কালের যাত্রা by পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়
স্মৃতি উসকে দিয়ে গেলেন সোনিয়া গান্ধী। একাত্তরের স্মৃতি। আমাদের জীবদ্দশায় পাওয়া সর্বোচ্চ কষ্ট, দুঃখ, যন্ত্রণা আর জয়ের স্মৃতি। ইন্দিরা-বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি। স্বাধীনতা অর্জনের স্মৃতি। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে মাত্র এক রাত এক দিনের অতিথি হয়ে ভারতের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সোনিয়া গান্ধী বাংলাদেশে এসেছিলেন। দেরিতে হলেও তিনি নিকটাত্মীয়ের বাড়িতেই বেড়াতে এসেছিলেন।
বাংলাদেশে যতক্ষণ ছিলেন, তাঁর চলনে-বলনে-পোশাকে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার সঙ্গে আন্তরিক অন্তরঙ্গতার মুহূর্তগুলোর ছবি গণমাধ্যমে দেখে আমার তা-ই মনে হয়েছে। মনে হয়েছে, উপমহাদেশের দুই চিরনমস্য নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ইন্দিরা গান্ধীর স্পষ্ট ছায়া তাঁদের মুখচ্ছবিতে।
সোনিয়া গান্ধী ঢাকায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের উদ্যোগে ও নেতৃত্বে আয়োজিত অটিজম সম্মেলনে। পাশাপাশি তিনি গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক 'বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা (মরণোত্তর)'। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিদেশিদের জন্য সর্বোচ্চ এই রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে। পুত্রবধূ হিসেবে এই সম্মাননা গ্রহণ করে সোনিয়া আবেগাপ্লুত হয়েছেন। বলেছেন, 'ইন্দিরা গান্ধীর পক্ষ থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করে আমি গর্বিত। এই সম্মাননা কেবল ইন্দিরা গান্ধীর একার নয়, সারা ভারতের।' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'মহান মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিদেশিদের জন্য সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীকে জানাতে পেরে আমরাও সম্মানিত বোধ করছি।' প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তি যেন আমাদেরই প্রাণের কথা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে কোথাও একটুও আনুষ্ঠানিকতা বা কূটনীতির বালাই ছিল না, ছিল হৃদয়ের গভীর থেকে আসা আবেগাশ্রিত সত্যকথন। সেটাই তো হওয়া স্বাভাবিক। পঁচাত্তরের মহাবিপর্যয়ের পর তিনি এবং তাঁর ছোট বোন যখন চূড়ান্ত নিরাপত্তাহীনতায় শঙ্কিত হয়ে বিপন্ন, ঠিক তখনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মাতৃস্নেহে দুই বোনকে ভারতে কঠোর নিরাপত্তায় বেশ কয়েক বছর বসবাসের সুযোগ করে দেন। বিপর্যস্ত সেই সব দুঃখদিনের স্মৃতি শেখ হাসিনা কি সারা জীবনেও ভুলতে পারেন! শেখ রেহানা তাঁর ভালোবাসার শান্তিনিকেতনে থাকতে চেয়েছিলেন, মাতৃসম ইন্দিরা তাঁকে চোখের আড়াল করতে চাননি। নিরাপত্তার কথা ভেবেই বোধ হয় তিনি দুই বোনকে দিলি্ল থেকে দূরে সরাতে স্বস্তি বোধ করেননি। তাঁর সেই দূরদর্শিতার সুফল তো আজ স্পষ্টই বোঝা যায়। বঙ্গবন্ধুর ঘাতকরা নিশ্চয়ই তখন সক্রিয় ছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা সেই ঘাতকদের অদৃশ্য ছুরি থেকে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাকে তখন রক্ষা না করলে আজ বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের মহাশূন্যতায় আটকে থাকতে হতো। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি থেকে দূরে সরে গিয়ে আমরা হয়তো নতুন এক পাকিস্তানে নরকযন্ত্রণা ভোগ করতাম। তার আলামত কি আমরা পঁচাত্তর-পরবর্তীকালে দেখিনি? দেখেছি। উদাহরণ টানার প্রয়োজন নেই। সেসব আজ নতুন প্রজন্মও জানে।
শুরু করেছিলাম স্মৃতি উসকে দেওয়ার কথা দিয়ে। একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর মাত্র ছয় ঘণ্টার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা কলকাতায় এসেছিলেন। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে লাখো মানুষের সামনে তিনি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেখানে সশরীরে উপস্থিত থাকার স্মৃতি আজও আমার ভেতর রোমাঞ্চ জাগায়। বাংলাদেশের যুদ্ধরত সব মুক্তিযোদ্ধা, কোটি শরণার্থী এবং প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের প্রতিটি মানুষ সেদিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন ইন্দিরা কী বলেন তা শোনার জন্য। আসার কথা ছিল ৪ ডিসেম্বর। কিন্তু তিনি তাঁর আসাটা এক দিন এগিয়ে এনেছেন। সারা বিশ্ব থেকে ছুটে এসেছেন বাঘা বাঘা সংবাদকর্মী। কলকাতার সর্বত্র তখন একটাই আলোচনা, ইন্দিরা বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন! ভারত কি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে এবং সেই ঘোষণা কি কলকাতায়ই দেওয়া হবে! ইত্যাদি। পাক-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা তখন চূড়ান্ত। মুক্তিবাহিনীর মুহুর্মুহু আক্রমণে বিপর্যস্ত পাকিস্তানি সেনারা পূর্বে-পশ্চিমে ভারত সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটাচ্ছে। সব মিলিয়ে সংবাদকর্মী ও রাজনীতি বিশ্লেষকরা ধরেই নিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার মুখ থেকে তেমন ঘোষণাই আসবে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে একটা চূড়ান্ত রূপ দিতে সহায়তা করবে। না, তেমন কোনো কথাই সেদিন ইন্দিরা কলকাতার ব্রিগেড গ্রাউন্ডে বলেননি। অবর্ণনীয় কষ্টে জীবন টিকিয়ে রাখা শরণার্থী ক্যাম্পের বিপন্ন মানুষেরা হতাশ হয়েছেন। বিদেশ থাকা আসা সংবাদকর্মীরা বলেছেন, 'ইট ওয়াজ এ ডাল সিটিং। নো স্পেশাল অ্যানাউন্সমেন্ট।' ইত্যাদি ইত্যাদি। সিটিং শেষে ইন্দিরা তখন রাজভবনে। খবর পেলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারতের পশ্চিম সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ শুরু করেছে। সন্ধ্যা নাগাদ তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় উড়ে গেলেন দিলি্লতে। পরে বেতার ভাষণে বললেন, 'পাকিস্তান আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ যুদ্ধ বাংলাদেশের। এ যুদ্ধ আমাদের।' তার পরের দিনগুলোর কথা তো সবারই জানা। মাত্র ১২ দিনের মাথায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
জানি, স্মৃতির কোনো স্পষ্ট চেহারা থাকে না। কিন্তু একাত্তরের পঁচিশে মার্চের পর থেকে দীর্ঘ ৯ মাস বঙ্গবন্ধু এবং বাঙালি জাতির পরম শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নিজ দেশে ও বিদেশে যে নরমে-গরমে ভূমিকা রেখেছেন, তার প্রায় সব কিছুই আমার স্মৃতিতে অম্লান ও উজ্জ্বল। অতিথি সোনিয়া ফিরে যাওয়ার এক সপ্তাহে পর দেরিতে হলেও স্মৃতি হাতড়ে যে দুটি কথায় ইন্দিরা গান্ধীকে স্মরণ করতে পারলাম, তা আমাকে তৃপ্তি দিচ্ছে। তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা জানিয়ে সরকার যেন আমাকে, আমাদের দায়মুক্ত করলেন।
লেখক : সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
সোনিয়া গান্ধী ঢাকায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের উদ্যোগে ও নেতৃত্বে আয়োজিত অটিজম সম্মেলনে। পাশাপাশি তিনি গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক 'বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা (মরণোত্তর)'। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিদেশিদের জন্য সর্বোচ্চ এই রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে। পুত্রবধূ হিসেবে এই সম্মাননা গ্রহণ করে সোনিয়া আবেগাপ্লুত হয়েছেন। বলেছেন, 'ইন্দিরা গান্ধীর পক্ষ থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করে আমি গর্বিত। এই সম্মাননা কেবল ইন্দিরা গান্ধীর একার নয়, সারা ভারতের।' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'মহান মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিদেশিদের জন্য সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীকে জানাতে পেরে আমরাও সম্মানিত বোধ করছি।' প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তি যেন আমাদেরই প্রাণের কথা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে কোথাও একটুও আনুষ্ঠানিকতা বা কূটনীতির বালাই ছিল না, ছিল হৃদয়ের গভীর থেকে আসা আবেগাশ্রিত সত্যকথন। সেটাই তো হওয়া স্বাভাবিক। পঁচাত্তরের মহাবিপর্যয়ের পর তিনি এবং তাঁর ছোট বোন যখন চূড়ান্ত নিরাপত্তাহীনতায় শঙ্কিত হয়ে বিপন্ন, ঠিক তখনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মাতৃস্নেহে দুই বোনকে ভারতে কঠোর নিরাপত্তায় বেশ কয়েক বছর বসবাসের সুযোগ করে দেন। বিপর্যস্ত সেই সব দুঃখদিনের স্মৃতি শেখ হাসিনা কি সারা জীবনেও ভুলতে পারেন! শেখ রেহানা তাঁর ভালোবাসার শান্তিনিকেতনে থাকতে চেয়েছিলেন, মাতৃসম ইন্দিরা তাঁকে চোখের আড়াল করতে চাননি। নিরাপত্তার কথা ভেবেই বোধ হয় তিনি দুই বোনকে দিলি্ল থেকে দূরে সরাতে স্বস্তি বোধ করেননি। তাঁর সেই দূরদর্শিতার সুফল তো আজ স্পষ্টই বোঝা যায়। বঙ্গবন্ধুর ঘাতকরা নিশ্চয়ই তখন সক্রিয় ছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা সেই ঘাতকদের অদৃশ্য ছুরি থেকে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাকে তখন রক্ষা না করলে আজ বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের মহাশূন্যতায় আটকে থাকতে হতো। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি থেকে দূরে সরে গিয়ে আমরা হয়তো নতুন এক পাকিস্তানে নরকযন্ত্রণা ভোগ করতাম। তার আলামত কি আমরা পঁচাত্তর-পরবর্তীকালে দেখিনি? দেখেছি। উদাহরণ টানার প্রয়োজন নেই। সেসব আজ নতুন প্রজন্মও জানে।
শুরু করেছিলাম স্মৃতি উসকে দেওয়ার কথা দিয়ে। একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর মাত্র ছয় ঘণ্টার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা কলকাতায় এসেছিলেন। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে লাখো মানুষের সামনে তিনি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেখানে সশরীরে উপস্থিত থাকার স্মৃতি আজও আমার ভেতর রোমাঞ্চ জাগায়। বাংলাদেশের যুদ্ধরত সব মুক্তিযোদ্ধা, কোটি শরণার্থী এবং প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের প্রতিটি মানুষ সেদিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন ইন্দিরা কী বলেন তা শোনার জন্য। আসার কথা ছিল ৪ ডিসেম্বর। কিন্তু তিনি তাঁর আসাটা এক দিন এগিয়ে এনেছেন। সারা বিশ্ব থেকে ছুটে এসেছেন বাঘা বাঘা সংবাদকর্মী। কলকাতার সর্বত্র তখন একটাই আলোচনা, ইন্দিরা বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন! ভারত কি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে এবং সেই ঘোষণা কি কলকাতায়ই দেওয়া হবে! ইত্যাদি। পাক-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা তখন চূড়ান্ত। মুক্তিবাহিনীর মুহুর্মুহু আক্রমণে বিপর্যস্ত পাকিস্তানি সেনারা পূর্বে-পশ্চিমে ভারত সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটাচ্ছে। সব মিলিয়ে সংবাদকর্মী ও রাজনীতি বিশ্লেষকরা ধরেই নিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার মুখ থেকে তেমন ঘোষণাই আসবে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে একটা চূড়ান্ত রূপ দিতে সহায়তা করবে। না, তেমন কোনো কথাই সেদিন ইন্দিরা কলকাতার ব্রিগেড গ্রাউন্ডে বলেননি। অবর্ণনীয় কষ্টে জীবন টিকিয়ে রাখা শরণার্থী ক্যাম্পের বিপন্ন মানুষেরা হতাশ হয়েছেন। বিদেশ থাকা আসা সংবাদকর্মীরা বলেছেন, 'ইট ওয়াজ এ ডাল সিটিং। নো স্পেশাল অ্যানাউন্সমেন্ট।' ইত্যাদি ইত্যাদি। সিটিং শেষে ইন্দিরা তখন রাজভবনে। খবর পেলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারতের পশ্চিম সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ শুরু করেছে। সন্ধ্যা নাগাদ তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় উড়ে গেলেন দিলি্লতে। পরে বেতার ভাষণে বললেন, 'পাকিস্তান আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ যুদ্ধ বাংলাদেশের। এ যুদ্ধ আমাদের।' তার পরের দিনগুলোর কথা তো সবারই জানা। মাত্র ১২ দিনের মাথায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
জানি, স্মৃতির কোনো স্পষ্ট চেহারা থাকে না। কিন্তু একাত্তরের পঁচিশে মার্চের পর থেকে দীর্ঘ ৯ মাস বঙ্গবন্ধু এবং বাঙালি জাতির পরম শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নিজ দেশে ও বিদেশে যে নরমে-গরমে ভূমিকা রেখেছেন, তার প্রায় সব কিছুই আমার স্মৃতিতে অম্লান ও উজ্জ্বল। অতিথি সোনিয়া ফিরে যাওয়ার এক সপ্তাহে পর দেরিতে হলেও স্মৃতি হাতড়ে যে দুটি কথায় ইন্দিরা গান্ধীকে স্মরণ করতে পারলাম, তা আমাকে তৃপ্তি দিচ্ছে। তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা জানিয়ে সরকার যেন আমাকে, আমাদের দায়মুক্ত করলেন।
লেখক : সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
No comments