতে হয়েছে শামীমকে। গত ২০শে জানুয়ারি তার কর্মস্থল
বারিধারার যমুনা ব্যাংকের এটিএম বুথে তাকে হত্যা করা হয়। থানা পুলিশ ও
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ হয়ে এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ
ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই)। দীর্ঘ তদন্তের পর উদঘাটন করা হয়েছে
চাঞ্চল্যকর এই হত্যা রহস্য। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কফিলকে। গ্রেপ্তারের পর গত
১৭ই মে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে কফিল। এতে
হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা প্রকাশ পেয়েছে।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, এক তরুণীকে বিয়ে করাকে কেন্দ্র করেই এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। ওই তরুণী কফিলের প্রেমিকা। প্রেমিকাকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো মোহাম্মদ কফিল। কফিলের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম গিয়েছিলেন পাত্রীর ভগ্নিপতি। একইভাবে পাত্রীর গ্রামে বাড়িতেও যায় কফিল। বিয়েতে দুই পক্ষই আগ্রহী। এরমধ্যেই ঘটে ঘটনাটি। কফিল হঠাৎ জানতে পারেন পাত্রী পক্ষ এই বিয়েতে রাজি না। তারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন, কফিলের গ্রামের বাড়িতে তেমন কোনো জায়গা-জমি নেই। নগদ টাকাও নেই। এছাড়াও কফিলের স্বভাব-চরিত্র ভালো না। এসব জানার পরই বিয়ের আলোচনা শেষ হয়ে যায়। পাত্রীপক্ষের কাছে এসব তথ্যদাতা হিসেবে শামীমকে সনাক্ত করে কফিল। গ্রেপ্তারের পর কফিল জানিয়েছে, তার প্রেমের বিষয়টি জোন কমান্ডার শাহীনের কাছে জানাতো শামীম। এসব কিছু মিলিয়েই ক্ষোভ বাড়তে থাকে কফিলের। এছাড়াও শামীমের কাছে তার পাওনা ছিলো দুই হাজার টাকা। ওই টাকা চাইতে গিয়েও দুজনে মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এসব কারণেই ক্ষুব্ধ কফিল সিদ্ধান্ত নেয় শামীমকে হত্যার।
হত্যাকাণ্ডের দু্-তিন দিন আগে ভাটারার নতুন বাজার থেকে হাতুড়ি, সাদা প্যান্ট, সোয়েটার (জ্যাকেট) এবং মুখোশ কিনে কফিল। ২০শে জানুয়ারি দুপুর ২টার থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কফিল গুলশান-২ এর গোলচত্বর সংলগ্ন ইউসিবি বুথে ডিউটি করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কফিল ইউসিবি বুথে ডিউটিতে যাওয়ার সময় ব্যাগে করে হাতুড়ি ও পোশাক এবং মুখোশ নিয়ে যায়। রাত ১০টার পর কফিল বারিধারার জে-ব্লকের ইউসিবি বুথে এবং শামীম বারিধারা জে-ব্লকের যমুনা ব্যাংকে বুথে ডিউটিতে যায়। একই এলাকায় পাশাপাশি এটিএম বুথে ডিউটি করে তারা। পরিকল্পনা অনুসারে ভোর ৬টায় ঘুম থেকে উঠে কফিল। সঙ্গে থাকা ব্যাগটি নিয়ে কিছুদুর সামনে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে। হাতুড়ি ও মুখোশটি ডান পাশের পকেটে রাখে।
পোশাক পরিবর্তন করার পর ব্যাগটি ইউসিভি বুথের ছাদে রেখে শামীমকে হত্যার উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় কফিল। তখন বারিধারার জে-ব্লকে যমুনা ব্যাংকের বুথে চাদর মুড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন শামীম। মুখোশ পড়ে বুথে ঢুকে কফিল। পকেট থেকে হাতুড়ি বের করে শামীমের মাথায় পরপর পাঁচটি আঘাত করে। রক্তে ভেসে যায় ব্যাংকের বুথ। ছিটকে রক্ত পড়ে কফিলের জামা-কাপড়ে। শামীমের মৃত্যু নিশ্চিত করে সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে বুথ থেকে বের হয়ে যায় কফিল। এরপর অন্য রাস্তা দিয়ে কফিল তার ডিউটিরত পোস্ট ইউসিবি বুথের ছাদ থেকে ব্যাগটি নিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে ডিউটির পোশাক পড়ে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত পোশাক, মুখোশ ও হাতুড়ি ব্যাগে ঢুকিয়ে তা নিয়ে বাসায় চলে যায়। হত্যাকান্ডের পরদিন নিহত শামীমের পিতা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ভাটারা থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরসহ সকল ক্ষেত্রে কফিল ছিলো সন্দেহের বাইরে। হত্যার পর কফিল দক্ষ অভিনেতার মতো আচরণ করে। শামীমের লাশ কুড়িগ্রামে নিয়ে যাওয়া, দাফনসহ সকল কাজেই সহযোগিতা করে। কিন্তু রহস্যময় আচরণ প্রকাশ পায় হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছুদিন পরে। হঠাৎ করেই নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি ছেড়ে দেয় কফিল। গ্রামে চলে যায়। এমনকি বকেয়া বেতন ও বোনাসের টাকা নেয়ার জন্য পর্যন্ত ঢাকা আসেনি।
নিহত শামীমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে কফিলকে ঢাকায় নিয়ে আসে একটি সিকিউরিটি কোম্পানীর নিরাপত্তাকর্মী শামীম। ঢাকায় শামীমের বাসায় উঠে কফিল। কফিলকে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরিও নিয়ে দেয় শামীম। চাকরি হওয়ার একমাস পরে আলাদা মেসে উঠে কফিল। ওই সময়ে এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় কফিল। পিবিআই ঢাকা মেট্টোর পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন জানান, গত ৩রা মে মামলাটি তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, বিশ্বস্থ সোর্স নিয়োগ ও ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে মো. কফিলকে সনাক্ত করা হয়। গত ১৫ই মে কফিলের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানার পূর্বধনিরাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করে পিবিআই। নিহত শামীম কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানার পূর্বধনিরাম গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, এক তরুণীকে বিয়ে করাকে কেন্দ্র করেই এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। ওই তরুণী কফিলের প্রেমিকা। প্রেমিকাকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো মোহাম্মদ কফিল। কফিলের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম গিয়েছিলেন পাত্রীর ভগ্নিপতি। একইভাবে পাত্রীর গ্রামে বাড়িতেও যায় কফিল। বিয়েতে দুই পক্ষই আগ্রহী। এরমধ্যেই ঘটে ঘটনাটি। কফিল হঠাৎ জানতে পারেন পাত্রী পক্ষ এই বিয়েতে রাজি না। তারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন, কফিলের গ্রামের বাড়িতে তেমন কোনো জায়গা-জমি নেই। নগদ টাকাও নেই। এছাড়াও কফিলের স্বভাব-চরিত্র ভালো না। এসব জানার পরই বিয়ের আলোচনা শেষ হয়ে যায়। পাত্রীপক্ষের কাছে এসব তথ্যদাতা হিসেবে শামীমকে সনাক্ত করে কফিল। গ্রেপ্তারের পর কফিল জানিয়েছে, তার প্রেমের বিষয়টি জোন কমান্ডার শাহীনের কাছে জানাতো শামীম। এসব কিছু মিলিয়েই ক্ষোভ বাড়তে থাকে কফিলের। এছাড়াও শামীমের কাছে তার পাওনা ছিলো দুই হাজার টাকা। ওই টাকা চাইতে গিয়েও দুজনে মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এসব কারণেই ক্ষুব্ধ কফিল সিদ্ধান্ত নেয় শামীমকে হত্যার।
হত্যাকাণ্ডের দু্-তিন দিন আগে ভাটারার নতুন বাজার থেকে হাতুড়ি, সাদা প্যান্ট, সোয়েটার (জ্যাকেট) এবং মুখোশ কিনে কফিল। ২০শে জানুয়ারি দুপুর ২টার থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কফিল গুলশান-২ এর গোলচত্বর সংলগ্ন ইউসিবি বুথে ডিউটি করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কফিল ইউসিবি বুথে ডিউটিতে যাওয়ার সময় ব্যাগে করে হাতুড়ি ও পোশাক এবং মুখোশ নিয়ে যায়। রাত ১০টার পর কফিল বারিধারার জে-ব্লকের ইউসিবি বুথে এবং শামীম বারিধারা জে-ব্লকের যমুনা ব্যাংকে বুথে ডিউটিতে যায়। একই এলাকায় পাশাপাশি এটিএম বুথে ডিউটি করে তারা। পরিকল্পনা অনুসারে ভোর ৬টায় ঘুম থেকে উঠে কফিল। সঙ্গে থাকা ব্যাগটি নিয়ে কিছুদুর সামনে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে। হাতুড়ি ও মুখোশটি ডান পাশের পকেটে রাখে।
পোশাক পরিবর্তন করার পর ব্যাগটি ইউসিভি বুথের ছাদে রেখে শামীমকে হত্যার উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় কফিল। তখন বারিধারার জে-ব্লকে যমুনা ব্যাংকের বুথে চাদর মুড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন শামীম। মুখোশ পড়ে বুথে ঢুকে কফিল। পকেট থেকে হাতুড়ি বের করে শামীমের মাথায় পরপর পাঁচটি আঘাত করে। রক্তে ভেসে যায় ব্যাংকের বুথ। ছিটকে রক্ত পড়ে কফিলের জামা-কাপড়ে। শামীমের মৃত্যু নিশ্চিত করে সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে বুথ থেকে বের হয়ে যায় কফিল। এরপর অন্য রাস্তা দিয়ে কফিল তার ডিউটিরত পোস্ট ইউসিবি বুথের ছাদ থেকে ব্যাগটি নিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে ডিউটির পোশাক পড়ে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত পোশাক, মুখোশ ও হাতুড়ি ব্যাগে ঢুকিয়ে তা নিয়ে বাসায় চলে যায়। হত্যাকান্ডের পরদিন নিহত শামীমের পিতা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ভাটারা থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরসহ সকল ক্ষেত্রে কফিল ছিলো সন্দেহের বাইরে। হত্যার পর কফিল দক্ষ অভিনেতার মতো আচরণ করে। শামীমের লাশ কুড়িগ্রামে নিয়ে যাওয়া, দাফনসহ সকল কাজেই সহযোগিতা করে। কিন্তু রহস্যময় আচরণ প্রকাশ পায় হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছুদিন পরে। হঠাৎ করেই নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি ছেড়ে দেয় কফিল। গ্রামে চলে যায়। এমনকি বকেয়া বেতন ও বোনাসের টাকা নেয়ার জন্য পর্যন্ত ঢাকা আসেনি।
নিহত শামীমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে কফিলকে ঢাকায় নিয়ে আসে একটি সিকিউরিটি কোম্পানীর নিরাপত্তাকর্মী শামীম। ঢাকায় শামীমের বাসায় উঠে কফিল। কফিলকে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরিও নিয়ে দেয় শামীম। চাকরি হওয়ার একমাস পরে আলাদা মেসে উঠে কফিল। ওই সময়ে এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় কফিল। পিবিআই ঢাকা মেট্টোর পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন জানান, গত ৩রা মে মামলাটি তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, বিশ্বস্থ সোর্স নিয়োগ ও ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে মো. কফিলকে সনাক্ত করা হয়। গত ১৫ই মে কফিলের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানার পূর্বধনিরাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করে পিবিআই। নিহত শামীম কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানার পূর্বধনিরাম গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র।
No comments