মন্ত্রীর নির্দেশের বাস্তবায়ন দেখতে চায় নগরবাসী-যত্রতত্র গাড়ি রাখা

স্বীকার করার উপায় নেই, ঢাকা মহানগরে যে হারে যানবাহন ও জনসংখ্যা বাড়ছে, সেই তুলনায় সড়কের পরিসর বাড়ছে না। একটি পরিকল্পিত নগরে ২৫ শতাংশ সড়ক থাকা আবশ্যক। ঢাকা মহানগরে আছে মাত্র ৭ শতাংশ। এই স্বল্প পরিসরের সড়কেরও সুষ্ঠু ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না নানা রকম দখলদারি, অবৈধ স্থাপনা ও যত্রতত্র গাড়ি ফেলে রাখার কারণে।


বুধবার ঢাকা মহানগরের যানজট নিরসনে গঠিত সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার সঙ্গে দ্বিমত করার উপায় নেই। সভায় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগামী এক মাসের মধ্যে মতিঝিল এলাকায় যত্রতত্র গাড়ি রাখা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী এপ্রিলের মধ্যে মহানগরে আরও ২৯০টি বাস নামানো হবে বলে সভায় জানানো হয়। এসব গণপরিবহনে যাতায়াত করতে স্কুলশিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার কথাও বলেছেন মন্ত্রী। এ ছাড়া সভায় সদরঘাট থেকে গাবতলী পর্যন্ত বাঁধের ওপর যেসব স্থাপনা আছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলারও সিদ্ধান্ত হয়।
দুর্ভাগ্য যে, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বা সমন্বয় কমিটির সভায় অনেক সিদ্ধান্ত হলেও সেগুলো কার্যকর হয় না। রাজধানীর যানজট নিয়ে এর আগেও বহু বৈঠক ও সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আগের সিদ্ধান্তগুলো কেন বাস্তবায়িত হয়নি, তা খুঁজে বের করা প্রয়োজন।
যানজটে অতিষ্ঠ নগরবাসী মন্ত্রীর নির্দেশের দ্রুত বাস্তবায়ন দেখতে চায়। তিনি নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন, ঢাকা মহানগরকে স্থায়ী যানজটমুক্ত করতে একটি বাস্তবমুখী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। আর সেগুলো ‘কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই’ হলে চলবে না। বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। একটি বা দুটি সড়ক থেকে গাড়ি সরানোর নির্দেশ দিলেই মহানগরের পরিবহনব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, তা ভাবার কারণ নেই। মতিঝিলের অধিকাংশ ভবনের নিজস্ব পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকার কথা। তার পরও কীভাবে সড়কে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা হয়? বিষয়টি দেখার দায়িত্ব যাদের, তারা যদি নাক ডেকে ঘুমায় কিংবা বখরা আদায়ে ব্যস্ত থাকে, তাহলে কখনোই সড়কটি যানজটমুক্ত হবে না।
মহানগরের সব সড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা ও অস্থায়ী দোকানপাট এবং যত্রতত্র গাড়ি না রাখার পাশাপাশি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.