প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী- * বেকারত্বের হার ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে * ঢাকার যানজট নিরসনে দ্বিতল সড়ক, মেট্রো রেল * পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সেপ্টেম্বর নাগাদ শুরু * ঢাকা বাইপাস সড়ক পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে
২০২১ সালের মধ্যে দেশে বেকারত্ব ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। দেশে বর্তমানে বেকারত্বের হার ৪০ শতাংশ। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে যুবসমাজকে মুক্ত করতে এবং বেকার সমস্যা সমাধানে কর্মসংস্থান সৃষ্টিমূলক গুরম্নত্বপূর্ণ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত লিখিত প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ঢাকা নগরীর যানজট নিরসনে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে (দ্বিতল সড়ক) মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি নির্মাণের জন্য বিনিয়োগকারী নির্বাচনের জন্য প্রি-ইনভেস্টরস কোয়ালিফিকেশন নোটিস পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে।তিনি জানান, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নির্মিত ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা বাইপাস সড়কটি উদ্বোধনের এক বছরের মধ্যে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এটিও পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া চলতি বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ সোয়া ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরম্ন হবে।
প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানির সত্মর নিচে নেমে যাওয়ায় ভূমিধস ও ভূমিকম্প ইত্যাদি ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হবার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি জানান, ২০২১ সালের মধ্যে দেশে বেকারত্বের হার ৪০ শতাংশ কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। সরকার ২০১১ সালের মধ্যে সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সরকারী দলের নাছিমুল আলম চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ভূগর্ভস্থ পানির সত্মর ক্রমান্বয়ে নিচে নেমে যাওয়ায় ঢাকা শহরে ভূমিধস ও ভূমিকম্পনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, ভূগর্ভস্থ পনি প্রতিনিয়ত ব্যবহারের জন্য প্রতিবছর ঢাকা শহরের পানির সত্মর ২ থেকে ৩ মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে করে ভূ-তত্ত্বগত প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশ বিনষ্ট হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, বিষয়টি আমলে নিয়ে ঢাকা শহরের ভূ-উপরিভাগের পানি বৃদ্ধি ও পানির ব্যবহার বৃদ্ধির লৰ্যে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাসত্মবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সরকার ২০১১ সালের মধ্যে সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
সংসদ সদস্য হারম্ননুর রশিদের প্রশ্নোত্তরে শেখ হাসিনা জানান, বর্তমান সরকার দেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের লৰ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রায় সোয়া ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরম্ন করা সম্ভব হবে।
তিনি জানান, ৮শ' কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা বাইপাসসহ প্রায় ৬শ' কিলোমিটার সড়ক রৰণাবেৰণ ও পুনর্বাসন করা হয়েছে। ঢাকা শহরের যানজট লাঘবের উদ্দেশে জোট সরকারের আমলে নির্মিত ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা বাইপাস সড়কটি উদ্বোধনের এক বছরের মধ্যে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কটি পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। এ সড়কটি সহসাই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তিনি জানান, এ সড়কটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বৃহত্তর সিলেট জেলাসমূহ থেকে যানবাহন ঢাকা শহরে প্রবেশ না করে দেশের উত্তরাঞ্চল ও বৃহত্তর ময়মনসিংহে যাতায়াত করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের লৰ্যে পদ্মাসেতুর সঙ্গে রেল সংযোগ করে ঢাকা থেকে যশোর পর্যনত্ম রেলযোগাযোগ স্থাপন, বরিশাল পর্যনত্ম রেললাইন স্থাপন এবং কালুখালী হতে ভাটিয়াপাড়া হয়ে টুঙ্গিপাড়া পর্যনত্ম রেললাইন স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া যোগাযোগ মন্ত্রণালয় জাতীয় মহাসড়কগুলোকে বিওটি/বিওওটি/পিপিপি ভিত্তিতে ডিভাইডারসহ ৪ লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, বিআরটিসি কতর্ৃক এক শ'টি সিএনজি বাস সংগ্রহের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। ইডিসিএফ ঋণে ৩শ' সিএনজি বাস সংগ্রহের উদ্যোগ এবং ভারতের রাষ্ট্রীয় ঋণে ৪শ'টি সিএনজি একতলা বাস সংগ্রহের পদৰেপ নেয়া হয়েছে।
সরকারী দলের আলহাজ এ্যাডভোকেট রহমত আলীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, মহাজোট সরকার বেকারত্বের অভিশাপ থেকে যুবসমাজকে মুক্ত করতে এবং বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিমূলক গুরম্নত্বপূর্ণ কর্মসূচী নিয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে বেকারত্বের বর্তমান হার ৪০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। তিনি জানান, বৈদেশিক কর্মসংস্থান বাড়ানোর ব্যাপারেও পদৰেপ নেয়া হয়েছে। আরব আমিরাত, কুয়েত, সৌদি আরব, ওমান, কাতার, মালয়েশিয়া, রম্নমানিয়া, উজবেকিস্থান ও আজারবাইজান অধিকসংখ্যক শ্রমিক নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
No comments