বাংলাদেশে এক স্বৈরাচারের দাফন, আরেকজনের বজ্রমুষ্টি
১৯৮০-এর
দশকে বাংলাদেশ শাসনকারী জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ৮৯ বছর বয়সে গত ১৪
জুলাই মারা গেছেন। তার মৃত্যু তখনো শৈশবকাল কাটিয়ে উঠতে না পারা দেশটিতে
অন্যতম বিতর্কিত অধ্যায়ের ইহলৌকিক সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই
মৃত্যুতে বাংলাদেশীরা স্বৈরতান্ত্রিক শাসন এবং পরবর্তীকালে পর্দার অন্তরালে
ঘুঁটি চালাচালিতে মিশ্রিত একটি অধ্যায় সম্পর্কে ভাবতে উদ্দীপ্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিভাষায় এরশাদকেই একমাত্র ‘স্বৈরাচার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্রবীণেরা সাবেক লৌহমানবের ১৯৮২ সালে সামরিক শাসন ঘোষণাকে জাতির সদ্য বিকাশমান গণতন্ত্র ধ্বংসের প্রভাবক বিবেচনা করে থাকে। তরুণ বাংলাদেশদের কাছে তিনি স্রেফ একজন সুবিধাভোগী, নিজে স্বৈরাচারী না হলেও স্বৈরাচারের দোসর হিসেবেই পরিচিত। তাকে যেভাবেই স্মরণ করা হোক না কেন, সমসাময়িক বাংলাদেশের রাজনীতিতে এরশাদের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না, অন্তত বাংলাদেশের বর্তমান নেতা শেখ হাসিনাকে তার গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন দেয়ার কারণে।
বস্তুত, ১৯৭৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত কয়েক দফার সামরিক অভ্যুত্থানের পর এরশাদের সমর্থনই ২০০৮ সালের গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের নির্বাচনে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জয় পাওয়ার জন্য সহায়ক হয়। শুরুতে এমন আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছিল যে বাংলাদেশ অবশেষে স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো কার্যকর গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও প্রক্রিয়া রপ্ত করতে সক্ষম হয়েছে। বাস্তবে শেখ হাসিনার বর্তমান মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাটা এরশাদের করায়াত্বে না থাকা এক ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। প্রধান বিরোধী দল ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে, আর ২০১৮ সালের নির্বাচনকে নিউ ইয়র্ক টাইমস অভিহিত করেছে ‘প্রহসনের’ নির্বাচন বলে।
ক্ষমতায় আসার জন্য হাসিনাকে অভ্যুত্থান করতে না হলেও তিনি বাংলাদেশের বহুত্ববাদী গণতন্ত্রের স্বপ্নভঙ্গ করতে গণতান্ত্রিক বিরোধীদের ধ্বংস করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর নির্ভর করেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরিক্রমায় বিরোধী বিএনপির হাজার হাজার সদস্য ও প্রার্থীকে কল্পিত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ভোটাভুটি শুরু হওয়ার পর ৪০ জনের বেশি প্রার্থী নিজেদের প্রার্থিতা থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
হাসিনার আমলে সরকার সহিংসভাবে রাজনৈতিক বিরোধী ও সমালোচকদের নির্যাতন করেছে, অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক ও শিল্পীদের গ্রেফতার, কারারুদ্ধ করতে আইনের অপব্যবহার করেছে। বাংলাদেশের ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ ব্যানারে নিরাপত্তা বাহিনী শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা, হাজারের বেশি লোককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ হেফাজতে ছাত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সরকার, প্রধানমন্ত্রী এবং এমনকি তার স্বজনদের অনলাইনে সমালোচনা করার জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রয়োগ করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফটোগ্রাফার-অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলমকে ১০৭ দিন আটক রাখা হয়েছিল ফেসবুক ও আল জাজিরা টেলিভিশনে ২০১৮ সালের আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা করায়।
অবশ্য সবচেয়ে কঠোর আচরণ রাখা ছিল বিএনপি ও এর সদস্যদের জন্য। দেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পর বাংলাদেশের একটি আদালত সম্প্রতি খালেদা জিয়ার ৫ বছরের কারাদণ্ড দ্বিগুণ করে ১০ বছর করেছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়ানোকে অনেকে মনে করছে, এটা ছিল তাকে ২০১৮ সালের নির্বাচন থেকে দূ রাখার পরিকল্পিত প্রয়াস এবং তাতে কাজ হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন পরিক্রমায় আসলে সরকার তার লৌহমুষ্টি ক্রমবর্ধান হারে প্রকাশই করেছে। সরকারের প্রয়োজন ছিল অবাধ মতপ্রকাশ, আইনের শাসন ও প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে স্বীকৃতি দেয়া।
শেখ হাসিনার সমর্থকেরা তার শাসনকালকে যৌক্তিক করতে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। একসময়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে গরিব অঞ্চলগুলোর একটি বিবেচিত বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর চরম দারিদ্র্যের যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়। অবশ্য ২০০৬ সাল থেকে দেশের বার্ষিক জিডিপি প্রতি বছরে ২.৫ ভাগ হারে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে যায়। ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশীরা ভারতীয়দের চেয়েও ধনী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর একটি কারণ নিম্নপ্রযুক্তির, শ্রমঘন শিল্প কারখানাগুলোর চীন ও অন্যান্য বাজার থেকে বাংলাদেশে সরে আসা। দেশের পোশাক শিল্প এখন দেশের রফতানি আয়ের ৮০ ভাগেরও বেশি আনছে। এর মাধ্যমে চীনের পর বাংলাদেশই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী। গত দুই দশকে মাথাপিছু প্রকৃত মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে, ভারতের মতোই ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
উন্নয়েনের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমানে ও দীর্ঘ মেয়াদে হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনে স্থায়ী হওয়া অস্থিতিশীলতা তার সরকারের দাবি করা অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে নি:শেষ করার ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিয়ে বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভের মুখে তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের (থ্রি জি ও ফোর জি) ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ করা হয়েছিল। তাছাড়া দেশের পরিবহন খাত বিক্ষোভের আগের মতোই এখনো দুর্নীতিপরায়ণ, অনিয়ন্ত্রিত রয়ে গেছে।
উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অংশীদারদের উচিত হবে এসব নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। কিন্তু শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে তার কঠোর নির্যাতনের জন্য সমালোচনা এড়িয়ে যেতে পেরেছেন, এমনকি জাতিসংঘের চ্যাম্পিয়ন্স অব দি আর্থ প্রাইজের মতো পুরস্কার পর্যন্ত জিতেছেন। জাতিসংঘ দৃশ্যত পরিবেশ রক্ষার নির্দেশনার আলোকে করা সংবিধান সংশোধনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ সংস্থাটি ওই একই নথিতে গণতান্ত্রিক সুরক্ষাকে অগ্রাহ্য করার বিষয়টি নজরে আনতে পারেনি।
নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনগুলোর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক প্রত্যাঘাত বিবেচেনা করলে বলতে হবে যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পতন এই অঞ্চল থেকে ভিন্ন কিছু নয়। তা সত্ত্বেও অপেক্ষাকৃত ভালো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও দেশের রাজনীতি এখনো যে আকাঙ্ক্ষা লালন করে এরশাদের মৃত্যু সে কথা স্মরণ করিয়ে দিতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিভাষায় এরশাদকেই একমাত্র ‘স্বৈরাচার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্রবীণেরা সাবেক লৌহমানবের ১৯৮২ সালে সামরিক শাসন ঘোষণাকে জাতির সদ্য বিকাশমান গণতন্ত্র ধ্বংসের প্রভাবক বিবেচনা করে থাকে। তরুণ বাংলাদেশদের কাছে তিনি স্রেফ একজন সুবিধাভোগী, নিজে স্বৈরাচারী না হলেও স্বৈরাচারের দোসর হিসেবেই পরিচিত। তাকে যেভাবেই স্মরণ করা হোক না কেন, সমসাময়িক বাংলাদেশের রাজনীতিতে এরশাদের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না, অন্তত বাংলাদেশের বর্তমান নেতা শেখ হাসিনাকে তার গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন দেয়ার কারণে।
বস্তুত, ১৯৭৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত কয়েক দফার সামরিক অভ্যুত্থানের পর এরশাদের সমর্থনই ২০০৮ সালের গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের নির্বাচনে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জয় পাওয়ার জন্য সহায়ক হয়। শুরুতে এমন আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছিল যে বাংলাদেশ অবশেষে স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো কার্যকর গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও প্রক্রিয়া রপ্ত করতে সক্ষম হয়েছে। বাস্তবে শেখ হাসিনার বর্তমান মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাটা এরশাদের করায়াত্বে না থাকা এক ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। প্রধান বিরোধী দল ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে, আর ২০১৮ সালের নির্বাচনকে নিউ ইয়র্ক টাইমস অভিহিত করেছে ‘প্রহসনের’ নির্বাচন বলে।
ক্ষমতায় আসার জন্য হাসিনাকে অভ্যুত্থান করতে না হলেও তিনি বাংলাদেশের বহুত্ববাদী গণতন্ত্রের স্বপ্নভঙ্গ করতে গণতান্ত্রিক বিরোধীদের ধ্বংস করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর নির্ভর করেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরিক্রমায় বিরোধী বিএনপির হাজার হাজার সদস্য ও প্রার্থীকে কল্পিত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ভোটাভুটি শুরু হওয়ার পর ৪০ জনের বেশি প্রার্থী নিজেদের প্রার্থিতা থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
হাসিনার আমলে সরকার সহিংসভাবে রাজনৈতিক বিরোধী ও সমালোচকদের নির্যাতন করেছে, অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক ও শিল্পীদের গ্রেফতার, কারারুদ্ধ করতে আইনের অপব্যবহার করেছে। বাংলাদেশের ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ ব্যানারে নিরাপত্তা বাহিনী শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা, হাজারের বেশি লোককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ হেফাজতে ছাত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সরকার, প্রধানমন্ত্রী এবং এমনকি তার স্বজনদের অনলাইনে সমালোচনা করার জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রয়োগ করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফটোগ্রাফার-অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলমকে ১০৭ দিন আটক রাখা হয়েছিল ফেসবুক ও আল জাজিরা টেলিভিশনে ২০১৮ সালের আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা করায়।
অবশ্য সবচেয়ে কঠোর আচরণ রাখা ছিল বিএনপি ও এর সদস্যদের জন্য। দেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পর বাংলাদেশের একটি আদালত সম্প্রতি খালেদা জিয়ার ৫ বছরের কারাদণ্ড দ্বিগুণ করে ১০ বছর করেছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়ানোকে অনেকে মনে করছে, এটা ছিল তাকে ২০১৮ সালের নির্বাচন থেকে দূ রাখার পরিকল্পিত প্রয়াস এবং তাতে কাজ হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন পরিক্রমায় আসলে সরকার তার লৌহমুষ্টি ক্রমবর্ধান হারে প্রকাশই করেছে। সরকারের প্রয়োজন ছিল অবাধ মতপ্রকাশ, আইনের শাসন ও প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে স্বীকৃতি দেয়া।
শেখ হাসিনার সমর্থকেরা তার শাসনকালকে যৌক্তিক করতে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। একসময়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে গরিব অঞ্চলগুলোর একটি বিবেচিত বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর চরম দারিদ্র্যের যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়। অবশ্য ২০০৬ সাল থেকে দেশের বার্ষিক জিডিপি প্রতি বছরে ২.৫ ভাগ হারে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে যায়। ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশীরা ভারতীয়দের চেয়েও ধনী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর একটি কারণ নিম্নপ্রযুক্তির, শ্রমঘন শিল্প কারখানাগুলোর চীন ও অন্যান্য বাজার থেকে বাংলাদেশে সরে আসা। দেশের পোশাক শিল্প এখন দেশের রফতানি আয়ের ৮০ ভাগেরও বেশি আনছে। এর মাধ্যমে চীনের পর বাংলাদেশই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী। গত দুই দশকে মাথাপিছু প্রকৃত মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে, ভারতের মতোই ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
উন্নয়েনের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমানে ও দীর্ঘ মেয়াদে হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনে স্থায়ী হওয়া অস্থিতিশীলতা তার সরকারের দাবি করা অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে নি:শেষ করার ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিয়ে বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভের মুখে তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের (থ্রি জি ও ফোর জি) ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ করা হয়েছিল। তাছাড়া দেশের পরিবহন খাত বিক্ষোভের আগের মতোই এখনো দুর্নীতিপরায়ণ, অনিয়ন্ত্রিত রয়ে গেছে।
উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অংশীদারদের উচিত হবে এসব নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। কিন্তু শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে তার কঠোর নির্যাতনের জন্য সমালোচনা এড়িয়ে যেতে পেরেছেন, এমনকি জাতিসংঘের চ্যাম্পিয়ন্স অব দি আর্থ প্রাইজের মতো পুরস্কার পর্যন্ত জিতেছেন। জাতিসংঘ দৃশ্যত পরিবেশ রক্ষার নির্দেশনার আলোকে করা সংবিধান সংশোধনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ সংস্থাটি ওই একই নথিতে গণতান্ত্রিক সুরক্ষাকে অগ্রাহ্য করার বিষয়টি নজরে আনতে পারেনি।
নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনগুলোর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক প্রত্যাঘাত বিবেচেনা করলে বলতে হবে যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পতন এই অঞ্চল থেকে ভিন্ন কিছু নয়। তা সত্ত্বেও অপেক্ষাকৃত ভালো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও দেশের রাজনীতি এখনো যে আকাঙ্ক্ষা লালন করে এরশাদের মৃত্যু সে কথা স্মরণ করিয়ে দিতে পারে।
গত ১৪ জুলাই সামরিক স্বৈরশাসক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে |
No comments