২০১৩ খবরে যা থাকবে, যাঁরা থাকবেন
নতুন বছর ঘিরে সবকিছুতেই চলছে নতুন করে হিসাব-নিকাশ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিশ্লেষকেরাও বিশ্বের রাজনীতি, সম্ভাব্য ঘটনা ও নেতাদের নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
এখানে বিবিসির কয়েকজন স্বনামখ্যাত বিশেষজ্ঞের মতামত তুলে ধরা হলো। তাঁরা বর্ণনা করেছেন ২০১৩ সালের আন্তর্জাতিক রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের ভবিষ্যৎ।
লিজ ডুসেট (প্রধান আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি): এ বছর সিরিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ২০১২ সালে পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা জোরালোভাবে বলেছেন যে, তাঁরা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন জোরদার করবেন। এ বছরটি হবে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ-পরবর্তী যুগের সূচনা। তবে সিরিয়ায় ক্ষমতা বদলের ঘটনা বেশ রক্ত ঝরাবে বলে মনে হচ্ছে।
আসছে বসন্তে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনা যদি সফল না হয়, তাহলে কী হবে? সে ক্ষেত্রে সংঘাতের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। চলতি জানুয়ারির নির্বাচনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জয়ের সম্ভাবনা খুব জোরালো। ক্ষমতায় বহাল থাকলে নেতানিয়াহু ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাবেন।
আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এবার খুব চাপের মধ্যে থাকবেন। সামনে নির্বাচন রয়েছে। রয়েছে ২০১৪ সালে সে দেশ থেকে ন্যাটো সেনাদের বিদায় নেওয়ার বিষয়। এসব নিয়ে বেশ ঝক্কি যাবে তাঁর ওপর দিয়ে। ঝামেলা কমাতে তিনি কিছু তালেবান নেতার সঙ্গে গোপন আলোচনা চালাতে পারেন। কিছু তালেবান নেতা আবার তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতে না-ও পারেন।
মার্ক মারডেল (উত্তর আমেরিকাবিষয়ক সম্পাদক): খবরের ভাষায় বলতে গেলে বলব যে আরবদের বিপ্লব চলতেই থাকবে। তবে আমি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ভূমিকার বিষয়ে বেশি আগ্রহী। ওই অঞ্চলে তারা পরস্পরকে সহায়তা করবে, না সংঘাতে জড়াবে—সেদিকে নজর থাকবে আমার।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি জোরালোভাবে ফিরে আসবে আগের জায়গায়। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে পণ্য উৎপাদন খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিষয়টা মূলত ঘটবে জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতার কল্যাণে। নতুন যে সংকট স্বাভাবিক রূপ নিয়েছে, এর সঙ্গে আরও কিছু সংকটে জড়াবে ইউরোপ। এতে আরও পিছিয়ে যাবে তারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কি নিজের কর্মসূচিকে সাহসিকতার সঙ্গে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন? আমার মতে—হ্যাঁ। জন কেরি নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ায় তিনি এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইবেন। আর সাবেক রিপাবলিকান সিনেটর যদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন, তাহলে তাঁকে যাঁরা ইসরায়েলবিরোধী বিশ্বাসঘাতক বলে তিরস্কার করেন, তাঁদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ ঘটবে।
চীনে নেতৃত্বের পালাবদলে নতুন নেতা শি জিনপিংয়ের আগমনকে অনেকে স্বস্তিকর তাজা হাওয়া মনে করলেও বাস্তবে তা হবে না বলেই মনে করছি।
স্টেফানি ফ্ল্যান্ডার্স (অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক): এ বছর বাজার সিদ্ধান্ত নেবে যে গোটা ইউরোজোনকে উদ্ভূত সংকট থেকে একত্রে টেনে তুলতে হবে। কিন্তু এর পরও ইউরোপ অর্থনৈতিক সংকটের ক্ষেত্রে একটি বড় ঘটনা থেকে যাবে। এর মূলে রয়েছে স্পেন ও ইতালিতে বিদ্যমান সংকট এবং অর্থনৈতিক কৌশল নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও জার্মানির চ্যান্সেলরের মধ্যে টানাপোড়েন।
আমার নজর থাকবে মেক্সিকোর নতুন প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতোর ওপর। উদীয়মান অর্থনৈতিক সাফল্যকে ধরে রেখে তিনি কীভাবে পুঁজি খাটান, সেটাই আমার দেখার বিষয়। মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি যদি এগিয়ে যেতে পারেন, তাহলে অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটা হতে পারে মেক্সিকোর বছর।
জেমস রবিন্স (কূটনৈতিক প্রতিনিধি): সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ গুরুতর আকার ধারণ করবে। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও গোষ্ঠীগত সহিংসতা ছড়াবে। বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটবে।
পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সামর্থ্য অর্জনের পথে আরও এগিয়ে যাবে ইরান। ২০১৩ সালে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ ঘটবে না সে দেশে। তবে এ ব্যাপারে জোরালো তৎপরতা থাকবে। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রত্যাশা ক্রমে বিলীন হবে। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল পুনরায় নির্বাচিত হবেন।
ইতালিতে সিলভিও বেরলুসকোনি তোড়জোড় চালালেও ক্ষমতায় আবার ফিরে আসতে পারবেন না। মধ্য-বামপন্থী নেতা পিয়ের লুইগি বেরসানি পরবর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। ইউরোজোনের অন্যতম বড় দেশ ইতালিকে অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হলে সে দেশে পরিবর্তন আনতে হবে।
ররি সেলান-জোন্স (প্রযুক্তি প্রতিনিধি): ওয়েবসাইট পুরোপুরি হবে মোবাইল ফোনমুখী। মোবাইল ফোনসেটের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষ ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হবে। কম্পিউটারের চেয়ে দাপট হবে মোবাইল ফোনসেটের। বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয়ের ব্যাপক লড়াই হবে।
গুগলের অ্যানড্রয়েড ব্যবস্থা এবং অ্যাপলের আইফোন ও আইপ্যাডের প্রাধান্য বজায় থাকবে। তৃতীয় স্থানের জন্য লড়বে জানুয়ারিতে বাজারে আসা মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ এইটফোনস ও আরআইএমের ব্ল্যাকবেরি টেন।
শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
লিজ ডুসেট (প্রধান আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি): এ বছর সিরিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ২০১২ সালে পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা জোরালোভাবে বলেছেন যে, তাঁরা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন জোরদার করবেন। এ বছরটি হবে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ-পরবর্তী যুগের সূচনা। তবে সিরিয়ায় ক্ষমতা বদলের ঘটনা বেশ রক্ত ঝরাবে বলে মনে হচ্ছে।
আসছে বসন্তে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনা যদি সফল না হয়, তাহলে কী হবে? সে ক্ষেত্রে সংঘাতের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। চলতি জানুয়ারির নির্বাচনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জয়ের সম্ভাবনা খুব জোরালো। ক্ষমতায় বহাল থাকলে নেতানিয়াহু ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাবেন।
আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এবার খুব চাপের মধ্যে থাকবেন। সামনে নির্বাচন রয়েছে। রয়েছে ২০১৪ সালে সে দেশ থেকে ন্যাটো সেনাদের বিদায় নেওয়ার বিষয়। এসব নিয়ে বেশ ঝক্কি যাবে তাঁর ওপর দিয়ে। ঝামেলা কমাতে তিনি কিছু তালেবান নেতার সঙ্গে গোপন আলোচনা চালাতে পারেন। কিছু তালেবান নেতা আবার তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতে না-ও পারেন।
মার্ক মারডেল (উত্তর আমেরিকাবিষয়ক সম্পাদক): খবরের ভাষায় বলতে গেলে বলব যে আরবদের বিপ্লব চলতেই থাকবে। তবে আমি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ভূমিকার বিষয়ে বেশি আগ্রহী। ওই অঞ্চলে তারা পরস্পরকে সহায়তা করবে, না সংঘাতে জড়াবে—সেদিকে নজর থাকবে আমার।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি জোরালোভাবে ফিরে আসবে আগের জায়গায়। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে পণ্য উৎপাদন খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিষয়টা মূলত ঘটবে জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান স্বাধীনতার কল্যাণে। নতুন যে সংকট স্বাভাবিক রূপ নিয়েছে, এর সঙ্গে আরও কিছু সংকটে জড়াবে ইউরোপ। এতে আরও পিছিয়ে যাবে তারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কি নিজের কর্মসূচিকে সাহসিকতার সঙ্গে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন? আমার মতে—হ্যাঁ। জন কেরি নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ায় তিনি এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইবেন। আর সাবেক রিপাবলিকান সিনেটর যদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন, তাহলে তাঁকে যাঁরা ইসরায়েলবিরোধী বিশ্বাসঘাতক বলে তিরস্কার করেন, তাঁদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ ঘটবে।
চীনে নেতৃত্বের পালাবদলে নতুন নেতা শি জিনপিংয়ের আগমনকে অনেকে স্বস্তিকর তাজা হাওয়া মনে করলেও বাস্তবে তা হবে না বলেই মনে করছি।
স্টেফানি ফ্ল্যান্ডার্স (অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক): এ বছর বাজার সিদ্ধান্ত নেবে যে গোটা ইউরোজোনকে উদ্ভূত সংকট থেকে একত্রে টেনে তুলতে হবে। কিন্তু এর পরও ইউরোপ অর্থনৈতিক সংকটের ক্ষেত্রে একটি বড় ঘটনা থেকে যাবে। এর মূলে রয়েছে স্পেন ও ইতালিতে বিদ্যমান সংকট এবং অর্থনৈতিক কৌশল নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও জার্মানির চ্যান্সেলরের মধ্যে টানাপোড়েন।
আমার নজর থাকবে মেক্সিকোর নতুন প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতোর ওপর। উদীয়মান অর্থনৈতিক সাফল্যকে ধরে রেখে তিনি কীভাবে পুঁজি খাটান, সেটাই আমার দেখার বিষয়। মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি যদি এগিয়ে যেতে পারেন, তাহলে অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটা হতে পারে মেক্সিকোর বছর।
জেমস রবিন্স (কূটনৈতিক প্রতিনিধি): সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ গুরুতর আকার ধারণ করবে। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও গোষ্ঠীগত সহিংসতা ছড়াবে। বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটবে।
পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সামর্থ্য অর্জনের পথে আরও এগিয়ে যাবে ইরান। ২০১৩ সালে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ ঘটবে না সে দেশে। তবে এ ব্যাপারে জোরালো তৎপরতা থাকবে। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রত্যাশা ক্রমে বিলীন হবে। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল পুনরায় নির্বাচিত হবেন।
ইতালিতে সিলভিও বেরলুসকোনি তোড়জোড় চালালেও ক্ষমতায় আবার ফিরে আসতে পারবেন না। মধ্য-বামপন্থী নেতা পিয়ের লুইগি বেরসানি পরবর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। ইউরোজোনের অন্যতম বড় দেশ ইতালিকে অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হলে সে দেশে পরিবর্তন আনতে হবে।
ররি সেলান-জোন্স (প্রযুক্তি প্রতিনিধি): ওয়েবসাইট পুরোপুরি হবে মোবাইল ফোনমুখী। মোবাইল ফোনসেটের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষ ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হবে। কম্পিউটারের চেয়ে দাপট হবে মোবাইল ফোনসেটের। বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয়ের ব্যাপক লড়াই হবে।
গুগলের অ্যানড্রয়েড ব্যবস্থা এবং অ্যাপলের আইফোন ও আইপ্যাডের প্রাধান্য বজায় থাকবে। তৃতীয় স্থানের জন্য লড়বে জানুয়ারিতে বাজারে আসা মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ এইটফোনস ও আরআইএমের ব্ল্যাকবেরি টেন।
শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
No comments