এবার ডিসিসি কর্মকর্তাকে বেধড়ক পেটালো পুলিশ
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে পুলিশের নির্যাতনের জের না কাটতেই আবারো নির্যাতনের শিকার হলেন আরেক সরকারি কর্মকর্তা।
এবার সাদা পোশাকধারী পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর জোনের পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাস (৪৫)। দায়িত্ব পালনকালে আজ শুক্রবার ভোররাতে রাজধানীর মীরহাজিরবাগ খালপাড় মোড়ে পুলিশ তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ করেছেন বিকাশ ও তার পরিবার। মোহাম্মদপুরে ব্যাংক কর্মকর্তার ওপর নির্যাতনের ঘটনার কোনো কুল কিনারা না হতেই এবার নির্যাতনের অভিযোগ যাত্রাবাড়ি পুলিশের বিরুদ্ধে।
এদিকে একের পর এক ঘটনার পরও দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না নেয়ায় পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কর্মী, আহত বিকাশের স্বজন ও সহকর্মীরা।
বিকাশ চন্দ্রে দাস অভিযোগ করেন, পুলিশ তাকে বেধড়ক পিটিয়েছে। লাঠি ও পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে।
জানা গেছে, ঘটনার পরপরই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় বিকাশকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
বিকাশের বড় ভাই দীপক কুমার দাস জানান, বিকাশ চন্দ্র ডিএসসিসির ৫ নম্বর জোনের (ওয়ার্ড-৪৮ ও ৫০) পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক (সিআই) হিসেবে কর্মরত। প্রতিদিনের মতো ভোররাতে দায়িত্ব পালনের জন্য দয়াগঞ্জের জেলে পাড়া ১০ নম্বর বাসা থেকে মোটরসাইকেল যোগে বের হয়। মীরহাজিরবাগ এলাকায় পৌঁছালে যাত্রাবাড়ি থানার সাদা পোশাকধারী চারজন পুলিশ তাকে থামার সংকেত দেন। বিকাশ তার পরিচয় দেয়ার পরও ওই পুলিশরা তাকে মারধর করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, যাত্রাবাড়ি থানার এসআই আশরাদ হোসেন আকাশ মোটরসাইকেল থামানো মাত্রই কোনো কারণ ছাড়াই ঘাড়ে আঘাত করে। এ সময় বিকাশ তার পরিচয় দিলেই গলা চেপে ধরে বলে, তোর কোন বাপ আছে নিয়ে আয়। এ কথা বলেই, বেদড়ক পিটাতে থাকে এবং পিস্তলের বাট দিয়ে বিকাশের কপালে আঘাত করে। এ সময় যাত্রাবাড়ি থানার এসআই মনোজ ও রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, বিকাশকে পুলিশ নির্যাতন করছে দেখে ওই এলাকার পরিচ্ছন্নকর্মীরা ছুটে এসে বাধা দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরবর্তীতে পরিচ্ছন্নকর্মীরা তাদের গাড়ি দিয়ে পুলিশের গাড়ি বেরিকেড দেয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে ওই এলাকার প্যানেল মেয়র, আমরা স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। দ্রুত বিকাশকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে দীপক কুমার দাস জানান, চিকিৎসকরা বলছে ২৪ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না। বিকেলে তিনটা পর্যন্ত অচেতন ছিলেন বিকাশ। সন্ধ্যার পরে তাকে ল্যাবএইডে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন দীপক কুমার।
ঢাকা মেডিক্যালে বিকাশের স্ত্রী স্বরস্বতী দাস জানান, রাত ৪টার দিকে প্রতিদিনের মতো কাজে বের হন বিকাশ। ভোর সোয়া ৫টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি লাশের মতো ভ্যানগাড়িতে ফেলে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, পিস্তল দিয়ে আঘাত করায় কপাল ফুলে গেছে। ঘাড়ে আঘাত ও বাম পায়ে বেশি জখম রয়েছে। পুলিশের বেধড়ক পিটুনিতে বেশ কয়েক ঘণ্টা বিকাশ অচেতন ছিলেন বলে অভিযোগ স্বরস্বতীর।
আজ দুপুরে ঢাকা মেডিক্যালের ২০১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বিকাশের নাকে রক্তজমাট বেধে আছে। তিনি অচেতন অবস্থায় চিৎ হয়ে হাসপাতালের বেডে পড়ে আছেন। বেডের পাশে স্বজনরা ভির করে আছেন।
বিকাশের চাচতো ভাই গোপাল দাস বলেন, পুলিশ আমাদের রক্ষা করবে। সে পুলিশ যদি এমন আচড়ন করে তাহলে আমরা সাধারণ মানুষে যাবো কোথায়। দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না নেয়ায় পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। আমরা স্বরাস্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর ঘটনার সুস্থ বিচার চাই।
আজ দুপুরে আহত বিকাশকে ঢাকা মেডিক্যালে দেখতে এসে যাত্রাবাড়ি থানার ওসি অবনী শঙ্কর কর সাংবাদিকদের বলেন, ওই এলাকাটি ছিনতাই প্রবণ এলাকা। তাই পুলিশ ওই এলাকায় টহল দিচ্ছিলো। এ সময় সাদা পোশাকধারী চারজন পুলিশ তাকে থামার সঙ্কেত দেয়। বিকাশ পুলিশকে ছিনতাইকারী ভেবে মোটরসাইকেল রেখে দৌঁড় দেয়। আর পুলিশও বিকাশকে ছিনতাইকারী ভেবে মারধর করে।
তিনি বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। এসআই আকাশ তাকে ছিনতাইকারী ভেবেই মারধর করেছে। এছাড়া অন্য এসআই মনোজ, আকাশের টিমের সহযোগী টিম হিসেবে কাজ করছিলো। এছাড়া রাসেল নামে কোনো পুলিশ আমার থানায় নেই।
তিনি বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। তার সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, বিকাশ আশঙ্কা মুক্ত।
মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, ভোর রাতে যাত্রাবাড়ি পুলিশ ডিসিসির এক পরিদর্শককে বেধড়ক প্রহর করেছে। আমি নিজে গিয়ে দেখলাম তার রক্তাক্ত শরির। জনগণের জানমাল হেফাজত করর কথা হচ্ছে পুলিশ বাহিনীর। কিন্তু পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। মনে হচ্ছে, পুলিশ বাহিনীর যে নীতি আদর্শ আছে তার বিচ্চুতি ঘটছে। এখন ভাবার সময় এসেছে এই বাহিনীকে ঠিক তাদের নিয়ম নীতির মধ্যে আনার। এ বাহিনীর যে সব দুর্বৃত্ত এ ধরনের ঘটনার সাথে যুক্ত তাদেরকে কি করে আইনের আওতায় আনা যায়, সে বিষয়টিও ভাবতে হবে। মনে রাখতে হবে বৃহত্তর স্বার্থে দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে চিন্তা না করে জাতীয় মঙ্গলের জন্য দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সরকারকে এ কাজটি করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, যখন একটি বাহিনীকে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবহার করা হয়। যখন তাকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার চিন্তা করবেন। যখন বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে আপনি ঢুকে যাবেন তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকবে। অন্যায়ভাবে মানুষের ওপর পুলিশ যে শারিরিক-মানসিক নির্যাতন করছে। সেসব ঘটনাগুলো তদন্ত হওয়া দরকার। বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে আমাদের সান্তনা না দিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে পুলিশ বাহিনীর এই দুর্বৃত্তদের কিভাবে চিহ্নিত করবেন এবং কিভাবে আইনের আওতায় আনবেন।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, ওয়ারী এলাকায় ছিনতাই ঠেকাতে ছিনতাই প্রতিরোধ টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের অর্জনও বেশ ভালো। বিকাশের ঘটনাটি স্রেফ ভুল-বুঝাবুঝি। এ ঘটনায় এডিসি মোহাম্মদ মইনুল হাসান ও এসি (প্রশাসন) কামরুল হাসানকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে কোনো ধরনের গাফিলতি পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, গত ৯ জানুয়ারী মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ শিকদারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে চাঁদার দাবিতে মধ্যরাতে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এসআই মাসুদ মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের কাছে রাব্বীকে আটক করেন এবং থানায় না নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা গাড়িতে রেখে ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’ বানানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশের গাড়িতে থাকার সময় একইভাবে পথচারীদের আটকে পুলিশ সদস্যদের অর্থ আদায় করতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন রাব্বী। ওই ঘটনার পর এসআই মাসুদকে প্রত্যাহার করা হয়। এ ঘটনায়ও পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
এবার সাদা পোশাকধারী পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর জোনের পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাস (৪৫)। দায়িত্ব পালনকালে আজ শুক্রবার ভোররাতে রাজধানীর মীরহাজিরবাগ খালপাড় মোড়ে পুলিশ তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ করেছেন বিকাশ ও তার পরিবার। মোহাম্মদপুরে ব্যাংক কর্মকর্তার ওপর নির্যাতনের ঘটনার কোনো কুল কিনারা না হতেই এবার নির্যাতনের অভিযোগ যাত্রাবাড়ি পুলিশের বিরুদ্ধে।
এদিকে একের পর এক ঘটনার পরও দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না নেয়ায় পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কর্মী, আহত বিকাশের স্বজন ও সহকর্মীরা।
বিকাশ চন্দ্রে দাস অভিযোগ করেন, পুলিশ তাকে বেধড়ক পিটিয়েছে। লাঠি ও পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে।
জানা গেছে, ঘটনার পরপরই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় বিকাশকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
বিকাশের বড় ভাই দীপক কুমার দাস জানান, বিকাশ চন্দ্র ডিএসসিসির ৫ নম্বর জোনের (ওয়ার্ড-৪৮ ও ৫০) পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক (সিআই) হিসেবে কর্মরত। প্রতিদিনের মতো ভোররাতে দায়িত্ব পালনের জন্য দয়াগঞ্জের জেলে পাড়া ১০ নম্বর বাসা থেকে মোটরসাইকেল যোগে বের হয়। মীরহাজিরবাগ এলাকায় পৌঁছালে যাত্রাবাড়ি থানার সাদা পোশাকধারী চারজন পুলিশ তাকে থামার সংকেত দেন। বিকাশ তার পরিচয় দেয়ার পরও ওই পুলিশরা তাকে মারধর করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, যাত্রাবাড়ি থানার এসআই আশরাদ হোসেন আকাশ মোটরসাইকেল থামানো মাত্রই কোনো কারণ ছাড়াই ঘাড়ে আঘাত করে। এ সময় বিকাশ তার পরিচয় দিলেই গলা চেপে ধরে বলে, তোর কোন বাপ আছে নিয়ে আয়। এ কথা বলেই, বেদড়ক পিটাতে থাকে এবং পিস্তলের বাট দিয়ে বিকাশের কপালে আঘাত করে। এ সময় যাত্রাবাড়ি থানার এসআই মনোজ ও রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, বিকাশকে পুলিশ নির্যাতন করছে দেখে ওই এলাকার পরিচ্ছন্নকর্মীরা ছুটে এসে বাধা দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরবর্তীতে পরিচ্ছন্নকর্মীরা তাদের গাড়ি দিয়ে পুলিশের গাড়ি বেরিকেড দেয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে ওই এলাকার প্যানেল মেয়র, আমরা স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। দ্রুত বিকাশকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে দীপক কুমার দাস জানান, চিকিৎসকরা বলছে ২৪ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না। বিকেলে তিনটা পর্যন্ত অচেতন ছিলেন বিকাশ। সন্ধ্যার পরে তাকে ল্যাবএইডে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন দীপক কুমার।
ঢাকা মেডিক্যালে বিকাশের স্ত্রী স্বরস্বতী দাস জানান, রাত ৪টার দিকে প্রতিদিনের মতো কাজে বের হন বিকাশ। ভোর সোয়া ৫টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি লাশের মতো ভ্যানগাড়িতে ফেলে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, পিস্তল দিয়ে আঘাত করায় কপাল ফুলে গেছে। ঘাড়ে আঘাত ও বাম পায়ে বেশি জখম রয়েছে। পুলিশের বেধড়ক পিটুনিতে বেশ কয়েক ঘণ্টা বিকাশ অচেতন ছিলেন বলে অভিযোগ স্বরস্বতীর।
আজ দুপুরে ঢাকা মেডিক্যালের ২০১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বিকাশের নাকে রক্তজমাট বেধে আছে। তিনি অচেতন অবস্থায় চিৎ হয়ে হাসপাতালের বেডে পড়ে আছেন। বেডের পাশে স্বজনরা ভির করে আছেন।
বিকাশের চাচতো ভাই গোপাল দাস বলেন, পুলিশ আমাদের রক্ষা করবে। সে পুলিশ যদি এমন আচড়ন করে তাহলে আমরা সাধারণ মানুষে যাবো কোথায়। দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না নেয়ায় পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। আমরা স্বরাস্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর ঘটনার সুস্থ বিচার চাই।
আজ দুপুরে আহত বিকাশকে ঢাকা মেডিক্যালে দেখতে এসে যাত্রাবাড়ি থানার ওসি অবনী শঙ্কর কর সাংবাদিকদের বলেন, ওই এলাকাটি ছিনতাই প্রবণ এলাকা। তাই পুলিশ ওই এলাকায় টহল দিচ্ছিলো। এ সময় সাদা পোশাকধারী চারজন পুলিশ তাকে থামার সঙ্কেত দেয়। বিকাশ পুলিশকে ছিনতাইকারী ভেবে মোটরসাইকেল রেখে দৌঁড় দেয়। আর পুলিশও বিকাশকে ছিনতাইকারী ভেবে মারধর করে।
তিনি বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। এসআই আকাশ তাকে ছিনতাইকারী ভেবেই মারধর করেছে। এছাড়া অন্য এসআই মনোজ, আকাশের টিমের সহযোগী টিম হিসেবে কাজ করছিলো। এছাড়া রাসেল নামে কোনো পুলিশ আমার থানায় নেই।
তিনি বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। তার সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, বিকাশ আশঙ্কা মুক্ত।
মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, ভোর রাতে যাত্রাবাড়ি পুলিশ ডিসিসির এক পরিদর্শককে বেধড়ক প্রহর করেছে। আমি নিজে গিয়ে দেখলাম তার রক্তাক্ত শরির। জনগণের জানমাল হেফাজত করর কথা হচ্ছে পুলিশ বাহিনীর। কিন্তু পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। মনে হচ্ছে, পুলিশ বাহিনীর যে নীতি আদর্শ আছে তার বিচ্চুতি ঘটছে। এখন ভাবার সময় এসেছে এই বাহিনীকে ঠিক তাদের নিয়ম নীতির মধ্যে আনার। এ বাহিনীর যে সব দুর্বৃত্ত এ ধরনের ঘটনার সাথে যুক্ত তাদেরকে কি করে আইনের আওতায় আনা যায়, সে বিষয়টিও ভাবতে হবে। মনে রাখতে হবে বৃহত্তর স্বার্থে দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে চিন্তা না করে জাতীয় মঙ্গলের জন্য দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সরকারকে এ কাজটি করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, যখন একটি বাহিনীকে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবহার করা হয়। যখন তাকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার চিন্তা করবেন। যখন বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে আপনি ঢুকে যাবেন তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকবে। অন্যায়ভাবে মানুষের ওপর পুলিশ যে শারিরিক-মানসিক নির্যাতন করছে। সেসব ঘটনাগুলো তদন্ত হওয়া দরকার। বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে আমাদের সান্তনা না দিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে পুলিশ বাহিনীর এই দুর্বৃত্তদের কিভাবে চিহ্নিত করবেন এবং কিভাবে আইনের আওতায় আনবেন।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, ওয়ারী এলাকায় ছিনতাই ঠেকাতে ছিনতাই প্রতিরোধ টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের অর্জনও বেশ ভালো। বিকাশের ঘটনাটি স্রেফ ভুল-বুঝাবুঝি। এ ঘটনায় এডিসি মোহাম্মদ মইনুল হাসান ও এসি (প্রশাসন) কামরুল হাসানকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে কোনো ধরনের গাফিলতি পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, গত ৯ জানুয়ারী মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ শিকদারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে চাঁদার দাবিতে মধ্যরাতে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এসআই মাসুদ মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের কাছে রাব্বীকে আটক করেন এবং থানায় না নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা গাড়িতে রেখে ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’ বানানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশের গাড়িতে থাকার সময় একইভাবে পথচারীদের আটকে পুলিশ সদস্যদের অর্থ আদায় করতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন রাব্বী। ওই ঘটনার পর এসআই মাসুদকে প্রত্যাহার করা হয়। এ ঘটনায়ও পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
No comments