দেশে দেশে লাভালিনের অনিয়ম দুর্নীতির নানা অভিযোগ- কেরালায় বিদ্যুত প্রকল্প বন্ধ ॥ কানাডায় দুর্নীতির দায়ে প্রধান নির্বাহী গ্রেফতার by মহিউদ্দিন আহমেদ
পদ্মা সেতুতে শুধু দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের
মতো ঘটনা এসএনসি লাভালিন বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ঘটিয়েছে। কানাডিয়ান
প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতির অভিযোগে ভারতের কেরালা রাজ্যে বিদ্যুত প্রকল্প
বাস্তবায়নই বন্ধ হয়ে যায়।
খোদ কানাডার ম্যাকগিল
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টার কাজে অর্থ দুর্নীতির অভিযোগে
লাভালিনের প্রধান নির্বাহী পিয়ের দুহাইমকে গ্রেফতার হতে হয়। তিউনেশিয়া ও
লিবিয়াতে কাজ করতে গিয়েও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে এসএনসি-লাভালিন
কর্মকর্তারা।
ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে ‘বিশ্বখ্যাত’ এই প্রতিষ্ঠানকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্বব্যাংক। এসএনসি-লাভালিনের ওয়েবসাইটেও খবরটির সত্যতা স্বীকার করে স্বাগত জানানো হয়েছে।
২৯০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৭ মিলিয়ন ডলার। এ কাজ পাওয়ার জন্য পাঁচটি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ছিল কানাডা ও যুক্তরাজ্যের যৌথ অংশীদারিত্বের প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন। অন্যগুলো হলো হালক্রো গ্রুপ ইউকে, নিউজিল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান একম এ্যান্ড এজেডএল, জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এবং যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসের জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি হাই পয়েন্ট রেলেন্ড। ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি মূল্যায়ন কমিটি এ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের তালিকা বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রেরণ করে। প্রকল্পের সর্বাধিক ১২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক তালিকাটি পাওয়ার পর অভিযোগ তোলে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন পরামর্শক নিয়োগ পেতে অনিয়ম, দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। এ অভিযোগে ১১ অক্টোবর তাদের অর্থায়ন স্থগিত করে। এরপর পদ্মা সেতুর সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের কানাডায় অবস্থিত হেড অফিসে অভিযান চালায় কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ। কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি লাভালিনের হেড অফিস থেকে গ্রেফতার করেন এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তা রমেশ এবং মোঃ ইসমাইলকে। এই দুই কর্মকর্তাকে কানাডার ‘করাপশন অব ফরেন পাবলিক অফিসিয়াল’ আইনের আওতায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এখন তারা জামিনে রয়েছেন। গত কয়েক মাস তারা টরন্টোর আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিয়েছেন। জুন মাসের শেষের দিকে লাভালিনের সাবেক এ দুই কর্মকর্তার আদালতে হাজির করা হয়। ওইদিন দেশটির আদালত ২০১৩ সালের ১৮ ও ১৯ এপ্রিল প্রাথমিক শুনানির সময় ধার্য করে। একই অভিযোগে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর একটি মামলা করে। মামলায় এসএনসি-লাভালিনের এ দুই কর্মকর্তা ও কেভেন ওয়ালিশ নামে আরেক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে রমেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার ডায়েরিতে বাংলাদেশের তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়া এবং প্রকল্প পরিচালকসহ কয়েকজনকে ঘুষ দেয়ার একটি তালিকা করেছেন। ওই তালিকায় কাকে কত পার্সেন্ট ঘুষ দেয়া হবে সেই পরিমাণও উল্লেখ করেন। আর ইসমলের ল্যাপটপে একটি আমন্ত্রণপত্র পাওয়া যায়। ওই আমন্ত্রণ পত্রটি পাঠিয়ে বাংলাদেশের সরকারদলীয় এক সাংসদের ছোট ভাইকে কানাডায় নিয়ে যান। এসব প্রক্রিয়ার সঙ্গে কেভিন ওয়ালিশের সংশ্লিষ্টতাও পায় দুদক।
ভারতের কেরালা রাজ্যে তিনটি বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের কাজ পায় এসএনসি-লাভালিন। সেখানে লাভলিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি ইন্ডিয়ান সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করে। এতে দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ মেলায় এসএনসি লাভালিনের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্লজ ট্রেন্ডলকে গ্রেফতারের আদেশ দেয় দেশটির আদালত।
২০১০ সালের দিকে তিউনেশিয়ায় বিমানবন্দরসহ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে দুর্নীতিতে জড়ায় এ কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই ৩৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার উত্তোলন করে। কিন্তু ওই টাকা প্রকল্পের কাজে ব্যয় করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এক পর্যায় অভিযোগটি এসএনসি-লাভালিন অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে। দুর্নীতির অভিযোগের কারণে এ প্রকল্পের কাজও ঝুলে যায়। এ প্রতিষ্ঠানের আরেক সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিবিয়া এবং তিউনেশিয়ার বিভিন্ন প্রকল্প থেকে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে সুইজারল্যান্ডে প্রেরণের অভিযোগ আছে। বিষয়টি সুইস এবং কানাডার যৌথ তদন্তাধীন। কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টারের কাজের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ ওঠে এসএনসি-লাভালিনের প্রধান নির্বাহী পিয়ের দুহাইমকের বিরুদ্ধে। ১ দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। যে অভিযোগে দেশটির পুলিশ প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহীকে গ্রেফতার করে। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।
তবে যখনই যে দেশে এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তাদের বিনরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাৎক্ষণিক প্রতিষ্ঠানটি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নজির আছে। এ ছাড়া লাভালিন কোম্পানি নিজেরাই অভিযোগগুলো অভ্যন্তরীণভাবে তদন্ত করার খবর সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া গেছে। সর্বশেষ বাংলাদেশের পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক কাজ পেতে দুর্নীতির যে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কানাডিয়ান পুলিশ কোম্পানির সাবেক দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এর ভিত্তিতে আলোচিত বিশ্বখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এসএনসি-লাভালিনকে আগাম সাময়িক বরখাস্ত (ইটিএস) করার ঘোষণা দিয়েছে। এসএনসি-লাভালিনের ওয়েবসাইটেও খবরটির সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে। এসএনসি-লাভালিনের ওয়েবসাইটে বিশ্বব্যাংকের আগাম সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এসএনসি-লাভালিনের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানকে বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের ঠিকাদারি দরপত্রে অংশগ্রহণে সাময়িক নিষিদ্ধ করে নোটিস দেয়া হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে কানাডীয় পুলিশ দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ান ব্রাউন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিষয়টির চূড়ান্ত সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশ্বব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা আরোপকে আমরা স্বাগত জানাই। উল্লেখ্য, বিশ্বের ১০০ দেশে হাজারের অধিক প্রকল্পে প্রায় লাখের মতো শ্রমিক এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করে।
ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে ‘বিশ্বখ্যাত’ এই প্রতিষ্ঠানকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্বব্যাংক। এসএনসি-লাভালিনের ওয়েবসাইটেও খবরটির সত্যতা স্বীকার করে স্বাগত জানানো হয়েছে।
২৯০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৭ মিলিয়ন ডলার। এ কাজ পাওয়ার জন্য পাঁচটি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ছিল কানাডা ও যুক্তরাজ্যের যৌথ অংশীদারিত্বের প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন। অন্যগুলো হলো হালক্রো গ্রুপ ইউকে, নিউজিল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান একম এ্যান্ড এজেডএল, জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এবং যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসের জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি হাই পয়েন্ট রেলেন্ড। ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি মূল্যায়ন কমিটি এ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের তালিকা বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রেরণ করে। প্রকল্পের সর্বাধিক ১২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক তালিকাটি পাওয়ার পর অভিযোগ তোলে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন পরামর্শক নিয়োগ পেতে অনিয়ম, দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। এ অভিযোগে ১১ অক্টোবর তাদের অর্থায়ন স্থগিত করে। এরপর পদ্মা সেতুর সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের কানাডায় অবস্থিত হেড অফিসে অভিযান চালায় কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ। কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি লাভালিনের হেড অফিস থেকে গ্রেফতার করেন এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তা রমেশ এবং মোঃ ইসমাইলকে। এই দুই কর্মকর্তাকে কানাডার ‘করাপশন অব ফরেন পাবলিক অফিসিয়াল’ আইনের আওতায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এখন তারা জামিনে রয়েছেন। গত কয়েক মাস তারা টরন্টোর আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিয়েছেন। জুন মাসের শেষের দিকে লাভালিনের সাবেক এ দুই কর্মকর্তার আদালতে হাজির করা হয়। ওইদিন দেশটির আদালত ২০১৩ সালের ১৮ ও ১৯ এপ্রিল প্রাথমিক শুনানির সময় ধার্য করে। একই অভিযোগে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর একটি মামলা করে। মামলায় এসএনসি-লাভালিনের এ দুই কর্মকর্তা ও কেভেন ওয়ালিশ নামে আরেক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে রমেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার ডায়েরিতে বাংলাদেশের তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়া এবং প্রকল্প পরিচালকসহ কয়েকজনকে ঘুষ দেয়ার একটি তালিকা করেছেন। ওই তালিকায় কাকে কত পার্সেন্ট ঘুষ দেয়া হবে সেই পরিমাণও উল্লেখ করেন। আর ইসমলের ল্যাপটপে একটি আমন্ত্রণপত্র পাওয়া যায়। ওই আমন্ত্রণ পত্রটি পাঠিয়ে বাংলাদেশের সরকারদলীয় এক সাংসদের ছোট ভাইকে কানাডায় নিয়ে যান। এসব প্রক্রিয়ার সঙ্গে কেভিন ওয়ালিশের সংশ্লিষ্টতাও পায় দুদক।
ভারতের কেরালা রাজ্যে তিনটি বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের কাজ পায় এসএনসি-লাভালিন। সেখানে লাভলিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি ইন্ডিয়ান সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করে। এতে দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ মেলায় এসএনসি লাভালিনের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্লজ ট্রেন্ডলকে গ্রেফতারের আদেশ দেয় দেশটির আদালত।
২০১০ সালের দিকে তিউনেশিয়ায় বিমানবন্দরসহ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে দুর্নীতিতে জড়ায় এ কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই ৩৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার উত্তোলন করে। কিন্তু ওই টাকা প্রকল্পের কাজে ব্যয় করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এক পর্যায় অভিযোগটি এসএনসি-লাভালিন অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে। দুর্নীতির অভিযোগের কারণে এ প্রকল্পের কাজও ঝুলে যায়। এ প্রতিষ্ঠানের আরেক সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিবিয়া এবং তিউনেশিয়ার বিভিন্ন প্রকল্প থেকে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে সুইজারল্যান্ডে প্রেরণের অভিযোগ আছে। বিষয়টি সুইস এবং কানাডার যৌথ তদন্তাধীন। কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টারের কাজের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ ওঠে এসএনসি-লাভালিনের প্রধান নির্বাহী পিয়ের দুহাইমকের বিরুদ্ধে। ১ দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। যে অভিযোগে দেশটির পুলিশ প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহীকে গ্রেফতার করে। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।
তবে যখনই যে দেশে এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তাদের বিনরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাৎক্ষণিক প্রতিষ্ঠানটি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নজির আছে। এ ছাড়া লাভালিন কোম্পানি নিজেরাই অভিযোগগুলো অভ্যন্তরীণভাবে তদন্ত করার খবর সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া গেছে। সর্বশেষ বাংলাদেশের পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক কাজ পেতে দুর্নীতির যে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কানাডিয়ান পুলিশ কোম্পানির সাবেক দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এর ভিত্তিতে আলোচিত বিশ্বখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এসএনসি-লাভালিনকে আগাম সাময়িক বরখাস্ত (ইটিএস) করার ঘোষণা দিয়েছে। এসএনসি-লাভালিনের ওয়েবসাইটেও খবরটির সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে। এসএনসি-লাভালিনের ওয়েবসাইটে বিশ্বব্যাংকের আগাম সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এসএনসি-লাভালিনের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানকে বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের ঠিকাদারি দরপত্রে অংশগ্রহণে সাময়িক নিষিদ্ধ করে নোটিস দেয়া হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে কানাডীয় পুলিশ দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ান ব্রাউন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিষয়টির চূড়ান্ত সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশ্বব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা আরোপকে আমরা স্বাগত জানাই। উল্লেখ্য, বিশ্বের ১০০ দেশে হাজারের অধিক প্রকল্পে প্রায় লাখের মতো শ্রমিক এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করে।
No comments