ছাত্রদলকে শিবিরমুক্ত রাখার দাবি নেতাকর্মীদের- ছ'বছর পর বর্ধিত সভা
ছাত্রদলকে শিবিরমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির মাঠ পর্যায়ের নেতারা। বুধবার সংগঠনের বর্ধিত সভায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতারা এ দাবির পাশাপাশি জেলা কমিটিতে অছাত্র,
বিবাহিতদের স্থান না দেয়া এবং কমপৰে ডিগ্রী পাস না হলে নেতা নির্বাচিত না করার দাবি জানান। যদিও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সিংহভাগ নেতা বিবাহিত, সনত্মানের জনক এবং ব্যবসায়ী। নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বর্ধিত সভার উদ্বোধন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি ও ছাত্রদলের জন্য এখন কঠিন সময় চলছে মনত্মব্য করে উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি ছাত্রদলকে সাহসী ভূমিকা নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।দীর্ঘ ৬ বছর পর বুধবার ছাত্রদলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০০৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সংগঠনটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সংগঠনের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকুর সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক আমিরম্নল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় বর্ধিত সভার প্রথম অধিবেশনে সংগঠনটির সাবেক নেতৃবৃন্দের মধ্যে আমান উলস্নাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, খায়রম্নল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, হাবিবুন্নবী খান সোহেল, হেলেন জেরিন খান, শিরিন সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। বর্ধিত সভায় দেশের ৮৫ টি সাংগঠনিক জেলা, কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর মিলিয়ে ৫ শতাধিক নেতা অংশ নেন।
সূত্র জানায়, সভায় বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলা থেকে আগত নেতারা তাদের বক্তব্যে নিজেদের বিভিন্ন ৰোভ ও দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। সংগঠনের ভেতর যাতে শিবির অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকা, জেলা কমিটিতে অছাত্র, বিবাহিতদের স্থান না দেয়া এবং কমপৰে ডিগ্রী পাস না হলে নেতা নির্বাচিত না করার দাবি জানান তারা। বিভিন্ন জেলা নেতারা বলেছেন, ছাত্রদলের জেলা শাখার নেতা হতে হলে বয়স সর্বোচ্চ ৩০-এর মধ্যে হতে হবে। কমপৰে ডিগ্রী পাস হতে হবে। জেলা কমিটি কেন্দ্র থেকে চাপিয়ে দিলে হবে না। প্রকৃত ছাত্রদের দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা কমিটিগুলা দ্রুত পুনর্গঠন করতে হবে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া ছাত্রদলে অন্য যে কোন বিএনপি নেতার হসত্মৰেপ বন্ধ করার দাবি করেন তারা।
অন্যদিকে ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক আমিরম্নল ইসলাম খান আলিমের বিরম্নদ্ধে সভাস্থলে একটি লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। লিফলেটে বলা হয়, এ দু'জনের নেতৃত্বে ছাত্রদল চললে সংগঠনের ভেতর বিদ্রোহ আরও বাড়বে। সরকারবিরোধী আন্দোলন জমবে না। কারণ, টুকুর সঙ্গে শিবিরের অাঁতাত আছে।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় মির্জা ফখরম্নল ইসলাম বলেন, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করার মধ্য দিয়ে দেশে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে। এ সংশোধনীর কথা বলে সরকার জিয়া আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরসহ সব জায়গা থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, বিরোধী দলের ওপর যে দমন- পীড়ন চলছে, নাম বদলের যে হাওয়া বইছে; সব মিলিয়ে এটা একটা কঠিন সময়। এর উত্তরণ ঘটাতে হলে ছাত্রদলকে সতর্কতার সঙ্গে সাহস নিয়ে এগুতে হবে।
অধিবেশনের এক পর্যায়ে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতারা। সভা সূত্র জানায়, এ সময় তারা নিজেদের বিভিন্ন ৰোভ তুলে ধরে সংগঠনটিকে দ্রম্নত ঢেলে সাজানোর দাবি জানান। পটুয়াখালী জেলা সভাপতি বিপস্নব বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, ছাত্রলীগের মতো ছাত্রদলেও যাতে শিবিরের অনুপ্রবেশ না ঘটে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জেলা সভাপতি হতে হলে বয়স ত্রিশের মধ্যে সীমবদ্ধ থাকতে হবে। কোন বিবাহিত দিয়ে কমিটি চলবে না। বিবাহিত থাকলেও অধ্যয়নরত হতে হবে।
ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি জগলুল হায়দার বিবাহিতদের ছাত্রদলের অভ্যনত্মরে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে কি-না সে ব্যাপারে কেন্দ্রের দিকনির্দেশনা কামনা করেন। তিনি কারও নির্দেশ বা হসত্মৰেপ নয়, কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা কমিটি করার দাবি জনান।
রাজবাড়ি জেলার সভাপতি শাহ মোঃ আলমগীর বলেন, আমরা শিবিরের রাজনীতি করি না। বিএনপি ছাত্রদলের রাজনীতি করি। যেভাবেই হোক জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে শিবিরকে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। কুষ্টিয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দীন বলেন, শিবির শিবিরের মতো, আমরা আমাদের মতো।
No comments