জাপানের বিনিয়োগ-সম্ভাবনা -আঞ্চলিক সহযোগিতা by আবদুল্লাহ্-আল-মামুন
জাপান ও বাংলাদেশের নতুন সম্পর্কের নাম দেওয়া হয়েছে জাপান-বাংলাদেশ কমপ্রিহেনসিভ ফ্রেন্ডশিপ। ভারত-জাপান নতুন সম্পর্কের নাম স্পেশাল স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড গ্লোবাল পার্টনারশিপ। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জাপানের শুরু হয়েছে এ নিউ পার্টনারশিপ বিটুইন ম্যারিটাইম কানট্রিজ। মিয়ানমারের সঙ্গে গত বছর ডিসেম্বরে স্বাক্ষরিত হয়েছে জাপান-মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট এগ্রিমেন্ট। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (JETRO) ২০১৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী পাকিস্তানে জাপানি কোম্পানিগুলোর লাভ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। প্রথমে রয়েছে তাইওয়ানে অবস্থিত জাপানি কোম্পানিগুলো। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে নেপাল দূতাবাসের আয়োজনে টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছে নেপালে জাপানের বিনিয়োগসংক্রান্ত সেমিনার। ভুটানের অর্থনীতি সমীক্ষায় সহযোগিতা করছে জাপান, যার ওপর ভিত্তি করে ভুটানের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কৌশলপত্র তৈরি হবে।
এসব থেকে সহজেই বোঝা যায়, জাপান এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক তৈরিতে খুবই আগ্রহী। এর কারণ দক্ষিণ এশিয়াসহ এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব, চীনের সঙ্গে সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে বিরোধ, আবেনোমিক্স-এর ধারণায় অর্থনৈতিক মন্দা থেকে মুক্ত হতে দেশি অর্থনীতির সংস্কার ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সুবিধা অর্জন, চায়না প্লাস ওয়ান পলিসির অধীন বিনিয়োগের জন্য নতুন স্থানের সন্ধান, আন্তরাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে চীনে অবস্থিত জাপানি কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনিশ্চয়তা, ভৌগোলিক ও সমুদ্র নিরাপত্তা এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিকাশমান অর্থনীতি। কারণ যা-ই হোক, অর্থনৈতিক সম্পর্কের যে হাত জাপান প্রসারিত করেছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য অপরিসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করেছে। তবে, এ অঞ্চলের মোট জাপানি বিনিয়োগের কত অংশ কোন দেশে যাবে, তা নির্ভর করবে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। জাপানি বিনিয়োগ পেতে কোন দেশের বাস্তবতা কী, এবার সেদিকে নজর দেওয়া যাক।
জাপানে চলছে আবেনোমিক্স আর ভারতে মোদিনোমিক্স। মোদি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি ‘লুক ইস্ট’ পলিসিকে পরিপূর্ণতা দিতে চান জাপানের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে। মোদি সম্প্রতি জাপান সফর করেন। নতুন পার্টনারশিপের আওতায় জাপান ভারতকে ৩৫ ট্রিলিয়ন ইয়েনের সরকারি সাহায্য ও বেসরকারি বিনিয়োগের নিশ্চয়তা প্রদান দিয়েছে। জাপানি বিনিয়োগের অনেকগুলো বিষয় ভারতকে আশাবাদী করে তুলেছে। আর ২৪ বছর পর কোনো জাপানি প্রধানমন্ত্রীর শ্রীলঙ্কা সফরের ঘটনা ঘটেছে ৭ সেপ্টেম্বর। সম্প্রতি জাপানি কোম্পানিগুলো শ্রীলঙ্কায় আইটি, ফাইন্যান্স অ্যান্ড লজিস্টিকস খাতে বিনিয়োগ শুরু করেছে। শ্রীলঙ্কা জাপানি কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা সৃষ্টি করে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের নিশ্চয়তা দিয়েছে। শ্রীলঙ্কায় সস্তা ও দক্ষ জনশক্তি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এ আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে জাপানি বিনিয়োগের জন্য শ্রীলঙ্কাও হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
গত বছর মে মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মিয়ানমার সফর করেন, যা ছিল ৩১ বছর পর কোনো জাপানি সরকারপ্রধানের মিয়ানমার সফর। মিয়ানমার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উত্তরণের পাশাপাশি অন্তর্মুখিতা পরিহার করে চীনের বাইরে নতুন উন্নয়ন–সহযোগী হিসেবে জাপানকে পেতে চায়। জাপানও সদ্য উন্মুক্ত মিয়ানমারের সস্তা শ্রম ও বাজার দখল করতে চায়। ইয়াঙ্গুনের কাছে থিলাওয়াতে মিতসুবিশি, সুমিতোমো এবং মারুবিনির যৌথ উদ্যোগে ২৪০০ হেক্টর জমির ওপর তৈরি হচ্ছে বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা। ধারণা করা হচ্ছে, চীন ও থাইল্যান্ড থেকে অনেক জাপানি কোম্পানি মিয়ানমারে চলে আসতে পারে।
সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রায় সাড়ে নয় হাজার জাপানি কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা করছে। এর মধ্যে পাকিস্তানে রয়েছে প্রায় ৮০টি কোম্পানি। JETRO-এর জরিপ অনুযায়ী, পাকিস্তানে অবস্থিত জাপানি কোম্পানিগুলো লাভের দিক থেকে সারা পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। তবে সন্ত্রাসবাদ, অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে জাপানের দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় পাকিস্তান সম্ভবত অতটা গুরুত্ব পাবে না। ভৌগোলিক অবস্থান ও অবকাঠামোগত অসুবিধার কারণে নেপাল দীর্ঘদিন জাপানের বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করেও তেমন সফল হয়নি। তবে পর্যটনসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখন জাপানি কোম্পানিগুলো নেপালে বিনিয়োগের উৎসাহ দেখাচ্ছে। ভুটানও জাপানি বিনিয়োগের অংশীদার হতে চায়। এ জন্য তারা জাইকার সাহায্যে হ্যাপিনেস সার্ভে নামে অর্থনৈতিক সমীক্ষা পরিচালনা করছে। তবে অবকাঠামো, বাজারের আকার ও ভূরাজনৈতিক অবাস্তবতার কারণে ভুটানে আপাতত জাপানি বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখা যায় না।
এ রকম আঞ্চলিক বাস্তবতায় বাংলাদেশকে জাপানের বিনিয়োগ পেতে অন্তত তিনটি দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হবে: ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার। এমন মনে করার কারণ নেই যে জাপানের বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশমুখী। ৩৫তম ওডিএ প্যাকের বাইরে জাপানের প্রতিশ্রুত ৬০০ বিলিয়ন ইয়েনের অর্থ পেতে অনেক ধরনের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, জাপানি কোম্পানিগুলো যে দেশে বেশি সুবিধা পাবে, সে দেশে বিনিয়োগ করবে। জাপানের বিগ-বির মূল কথা হলো বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করা। বিগ-বি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের উচিত সব বাধা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাওয়া। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার আমাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে জাপানকে প্রধান সহযোগী হিসেবে পাওয়া নিশ্চিত করা।
এর জন্য যে বিষয়গুলোর দিকে এখন থেকেই নজর দেওয়া উচিত তা হলো: নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানির জোগান নিশ্চিত করা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া, এক ভবনে বিনিয়োগকারীদের জন্য সব সেবা নিশ্চিত করা, বিনিয়োগকারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ট্রেড ইউনিয়ন পরিচালনার জন্য যথাযথ আইন প্রণয়ন করা, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যে গুমোট রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তার সমাধানের পথ বের করা, আবের সফরের আগে ও ওই সময় যেসব আলোচনা ও পরিকল্পনা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দেওয়া এবং ভারতের মতো জাপানি নাগরিকদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করা। এসব করা না হলে বিগ-বি তো বটেই, পুরো জাপানি বিনিয়োগ সম্ভাবনাই অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে। জাপানি বিনিয়োগ চলে যেতে পারে ভারত, শ্রীলঙ্কা কিংবা মিয়ানমারে।
আবদুল্লাহ্-আল-মামুন: সহকারী অধ্যাপক, জাপান স্টাডি সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
munna.mamun@gmail.com
এসব থেকে সহজেই বোঝা যায়, জাপান এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক তৈরিতে খুবই আগ্রহী। এর কারণ দক্ষিণ এশিয়াসহ এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব, চীনের সঙ্গে সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে বিরোধ, আবেনোমিক্স-এর ধারণায় অর্থনৈতিক মন্দা থেকে মুক্ত হতে দেশি অর্থনীতির সংস্কার ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সুবিধা অর্জন, চায়না প্লাস ওয়ান পলিসির অধীন বিনিয়োগের জন্য নতুন স্থানের সন্ধান, আন্তরাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে চীনে অবস্থিত জাপানি কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনিশ্চয়তা, ভৌগোলিক ও সমুদ্র নিরাপত্তা এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিকাশমান অর্থনীতি। কারণ যা-ই হোক, অর্থনৈতিক সম্পর্কের যে হাত জাপান প্রসারিত করেছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য অপরিসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করেছে। তবে, এ অঞ্চলের মোট জাপানি বিনিয়োগের কত অংশ কোন দেশে যাবে, তা নির্ভর করবে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। জাপানি বিনিয়োগ পেতে কোন দেশের বাস্তবতা কী, এবার সেদিকে নজর দেওয়া যাক।
জাপানে চলছে আবেনোমিক্স আর ভারতে মোদিনোমিক্স। মোদি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি ‘লুক ইস্ট’ পলিসিকে পরিপূর্ণতা দিতে চান জাপানের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে। মোদি সম্প্রতি জাপান সফর করেন। নতুন পার্টনারশিপের আওতায় জাপান ভারতকে ৩৫ ট্রিলিয়ন ইয়েনের সরকারি সাহায্য ও বেসরকারি বিনিয়োগের নিশ্চয়তা প্রদান দিয়েছে। জাপানি বিনিয়োগের অনেকগুলো বিষয় ভারতকে আশাবাদী করে তুলেছে। আর ২৪ বছর পর কোনো জাপানি প্রধানমন্ত্রীর শ্রীলঙ্কা সফরের ঘটনা ঘটেছে ৭ সেপ্টেম্বর। সম্প্রতি জাপানি কোম্পানিগুলো শ্রীলঙ্কায় আইটি, ফাইন্যান্স অ্যান্ড লজিস্টিকস খাতে বিনিয়োগ শুরু করেছে। শ্রীলঙ্কা জাপানি কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা সৃষ্টি করে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের নিশ্চয়তা দিয়েছে। শ্রীলঙ্কায় সস্তা ও দক্ষ জনশক্তি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এ আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে জাপানি বিনিয়োগের জন্য শ্রীলঙ্কাও হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
গত বছর মে মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে মিয়ানমার সফর করেন, যা ছিল ৩১ বছর পর কোনো জাপানি সরকারপ্রধানের মিয়ানমার সফর। মিয়ানমার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উত্তরণের পাশাপাশি অন্তর্মুখিতা পরিহার করে চীনের বাইরে নতুন উন্নয়ন–সহযোগী হিসেবে জাপানকে পেতে চায়। জাপানও সদ্য উন্মুক্ত মিয়ানমারের সস্তা শ্রম ও বাজার দখল করতে চায়। ইয়াঙ্গুনের কাছে থিলাওয়াতে মিতসুবিশি, সুমিতোমো এবং মারুবিনির যৌথ উদ্যোগে ২৪০০ হেক্টর জমির ওপর তৈরি হচ্ছে বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা। ধারণা করা হচ্ছে, চীন ও থাইল্যান্ড থেকে অনেক জাপানি কোম্পানি মিয়ানমারে চলে আসতে পারে।
সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রায় সাড়ে নয় হাজার জাপানি কোম্পানি ব্যবসা পরিচালনা করছে। এর মধ্যে পাকিস্তানে রয়েছে প্রায় ৮০টি কোম্পানি। JETRO-এর জরিপ অনুযায়ী, পাকিস্তানে অবস্থিত জাপানি কোম্পানিগুলো লাভের দিক থেকে সারা পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। তবে সন্ত্রাসবাদ, অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে জাপানের দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় পাকিস্তান সম্ভবত অতটা গুরুত্ব পাবে না। ভৌগোলিক অবস্থান ও অবকাঠামোগত অসুবিধার কারণে নেপাল দীর্ঘদিন জাপানের বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করেও তেমন সফল হয়নি। তবে পর্যটনসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখন জাপানি কোম্পানিগুলো নেপালে বিনিয়োগের উৎসাহ দেখাচ্ছে। ভুটানও জাপানি বিনিয়োগের অংশীদার হতে চায়। এ জন্য তারা জাইকার সাহায্যে হ্যাপিনেস সার্ভে নামে অর্থনৈতিক সমীক্ষা পরিচালনা করছে। তবে অবকাঠামো, বাজারের আকার ও ভূরাজনৈতিক অবাস্তবতার কারণে ভুটানে আপাতত জাপানি বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখা যায় না।
এ রকম আঞ্চলিক বাস্তবতায় বাংলাদেশকে জাপানের বিনিয়োগ পেতে অন্তত তিনটি দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হবে: ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার। এমন মনে করার কারণ নেই যে জাপানের বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশমুখী। ৩৫তম ওডিএ প্যাকের বাইরে জাপানের প্রতিশ্রুত ৬০০ বিলিয়ন ইয়েনের অর্থ পেতে অনেক ধরনের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, জাপানি কোম্পানিগুলো যে দেশে বেশি সুবিধা পাবে, সে দেশে বিনিয়োগ করবে। জাপানের বিগ-বির মূল কথা হলো বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করা। বিগ-বি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের উচিত সব বাধা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাওয়া। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার আমাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে জাপানকে প্রধান সহযোগী হিসেবে পাওয়া নিশ্চিত করা।
এর জন্য যে বিষয়গুলোর দিকে এখন থেকেই নজর দেওয়া উচিত তা হলো: নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানির জোগান নিশ্চিত করা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া, এক ভবনে বিনিয়োগকারীদের জন্য সব সেবা নিশ্চিত করা, বিনিয়োগকারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ট্রেড ইউনিয়ন পরিচালনার জন্য যথাযথ আইন প্রণয়ন করা, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যে গুমোট রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তার সমাধানের পথ বের করা, আবের সফরের আগে ও ওই সময় যেসব আলোচনা ও পরিকল্পনা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দেওয়া এবং ভারতের মতো জাপানি নাগরিকদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করা। এসব করা না হলে বিগ-বি তো বটেই, পুরো জাপানি বিনিয়োগ সম্ভাবনাই অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে। জাপানি বিনিয়োগ চলে যেতে পারে ভারত, শ্রীলঙ্কা কিংবা মিয়ানমারে।
আবদুল্লাহ্-আল-মামুন: সহকারী অধ্যাপক, জাপান স্টাডি সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
munna.mamun@gmail.com
No comments