অনিয়ন্ত্রিত সহিংসতার অনুমিত ফলাফল এ হামলা -গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ
উগ্রপন্থা
পর্যবেক্ষণ করেন, এমন অনেকের কাছে বাংলাদেশের ঢাকা হামলাটি ছিল এমন কিছু,
যা পুরোপুরি আকাঙ্খিত ছিল। গত বছর ধরে, বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান সহিংসতা
চাক্ষুষ করেছে। বিদেশী ও স্থানীয় Ñ যাদেরই উগ্রপন্থার শত্রু হিসেবে বিবেচনা
করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেই চালানো হয়েছে হামলা। এদের মধ্যে আছে সেকুলার
ব্লগার, মৌলবাদের সরব সমালোচক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু যেমন হিন্দু ও খ্রিস্টান,
পুলিশ কর্মকর্তা। এখন পর্যন্ত, সহিংসতা স্বল্পমাত্রার হামলার রূপ ধারণ
করেছে। এসব হামলায় ছোট একদল জঙ্গি, এমনকি দুয়েকজন ছাপাতি বা অস্ত্রধারী
জড়িত।
কিন্তু শুক্রবারের হামলা ছিল আরও উচ্চমাত্রার অপারেশন। প্রথমদিকের রিপোর্টে ইঙ্গিত রয়েছে, ৫ বন্দুকধারী, যাদের কাছে স্থানীয় পুলিশের অন্তত একটি হামলা ঠেকিয়ে দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ অটোমেটিক রাইফেল ও গ্রেনেড ছিল। অন্তত ১৮ মাস ধরে একটি বড় অপারেশন হতে পারে বলে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ছিল পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। গত বছর ক’টনীতিক এলাকায় হামলা চালানোর জটিল একটি পরিকল্পনা চলার ইঙ্গিত পাওয়ার পর আরও বেশি সতর্ক হয়ে উঠে সবাই। জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলোর ওপরও আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে ঢাকার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ বাড়তে থাকে।
কিন্তু তা আর কাজে দেয়নি। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার বরং এ পরিস্থিতির রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার দিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। বিরোধী দলের যা অবশিষ্ট আছে, তার ওপরই চলে দোষারোপ করেছে সরকার । নতুবা সোজাসাপ্টা আইএস বা আল কায়দার সঙ্গে জড়িত কোন জঙ্গি নেটওয়ার্কের উপস্থিতি অস্বীকার করেছে। অথচ, একের পর এক হত্যাকান্ডের দায় নিয়েছে এ সংগঠন দু’টি।
স্থানীয় ব্লগার ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা উৎসাহিত বা পৃষ্ঠপোষকতা করেছে এমন চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানের বদলে সরকার বেশ ভালোই আপোষে এসেছে রক্ষণশীলদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী বরং বলেছেন যারা ধর্মীয় সংবেদনশীলতার অবমাননা করেছেন তারাও তাদের পরিণতির জন্য কিছুটা দায়ী। পুলিশ সুরক্ষা যেসব ব্লগার চেয়েছে, তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।
তাহলে, এসব হামলার জন্য কারা দায়ী হতে পারে? শুক্রবার রাতে ইসলামিক স্টেট এ হামলার দায় স্বীকার করে তাদের আমাক বার্তাসংস্থার মাধ্যমে। কিন্তু সংস্থাটির সংশ্লিষ্টতা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। কার্যক্রম বিস্তারের সম্ভাব্য উর্বরভ’মি হিসেবে আল কায়দা ও আইএস Ñ উভয়েই বাংলাদেশকে বিবেচনা করছে। তাই তাদের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বীতা এখানে মূল চাবিকাঠি। নিজেদের প্রোপাগান্ডায় বাংলাদেশের কথা প্রতিনিয়ত উল্লেখ করেছে আইএস। অপরদিকে বাংলাদেশ নিয়ে পুরো একটি ভিডিও ক্লিপই বানিয়েছে আল কায়দা। দেশের মুসলমানদের প্রতি ওই ভিডিওতে আহবান জানানো হয়েছে ‘ধর্মত্যাগী’ শাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।
কিন্তু বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যে আইএস’র কর্মকান্ডের মূলকেন্দ্র থেকে অনেকটা দূরে। দক্ষিণ এশিয়ায় এ সংগঠনের কখনই শক্ত অবস্থান ছিল না। অপরদিকে আল কায়দা পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৮ সালে। ১৯৯৬ সালের পর এ অঞ্চলে সংগঠনটির স্থায়ী অবস্থান রয়েছে। এ অঞ্চলকে নিজেদের কৌশল ও অস্তিত্বের মূলকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করে আল কায়দা। ২০১৪ সালে, আল কায়দার নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি আল কায়দা ইন সাউথ এশিয়া (একিউএসএ) নামে নতুন সহযোগী গোষ্ঠী সৃষ্টির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে তাদের অপারেশন বাংলাদেশে বিস্তৃত হয়েছে। এখন পর্যন্ত একিউএসএ কোন বড় ধরণের কিছু করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এটাও সম্ভব যে, ঢাকার অভিযানই হতে পারে তাদের প্রথম চেষ্টা।
বাংলাদেশ কি পালটা জবাব দিতে পারবে? স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে কাজ করা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোতে যথেষ্ট মার্কিন ও বৃটিশ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বিতর্কিত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) অনেক সাহায্যপুষ্ট। তবে সংস্থাটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগ ব্যাপক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে সহিংসতা গণমাধ্যমে কিছু আগ্রহ জন্মিয়েছে বটে। কিন্তু গোটা দুনিয়ার নীতিনির্ধারকরা এদিকে নজরই দেননি। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও দক্ষিণ এশিয়ার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশ কখনই ওয়াশিংটন ও লন্ডনের অগ্রাধিকার ছিল না। অর্থনীতির ওপর নজর আছে কিছুটা, যা এখন তুলনামূলকভাবে ভালো। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক বিরোধী, বহুত্ববাদ ও সহনশীল ঐতিজ্যের জন্য ক্রমেই সঙ্কুচিত হতে থাকা পরিবেশের দিকে মনোযোগ খুবই কম।
কিন্তু এ হামলার দরুন এসবের ইতি ঘটবে। এ হামলার পর দুনিয়ার অন্যতম বৃহৎ মুসলিম দেশটিতে সন্ত্রাসবাদের হুমকি উপেক্ষা করাটা ঢাকার কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের জন্য আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
কিন্তু শুক্রবারের হামলা ছিল আরও উচ্চমাত্রার অপারেশন। প্রথমদিকের রিপোর্টে ইঙ্গিত রয়েছে, ৫ বন্দুকধারী, যাদের কাছে স্থানীয় পুলিশের অন্তত একটি হামলা ঠেকিয়ে দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ অটোমেটিক রাইফেল ও গ্রেনেড ছিল। অন্তত ১৮ মাস ধরে একটি বড় অপারেশন হতে পারে বলে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ছিল পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। গত বছর ক’টনীতিক এলাকায় হামলা চালানোর জটিল একটি পরিকল্পনা চলার ইঙ্গিত পাওয়ার পর আরও বেশি সতর্ক হয়ে উঠে সবাই। জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলোর ওপরও আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে ঢাকার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ বাড়তে থাকে।
কিন্তু তা আর কাজে দেয়নি। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার বরং এ পরিস্থিতির রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার দিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। বিরোধী দলের যা অবশিষ্ট আছে, তার ওপরই চলে দোষারোপ করেছে সরকার । নতুবা সোজাসাপ্টা আইএস বা আল কায়দার সঙ্গে জড়িত কোন জঙ্গি নেটওয়ার্কের উপস্থিতি অস্বীকার করেছে। অথচ, একের পর এক হত্যাকান্ডের দায় নিয়েছে এ সংগঠন দু’টি।
স্থানীয় ব্লগার ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা উৎসাহিত বা পৃষ্ঠপোষকতা করেছে এমন চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানের বদলে সরকার বেশ ভালোই আপোষে এসেছে রক্ষণশীলদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী বরং বলেছেন যারা ধর্মীয় সংবেদনশীলতার অবমাননা করেছেন তারাও তাদের পরিণতির জন্য কিছুটা দায়ী। পুলিশ সুরক্ষা যেসব ব্লগার চেয়েছে, তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।
তাহলে, এসব হামলার জন্য কারা দায়ী হতে পারে? শুক্রবার রাতে ইসলামিক স্টেট এ হামলার দায় স্বীকার করে তাদের আমাক বার্তাসংস্থার মাধ্যমে। কিন্তু সংস্থাটির সংশ্লিষ্টতা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। কার্যক্রম বিস্তারের সম্ভাব্য উর্বরভ’মি হিসেবে আল কায়দা ও আইএস Ñ উভয়েই বাংলাদেশকে বিবেচনা করছে। তাই তাদের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বীতা এখানে মূল চাবিকাঠি। নিজেদের প্রোপাগান্ডায় বাংলাদেশের কথা প্রতিনিয়ত উল্লেখ করেছে আইএস। অপরদিকে বাংলাদেশ নিয়ে পুরো একটি ভিডিও ক্লিপই বানিয়েছে আল কায়দা। দেশের মুসলমানদের প্রতি ওই ভিডিওতে আহবান জানানো হয়েছে ‘ধর্মত্যাগী’ শাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।
কিন্তু বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যে আইএস’র কর্মকান্ডের মূলকেন্দ্র থেকে অনেকটা দূরে। দক্ষিণ এশিয়ায় এ সংগঠনের কখনই শক্ত অবস্থান ছিল না। অপরদিকে আল কায়দা পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৮ সালে। ১৯৯৬ সালের পর এ অঞ্চলে সংগঠনটির স্থায়ী অবস্থান রয়েছে। এ অঞ্চলকে নিজেদের কৌশল ও অস্তিত্বের মূলকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করে আল কায়দা। ২০১৪ সালে, আল কায়দার নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি আল কায়দা ইন সাউথ এশিয়া (একিউএসএ) নামে নতুন সহযোগী গোষ্ঠী সৃষ্টির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তান থেকে তাদের অপারেশন বাংলাদেশে বিস্তৃত হয়েছে। এখন পর্যন্ত একিউএসএ কোন বড় ধরণের কিছু করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এটাও সম্ভব যে, ঢাকার অভিযানই হতে পারে তাদের প্রথম চেষ্টা।
বাংলাদেশ কি পালটা জবাব দিতে পারবে? স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে কাজ করা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোতে যথেষ্ট মার্কিন ও বৃটিশ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বিতর্কিত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) অনেক সাহায্যপুষ্ট। তবে সংস্থাটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘণের অভিযোগ ব্যাপক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে সহিংসতা গণমাধ্যমে কিছু আগ্রহ জন্মিয়েছে বটে। কিন্তু গোটা দুনিয়ার নীতিনির্ধারকরা এদিকে নজরই দেননি। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও দক্ষিণ এশিয়ার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশ কখনই ওয়াশিংটন ও লন্ডনের অগ্রাধিকার ছিল না। অর্থনীতির ওপর নজর আছে কিছুটা, যা এখন তুলনামূলকভাবে ভালো। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক বিরোধী, বহুত্ববাদ ও সহনশীল ঐতিজ্যের জন্য ক্রমেই সঙ্কুচিত হতে থাকা পরিবেশের দিকে মনোযোগ খুবই কম।
কিন্তু এ হামলার দরুন এসবের ইতি ঘটবে। এ হামলার পর দুনিয়ার অন্যতম বৃহৎ মুসলিম দেশটিতে সন্ত্রাসবাদের হুমকি উপেক্ষা করাটা ঢাকার কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের জন্য আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
No comments