প্রথমে হাত-পা শীতল হয়ে আসে, তারপর...
প্রথমে হাত-পা শীতল হয়ে আসে। তারপর
চেহারাটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়, নড়াচড়া করার শক্তি থাকে না। শেষে কাঁপুনি
দিয়ে মাথা ঘুরে মেঝেতে ধপাস। এসব লক্ষণ দেখা গেছে কলম্বিয়ার উত্তরাঞ্চলের
এল কারমেন দ্য বলিভার শহরের অনেক কিশোরীর মধ্যে। রহস্যজনক এই অসুস্থতা
সেখানকার কিশোরীদের মধ্যে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সংক্রামক যৌনব্যাধি বিস্তারে ভূমিকা রাখে—এমন হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) প্রতিরোধে প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার পর এ অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। তবে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসের দাবি, এইচপিভি প্রতিষেধকবিষয়ক ক্যাম্পেইন নিরাপদ ছিল।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সংক্রামক যৌনব্যাধি বিস্তারে ভূমিকা রাখে—এমন হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) প্রতিরোধে প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার পর এ অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। তবে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসের দাবি, এইচপিভি প্রতিষেধকবিষয়ক ক্যাম্পেইন নিরাপদ ছিল।
চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়েছেন, শিরার মাধ্যমে প্রবাহিত কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ভুক্তভোগী ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী ইভা মারকাদো বলল, ‘তারা আমাকে মে মাসে টিকা দেয়। আগস্ট মাস থেকে আমি মূর্ছা যেতে শুরু করি।...আমার পা দুটি ভারী হয়ে যাচ্ছিল, হাত-পায়েও শক্তি পাচ্ছিলাম না।...জ্ঞান ফেরার পর দেখি, আমি হাসপাতালে।’ এক মাসের মধ্যে সাতবার তার এমনটা হয়েছে।
৬৭ হাজার বাসিন্দার এল কারমেন দ্য বলিভার শহরের অধিকাংশ পরিবারের কিশোরীদের ক্ষেত্রে এই রহস্যজনক অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। তবে কী কারণে বা কী থেকে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা কেউ জানে না। শহরের নুয়েস্ত্রা সেনোরা দেল কারমেন হাসপাতালে রহস্যজনক অসুস্থতায় আক্রান্ত কিশোরীদের ভিড় জমেছে। হাসপাতালটির কর্মকর্তা অগোস্তো আগামেজ জানান, তাদের হাসপাতালে প্রায় ৩৭০ জনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন বালকও ছিল। রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অজানা অসুস্থতায় আক্রান্ত কিশোরীদের পরিবারকে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে।
বিয়েট্রিজ মার্টিনেজ নামের ১৫ বছর বয়সী আরেক কিশোরী বলল, ‘গত মাসে ১৬ বার এই হাসপাতালে এসেছি।’ অসুস্থতার লক্ষণগুলো সম্পর্কে সে জানাল, প্রথমে মাথাব্যথা ও ঘাড়ে ব্যথা হলো। তারপর হাত-পা এমনভাবে অবশ হয়ে গেলে যে, মায়ের সহায়তা নিয়ে গোসল করতে হলো। মার্টিনেজের মতো অনেকের অবস্থাই এত খারাপ যে, তাদের বাড়ির বাইরে নেওয়ার মতো অবস্থা নেই।
১৩ বছর বয়সী কিশোরীর মা মারিয়া ভেরোনিকা রোমেরা প্রশ্ন করেন, ‘আপনি যদি দেখেন টিকা দেওয়ার পর আপনার সন্তানের মধ্যে অসুস্থতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তখন আপনি কোন জিনিসটাকে দায়ী করবেন?’
প্রতিষেধকটি যারা বাজারে এনেছে, সেই মার্কিন ওষুধ প্রতিষ্ঠান মার্ক এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, প্রতিষেধকটির নিরাপত্তার বিষয়ে তারা আত্মবিশ্বাসী। তবে তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ এবং নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করছে।
রোগীর তথ্য সংগ্রহ, নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শবিষয়ক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলেজান্দ্রো গাভিরিয়া। তবে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, টিকা দেওয়ার কার্যক্রম বন্ধ করার কোনো কারণ নেই।
No comments