যৌন হয়রানিঃ পদ হারাতে পারেন ৮ পার্লামেন্টারিয়ান
ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির কারণে ভারতের
কমপক্ষে ৬ জন এমএলএ অযোগ্য ঘোষিত হতে পারেন। এমন এমএলএ’র সংখ্যা ৬। এছাড়া
এমন অভিযোগ আছে লোকসভার দু’পার্লামেন্টারিয়ানের বিরুদ্ধে। নারীদের বিরুদ্ধে
ধর্ষণ নয়, তবে যৌন হয়রানির অভিযোগ আছে তাদের নামে।
ভারতে
রাজনৈতিক নেতা বিশেষ করে রাজ্যসভা বা লোকসভায় নির্বাচন করেন এমন ব্যক্তিদের
অপরাধ বিষয়ক তথ্য সংরক্ষণ করে এসোসিয়েশেন ফর ডেমক্রেটিক রিফর্মস। এর এক
কর্মকর্তা জগদ্বীপ এস. চোকার এসব তথ্য দিয়েছেন। ভারতের রাজধানী নয়া
দিল্লিতে ২৩ বছর বয়সী ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও তার মৃত্যুর পর ভারতজুড়ে এর তীব্র
প্রতিবাদ চলছে। নারীদের মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে কঠোর আইন প্রণয়ন,
পুলিশকে আইন প্রয়োগে কঠোর হতে এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য প্রচারণা বৃদ্ধির
দাবি উঠেছে প্রায় সব মহল থেকে। এর অংশ হিসেবে সরকারের অবসরপ্রাপ্ত
প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রমীলা শঙ্কর সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল
করেছেন। তাতে রাজ্যসভা ও লোকসভার যেসব নেতা বা এমপির বিরুদ্ধে নারী অপরাধ
সংগঠনের অভিযোগ আছে বা মামলা মোকাবিলা করছেন তাদেরকে বরখাস্ত করার আহ্বান
জানানো হয়েছে। এ পিটিশনটি গতকাল প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবিরের আদালতে
শুনানি হওয়ার কথা। তিনি যদি ওই পিটিশনের পক্ষে রায় দেন তাহলে ওই ৮
পার্লামেন্টারিয়ান তাদের পদে অযোগ্য ঘোষিত হবেন। প্রমীলা শঙ্কর তার আবেদনে
ভারতের আদালতগুলোতে যে হাজার হাজার ধর্ষণ মামলা পড়ে আছে তার দ্রুত ফয়সালা
করতে তিনি সরকারকে বাধ্য করানোর জন্য আদেশ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। ভারতে
ধর্ষণ এখন একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। শুধু বখে যাওয়া যুবকরাই এ
অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে না। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে পার্লামেন্টারিয়ানদের মতো
ব্যক্তিরাও, যারা নারীদের রক্ষা করবেন। তাদের নামেই নারী নির্যাতনের অভিযোগ
উঠছে। এইতো বুধবার রাতে আসামের এক কংগ্রেস নেতা ধর্ষণ করতে গিয়ে নারীদের
হাতে গণধোলাই খেয়ে এখন পুলিশের হাতে। ওদিকে সারা ভারতে গত ৫ বছরে বিভিন্ন
রাজনৈতিক দল ২৬০ জন প্রার্থীকে জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছে, যাদের
বিরুদ্ধে নারী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আছে। মামলাও আছে। জগদ্বীপ এস চোকার
বলেন, এমন অভিযোগ আছে এখন বেশ কয়েকজন পার্লামেন্টারিয়ানের বিরুদ্ধে। ওদিকে
রাজনৈতিক বিশ্লেষক জয়া হাসান বলেন, রাজনীতিকে অপরাধমুক্ত রাখতে হবে
আমাদেরকে। যেসব নেতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আছে আগামী নির্বাচনে তার
প্রতিদ্বন্দ্বিতা বন্ধে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ। ওদিকে দিল্লির ধর্ষণ ঘটনার
প্রতিবাদে বুধবার সকালে কয়েক হাজার নারী রাজধানীর গান্ধী স্মৃতিসৌধে মৌন
মিছিল করেছেন। এ সময় তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড। তার
কোনটিতে লেখা ‘রেসপেক্ট’ অর্থাৎ নারীদের সম্মান কর। ‘জাস্টিস’ অর্থাৎ
নারীদের প্রতি ন্যায়বিচার কর। এ মিছিলের প্রার্থনা সভায় যোগ দেন দিল্লির
মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত। এর আগের দিন মঙ্গলবার সরকার নয়া দিল্লিতে
নারীদের নিরাপত্তা তদারকির বিষয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। পুলিশ নারীদের
মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে কি-না তাও নজরদারিতে রাখা হবে। এ
বিষয়ে গঠিত দু’টি টাস্কফোর্স এরই মধ্যে ধর্ষণ ঘটনা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা
করছে। তারা ধর্ষণ নিয়ে যে আইন আছে তা পরিবর্তনের সুপারিশও করতে পারে।
No comments