প্রকাশ পেল বঙ্গবন্ধুর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'-এখন এটা জনগণের : প্রধানমন্ত্রী
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' এত দিন শেখ পরিবারের সম্পদ থাকলেও এখন এটা জনগণের সম্পদ। বইটি পড়ে মানুষ বাংলাদেশের ইতিহাস, পাকিস্তানের আগে ও পরে দেশের অবস্থা এবং স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তাঁর অসামান্য ত্যাগের কথা জানতে পারবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে গণভবনে এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ছিলেন জাতির জনকের ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও। বাবার স্মৃতিচারণা করে দুই বোন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। বাবার কথা বলতে গিয়ে দুজনের চোখ বারবার অশ্রুসজল হয়ে উঠছিল।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ সময় তিনি জেলে বসে নিজ বংশ পরিচয়, শৈশব-কিশোর, শিক্ষাজীবন এবং ১৯৫৪ পর্যন্ত নানা রাজনৈতিক পটভূমি ও তাঁর সংগ্রামী জীবনের প্রেক্ষাপটে আত্মজীবনী লেখেন। প্রকাশনা সংস্থা ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) সেই আত্মজীবনী বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশ করেছে। বাংলা সংস্করণের নাম দেওয়া হয়েছে 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম অনূদিত ইংরেজি সংস্করণটির নাম 'দ্য আনফিনিশড মেমোরিজ'।
গণভবনে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির কপি প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছোট বোনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বইটি প্রকাশের কষ্টকর অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি প্রকাশের জন্য জীবনের বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধুর লেখা ডায়েরি ও লেখা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিদারুণ কষ্ট করতে হয়েছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে অনেক কিছু নষ্ট হয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনীও কিছু জব্ধ করে। সেগুলো আর ফিরে পাওয়া যায়নি।
যেগুলো পরে পাওয়া গেছে তা তাঁর মা বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিবের অবদান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমার মা যেগুলো যত্নসহকারে তুলে রেখেছিলেন, সেগুলো পাওয়া গেছে। কিছু লেখা বাংলার বাণীতে টাইপ করতে দেওয়া হলেও পঁচাত্তরের বিয়োগান্তক ঘটনার পর সেগুলো অনেক খুঁজেও আর পাওয়া যায়নি।' ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর তাঁদের এক আত্মীয় বঙ্গবন্ধুর কিছু দুর্লভ লেখা দিয়ে গিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ডায়েরি ও চিঠির যেগুলো পাওয়া গেছে, সেগুলোরও অনেক পাতাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিছু পাতা ছিল উইয়ে কাটা। অনেক লেখার পাঠোদ্ধার করাই যাচ্ছিল না। এরপরও যেগুলো বোঝা গেছে, সেগুলো নিয়েই তিনি নিজে ও অন্যদের দিয়ে কম্পোজ করিয়ে বই প্রকাশের উপযোগী করেছেন। ওয়ান-ইলেভেনের পর কারাগারে থাকা অবস্থায়ও বইটির কাজ করেছেন বলে জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি প্রকাশকের হাতে তুলে দেওয়াও কষ্টের বিষয় ছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, 'যখন এটি প্রকাশনা কমিটির হাতে তুলে দিয়েছিলাম, সেদিন ভীষণ কষ্ট হয়েছে। এগুলো হাতছাড়া করতে বুকটা ফেটে যাচ্ছিল।'
বইটিতে বঙ্গবন্ধুর নিজের হাতে লেখা সম্পূর্ণ অবিকৃত রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যার সম্পর্কে যেভাবে লিখে গেছেন, সেভাবেই রাখা হয়েছে। অনেকের সম্পর্কে অনেক রকম সন্দেহ ছিল, তারপরও সেখানেও কোনো রকম হাত দেওয়া হয়নি। কেননা ইতিহাস ইতিহাসই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা জীবিত থাকতে যখন এগুলো পড়তে গিয়েছিলাম, তখন তিনি বাধা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, 'আমি মারা যাওয়ার পরই এগুলো পড়িস। তাই পরে এগুলো পড়তে গিয়ে সেসব কথাই বারবার মনে পড়েছে।'
শেখ রেহানাও বলেন, এই বইয়ের লেখা সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত অনেকের কাছেই ধরনা দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, 'অনেক সময় এই স্মৃতিগুলো পড়তে গিয়ে ইতস্তত বোধ করেছি। মনে হয়েছে, অনেকটা বেয়াদবি হয়ে যাচ্ছে কি না। কেননা একজন মানুষের ডায়েরি অনেকটাই ব্যক্তিগত।' তবে বড় বোনের উৎসাহে আবার পড়েছেন মন্তব্য করে শেখ রেহানা বলেন, লেখাটি বই আকারে প্রকাশের বেলায় অনেক সতর্কতাও অবলম্বন করা হয়েছে। কারণ একটি শব্দ বদলে গেলে অর্থও সম্পূর্ণ উল্টে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রকাশনা কমিটির পক্ষে অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহমেদ, শামসুজ্জামান খান, সাংবাদিক বেবী মওদুদ ও অধ্যাপক ফখরুল আলম এবং ইউপিএলের স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন আহমদসহ প্রকাশনার সঙ্গে জড়িত অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মহিলাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ, বিশেষ সহকারী (প্রেস) মাহবুবুল হক শাকিলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ছিলেন জাতির জনকের ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও। বাবার স্মৃতিচারণা করে দুই বোন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। বাবার কথা বলতে গিয়ে দুজনের চোখ বারবার অশ্রুসজল হয়ে উঠছিল।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ সময় তিনি জেলে বসে নিজ বংশ পরিচয়, শৈশব-কিশোর, শিক্ষাজীবন এবং ১৯৫৪ পর্যন্ত নানা রাজনৈতিক পটভূমি ও তাঁর সংগ্রামী জীবনের প্রেক্ষাপটে আত্মজীবনী লেখেন। প্রকাশনা সংস্থা ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) সেই আত্মজীবনী বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশ করেছে। বাংলা সংস্করণের নাম দেওয়া হয়েছে 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম অনূদিত ইংরেজি সংস্করণটির নাম 'দ্য আনফিনিশড মেমোরিজ'।
গণভবনে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির কপি প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছোট বোনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বইটি প্রকাশের কষ্টকর অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি প্রকাশের জন্য জীবনের বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধুর লেখা ডায়েরি ও লেখা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিদারুণ কষ্ট করতে হয়েছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে অনেক কিছু নষ্ট হয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনীও কিছু জব্ধ করে। সেগুলো আর ফিরে পাওয়া যায়নি।
যেগুলো পরে পাওয়া গেছে তা তাঁর মা বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিবের অবদান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমার মা যেগুলো যত্নসহকারে তুলে রেখেছিলেন, সেগুলো পাওয়া গেছে। কিছু লেখা বাংলার বাণীতে টাইপ করতে দেওয়া হলেও পঁচাত্তরের বিয়োগান্তক ঘটনার পর সেগুলো অনেক খুঁজেও আর পাওয়া যায়নি।' ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর তাঁদের এক আত্মীয় বঙ্গবন্ধুর কিছু দুর্লভ লেখা দিয়ে গিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ডায়েরি ও চিঠির যেগুলো পাওয়া গেছে, সেগুলোরও অনেক পাতাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিছু পাতা ছিল উইয়ে কাটা। অনেক লেখার পাঠোদ্ধার করাই যাচ্ছিল না। এরপরও যেগুলো বোঝা গেছে, সেগুলো নিয়েই তিনি নিজে ও অন্যদের দিয়ে কম্পোজ করিয়ে বই প্রকাশের উপযোগী করেছেন। ওয়ান-ইলেভেনের পর কারাগারে থাকা অবস্থায়ও বইটির কাজ করেছেন বলে জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি প্রকাশকের হাতে তুলে দেওয়াও কষ্টের বিষয় ছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, 'যখন এটি প্রকাশনা কমিটির হাতে তুলে দিয়েছিলাম, সেদিন ভীষণ কষ্ট হয়েছে। এগুলো হাতছাড়া করতে বুকটা ফেটে যাচ্ছিল।'
বইটিতে বঙ্গবন্ধুর নিজের হাতে লেখা সম্পূর্ণ অবিকৃত রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যার সম্পর্কে যেভাবে লিখে গেছেন, সেভাবেই রাখা হয়েছে। অনেকের সম্পর্কে অনেক রকম সন্দেহ ছিল, তারপরও সেখানেও কোনো রকম হাত দেওয়া হয়নি। কেননা ইতিহাস ইতিহাসই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা জীবিত থাকতে যখন এগুলো পড়তে গিয়েছিলাম, তখন তিনি বাধা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, 'আমি মারা যাওয়ার পরই এগুলো পড়িস। তাই পরে এগুলো পড়তে গিয়ে সেসব কথাই বারবার মনে পড়েছে।'
শেখ রেহানাও বলেন, এই বইয়ের লেখা সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত অনেকের কাছেই ধরনা দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, 'অনেক সময় এই স্মৃতিগুলো পড়তে গিয়ে ইতস্তত বোধ করেছি। মনে হয়েছে, অনেকটা বেয়াদবি হয়ে যাচ্ছে কি না। কেননা একজন মানুষের ডায়েরি অনেকটাই ব্যক্তিগত।' তবে বড় বোনের উৎসাহে আবার পড়েছেন মন্তব্য করে শেখ রেহানা বলেন, লেখাটি বই আকারে প্রকাশের বেলায় অনেক সতর্কতাও অবলম্বন করা হয়েছে। কারণ একটি শব্দ বদলে গেলে অর্থও সম্পূর্ণ উল্টে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রকাশনা কমিটির পক্ষে অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহমেদ, শামসুজ্জামান খান, সাংবাদিক বেবী মওদুদ ও অধ্যাপক ফখরুল আলম এবং ইউপিএলের স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন আহমদসহ প্রকাশনার সঙ্গে জড়িত অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মহিলাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ, বিশেষ সহকারী (প্রেস) মাহবুবুল হক শাকিলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
No comments