জবানবন্দিতে মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন- আলব্দী গ্রামের হত্যাকাণ্ডে কাদের মোল্লা অংশ নেন
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লা জবানবন্দিতে বলেছেন, একাত্তরের ২৪ এপ্রিল মিরপুরের আলব্দী (আলোকদী) গ্রামে হত্যাকাণ্ডে কাদের মোল্লা অংশ নিয়েছিলেন। ওই সময় তাঁর হাতে রাইফেল ছিল।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ গতকাল সোমবার জবানবন্দি শেষ করেন রাষ্ট্রপক্ষের নবম সাক্ষী আমির হোসেন মোল্লা (৬৬)। গত রোববার তিনি জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন। তাঁর জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ আলী। কাদের মোল্লা এ সময় আসামির কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
আলব্দী গ্রামের পার্শ্ববর্তী দুয়ারীপাড়ার বাসিন্দা আমির হোসেন জবানবন্দিতে বলেন, একাত্তরের ২৪ এপ্রিল ফজরের আজানের সময় আলব্দী গ্রামের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদের পারে একটি হেলিকপ্টার নামে। আর পূর্ব দিক থেকে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে ১০০ থেকে ১৫০ জন বিহারি ও অবাঙালি গ্রামে ঢুকে গুলিবর্ষণ ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। তারা ওই গ্রামের ৬৪-৬৫ জন বাসিন্দা এবং ৩০০-৩৫০ জন ধান কাটা শ্রমিককে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এ সময় কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগী আখতার গুন্ডার হাতে রাইফেল ছিল। ওই ঘটনায় প্রায় ৪০০ জন নিহত হন।
জবানবন্দিতে এই সাক্ষী বলেন, আলব্দী গ্রামে নিহতদের মধ্যে তাঁর খালু রুস্তম ব্যাপারি, মামা সলিম মোল্লা ও করিম মোল্লা, মামাতো ভাই আবদুল আউয়াল মোল্লা, লাল চাঁন ব্যাপারি, জয়নাল মোল্লা, ফজল হক, অজল হক ও নবী মোল্লা, চাচাতো ভাই জোরা মোল্লা, চাচা নওয়াব আলী ও মোকলেসুর রহমান, ভাবি ইয়াসমিন বানুসহ ২১ জন স্বজন রয়েছেন। তিনি বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের পর তিনি জুন মাসের প্রথম দিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিতে ভারতের আসামের লায়লাপুরে যান। সেখানে প্রশিক্ষণ শেষে মেলাঘরে যান। সেখান থেকে অস্ত্র নিয়ে আগস্ট মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশে ফেরেন।
আমির হোসেন বলেন, ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও মিরপুর তখনো স্বাধীন হয়নি। এ সময় মোহাম্মদপুরের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র (বর্তমানে শারীরিক শিক্ষা ইনস্টিটিউট) থেকে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে ৭০০-৮০০ আলবদর সদস্য ও কয়েকজন পাঞ্জাবি সেনা মিরপুরের বিহারিদের কাছে আশ্রয় নেয়। তারা একত্র হয়ে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ায় এবং বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানে পরিণত করতে চায়। ১৮ ডিসেম্বর তিনি (সাক্ষী), জহির উদ্দিন বাবর, শামসুল হকসহ প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হানিফ ও সহকারী কমান্ডার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে মিরপুরের জন্দি রাডার ক্যাম্প আক্রমণ করেন। ওই ক্যাম্প ছিল কাদের মোল্লা, আলবদর বাহিনী ও পাঞ্জাবিদের আশ্রয়স্থল। মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প আক্রমণ করলে তারাও ভারী অস্ত্র দিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে। এতে মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সাত্তার তুরাগ নদের পাড়ে শহীদ হন এবং তিনি (সাক্ষী) হাতে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে পিছু হটেন। পরে ৩১ জানুয়ারি মিত্রবাহিনী এবং মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে মিরপুরে আক্রমণ করলে পাকিস্তানি সেনা ও কাদের মোল্লার নেতৃত্বাধীন আলবদররা পরাজিত হয়। তখন মিরপুরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়।
আমির হোসেন আরও বলেন, সত্তরের নির্বাচনে তিনি মিরপুর-মোহাম্মদপুর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহিরুদ্দিন আহমেদের পক্ষে কাজ করেন। জহিরুদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের প্রার্থী গোলাম আযমের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন ইসলামী ছাত্র সংঘের (জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন) নেতা কাদের মোল্লা।
জবানবন্দি শেষে আমির হোসেনকে আসামিপক্ষের জেরার জন্য ট্রাইব্যুনাল ২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। পরে কাদের মোল্লাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ষষ্ঠ সাক্ষী সফিউদ্দিন মোল্লা ১ আগস্ট জবানবন্দিতে বলেছিলেন, আলব্দী গ্রামে হত্যাকাণ্ডে তিনি কাদের মোল্লাকে অস্ত্র হাতে অংশ নিতে দেখেছেন।
আলব্দী গ্রামের পার্শ্ববর্তী দুয়ারীপাড়ার বাসিন্দা আমির হোসেন জবানবন্দিতে বলেন, একাত্তরের ২৪ এপ্রিল ফজরের আজানের সময় আলব্দী গ্রামের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদের পারে একটি হেলিকপ্টার নামে। আর পূর্ব দিক থেকে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে ১০০ থেকে ১৫০ জন বিহারি ও অবাঙালি গ্রামে ঢুকে গুলিবর্ষণ ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। তারা ওই গ্রামের ৬৪-৬৫ জন বাসিন্দা এবং ৩০০-৩৫০ জন ধান কাটা শ্রমিককে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এ সময় কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগী আখতার গুন্ডার হাতে রাইফেল ছিল। ওই ঘটনায় প্রায় ৪০০ জন নিহত হন।
জবানবন্দিতে এই সাক্ষী বলেন, আলব্দী গ্রামে নিহতদের মধ্যে তাঁর খালু রুস্তম ব্যাপারি, মামা সলিম মোল্লা ও করিম মোল্লা, মামাতো ভাই আবদুল আউয়াল মোল্লা, লাল চাঁন ব্যাপারি, জয়নাল মোল্লা, ফজল হক, অজল হক ও নবী মোল্লা, চাচাতো ভাই জোরা মোল্লা, চাচা নওয়াব আলী ও মোকলেসুর রহমান, ভাবি ইয়াসমিন বানুসহ ২১ জন স্বজন রয়েছেন। তিনি বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের পর তিনি জুন মাসের প্রথম দিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিতে ভারতের আসামের লায়লাপুরে যান। সেখানে প্রশিক্ষণ শেষে মেলাঘরে যান। সেখান থেকে অস্ত্র নিয়ে আগস্ট মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশে ফেরেন।
আমির হোসেন বলেন, ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও মিরপুর তখনো স্বাধীন হয়নি। এ সময় মোহাম্মদপুরের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র (বর্তমানে শারীরিক শিক্ষা ইনস্টিটিউট) থেকে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে ৭০০-৮০০ আলবদর সদস্য ও কয়েকজন পাঞ্জাবি সেনা মিরপুরের বিহারিদের কাছে আশ্রয় নেয়। তারা একত্র হয়ে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ায় এবং বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানে পরিণত করতে চায়। ১৮ ডিসেম্বর তিনি (সাক্ষী), জহির উদ্দিন বাবর, শামসুল হকসহ প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হানিফ ও সহকারী কমান্ডার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে মিরপুরের জন্দি রাডার ক্যাম্প আক্রমণ করেন। ওই ক্যাম্প ছিল কাদের মোল্লা, আলবদর বাহিনী ও পাঞ্জাবিদের আশ্রয়স্থল। মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প আক্রমণ করলে তারাও ভারী অস্ত্র দিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে। এতে মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সাত্তার তুরাগ নদের পাড়ে শহীদ হন এবং তিনি (সাক্ষী) হাতে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে পিছু হটেন। পরে ৩১ জানুয়ারি মিত্রবাহিনী এবং মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে মিরপুরে আক্রমণ করলে পাকিস্তানি সেনা ও কাদের মোল্লার নেতৃত্বাধীন আলবদররা পরাজিত হয়। তখন মিরপুরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়।
আমির হোসেন আরও বলেন, সত্তরের নির্বাচনে তিনি মিরপুর-মোহাম্মদপুর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহিরুদ্দিন আহমেদের পক্ষে কাজ করেন। জহিরুদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের প্রার্থী গোলাম আযমের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন ইসলামী ছাত্র সংঘের (জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন) নেতা কাদের মোল্লা।
জবানবন্দি শেষে আমির হোসেনকে আসামিপক্ষের জেরার জন্য ট্রাইব্যুনাল ২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। পরে কাদের মোল্লাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ষষ্ঠ সাক্ষী সফিউদ্দিন মোল্লা ১ আগস্ট জবানবন্দিতে বলেছিলেন, আলব্দী গ্রামে হত্যাকাণ্ডে তিনি কাদের মোল্লাকে অস্ত্র হাতে অংশ নিতে দেখেছেন।
No comments