ক্যান্সার-ভ্রান্ত ধারণা ও সনাতন মতবাদ!
আমাদের দেশে ক্যান্সারকে এখনও মৃত্যুদূত
হিসেবে গণ্য করা হয়। ঈঅঘঈঊজ ঐঅঝ ঘঙ অঘঝডঊজ এই প্রচলিত বচনটি সমাজের অধিকাংশ
মানুষের বদ্ধমূল ধারণায় রয়েছে।
এটা শুধু দুঃখজনকই নয়, গত
৫-১০ বছরে উন্নত দেশে ক্যান্সার চিকিৎসার যে প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে
এবং তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এদেশের ক্যান্সার চিকিৎসায়ও যে যথেষ্ট অগ্রগতি
হয়েছে সেটাকে পরোক্ষভাবে অস্বীকার করার সমতুল্য।
পৃথিবীর প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ মানুষ তাদের জীবদ্দশায় ক্যান্সার আক্রান্ত হবেন, এর অর্থ এই নয় যে তাদের সবাই ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করবেন। প্রতিবছর ১ কোটি ২৭ লাখ লোকের দেহে নতুনভাবে ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং ৭০ লাখেরও বেশি লোক এ রোগে মারা যায়। এ থেকে এ রোগের প্রকোপ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির ভয়াবহতা অনুমিত হয়। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে অনেক ক্যান্সার রোগী প্রকৃত চিকিৎসা ছাড়াই মৃত্যুবরণ করে, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে এ রোগ নিয়মিতও হয় না। বেশিরভাগ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সমন্বিত চিকিৎসার অভাবে অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার চিকিৎসায় ফলাফলও আশানুরূপ হয় না। এ সমস্ত অন্তরায় দূরীকরণে ক্যান্সার বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান অর্জন এবং এ রোগ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ও সনাতন মতবাদ দূরীকরণ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
এ অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ইউআইসিসি (টওঈঈ) নামক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিবছর ৪ ফেব্রুয়ারি সারাবিশ্বে ‘বিশ্ব ক্যান্সার দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বে ক্যান্সারের ভয়াবহতা কমানোর পদ্ধতিগুলোকে সহজতর করা। ক্যান্সার প্রতিরোধ ও ক্যান্সার রোগীদের জীবনমানের উন্নতি সাধনে ভূমিকা রাখতে পারে সে উদ্দেশ্যে প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়।
২০১৩ সালের বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের ঘোষণা- উরংঢ়বষ ফধসধমরহম সুঃযং ধহফ সরংপড়হপবঢ়ঃরড়হং ধনড়ঁঃ পধহপবৎ, ঁহফবৎ ঃযব ঃধমষরহব “ঈধহপবৎ - উরফ ুড়ঁ শহড়?ি”- অর্থাৎ ‘ক্যান্সারÑআপনি জানেন কি? ক্যান্সার সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা এবং সনাতন মতবাদকে অস্বীকার করুন”- এ বাক্যটির মাধ্যমে। রোগটি সম্পর্কে সনাতন চিন্তাধারার বিষদ ব্যাখ্যার প্রয়োজন।
প্রথমত, ক্যান্সার শুধু শারীরিক সমস্যা।
এটি ভ্রান্ত ধারণা। কেননা এ রোগের রয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত ব্যাপ্তি। এটি আমাদের দেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য আরও মর্মান্তিকভাবে প্রযোজ্য। কারণ এদেশে অনেক পরিবার আছে যেখানে মাত্র একজন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ৪-৬ সদস্যের অন্ন-বস্ত্রের যোগানদাতা। এদেশে স্বাস্থ্যবীমা প্রায় অস্তিত্ববিহীন। স্বাস্থ্য খাতে সরকারী নীতিমালা বা কাঠামো অত্যন্ত অপ্রতুল, ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি এবং এ রোগে চিকিৎসা প্রয়োজন হয় দীর্ঘদিন এবং চিকিৎসা পরবর্তী দীর্ঘকাল পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়।
দ্বিতীয়ত, ক্যান্সার রোগটি ধনী ও বয়স্কদের এবং উন্নত দেশের রোগ।
এটিও ভ্রান্ত ধারণা। বলতে গেলে ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী একটি মহামারী। এটা সকল বয়সের, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলস্তরের মানুষের মধ্যে হয়ে তাকে। জরায়ু মুখের ক্যান্সার এবং হেপাটাইসিস বি ও সি জ্বনিত লিভার ক্যান্সারের প্রকোপ উন্নয়নশীল দেশেই তুলনামূলক বেশি।
তৃতীয়ত, ক্যান্সার একটি মৃত্যু পরোয়ানা।
ক্যান্সার মানেই মৃত্যু, কথাটি মোটেও আজকের দিনে সঠিক নয়। অনেক ক্যান্সার আছে যা সারা শরীরে ছড়িয়ে যাবার পরও সম্পূর্ণরূপে সারিয়ে তোলা যায়। তাছাড়া বেশিরভাগ ক্যান্সারই প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণীত হলে সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। অন্যদিকে অনেক ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়ে যাবার পরও আধুনিক চিকিৎসা দ্বারা রোগীর প্রভূত উন্নতি সাধন করা যায় যাতে রোগী দীর্ঘদিন অর্থবহ জীবনযাপন করতে পারে।
চতুর্থত, ক্যান্সারই আমার অদৃষ্ট।
অনেক ক্যান্সারের কারণ ও ঝুঁকিসমূহ আজকাল জানা। বলতে গেলে শতকরা ৩৫ ভাগ ক্যান্সার ধূমপান, মদ্যপান এবং নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খল জীবন যাত্রার কারণে হয়ে থাকে। সুতরাং এই জানা ঝুঁকিসমূহ থেকে বিরত থাকা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয়ের জন্য স্বাস্থ্যবান মানুষের স্ক্রিনিংয়ের ওপর সবিশেষ গুরুত্ব দেয়া- ক্যান্সার থেকে অব্যাহতি পাওয়ার চাবিকাঠি। বর্তমানে স্তন ক্যান্সার, জরুয়া মুখের ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার ও বৃহদন্ত্রের ক্যান্সার এই চারটি ক্যান্সারের স্ক্রিনিং অনুমোদিত। উপরের বক্তব্য থেকে বোঝা যায় ক্যান্সার অদৃষ্টের নির্মম পরিহাসের চেয়ে ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে, ভাবাটাই উচিত।
আগেই বলা হয়েছেÑ ক্যান্সার শুধু ব্যক্তির স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে আমাদের পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং বিশ্ব পরিম-লে। এখানে উল্লেখ করা যায়Ñ২০১০ সালের বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের সেøাগানটি- ক্যান্সারও প্রতিরোধ যোগ্য (ঈধহপবৎ পধহ নব ঢ়ৎবাবহঃবফ ঃড়ড়)। আর এই অসামান্য কাজে সাফল্য শুধু চারটি সহজ বাক্যের মধ্যেই নিহিত। এগুলোÑ ধূমপান বা তামাক, তা যেভাবেই হোক না কেন পরিহার করা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার (যেমন সতেজ সবজি ও ফলমূল বেশি খাওয়া এবং চর্বিযুক্ত খাবার যথাসম্ভব কম খাওয়া) এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা, মদ্যপান সর্বনিম্ন পর্যায়ে কমিয়ে আনা অথবা পরিত্যাগ করা এবং যেসব সংক্রমণ দ্বারা ক্যান্সার হতে পারে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জয়ী হতে হলে সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে সচেতনতা জাগানো, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়, নির্ণয়ের পর সঠিক ও সময়মতো চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ, নতুন ও অপেক্ষাকৃত ফলপ্রসূ ওষুধ ও প্রযুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আর এটি সম্ভব কেবল সমাজের সকল শ্রেণীর ও পেশার মানুষের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে। সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা এবং এনজিওদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং সংবাদপত্র, বেতার-টেলিভিশন চ্যানেেেলর মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার এক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখতে পারে।্ সর্বশেষে ২০১১ সালের বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়টির প্রতি সর্বমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি- সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে এটা সম্ভব (ঞড়মবঃযবৎ রঃ রং ঢ়ড়ংংরনষব)।
অধ্যাপক ডা. মোফাজ্জেল হোসেন (লে. কর্নেল- অব.)
এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন), এফএসিপি (আমেরিকা) এফআরসিপি (এডিন ও গ্লাসগো), ফেলোমেডিকেল অনকোলজি
চীফ কনসালট্যান্ট, মেডিক্যাল অনকোলজিস্ট
ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল
পৃথিবীর প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ মানুষ তাদের জীবদ্দশায় ক্যান্সার আক্রান্ত হবেন, এর অর্থ এই নয় যে তাদের সবাই ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করবেন। প্রতিবছর ১ কোটি ২৭ লাখ লোকের দেহে নতুনভাবে ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং ৭০ লাখেরও বেশি লোক এ রোগে মারা যায়। এ থেকে এ রোগের প্রকোপ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির ভয়াবহতা অনুমিত হয়। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে অনেক ক্যান্সার রোগী প্রকৃত চিকিৎসা ছাড়াই মৃত্যুবরণ করে, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে এ রোগ নিয়মিতও হয় না। বেশিরভাগ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সমন্বিত চিকিৎসার অভাবে অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার চিকিৎসায় ফলাফলও আশানুরূপ হয় না। এ সমস্ত অন্তরায় দূরীকরণে ক্যান্সার বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান অর্জন এবং এ রোগ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ও সনাতন মতবাদ দূরীকরণ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
এ অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ইউআইসিসি (টওঈঈ) নামক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিবছর ৪ ফেব্রুয়ারি সারাবিশ্বে ‘বিশ্ব ক্যান্সার দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বে ক্যান্সারের ভয়াবহতা কমানোর পদ্ধতিগুলোকে সহজতর করা। ক্যান্সার প্রতিরোধ ও ক্যান্সার রোগীদের জীবনমানের উন্নতি সাধনে ভূমিকা রাখতে পারে সে উদ্দেশ্যে প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়।
২০১৩ সালের বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের ঘোষণা- উরংঢ়বষ ফধসধমরহম সুঃযং ধহফ সরংপড়হপবঢ়ঃরড়হং ধনড়ঁঃ পধহপবৎ, ঁহফবৎ ঃযব ঃধমষরহব “ঈধহপবৎ - উরফ ুড়ঁ শহড়?ি”- অর্থাৎ ‘ক্যান্সারÑআপনি জানেন কি? ক্যান্সার সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা এবং সনাতন মতবাদকে অস্বীকার করুন”- এ বাক্যটির মাধ্যমে। রোগটি সম্পর্কে সনাতন চিন্তাধারার বিষদ ব্যাখ্যার প্রয়োজন।
প্রথমত, ক্যান্সার শুধু শারীরিক সমস্যা।
এটি ভ্রান্ত ধারণা। কেননা এ রোগের রয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত ব্যাপ্তি। এটি আমাদের দেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য আরও মর্মান্তিকভাবে প্রযোজ্য। কারণ এদেশে অনেক পরিবার আছে যেখানে মাত্র একজন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ৪-৬ সদস্যের অন্ন-বস্ত্রের যোগানদাতা। এদেশে স্বাস্থ্যবীমা প্রায় অস্তিত্ববিহীন। স্বাস্থ্য খাতে সরকারী নীতিমালা বা কাঠামো অত্যন্ত অপ্রতুল, ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি এবং এ রোগে চিকিৎসা প্রয়োজন হয় দীর্ঘদিন এবং চিকিৎসা পরবর্তী দীর্ঘকাল পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়।
দ্বিতীয়ত, ক্যান্সার রোগটি ধনী ও বয়স্কদের এবং উন্নত দেশের রোগ।
এটিও ভ্রান্ত ধারণা। বলতে গেলে ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী একটি মহামারী। এটা সকল বয়সের, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলস্তরের মানুষের মধ্যে হয়ে তাকে। জরায়ু মুখের ক্যান্সার এবং হেপাটাইসিস বি ও সি জ্বনিত লিভার ক্যান্সারের প্রকোপ উন্নয়নশীল দেশেই তুলনামূলক বেশি।
তৃতীয়ত, ক্যান্সার একটি মৃত্যু পরোয়ানা।
ক্যান্সার মানেই মৃত্যু, কথাটি মোটেও আজকের দিনে সঠিক নয়। অনেক ক্যান্সার আছে যা সারা শরীরে ছড়িয়ে যাবার পরও সম্পূর্ণরূপে সারিয়ে তোলা যায়। তাছাড়া বেশিরভাগ ক্যান্সারই প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণীত হলে সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। অন্যদিকে অনেক ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়ে যাবার পরও আধুনিক চিকিৎসা দ্বারা রোগীর প্রভূত উন্নতি সাধন করা যায় যাতে রোগী দীর্ঘদিন অর্থবহ জীবনযাপন করতে পারে।
চতুর্থত, ক্যান্সারই আমার অদৃষ্ট।
অনেক ক্যান্সারের কারণ ও ঝুঁকিসমূহ আজকাল জানা। বলতে গেলে শতকরা ৩৫ ভাগ ক্যান্সার ধূমপান, মদ্যপান এবং নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খল জীবন যাত্রার কারণে হয়ে থাকে। সুতরাং এই জানা ঝুঁকিসমূহ থেকে বিরত থাকা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয়ের জন্য স্বাস্থ্যবান মানুষের স্ক্রিনিংয়ের ওপর সবিশেষ গুরুত্ব দেয়া- ক্যান্সার থেকে অব্যাহতি পাওয়ার চাবিকাঠি। বর্তমানে স্তন ক্যান্সার, জরুয়া মুখের ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার ও বৃহদন্ত্রের ক্যান্সার এই চারটি ক্যান্সারের স্ক্রিনিং অনুমোদিত। উপরের বক্তব্য থেকে বোঝা যায় ক্যান্সার অদৃষ্টের নির্মম পরিহাসের চেয়ে ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে, ভাবাটাই উচিত।
আগেই বলা হয়েছেÑ ক্যান্সার শুধু ব্যক্তির স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে আমাদের পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং বিশ্ব পরিম-লে। এখানে উল্লেখ করা যায়Ñ২০১০ সালের বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের সেøাগানটি- ক্যান্সারও প্রতিরোধ যোগ্য (ঈধহপবৎ পধহ নব ঢ়ৎবাবহঃবফ ঃড়ড়)। আর এই অসামান্য কাজে সাফল্য শুধু চারটি সহজ বাক্যের মধ্যেই নিহিত। এগুলোÑ ধূমপান বা তামাক, তা যেভাবেই হোক না কেন পরিহার করা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার (যেমন সতেজ সবজি ও ফলমূল বেশি খাওয়া এবং চর্বিযুক্ত খাবার যথাসম্ভব কম খাওয়া) এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা, মদ্যপান সর্বনিম্ন পর্যায়ে কমিয়ে আনা অথবা পরিত্যাগ করা এবং যেসব সংক্রমণ দ্বারা ক্যান্সার হতে পারে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জয়ী হতে হলে সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে সচেতনতা জাগানো, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়, নির্ণয়ের পর সঠিক ও সময়মতো চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ, নতুন ও অপেক্ষাকৃত ফলপ্রসূ ওষুধ ও প্রযুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আর এটি সম্ভব কেবল সমাজের সকল শ্রেণীর ও পেশার মানুষের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে। সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা এবং এনজিওদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং সংবাদপত্র, বেতার-টেলিভিশন চ্যানেেেলর মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার এক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখতে পারে।্ সর্বশেষে ২০১১ সালের বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়টির প্রতি সর্বমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি- সম্মিলিত প্রচেষ্টাতে এটা সম্ভব (ঞড়মবঃযবৎ রঃ রং ঢ়ড়ংংরনষব)।
অধ্যাপক ডা. মোফাজ্জেল হোসেন (লে. কর্নেল- অব.)
এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন), এফএসিপি (আমেরিকা) এফআরসিপি (এডিন ও গ্লাসগো), ফেলোমেডিকেল অনকোলজি
চীফ কনসালট্যান্ট, মেডিক্যাল অনকোলজিস্ট
ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল
No comments