বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন-কর্মকর্তা না থাকায় দক্ষিণের ওপর নির্ভরশীল উত্তর
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের যেকোনো আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে এ এলাকার বাসিন্দারা জন্মনিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু মৃত্যুসনদ নিতে হলে উত্তরের বাসিন্দাদের এখনো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে যেতে হচ্ছে।
কারণ, মৃত্যুসনদে স্বাক্ষর করতে হয় প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে। উত্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এখানে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আসেননি।
কারণ, মৃত্যুসনদে স্বাক্ষর করতে হয় প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে। উত্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এখানে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আসেননি।
প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা হিসেবে কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম প্রধান এবং প্রধান ভান্ডাররক্ষক হিসেবে মো. ফসি উল্লাহ ১৮ জানুয়ারি নিয়োগ পেয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁরা কাজে যোগ দেননি।
প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা। তাঁকে উত্তরে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণের তিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
উত্তরে এখনো নিয়োগ পাননি প্রধান নগর-পরিকল্পনাবিদ, সমাজসেবা ও সংস্কৃতি কর্মকর্তা, বাস ও ট্রাক টার্মিনাল এবং পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপক। ফলে এসব বিভাগের কাজও ঢাকা দক্ষিণে গিয়ে করতে হয়। উত্তর এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়নি।
তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম ও দক্ষিণের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, বিভক্তির জন্য করপোরেশন চালাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
গত বুধবার খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশন চালাতে ৮০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী লাগবে। গত দেড় মাসে তিনি ৮৬ জন কর্মী পেয়েছেন। তাঁদের অনেকে এখনো কাজে যোগ দেননি। তবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে আশা করে তিনি উত্তরের বাসিন্দাদের কাছে সময় চেয়েছেন।
বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, যে কাজগুলো আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে করা সম্ভব, সে কাজগুলো থেমে নেই। তবে অনেকেরই অভিযোগ, কাউন্সিলরদের কাছ থেকে সহজেই নাগরিকত্বের সনদ যেকোনো সময় পাওয়া যেত। সে সেবাটা দেওয়া যাচ্ছে না।
স্বাভাবিক কাজকর্মে সমস্যা: কয়েকটি কার্যালয় ঘুরে এবং একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে পৃথক কর্মকর্তা না থাকায় দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। যেমন: প্রধান ভান্ডাররক্ষক করপোরেশনের সব ধরনের দরপত্র আহ্বান করেন। কিন্তু উত্তরে এই পদে এখনো কর্মকর্তা না আসায় সব কাগজ পাঠাতে হয় দক্ষিণে। কাগজপত্রে কোনো ভুল থাকলে দূরত্বের কারণে সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করাও যায় না। ফলে এক দিনে হওয়ার কথা, এমন কাজ শেষ করতে একাধিক দিন লেগে যাচ্ছে।
বাকি যেসব বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা এখনো দায়িত্ব পাননি বা নেননি, সেসব বিভাগেও একই ধরনের সমস্যা হচ্ছে।
কোনো একক বিষয়ে দুই প্রশাসকের মতদ্বৈধতা হয়নি বলে দাবি করেছেন কর্মকর্তারা। কিন্তু ঢাকা দক্ষিণের টার্মিনাল ও পরিবহন শাখার শীর্ষ একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার পাঁচটি বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়। বিশেষ দিনগুলোতে, যেমন—হরতাল বা ধর্মীয় উৎসবের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হলে আদায়কৃত টাকার পরিমাণ কমে। অবিভক্ত সিটি করপোরেশনে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রধান কর কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি ঠিক করবে, কী পরিমাণ টাকা ওই বিশেষ দিনগুলোতে প্রতিটি টার্মিনাল থেকে আদায় হবে। সিটি করপোরেশন বিভক্তির পর ওই প্রস্তাবে দক্ষিণের প্রশাসক সায় দিলেও উত্তরের প্রশাসক এখনো কিছু জানাননি। এতে আদায়কারীরা সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে।
উত্তরের প্রশাসক খোরশেদ আলম এ বিষয়ে বলেন, ‘এটা কোনো জটিল সমস্যা নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কার্যালয়ে সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসার জায়গা হয় না। তাই বনানী কমিউনিটি সেন্টারে বর্ধিত কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার বেলা একটায় সেখানে গিয়ে তিনটি দরজাই তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তথ্যটি জানালে উত্তরের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এমনটি হওয়ার কথা নয়।
আগ্রহ নেই ঢাকার বাসিন্দাদের!: রাজধানীর তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মগবাজার ও উত্তরার বাসিন্দারা বলেছেন, তাঁরা সিটি করপোরেশন ভালো কোনো কাজ করবে—এমনটি আগেও আশা করেননি। বিভক্ত সিটি করপোরেশন নিয়েও তাঁদের কোনো আগ্রহ নেই। তাঁরা বলেন, ঢাকা শহরের মূল সড়কসহ অলিগলির ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামত হয়নি। এখনো ড্রেন উপচে ময়লা পানিতে রাস্তাঘাট সয়লাব হচ্ছে; মশার উপদ্রব চলছেই। কোনো ক্ষেত্রেই তো উন্নতি দেখা যায় না। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন দুই ভাগ কেন, চার ভাগ-আট ভাগ করলেও আমাদের ভাগ্যের কোনো উন্নতি হবে বলে মনে করি না।’
মাহফুজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, চার বছর আগে ঢাকায় আসার পর থেকে তিনি তেজগাঁওয়ের ট্রাকস্ট্যান্ডের সামনে কাদা-ময়লা জমে থাকতে দেখছেন। বিভক্তির পর এ অঞ্চল ঢাকা উত্তরের মধ্যে পড়েছে। অবস্থা আগের মতোই আছে।
তবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি মো. শাহ আলম সিরাজ দাবি করেন, সব অপকর্ম বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার করে গেছে। ভিআইপিদের যাতায়াতের সড়কগুলো চকচকে করে রাখা ছাড়া কোনো কাজ হয়নি।
সিটি করপোরেশন শ্রমিক লীগের একাধিক নেতা দাবি করেছেন, বিভক্তির কারণে ইতিবাচক পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে; ভবিষ্যতে আরও উন্নতি হবে।
জানা গেছে, এ ধরনের সংগঠনগুলো এখন ঢাকা উত্তরেও আলাদা কমিটি করার তোড়জোড় শুরু করেছে। এতে আরও অনেকে নেতা হওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা। তাঁকে উত্তরে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণের তিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
উত্তরে এখনো নিয়োগ পাননি প্রধান নগর-পরিকল্পনাবিদ, সমাজসেবা ও সংস্কৃতি কর্মকর্তা, বাস ও ট্রাক টার্মিনাল এবং পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপক। ফলে এসব বিভাগের কাজও ঢাকা দক্ষিণে গিয়ে করতে হয়। উত্তর এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়নি।
তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম ও দক্ষিণের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, বিভক্তির জন্য করপোরেশন চালাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
গত বুধবার খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশন চালাতে ৮০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী লাগবে। গত দেড় মাসে তিনি ৮৬ জন কর্মী পেয়েছেন। তাঁদের অনেকে এখনো কাজে যোগ দেননি। তবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে আশা করে তিনি উত্তরের বাসিন্দাদের কাছে সময় চেয়েছেন।
বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, যে কাজগুলো আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে করা সম্ভব, সে কাজগুলো থেমে নেই। তবে অনেকেরই অভিযোগ, কাউন্সিলরদের কাছ থেকে সহজেই নাগরিকত্বের সনদ যেকোনো সময় পাওয়া যেত। সে সেবাটা দেওয়া যাচ্ছে না।
স্বাভাবিক কাজকর্মে সমস্যা: কয়েকটি কার্যালয় ঘুরে এবং একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে পৃথক কর্মকর্তা না থাকায় দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। যেমন: প্রধান ভান্ডাররক্ষক করপোরেশনের সব ধরনের দরপত্র আহ্বান করেন। কিন্তু উত্তরে এই পদে এখনো কর্মকর্তা না আসায় সব কাগজ পাঠাতে হয় দক্ষিণে। কাগজপত্রে কোনো ভুল থাকলে দূরত্বের কারণে সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করাও যায় না। ফলে এক দিনে হওয়ার কথা, এমন কাজ শেষ করতে একাধিক দিন লেগে যাচ্ছে।
বাকি যেসব বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা এখনো দায়িত্ব পাননি বা নেননি, সেসব বিভাগেও একই ধরনের সমস্যা হচ্ছে।
কোনো একক বিষয়ে দুই প্রশাসকের মতদ্বৈধতা হয়নি বলে দাবি করেছেন কর্মকর্তারা। কিন্তু ঢাকা দক্ষিণের টার্মিনাল ও পরিবহন শাখার শীর্ষ একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার পাঁচটি বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়। বিশেষ দিনগুলোতে, যেমন—হরতাল বা ধর্মীয় উৎসবের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হলে আদায়কৃত টাকার পরিমাণ কমে। অবিভক্ত সিটি করপোরেশনে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রধান কর কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি ঠিক করবে, কী পরিমাণ টাকা ওই বিশেষ দিনগুলোতে প্রতিটি টার্মিনাল থেকে আদায় হবে। সিটি করপোরেশন বিভক্তির পর ওই প্রস্তাবে দক্ষিণের প্রশাসক সায় দিলেও উত্তরের প্রশাসক এখনো কিছু জানাননি। এতে আদায়কারীরা সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে।
উত্তরের প্রশাসক খোরশেদ আলম এ বিষয়ে বলেন, ‘এটা কোনো জটিল সমস্যা নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কার্যালয়ে সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসার জায়গা হয় না। তাই বনানী কমিউনিটি সেন্টারে বর্ধিত কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার বেলা একটায় সেখানে গিয়ে তিনটি দরজাই তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তথ্যটি জানালে উত্তরের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এমনটি হওয়ার কথা নয়।
আগ্রহ নেই ঢাকার বাসিন্দাদের!: রাজধানীর তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মগবাজার ও উত্তরার বাসিন্দারা বলেছেন, তাঁরা সিটি করপোরেশন ভালো কোনো কাজ করবে—এমনটি আগেও আশা করেননি। বিভক্ত সিটি করপোরেশন নিয়েও তাঁদের কোনো আগ্রহ নেই। তাঁরা বলেন, ঢাকা শহরের মূল সড়কসহ অলিগলির ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামত হয়নি। এখনো ড্রেন উপচে ময়লা পানিতে রাস্তাঘাট সয়লাব হচ্ছে; মশার উপদ্রব চলছেই। কোনো ক্ষেত্রেই তো উন্নতি দেখা যায় না। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন দুই ভাগ কেন, চার ভাগ-আট ভাগ করলেও আমাদের ভাগ্যের কোনো উন্নতি হবে বলে মনে করি না।’
মাহফুজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, চার বছর আগে ঢাকায় আসার পর থেকে তিনি তেজগাঁওয়ের ট্রাকস্ট্যান্ডের সামনে কাদা-ময়লা জমে থাকতে দেখছেন। বিভক্তির পর এ অঞ্চল ঢাকা উত্তরের মধ্যে পড়েছে। অবস্থা আগের মতোই আছে।
তবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি মো. শাহ আলম সিরাজ দাবি করেন, সব অপকর্ম বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার করে গেছে। ভিআইপিদের যাতায়াতের সড়কগুলো চকচকে করে রাখা ছাড়া কোনো কাজ হয়নি।
সিটি করপোরেশন শ্রমিক লীগের একাধিক নেতা দাবি করেছেন, বিভক্তির কারণে ইতিবাচক পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে; ভবিষ্যতে আরও উন্নতি হবে।
জানা গেছে, এ ধরনের সংগঠনগুলো এখন ঢাকা উত্তরেও আলাদা কমিটি করার তোড়জোড় শুরু করেছে। এতে আরও অনেকে নেতা হওয়ার সুযোগ পাবেন।
No comments