৮৩ হাজার মোবাইল ফোন উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়নি
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নকিয়া, স্যামসাং এবং এইচটিসি ব্র্যান্ডের ৮৩ হাজার নকল মোবাইল ফোনসেট আটকের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টা পরও কোনো মামলা বা আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত রোববার বিকেলে আমদানি করা প্রায় ২০ কোটি টাকার এই নকল মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়।
গতকাল সোমবার বিমানবন্দর থানায় যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামছুদ্দিন সালেহ আহমেদ (ওসি) বলেন, ‘মুঠোফোন জব্দ করার এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য এখনো থানায় আসেনি।’
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গোপন খবরের ভিত্তিতে কাস্টমসের সহযোগিতায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তিন সদস্যের একটি দল ওই নকল মুঠোফোনের সেট জব্দ করে। নিয়ম অনুযায়ী, কাস্টমস এ বিষয়ে থানায় মামলা করার কথা।
জব্দ করা মোবাইল ফোনসেটের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া নথিপত্রে দেখা যায়, মেসার্স এম হোসাইন এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স রাহা এন্টারপ্রাইজ ও টপস্টার এন্টারপ্রাইজ চীন থেকে নামী ব্র্যান্ডের এই নকল হ্যান্ডসেটগুলো আমদানি করেছে।
বাংলাদেশে স্যামসাং মোবাইল ফোনসেটের বৈধ ডিলার ইলেকট্রা লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সানাউল্লাহ শহীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব নকল হ্যান্ডসেট আমদানিকারীদের বিরুদ্ধে সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ না নিলে দেশ থেকে নকল মোবাইল ফোনসেটের ব্যবসা বন্ধ করা সম্ভব হবে না।’
মোবাইল ফোন বিজনেসম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিজামুদ্দিন বলেন, ‘একটি চক্র চীন থেকে নিম্নমানের ফোনসেট দামি ব্র্যান্ডের নামে এনে বিক্রি করে প্রতিবছর কয়েক শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। বছরে গড়ে প্রায় এক কোটি হ্যান্ডসেট আমদানি হয় দাবি করে নিজামুদ্দিন বলেন, এর মধ্যে ৩০ শতাংশই নিম্নমানের। এসব সেটে নামী ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে বাজারে ছাড়া হচ্ছে।
নিয়ম অনুযায়ী, হ্যান্ডসেট আমদানির আগে বিটিআরসির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। এ জন্য প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমআইই) নম্বরও বিটিআরসিতে জমা দিতে হয়।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নকল হ্যান্ডসেট কিনে ক্রেতারা প্রতারিত হন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাতে আমদানির সময় নকল হ্যান্ডসেটের ছাড়পত্র না দেয়, সে জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইনগত পদক্ষেপ নিতে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘জব্দ করার পর বাকি আইনি কার্যক্রম হয় কাস্টমসের নিয়মানুযায়ী। তবে পুরো প্রক্রিয়া বিটিআরসি নজর রাখবে।’
No comments