অহেতুক মিথ্যা বলা by আলী হাসান তৈয়ব
রিকশা থেকে নেমে মানিব্যাগ খুলে ভাড়া দিতে গিয়ে হয়তো দেখলেন খুচরো টাকা নেই। এবার কী করবেন? নিশ্চয় আপনি পাশের দোকানে গিয়ে বলবেন, ভাই টাকাটা খুচরো হবে? মুহূর্ত বিলম্ব না করে দোকানি নির্বিকার ভঙ্গিতে জবাব দেবেন, 'না ভাই আমার কাছে খুচরো নেই।
' অথচ সত্য হলো, তার ক্যাশে পর্যাপ্ত খুচরো রয়েছে। তেমনি জিনিস কিনতে গিয়ে দেখবেন দোকানিরা দামদরের এক পর্যায়ে ক্রেতাকে পটাতে বলেন, 'এটা আমি... দিয়ে কিনেছি। আপনাকে এই দামে দিলে আমার কোনো লাভই থাকে না ভাই।' তারপর দিব্যি তিনি ওই তথাকথিত কেনা দামেই দিয়ে দেন। ক্রেতার মন ভেজাতে, 'আপনার কাছে এই দামে বিক্রি করলে কেবল আমার চালানটা উঠবে ভাই' কিংবা 'এটা আমার কেনা দাম, এর চেয়ে কম বলবেন না' ইত্যাদি বাক্যও উচ্চারণ করেন।
আমাদের রোজকার জীবনে এমন অনেক মিথ্যা কথাই বলে থাকি, যার তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। এই অহেতুক মিথ্যা আজকাল যেন দোষের কোনো বিষয়ই নয়। অথচ মিথ্যা তো মিথ্যাই। ওপরের কথাগুলো না বলে যদি বলা হতো, আমি খুচরো দিতে পারছি না, আমি এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে পারব না ইত্যাদি, তাহলে সাপও মরে লাঠিও
ভাঙে না।
তেমনি কেবল ঠাট্টা-মশকরা করে লোক হাসানোর জন্যও অনেকে মিথ্যা বলে মজা পান। এটাও কিন্তু মিথ্যা। খেয়ালি মনে কিংবা ঠাট্টা করে কেউ যেমন কাউকে খুন করলে বা কোনো জিনিস ভেঙে ফেললে তা অক্ষত থাকে না। ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়েই যায়। তেমনি মিথ্যাও যদি কেউ ঠাট্টাচ্ছলে বলেন, তিনিও ঠিক সে মিথ্যার গুনাহগার হন। একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) আফসোস করে বলেছেন, ওই ব্যক্তির জন্য কঠিন শাস্তি, কঠিন শাস্তি এবং কঠিন শাস্তি যে কেবল লোক হাসাতে মিথ্যা বলে। - আবু দাউদ
আমাদের সদা অনুসরণীয় নবীজি (সা.) ঘুণাক্ষরেও মিথ্যা বলেননি। তার হাসি-কৌতুকও ছিল নির্মল এবং অনিন্দ্য সত্যে বিনির্মিত। একবার এক বুড়ি মা তার কাছে এসে বললেন, আমার জন্য দোয়া করুন, যাতে আমি জান্নাতে যেতে পারি। নবীজি (সা.) স্মিত হাসি দিয়ে বললেন, হে ওমুকের মা! জান্নাতে তো কোনো বুড়ি প্রবেশ করবে না। এ কথা শুনে বৃদ্ধা খুব উদ্বিগ্ন হলেন, এমনকি কাঁদতে শুরু করলেন। তিনি ভাবলেন, কখনোই বুঝি তার বেহেশতে যাওয়া হবে না। বৃদ্ধার অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ (সা.) হেসে ব্যাখ্যা করে বললেন, কোনো নারী বৃদ্ধাবস্থায় বেহেশতে যাবে না। বরং আল্লাহ তাদের নতুন সৃষ্টিতে রূপান্তরিত করবেন। অতঃপর তিনি পূর্ণ যৌবনা হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। -আল মুজামুল আওসাত
অপর এক হাদিসে বলা হয়েছে ঠাট্টাচ্ছলেও মিথ্যা না বলতে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি ওই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের আশপাশে কোনো গৃহের জামিন হবো যে উপযুক্ত ও সঠিক হওয়ার পরও (বিপক্ষের) তর্ক ছেড়ে দেয়, ওই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের মধ্যস্থলে কোনো গৃহের জামিন হবো যে ঠাট্টাচ্ছলেও মিথ্যা পরিহার করে এবং জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে কোনো গৃহের জামিন হবো যে তার চরিত্রকে সুন্দর বানায়।- আবু দাউদ
অনুরূপ মোবাইলে কথা বলার সময়ও দেখা যায় অনেককে অহেতুক অসত্য বলতে। বাসায় কথা বলার সময় অনেকে নিজের অবস্থান থেকে একটু বাড়িয়ে আরও সামনের কথা বলেন। অথচ সঠিক জায়গার কথা বললে তার তেমন কোনো ক্ষতি বৃদ্ধি হয় না। যানবাহনে প্রায়ই দেখি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে অনেক ভদ্রলোক দিব্যি সবার সামনে মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। আছেন এক জায়গায় আর বলছেন তার থেকে কয়েক মাইল এগিয়ে। শিশুদের সঙ্গেও আমরা মাঝে মধ্যে অকারণে মিথ্যা বলি। যেমন হাতে কিছু না নিয়েও কিছু আছে বলে শিশুকে কাছে টানার চেষ্টা করা ইত্যাদি।
আমাদের রোজকার জীবনে এমন অনেক মিথ্যা কথাই বলে থাকি, যার তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। এই অহেতুক মিথ্যা আজকাল যেন দোষের কোনো বিষয়ই নয়। অথচ মিথ্যা তো মিথ্যাই। ওপরের কথাগুলো না বলে যদি বলা হতো, আমি খুচরো দিতে পারছি না, আমি এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে পারব না ইত্যাদি, তাহলে সাপও মরে লাঠিও
ভাঙে না।
তেমনি কেবল ঠাট্টা-মশকরা করে লোক হাসানোর জন্যও অনেকে মিথ্যা বলে মজা পান। এটাও কিন্তু মিথ্যা। খেয়ালি মনে কিংবা ঠাট্টা করে কেউ যেমন কাউকে খুন করলে বা কোনো জিনিস ভেঙে ফেললে তা অক্ষত থাকে না। ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়েই যায়। তেমনি মিথ্যাও যদি কেউ ঠাট্টাচ্ছলে বলেন, তিনিও ঠিক সে মিথ্যার গুনাহগার হন। একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) আফসোস করে বলেছেন, ওই ব্যক্তির জন্য কঠিন শাস্তি, কঠিন শাস্তি এবং কঠিন শাস্তি যে কেবল লোক হাসাতে মিথ্যা বলে। - আবু দাউদ
আমাদের সদা অনুসরণীয় নবীজি (সা.) ঘুণাক্ষরেও মিথ্যা বলেননি। তার হাসি-কৌতুকও ছিল নির্মল এবং অনিন্দ্য সত্যে বিনির্মিত। একবার এক বুড়ি মা তার কাছে এসে বললেন, আমার জন্য দোয়া করুন, যাতে আমি জান্নাতে যেতে পারি। নবীজি (সা.) স্মিত হাসি দিয়ে বললেন, হে ওমুকের মা! জান্নাতে তো কোনো বুড়ি প্রবেশ করবে না। এ কথা শুনে বৃদ্ধা খুব উদ্বিগ্ন হলেন, এমনকি কাঁদতে শুরু করলেন। তিনি ভাবলেন, কখনোই বুঝি তার বেহেশতে যাওয়া হবে না। বৃদ্ধার অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ (সা.) হেসে ব্যাখ্যা করে বললেন, কোনো নারী বৃদ্ধাবস্থায় বেহেশতে যাবে না। বরং আল্লাহ তাদের নতুন সৃষ্টিতে রূপান্তরিত করবেন। অতঃপর তিনি পূর্ণ যৌবনা হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। -আল মুজামুল আওসাত
অপর এক হাদিসে বলা হয়েছে ঠাট্টাচ্ছলেও মিথ্যা না বলতে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি ওই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের আশপাশে কোনো গৃহের জামিন হবো যে উপযুক্ত ও সঠিক হওয়ার পরও (বিপক্ষের) তর্ক ছেড়ে দেয়, ওই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের মধ্যস্থলে কোনো গৃহের জামিন হবো যে ঠাট্টাচ্ছলেও মিথ্যা পরিহার করে এবং জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে কোনো গৃহের জামিন হবো যে তার চরিত্রকে সুন্দর বানায়।- আবু দাউদ
অনুরূপ মোবাইলে কথা বলার সময়ও দেখা যায় অনেককে অহেতুক অসত্য বলতে। বাসায় কথা বলার সময় অনেকে নিজের অবস্থান থেকে একটু বাড়িয়ে আরও সামনের কথা বলেন। অথচ সঠিক জায়গার কথা বললে তার তেমন কোনো ক্ষতি বৃদ্ধি হয় না। যানবাহনে প্রায়ই দেখি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে অনেক ভদ্রলোক দিব্যি সবার সামনে মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। আছেন এক জায়গায় আর বলছেন তার থেকে কয়েক মাইল এগিয়ে। শিশুদের সঙ্গেও আমরা মাঝে মধ্যে অকারণে মিথ্যা বলি। যেমন হাতে কিছু না নিয়েও কিছু আছে বলে শিশুকে কাছে টানার চেষ্টা করা ইত্যাদি।
No comments