‘রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়াকে যুক্ত করা পরিকল্পিত নয়’
ক্রিমিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও সুসংহত করার দিকে নজর দিচ্ছে রাশিয়া। গত শনিবার রুশ বাহিনী সেখানে ইউক্রেনের একটি বিমানঘাঁটি দখলে নেওয়ার এবং রুশপন্থী বিক্ষোভকারীরা আরেকটি নৌঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার পর এমনটাই মনে হচ্ছে। তবে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার বিষয়টি ‘পরিকল্পিত’ ছিল না বলে দাবি করেন ইইউতে মস্কোর রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির শিজভ। ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিলে পশ্চিমারা ‘মারাত্মক ভুল’ করবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ন্যাটোর ইউরোপীয় কমান্ডার জেনারেল ফিল ব্রিডলাভ ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা জড়ো করার পদক্ষেপের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মলদোভার ট্রান্স-ডাইনেস্টার অঞ্চল নিয়ে ন্যাটোর বিশেষ উদ্বেগ রয়েছে। এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সামরিক সহায়তা চাইলেও তাতে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। অবশ্য গতকাল রোববার কিয়েভে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী আরসেনিয়ে ইয়াতসেনিউক ও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনিমিয়ারের মধ্যে এক বৈঠকে ‘সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউক্রেন নিয়ে মস্কোর তৎপরতাকে স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের মতো ইউরোপকে বিভাজিত করার চেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
আর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ সতর্ক করে দেন, ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার তৎপরতা দেশটিকে দীর্ঘ মেয়াদে ‘একঘরে’ করে ফেলবে। রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ গত বছরের নভেম্বরে ইইউর সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তি করতে অস্বীকৃতি জানালে ইইউপন্থীরা রাজপথে নেমে আসেন। বিক্ষোভের মুখে তিনি গত ২২ ফেব্রুয়ারি পালিয়ে যান। এরপর ইউক্রেনের স্বায়ত্তশাসিত ক্রিমিয়ার কর্তৃপক্ষ ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার তৎপরতা শুরু করলে সংকট আরও ঘনীভূত হয়। ‘ইউরোপের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে’: ইউক্রেনের অন্তর্বর্তী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে জার্মানি বলেছে, রাশিয়ার তৎপরতা ইউরোপ মহাদেশের ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলছে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেইনিমিয়ার গতকাল ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইয়াতসেনিউকের সঙ্গে বৈঠক শেষে বলেন, ‘ক্রিমিয়ার গণভোট... আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং তা ইউরোপকে বিভাজিত করার চেষ্টা।’ যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেগ প্রভাবশালী পত্রিকা সানডে টেলিগ্রাফ-এ লেখা এক নিবন্ধে মন্তব্য করেন, যুক্তরাজ্য ও তার মিত্ররা ভয়ে পালাবে না। ইউক্রেন প্রশ্নে মস্কো যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা রাশিয়াকে দীর্ঘ মেয়াদে ‘একঘরে’ করে ফেলবে বলেও সতর্ক করে দেন তিনি। এদিকে ইইউতে মস্কোর রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির শিজভ দাবি করেন, ক্রিমিয়াকে যুক্ত করার মাধ্যমে ৬০ বছর ধরে চলা ‘অস্বাভাবিক’ অবস্থার অবসান ঘটেছে।এএফপি, বিবিসি ও সিএনএন।
No comments