গাঁদা ডালিয়া মলিস্নকা শীতের রম্নৰতার মাঝে ফুলের বৈচিত্র্য
সৈয়দ সোহরাব পৌষ-মাঘ দুই মাস শীতকাল। সে হিসেবে শীতের এখন মধ্য পযর্ায়।
কারণ, আজ বুধবার পৌষের শেষ দিন। কাল থেকে শুরম্ন হচ্ছে মাঘ মাস। আর এই
পর্যায়ে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে।
আকাশে ঘন কুয়াশার ঘোর, শিশির ভেজা রাত,
আর হিমেল হাওয়া প্রভাব বিসত্মার করে চলেছে সারাদেশে। রাজধানী ঢাকাতেও এবার
শীতের তীব্রতা অন্য বারের চেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। হাড় কাঁপানো এই শীত আর
ঘন কুয়াশায় জনজীবনও প্রায় বিপর্যসত্ম হয়ে পড়েছে। দিনের সূর্য কুয়াশার জন্য
পারছে না প্রখর হতে, কোন কোন দিন তো সূর্যের মুখই দেখা যায় না, আবছা হয়ে
থাকে সারাদিনমান। সাধারণত ঢাকায় শীত পড়ে একটু দেরিতে, তীব্রতাও থাকে না
তেমন। কিন্তু এবার ঢাকায় শীত এসেছে বেশ আগে, কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসেই। আর
এখন তো পুরো জবুথবু অবস্থা, একাধিক শীতবস্ত্র পরেও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না।
এবার পৌষেই এই অবস্থা, মাঘে যে কি হবে তা বলাই কঠিন। ঋতুর স্বাভাবিক নিয়ম
অনুযায়ী মাঘে তো শীত পড়ারই কথা। আর তা ঘটলে কঠিন সময় আসছে দেশবাসীর জন্য।
শীতের তীব্রতা বাড়লেও গ্রামবাংলার মাঠে-প্রানত্মরে হলুদ হয়ে থাকা সরিষা ফুল
এখন ঝরতে শুরম্ন করেছে। কিন্তু শহরে শীতের ফুলের শোভা যেন বেড়েই চলেছে। তা
থাকবে আরও কিছু দিন। শহরের বাগান, ফ্যাট বাড়ির বেলকনি কিংবা ছাদের টব
বর্ণাঢ্য হয়ে আছে হরেক রকমের গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, মলিস্নকা, কসমস,
জারবেরা, ভারবেনা, সালভিয়া, রাজকন্ঠ, ক্যালেন্ডুলা, জিনিয়া, লুপিং,
নাসর্টাসিয়াম, আস্টারসহ রকমারি মৌসুমী ফুলে। শীতের রম্নক্ষ্মতা, কুয়াশার
ঘোর এসব সত্ত্বেও এই ঋতুতে যত বাহারি ফুল ফোঁটে তার তুলনা মেলা ভার। যদিও
ফুলের বাহারের জন্য বসনত্মের খ্যাতি প্রবাদপ্রতিম। তা সত্ত্বেও শীতের ফুলের
বৈভব ও বৈচিত্র্য যে নিহায়েতই ফেলনা নয়, তা কোন ফুল বাগানে বেড়াতে গেলে
চাৰুস প্রমাণ মেলে। 'ফুলের বনে যার কাছে যাই তারেই লাগে ভাল'_কবিগুরম্নর এই
বাণীর মতোই ফুল বাগানের শোভা এখন এমনই মনোরম।তবে কৃষি প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন একই ফুলের অজস্র রকমের প্রকরণ, বিভিন্ন রকমের রং নিয়ে ফুটে বাগানকে করছে নয়নাভিরাম। গোলাপের কথাই ধরা যাক_আকারে, বর্ণে কত বৈচিত্র্যময় গোলাপ যে এখন ফুটছে এই শীতে। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে গেলে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। শুধু কি গোলাপ (!) চোখ ফেরানো যায় না লাল, হলুদ, কমলা, বেগুনী ও মিশ্র রঙের বিশালাকার ডালিয়ার দিকে তাকালেও। আবার শীতে গ্রামকে যেমন হলুদ করে তোলে সরিষা ফুল, শহরে তার বিকল্প গাঁদা। এর বৈচিত্র্যও কম নয়_কাঁচা হলুদ রঙের ইনকা, একটু কমলা রঙের রাজগাঁদা, জার্মানির গাঁদা, চীনা গাঁদা_ সব মিলিয়ে গাঁদার সমারোহও বেশ বর্ণাঢ্য। বিয়ে বাড়ির গেট, যে কোন অনুষ্ঠান, মঞ্চ ইত্যাদি সাজানোতে গাঁদার বিপুল ব্যবহারের কারণে ফুলের বাজারে এর চাহিদাও ব্যাপক। এর পরই শীতের ফুলের মধ্যে আছে চন্দ্রমলিস্নকা। সাদা, লাল, হলুদ, বেগুনী, ফিকে হলুদ রঙের মলিস্নকা আছে ছোট-বড় আকারের। আরও আছে জিনিয়া, এটাও পাওয়া যায় বিভিন্ন রঙের। বাগানের কিনারা দিয়ে লাগালে বাগানের শোভা বাড়ে বহুগুণ।
No comments