মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-ট্রাইব্যুনাল-২-এ তিনটি মামলা স্থানান্তরের আবেদন রাষ্ট্রপক্ষের
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তিনটি মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এগুলো হলো: জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মামলা।
গতকাল রোববার দুপুরে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হলে মামলা স্থানান্তরের আবেদন করার বিষয়টি জানান রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল-২ ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছেন। কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা ও আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মামলা তিনটি ওই ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের জন্য আবেদন দাখিল করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল বলেন, কাল (আজ সোমবার) এ বিষয়ে শুনানি হবে। ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষকে এই আবেদনের অনুলিপি আসামিপক্ষকে সরবরাহের নির্দেশ দেন।
পরে প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ সাংবাদিকদের বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল-২-এ তিনটি মামলা স্থানান্তরের আবেদন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর নতুন বিধান অনুসারে এ আবেদন করা হয়েছে।
১১ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি হয়। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল আইনে নতুনভাবে সন্নিবেশিত ১১এ ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অথবা ট্রাইব্যুনাল নিজ উদ্যোগে এক ট্রাইব্যুনাল থেকে অন্য ট্রাইব্যুনালে মামলা স্থানান্তর করতে পারবেন। এক ট্রাইব্যুনাল থেকে মামলা যে পর্যায়ে স্থানান্তর করা হবে, অন্য ট্রাইব্যুনালে সেই পর্যায় থেকে কার্যক্রম চলবে।
ট্রাইব্যুনাল-১-এ বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে ও বিএনপির সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য ১৭ এপ্রিল দিন ধার্য আছে। দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লা—এই চারজনের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলায় অভিযোগের বিষয়ে শুনানি চলছে। আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি এখনো শুরু হয়নি।
বিচারকাজ গতিশীল করতে সরকার ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করে। ৩ এপ্রিল এই ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এটি ছাড়া ট্রাইব্যুনাল-২-এ কোনো মামলা নেই।
নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি: ট্রাইব্যুনাল-১-এ নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগের বিষয়ে আসামিপক্ষের শুনানি শুরু হয়েছে। গতকাল নিজামীকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, প্রথম আনুষ্ঠানিক অভিযোগে নিজামীর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় না। ১২ নম্বর অভিযোগের উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিযোগটি সুনির্দিষ্ট নয়। এখানে ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২) ধারার অধীনে কোন অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে, তা বোঝা যায় না। ১ থেকে ৪ এবং ৯ থেকে ১৫ নম্বর পর্যন্ত অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষ নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ স্পষ্ট করে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে। ১ থেকে ৪ নম্বর অভিযোগ প্রসঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, এখানে অপরাধের উপাদানের অভাব রয়েছে। একাত্তরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে নিজামীর দেওয়া ‘ইসলামিক বক্তব্য’কে রাষ্ট্রপক্ষ ‘হিংসাত্মক বক্তব্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছে, যাতে তিনি কী অপরাধ করেছেন তা বোঝা যায় না।
অব্যাহতির আবেদন উপস্থাপন শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য করেন।
সাকা চৌধুরীর আবেদনের শুনানি অব্যাহত: বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদনের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হয়েছে গতকাল। সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলাম আদেশ পুনর্বিবেচনার বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আজ সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার (রিকল) ও সম্পাদনা (এডিট) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হবে।
জানতে চাইলে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেওয়ার সময় ট্রাইব্যুনাল জানতে চেয়েছিলেন, তিনি দোষী না নির্দোষ। ওই সময় তিনি দোষী বা নির্দোষ কিছুই বলেননি। কিন্তু আদেশের প্রত্যায়িত অনুলিপিতে দেখা গেছে, সেখানে ‘নির্দোষ’ লেখা আছে। এ জন্য ওই আদেশ প্রত্যাহার ও সম্পাদনা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
পরে প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ সাংবাদিকদের বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল-২-এ তিনটি মামলা স্থানান্তরের আবেদন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর নতুন বিধান অনুসারে এ আবেদন করা হয়েছে।
১১ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি হয়। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল আইনে নতুনভাবে সন্নিবেশিত ১১এ ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অথবা ট্রাইব্যুনাল নিজ উদ্যোগে এক ট্রাইব্যুনাল থেকে অন্য ট্রাইব্যুনালে মামলা স্থানান্তর করতে পারবেন। এক ট্রাইব্যুনাল থেকে মামলা যে পর্যায়ে স্থানান্তর করা হবে, অন্য ট্রাইব্যুনালে সেই পর্যায় থেকে কার্যক্রম চলবে।
ট্রাইব্যুনাল-১-এ বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে ও বিএনপির সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য ১৭ এপ্রিল দিন ধার্য আছে। দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লা—এই চারজনের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলায় অভিযোগের বিষয়ে শুনানি চলছে। আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি এখনো শুরু হয়নি।
বিচারকাজ গতিশীল করতে সরকার ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করে। ৩ এপ্রিল এই ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এটি ছাড়া ট্রাইব্যুনাল-২-এ কোনো মামলা নেই।
নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি: ট্রাইব্যুনাল-১-এ নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগের বিষয়ে আসামিপক্ষের শুনানি শুরু হয়েছে। গতকাল নিজামীকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, প্রথম আনুষ্ঠানিক অভিযোগে নিজামীর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় না। ১২ নম্বর অভিযোগের উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিযোগটি সুনির্দিষ্ট নয়। এখানে ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২) ধারার অধীনে কোন অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে, তা বোঝা যায় না। ১ থেকে ৪ এবং ৯ থেকে ১৫ নম্বর পর্যন্ত অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষ নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ স্পষ্ট করে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে। ১ থেকে ৪ নম্বর অভিযোগ প্রসঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, এখানে অপরাধের উপাদানের অভাব রয়েছে। একাত্তরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে নিজামীর দেওয়া ‘ইসলামিক বক্তব্য’কে রাষ্ট্রপক্ষ ‘হিংসাত্মক বক্তব্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছে, যাতে তিনি কী অপরাধ করেছেন তা বোঝা যায় না।
অব্যাহতির আবেদন উপস্থাপন শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য করেন।
সাকা চৌধুরীর আবেদনের শুনানি অব্যাহত: বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদনের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হয়েছে গতকাল। সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলাম আদেশ পুনর্বিবেচনার বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আজ সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার (রিকল) ও সম্পাদনা (এডিট) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হবে।
জানতে চাইলে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেওয়ার সময় ট্রাইব্যুনাল জানতে চেয়েছিলেন, তিনি দোষী না নির্দোষ। ওই সময় তিনি দোষী বা নির্দোষ কিছুই বলেননি। কিন্তু আদেশের প্রত্যায়িত অনুলিপিতে দেখা গেছে, সেখানে ‘নির্দোষ’ লেখা আছে। এ জন্য ওই আদেশ প্রত্যাহার ও সম্পাদনা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
No comments