কলম সৈনিক মঈনুল আলম by মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন
পঞ্চাশ
বছর কলম সৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন মঈনুল আলম। সাংবাদিক জগতে তিনি আলোড়ন
সৃষ্টি করেছিলেন বললে অত্যুক্তি হবে না। ক্যাম্পেইন জার্নালিজম এবং
একটিভিস্ট জার্নালিজম প্রবর্তন করেছিলেন তিনি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি মঈনুল
আলম যুক্তরাষ্ট্রের এ রুটগার্স ইউনিভার্সিটি তে ১৯৭৫সালে পোস্ট-গ্রাজুয়েট
এবং কলম্বিয়া স্কুল অব জার্নালিজম ইন মিসৌরি তে ডিজাস্টার রিপোর্টিং বিষয়ে
গবেষনা করেছেন। সাংবাদিকতা জগতে মঈনুল আলম প্রথমে সাব-এডিটর হিসেবে
চট্টগ্রাম এর দৈনিক ইস্টার্ন এক্সামিনার এ যোগদান করেন ১৯৫৬ সালে। সেখানে
৪বছর কাজ করার পর চট্টগ্রাম এর একটি দৈনিকে নিউজ এডিটর হিসাবে যোগদান করেন
১৯৬০ সালে। ১৯৬০ সালে বহুল প্রচারিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় মঈনুল আলম
কে চট্টগ্রাম এর সংবাদদাতা এবং বিসনেস রিপ্রেজেনটিভ হিসাবে নিযুক্ত করা হয়।
মঈনুল আলম এর সাংবাদিক জীবনে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো তিনি ইউনাইটেড স্টেটস প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন এর প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ এর সামিট কভার করেছেন ১৯৮৭সালে। দক্ষিণ এশিয়া থেকে ময়েইনুল আলম একমাত্র সাংবাদিক ছিলেন।
এই সামিট এর উপর মঈনুল আলম বই লিখেছেন। এই বই লিখবার জন্যে প্রেসিডেন্ট রিগান সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।
মঈনুল আলম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। মঈনুল আলমের সঙ্গে আমার পরিচয় ১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে। আমি তখন কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা রেডিও পাকিস্তানে চট্টগ্রাম রেডিও অফিসে কর্মরত। মঈনুল আলম ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট থেকে নিউজ এডিটিং বিষয়ে ১৯৬৪ সালে ডিপ্লোমা করেন। মঈনুল আলম ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের আগরতলায় পাড়ি জমান। সেখানে প্রশিক্ষনরত মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা করেন তিনি।
জার্মানির বার্লিন শহরে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট থেকে জার্নালিজম ট্রেইনার সংক্রান্ত সার্টিফিকেট লাভ করেন ১৯৭৫ সালে। মঈনুল আলমই সম্ভবত একমাত্র সাংবাদিক যিনি ব্রিটিশ সরকারের নিমন্ত্রণে ইউনাইটেড কিংডম এবং ফিলিপিনো সরকারের নিমন্ত্রনে ম্যানিলা সফর করেন। ১৯৮৫ সালে ওয়েস্ট জার্মানি সফরের সময় মঈনুল আলম দুই জার্মানির একত্রিত হওয়ার আসন্ন সম্ভবনা সম্পর্কে লিখেছিলেন। বাংলাদেশ সরকারের অধীনে চার সদস্যের সাংবাদিক প্রতিনিধি দল আসিয়ান কান্ট্রি সফরে যান ১৯৭৯ সালে। এই দলে মঈনুল আলমও ছিলেন। আমি এ সময়ে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসে কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম। মঈনুল আলম সাংবাদিকতার পাশাপাশি কনজিউমার ইকোনোমিস্ট নামে সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রেস কমিশনের সদস্য ছিলেন এবং প্রেস কমিশনের সুপারিশ সমূহ প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট আয়োজিত সেমিনার এ মফস্বল সংবাদদাতার ভূমিকার উপর বক্তব্য পেশ করেন। মঈনুল আলম শুধু একজন কৃতী সাংবাদিকই ছিলেন না, একজন কৃতী চিত্র শিল্পীও ছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালের জানুয়ারিতে ফ্রান্সে আন্তর্জাতিক পেইন্টিং এক্সিবিশন অনুষ্ঠিত হয়। মঈনুল আলম সেখানে আমন্ত্রিত হন। তার পিস সংক্রান্ত পেইন্টিং রিকগনিশন লাভ করে এবং ফ্রান্স এর ফার্স্ট লেডি ম্যাডাম মিথরা মঈনুল আলমের প্রশংসা করেন ।
আমার সাথে মঈনুল আলম এর পরিচয় হয় ১৯৬৩ ডিসেম্বর মাসে। আমি তখন কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা রেডিও পাকিস্তানের চিটাগাং রেডিও অফিসে কর্মরত। ডিসেম্বর ১৯৬৪ পাকিস্তান এর প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান চিটাগাং সফরে আসেন। পতেঙ্গা বিমান বন্দরে ছয়জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেম। এর মধ্যে মঈনুল আলম একজন এবং আমি।
মঈনুল আলম ১৯৯৫ সাল থেকে কানাডার টরন্টো শহরে সপরিবারে বসবাস করছিলেন। তার স্ত্রীও একজন শিল্পী। ভালো সীতার বাদক ছিলেন তিনি।
১৮ই জুন মঈনুল আলম ইন্তেকাল করেন। ৯ই অক্টোবর নার্গীসুল আলম আমাকে মৃত্যুর সংবাদ দিলেন। ৮১ বৎসর বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুক।
মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক।
মঈনুল আলম এর সাংবাদিক জীবনে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো তিনি ইউনাইটেড স্টেটস প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন এর প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ এর সামিট কভার করেছেন ১৯৮৭সালে। দক্ষিণ এশিয়া থেকে ময়েইনুল আলম একমাত্র সাংবাদিক ছিলেন।
এই সামিট এর উপর মঈনুল আলম বই লিখেছেন। এই বই লিখবার জন্যে প্রেসিডেন্ট রিগান সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।
মঈনুল আলম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। মঈনুল আলমের সঙ্গে আমার পরিচয় ১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে। আমি তখন কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা রেডিও পাকিস্তানে চট্টগ্রাম রেডিও অফিসে কর্মরত। মঈনুল আলম ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট থেকে নিউজ এডিটিং বিষয়ে ১৯৬৪ সালে ডিপ্লোমা করেন। মঈনুল আলম ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের আগরতলায় পাড়ি জমান। সেখানে প্রশিক্ষনরত মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা করেন তিনি।
জার্মানির বার্লিন শহরে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট থেকে জার্নালিজম ট্রেইনার সংক্রান্ত সার্টিফিকেট লাভ করেন ১৯৭৫ সালে। মঈনুল আলমই সম্ভবত একমাত্র সাংবাদিক যিনি ব্রিটিশ সরকারের নিমন্ত্রণে ইউনাইটেড কিংডম এবং ফিলিপিনো সরকারের নিমন্ত্রনে ম্যানিলা সফর করেন। ১৯৮৫ সালে ওয়েস্ট জার্মানি সফরের সময় মঈনুল আলম দুই জার্মানির একত্রিত হওয়ার আসন্ন সম্ভবনা সম্পর্কে লিখেছিলেন। বাংলাদেশ সরকারের অধীনে চার সদস্যের সাংবাদিক প্রতিনিধি দল আসিয়ান কান্ট্রি সফরে যান ১৯৭৯ সালে। এই দলে মঈনুল আলমও ছিলেন। আমি এ সময়ে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসে কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম। মঈনুল আলম সাংবাদিকতার পাশাপাশি কনজিউমার ইকোনোমিস্ট নামে সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রেস কমিশনের সদস্য ছিলেন এবং প্রেস কমিশনের সুপারিশ সমূহ প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট আয়োজিত সেমিনার এ মফস্বল সংবাদদাতার ভূমিকার উপর বক্তব্য পেশ করেন। মঈনুল আলম শুধু একজন কৃতী সাংবাদিকই ছিলেন না, একজন কৃতী চিত্র শিল্পীও ছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালের জানুয়ারিতে ফ্রান্সে আন্তর্জাতিক পেইন্টিং এক্সিবিশন অনুষ্ঠিত হয়। মঈনুল আলম সেখানে আমন্ত্রিত হন। তার পিস সংক্রান্ত পেইন্টিং রিকগনিশন লাভ করে এবং ফ্রান্স এর ফার্স্ট লেডি ম্যাডাম মিথরা মঈনুল আলমের প্রশংসা করেন ।
আমার সাথে মঈনুল আলম এর পরিচয় হয় ১৯৬৩ ডিসেম্বর মাসে। আমি তখন কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা রেডিও পাকিস্তানের চিটাগাং রেডিও অফিসে কর্মরত। ডিসেম্বর ১৯৬৪ পাকিস্তান এর প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান চিটাগাং সফরে আসেন। পতেঙ্গা বিমান বন্দরে ছয়জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেম। এর মধ্যে মঈনুল আলম একজন এবং আমি।
মঈনুল আলম ১৯৯৫ সাল থেকে কানাডার টরন্টো শহরে সপরিবারে বসবাস করছিলেন। তার স্ত্রীও একজন শিল্পী। ভালো সীতার বাদক ছিলেন তিনি।
১৮ই জুন মঈনুল আলম ইন্তেকাল করেন। ৯ই অক্টোবর নার্গীসুল আলম আমাকে মৃত্যুর সংবাদ দিলেন। ৮১ বৎসর বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুক।
মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক।
No comments