চারুশিল্প- নিসর্গের নান্দনিক রূপ-কথন by মোবাশ্বির আলম মজুমদার
সমরজিৎ
রায় চৌধুরীর ষষ্ঠ একক প্রদর্শনীর কাজগুলোতে সমসাময়িক কালের নিরীক্ষা
স্পষ্ট। তিনি শিল্পাচার্যের উত্তরাধিকারী, বিশুদ্ধ প্রকৃতিবাদী। চর্চায়
মননে ধারণ করেন বাংলার রূপ-রস ও মাটির ঘ্রাণ। এর বাইরে কখনো তাঁর ছবিতে
নগর-মহানগর এসেছে বটে, তবে সেটি খুব উল্লেখযোগ্য নয়।
তাঁর ছবির মূল সুরে রয়েছে রং, রেখা, আকৃতি আর ছন্দ। তবে প্রথমে বলা যাক কোন বিষয়কে উপজীব্য করে ছবি আঁকেন সমরজিৎ? প্রকৃতি, নগর, সভ্যতা, পাখির দৃষ্টিতে প্রকৃতি—এসবই তাঁর আঁকার বিষয়। প্রকৃতিকে তিনি দেখেন নানাভাবে, সরাসরি, কাছে ও দূরে গিয়ে।
নিসর্গের সঙ্গে জ্যামিতি যুক্ত করে গড়ে তোলেন ক্যানভাস। ক্যানভাসের চার প্রান্তের সঙ্গে শক্ত বন্ধন তৈরি করেন রেখা দিয়ে। হয়তো প্রকৃতি আর আমাদের মধ্যে এমন বন্ধনই সব সময় দৃশ্যমান। বলা যায়, প্রতিটি ছবিতে সচেতনভাবেই নিসর্গের নান্দনিক রূপ-কথন নির্মাণ করেন তিনি। চলমান প্রদর্শনীর ছবিগুলোও এর ব্যতিক্রম নয়।
তাঁর ছবির মূল সুরে রয়েছে রং, রেখা, আকৃতি আর ছন্দ। তবে প্রথমে বলা যাক কোন বিষয়কে উপজীব্য করে ছবি আঁকেন সমরজিৎ? প্রকৃতি, নগর, সভ্যতা, পাখির দৃষ্টিতে প্রকৃতি—এসবই তাঁর আঁকার বিষয়। প্রকৃতিকে তিনি দেখেন নানাভাবে, সরাসরি, কাছে ও দূরে গিয়ে।
নিসর্গের সঙ্গে জ্যামিতি যুক্ত করে গড়ে তোলেন ক্যানভাস। ক্যানভাসের চার প্রান্তের সঙ্গে শক্ত বন্ধন তৈরি করেন রেখা দিয়ে। হয়তো প্রকৃতি আর আমাদের মধ্যে এমন বন্ধনই সব সময় দৃশ্যমান। বলা যায়, প্রতিটি ছবিতে সচেতনভাবেই নিসর্গের নান্দনিক রূপ-কথন নির্মাণ করেন তিনি। চলমান প্রদর্শনীর ছবিগুলোও এর ব্যতিক্রম নয়।
এবার কথা বলা যাক শিল্পীর রং ব্যবহার নিয়ে। লাল, নীল ও হলুদ তাঁর ছবির প্রধান রং। পরবর্তীকালে প্রয়োজন অনুযায়ী কালো আর সাদা রঙের ব্যবহার করেছেন। বিন্দু, রেখা, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত—তাঁর কাজে এমন নানা জ্যামিতি উপস্থিত হরেক রঙের আশ্রয়ে। অনেক ভারী বুনট নয়, আবার স্বচ্ছ জমিনও নয়। কখনো বা হালকা রঙের প্রলেপে ক্যানভাসের সাদা রং ঢেকে দিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছেন পরবর্তী বিষয় সৃষ্টির জন্য। আর এভাবেই রঙের ব্যবহারে মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন সমরজিৎ।
প্রদর্শনীতে মোট চিত্রকর্ম রয়েছে ৭১টি। মাধ্যমে হিসেবে আছে অ্যাক্রিলিক, এচিং, ড্রাই পয়েন্ট, জলরং ও অ্যাকুয়াটিন্ট। সমরজিৎ রায় চৌধুরীর পড়ালেখার বিষয় গ্রাফিক ডিজাইন হলেও পরবর্তীকালে নিজের কাজে নিজস্ব একটি রীতি গড়ে তুলেছেন তিনি।
একটি ছবির কথা বলে আলোচনা শেষ করব। ছবিটির নাম ‘এন্ড অব দ্য ডে।’ অর্থাৎ দিনের শেষে। এ ছবিতে আছে দিন শেষের আভা। আলট্রামেরিন রঙের মধ্যে নীল ভেদ করে আকাশে হলুদ আর কমলা রঙের স্ফুরণ দেখা যায়। কৌণিক আড়াআড়ি। এ ছাড়া অসংখ্য রেখার সঙ্গে মিশে আছে মসজিদ-মন্দির ও গির্জার অবয়ব। আরও দূরের ঘরবাড়ি ছোট ছোট আকৃতিতে রূপ নিয়ে অবস্থান নিয়েছে আকাশের কাছে। নীলের আধিক্য গড়ে ওঠা এ ছবিতে সন্ধ্যার মুহূর্তকে তুলে এনেছেন শিল্পী। প্রকৃতির এমন অনেক চেনা গল্পই সমরজিৎ রায় চৌধুরীর রং-তুলির ছোঁয়ায় ছবি হয়ে উঠেছে, যেখানে পৃথিবীকে তিনি দেখেছেন অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে।
বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টসে ৬ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
No comments