পবিত্র কোরআনের আলো-ফাসাদ সৃষ্টিকারীরা যুদ্ধ চায়, কিন্তু আল্লাহ চান মানুষের জন্য শান্তি
৬২. ওয়া তারা কাছীরাম্ মিনহুম ইউছা-রিঊনা ফিল ইছমি ওয়ালউ'দওয়া-নি ওয়া আকলিহিমুছ্ ছুহ্তি; লাবি'ছা মা কা-নূ ইয়া'লামূ
৬৩. লাও লা ইয়ানহা হুমুর্ রাব্বানিয়ূ্যঊনা ওয়ালআহবারু আ'ন ক্বাওলিহিমুল ইছমা ওয়া আকলিহিমুছ্ ছুহতা লাবি'ছা মা কা-নূ ইয়াসনাঊন।
৬৪. ওয়া ক্বালাতিল ইয়াহূদু ইয়াদুল্লাহি মাগলূলাহ; গুল্লাত্ আইদীহিম্ ওয়া লুয়ি'নূ বিমা ক্বালূ বাল্ ইয়াদাহু মাব্ছূত্বাতানি ইউনফিক্বু কাইফা ইয়াশা; ওয়া লা ইয়াযীদান্না কাছীরাম্ মিনহুম্ মা উনযিলা ইলাইকা মির রাবি্বকা তুগইয়া-নান ওয়া কুফ্রা-; ওয়া আলক্বাইনা বাইনাহুমুল আ'দা-ওয়াতা ওয়ালবাগ্দ্বা-আ ইলা- ইয়াওমিল কি্বয়ামাতি; কুল্লামা- আওক্বাদূ নারান লিলহারবি আত্বফা-আহাল্লাহু ওয়া ইয়াছআ'ওনা ফিল আরদ্বি ফাছাদা; ওয়াল্লাহু লা ইউহিব্বুল মুফছিদীন। [সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ৬২-৬৪]৬৩. লাও লা ইয়ানহা হুমুর্ রাব্বানিয়ূ্যঊনা ওয়ালআহবারু আ'ন ক্বাওলিহিমুল ইছমা ওয়া আকলিহিমুছ্ ছুহতা লাবি'ছা মা কা-নূ ইয়াসনাঊন।
অনুবাদ : ৬২. তাদের অনেককেই আপনি দেখতে পাবেন তারা পাপকাজ, আল্লাহর অবাধ্যতা ও অবৈধ সম্পদ ভক্ষণে খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এরা যা করে, তা খুবই নিকৃষ্ট কাজ।
৬৩. যদি এদের ধর্মীয় নেতা ও আলেমরা এদের এসব পাপের কথা ও হারাম মাল ভক্ষণ করা থেকে বিরত রাখত, তবে কতই না ভালো হতো! এরা যা কিছু করছে, তা বড়ই নিন্দনীয়।
৬৪. ইহুদিরা বলে, আল্লাহর দানের হাত বাঁধা পড়ে গেছে। আসলে আল্লাহর হাত বাঁধা পড়েনি; বরং তাদের হাতই বাঁধা পড়ে গেছে, আর তারা যে বেফাঁস উক্তি করছে সে জন্য তাদের ওপর অভিশাপ নিপতিত হয়েছে। আল্লাহর উভয় হাতই উন্মুক্ত আছে। তিনি যেভাবে চান, সেভাবেই সম্পদ ব্যবহার করেন। আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে যা আপনার ওপর নাজিল হয়েছে (কোরআন), তা অনেকেরই পাপাচার ও অবাধ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি তাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও হিংসা ঢেলে দিয়েছি, যা থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত। যখনই তারা সত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে চায়, তখনই আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন। তারা পৃথিবীতে কলহ-বিবাদ ছড়িয়ে বেড়ায়, আর আল্লাহ তায়ালা কলহ বিস্তারকারীদের পছন্দ করেন না।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলো ইহুদিদের কিছু উদ্ধত আচরণের জবাবে নাজিল হয়েছে। তাদের ঔদ্ধত্যের একটি ঘটনা এ রকম : একবার মদিনার ইহুদি লুবাদ ইবনে কায়েস এবং বনি কায়নুকার ইহুদি নেতা কানহাসসহ অনেকে এসব কথা বলে বেড়াত যে আল্লাহ তায়ালা কৃপণ হয়ে গেছেন। তাদের এসব নাফরমানি কথাবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ৬৪ নম্বর আয়াতটি নাজিল হয়। কথিত আছে, মদিনায় তখন অভাব দেখা দিয়েছিল এবং বিশেষ করে ইহুদিরা যথেষ্ট অভাব-অনটনে পড়ে গিয়েছিল, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো যাচ্ছিল না। এ জন্য তারা আল্লাহর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছিল। এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে দিচ্ছেন, তিনি কৃপণ নন, বরং তিনি মহান দাতা ও দয়ালু। তিনি যেমন ভাবে ইচ্ছা, যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন। ইহুদিদের মধ্যে যে অভাব ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে, সেটা আল্লাহর কৃপণতার কারণে নয়; বরং তাদের অবাধ্যতা ও পাচারের কারণেই বিপর্যয় নেমে এসেছে।
৬২ ও ৬৩ নম্বর আয়াতে ইহুদিনের অবাধ্যতা, ভণ্ডামি ও পাপাচারের কথা বলা হয়েছে। আফসোসের সঙ্গে বলা হয়েছে, এদের হাতে আল্লাহ প্রেরিত হেদায়েতের কিতাব রয়েছে, তাদের ধর্মবেত্তা ও আলেমরা যদি তাদের পাপকর্ম ও হারাম সম্পদ ভোগ করার অভ্যাস থেকে বিরত করত, তবে কতই না ভালো হতো। কিন্তু তারা তা করছে না; বরং মুসলমানদের বিরোধিতায় তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের আশ্বস্ত করছেন যে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত হবে, কারণ তাদের মধ্যে চিরদিনই দলাদলি ও বিভেদ সৃষ্টি হবে, একদল অন্য দলের দুশমনে পরিণত হবে। এই শত্রুতা ও ঘৃণার ফলেই মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হলে তারা পরাজিত হবে। অথচ সেই ইহুদিরাই মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে ব্যস্ত।
ইহুদিদের সঙ্গে মুসলমানদের সন্ধি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু ইহুদিরা বারবার চুক্তি ভঙ্গ করতে থাকে। তারা গোপনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ও অশান্তি বিস্তার করে বেড়ায়। এভাবে তারা যুদ্ধ টেনে আনে। তবে তাদের নিয়তিতে নির্ধারিত হয়ে আছে পরাজয়। তারা দুনিয়াতে ফাসাদ সৃষ্টির পাঁয়তারা করবে, তবে আল্লাহ মানুষের জন্য চান শান্তি।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৬৩. যদি এদের ধর্মীয় নেতা ও আলেমরা এদের এসব পাপের কথা ও হারাম মাল ভক্ষণ করা থেকে বিরত রাখত, তবে কতই না ভালো হতো! এরা যা কিছু করছে, তা বড়ই নিন্দনীয়।
৬৪. ইহুদিরা বলে, আল্লাহর দানের হাত বাঁধা পড়ে গেছে। আসলে আল্লাহর হাত বাঁধা পড়েনি; বরং তাদের হাতই বাঁধা পড়ে গেছে, আর তারা যে বেফাঁস উক্তি করছে সে জন্য তাদের ওপর অভিশাপ নিপতিত হয়েছে। আল্লাহর উভয় হাতই উন্মুক্ত আছে। তিনি যেভাবে চান, সেভাবেই সম্পদ ব্যবহার করেন। আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে যা আপনার ওপর নাজিল হয়েছে (কোরআন), তা অনেকেরই পাপাচার ও অবাধ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি তাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও হিংসা ঢেলে দিয়েছি, যা থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত। যখনই তারা সত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে চায়, তখনই আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন। তারা পৃথিবীতে কলহ-বিবাদ ছড়িয়ে বেড়ায়, আর আল্লাহ তায়ালা কলহ বিস্তারকারীদের পছন্দ করেন না।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলো ইহুদিদের কিছু উদ্ধত আচরণের জবাবে নাজিল হয়েছে। তাদের ঔদ্ধত্যের একটি ঘটনা এ রকম : একবার মদিনার ইহুদি লুবাদ ইবনে কায়েস এবং বনি কায়নুকার ইহুদি নেতা কানহাসসহ অনেকে এসব কথা বলে বেড়াত যে আল্লাহ তায়ালা কৃপণ হয়ে গেছেন। তাদের এসব নাফরমানি কথাবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ৬৪ নম্বর আয়াতটি নাজিল হয়। কথিত আছে, মদিনায় তখন অভাব দেখা দিয়েছিল এবং বিশেষ করে ইহুদিরা যথেষ্ট অভাব-অনটনে পড়ে গিয়েছিল, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো যাচ্ছিল না। এ জন্য তারা আল্লাহর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছিল। এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে দিচ্ছেন, তিনি কৃপণ নন, বরং তিনি মহান দাতা ও দয়ালু। তিনি যেমন ভাবে ইচ্ছা, যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন। ইহুদিদের মধ্যে যে অভাব ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে, সেটা আল্লাহর কৃপণতার কারণে নয়; বরং তাদের অবাধ্যতা ও পাচারের কারণেই বিপর্যয় নেমে এসেছে।
৬২ ও ৬৩ নম্বর আয়াতে ইহুদিনের অবাধ্যতা, ভণ্ডামি ও পাপাচারের কথা বলা হয়েছে। আফসোসের সঙ্গে বলা হয়েছে, এদের হাতে আল্লাহ প্রেরিত হেদায়েতের কিতাব রয়েছে, তাদের ধর্মবেত্তা ও আলেমরা যদি তাদের পাপকর্ম ও হারাম সম্পদ ভোগ করার অভ্যাস থেকে বিরত করত, তবে কতই না ভালো হতো। কিন্তু তারা তা করছে না; বরং মুসলমানদের বিরোধিতায় তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের আশ্বস্ত করছেন যে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত হবে, কারণ তাদের মধ্যে চিরদিনই দলাদলি ও বিভেদ সৃষ্টি হবে, একদল অন্য দলের দুশমনে পরিণত হবে। এই শত্রুতা ও ঘৃণার ফলেই মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হলে তারা পরাজিত হবে। অথচ সেই ইহুদিরাই মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে ব্যস্ত।
ইহুদিদের সঙ্গে মুসলমানদের সন্ধি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু ইহুদিরা বারবার চুক্তি ভঙ্গ করতে থাকে। তারা গোপনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ও অশান্তি বিস্তার করে বেড়ায়। এভাবে তারা যুদ্ধ টেনে আনে। তবে তাদের নিয়তিতে নির্ধারিত হয়ে আছে পরাজয়। তারা দুনিয়াতে ফাসাদ সৃষ্টির পাঁয়তারা করবে, তবে আল্লাহ মানুষের জন্য চান শান্তি।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments