পদ্মা সেতু প্রকল্প ॥ নিজস্ব অর্থায়ন by হামিদ-উজ-জামান মামুন
পদ্মা সেতু নির্মাণে আপাতত সরকারী
অর্থায়ন, তারপর অন্য দাতাদের নিয়ে নতুন কনসোর্টিয়াম করার বিষয়ে কাজ করছে
সরকার। এ লক্ষ্যে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে আজ রবিবার ৪৩টি দাতা সংস্থা
প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে বসছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভুল বোঝাবুঝির অবসান এবং নতুন কনসোর্টিয়ামে অংশ নেয়ার
আহ্বান জানানো হতে পারে এ বৈঠকে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির পর এবার
অপর অর্থায়নকারী জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাও (জাইকা) সরে
দাঁড়িয়েছে। শনিবার সংস্থাটির বাংলাদেশ অফিসের এক বিবৃতিতে জাইকা তাদের এ
সিদ্ধান্তের কথা জানায়। তবে পদ্মা সেতুর প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্ত অব্যাহত রাখবে
বলে আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
বিবৃতিতে জাইকা বলেছে, বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের অনুরোধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জাইকাকে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এটা খুবই দুঃখজনক যে, বর্তমান অর্থনৈতিক কাঠামোর অধীনে তারা অগ্রসর হতে পারেনি এবং সঙ্কট সমাধানে আমাদের পদক্ষেপ কাজে আসেনি। যদিও গত জুনে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক ঋণ বাতিলের পর আমরা বাংলাদেশ সরকার ও অন্য সহ-অর্থায়নকারীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করেছি। একটি সহ-অর্থায়নকারী হিসেবে বর্তমান কাঠামোয় আমাদের প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। আমাদের নীতিতে নৈতিকতার সর্বোচ্চ মানের দরকার হয়।
অন্যদিকে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গেলেও অন্য কোন প্রকল্পে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির বাংলাদেশ অফিসের দায়িত্বশীল একটি সূত্র শনিবার জনকণ্ঠকে জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশে তাদের ৩৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে প্রায় ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ ছাড় হয়েছে। যেখানে গত অর্থবছরে পুরো সময়টাতে ছাড় হয়েছিল প্রায় ৪০ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থবছর শেষে তা প্রায় ৬০ কোটি মার্কিন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে।
পদ্মা সেতুতে অর্থায়নকারী ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) বাংলাদেশ অফিস সূত্র জানায়, তারা চুক্তি বাতিল নাও করতে পারে। বিশ্বব্যাংকের থাকা না থাকার সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।
এদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দুই মাসের মধ্যেই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছি। কেননা আগামী মাসে টেন্ডার আহ্বান করব এবং এর পর ৪৫ দিন সময় লাগবে। শনিবার চট্টগ্রামে কাস্টমস এ্যান্ড ভ্যাট আন্তঃক্লাব ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বাস্তবায়ন যেভাবেই হোক করব। নিজের টাকায় করা হবে, তা না পারলে কারও কাছ থেকে চেয়ে নেয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা (বিশ্বব্যাংক) দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে, সেটাতো তদন্ত করছি। তারা যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই করছি। তারপরও যখন হচ্ছে না, তখন সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয় আমাদের। ভাল কি মন্দ, সেটা ৫০ বছর পর বিচার হবে।
রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সকালে অনুষ্ঠিত হবে দাতাদের সঙ্গে স্থানীয় পরামর্শক গ্রুপের (এলসিজি) বৈঠক। এতে সভাপতিত্বে করবেন এলসিজির কো-চেয়ার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি নেলওয়াকার।
সূত্র জানায়, নিজস্ব অর্থায়নের ক্ষেত্রে এর আগে উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দের ব্যয় না হওয়া অর্থ পদ্মা সেতু প্রকল্পে খরচ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এ প্রসঙ্গে আইএমইডি সচিব মোজাম্মেল হক খান জনকণ্ঠকে জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে শুরু করতে পরিকল্পনা কমিশন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বা বাইরের উৎস থেকে অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো তৈরির মূল কাজ চলতি অর্থবছরেই শুরু করার একটি রূপরেখাও তৈরি করেছিল পরিকল্পনা কমিশন।
২০১২ সালের ৯ জুলাই মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে প্রণীত এ পরিকল্পনায় চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) ৪১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মোট বরাদ্দের ৫ শতাংশ অর্থ কেটে নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া অনুন্নয়ন ব্যয় কমানোর পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অর্থ কাটছাঁট করে তা পদ্মা সেতু প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী একে খন্দকারের সভাকক্ষে ২০১২ সালের ১৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যদের এক জরুরীসভা অনুষ্ঠিত হয়, ওই সভায় শুরুতে আইএমইডি সচিব মোজাম্মেল হক খান নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, আগামী চার বছরে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি অর্থবছরে প্রকল্পে প্রয়োজন তিন হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এ অর্থ যোগাতে এডিপিতে অব্যয়িত ৫ শতাংশ অর্থ পদ্মা সেতুতে বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে। তবে অগ্রাধিকার খাতগুলো কাটছাঁট থেকে বিরত রাখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কৃষি, বিদ্যুত ও যোগাযোগ খাত থেকে কোন অর্থ নেয়া যাবে না। বাকি ৪১ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে ৫ শতাংশ অর্থ কেটে নিলে মোট এক হাজার ৩৯ কোটি টাকা উঠবে। আর চলতি অর্থবছরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে সরকারী কোষাগার থেকে ৫৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা আছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে এ প্রকল্পে মোট এক হাজার ৬১১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে। বাকি অর্থ সরকারের অন্য কোন উৎস বা এডিবি, জাইকা ও আইডিবি থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। সভায় সর্বসম্মতভাবে এ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল।
নতুন কনসোর্টিয়াম তৈরির বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আরস্তু খান জনকণ্ঠকে জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অর্থায়নের বিষয়টি শেষ হয়ে যাওয়ার পর নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সহ-অর্থায়নকারী হিসেবে অন্য দাতাদের সঙ্গে করা চুক্তিও বাতিল হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আলাদা কনসোর্টিয়াম করতে চাইলে নতুন করে আগ্রহী দাতাদের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সেসব বিষয়েও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন থেকে সরে আসার বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. ফরাস উদ্দিন মনে করেন, বিশ্বব্যাংকের জন্য তো সরকার বসে থাকবে না। সরকারকে এর কাজ শুরু করতে হবে, কেননা এটি সরকারের অন্যতম নির্বাচনী ওয়াদা ছিল।
অন্যদিকে শনিবার এক অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেক সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হলে দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। আবার বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে করতে গেলে বেশি সুদ দিতে হবে। বিশ্বব্যাংক না থাকায় ভাল পরামর্শক ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাজ করানো কঠিন হবে।
বিবৃতিতে জাইকা বলেছে, বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের অনুরোধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জাইকাকে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এটা খুবই দুঃখজনক যে, বর্তমান অর্থনৈতিক কাঠামোর অধীনে তারা অগ্রসর হতে পারেনি এবং সঙ্কট সমাধানে আমাদের পদক্ষেপ কাজে আসেনি। যদিও গত জুনে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক ঋণ বাতিলের পর আমরা বাংলাদেশ সরকার ও অন্য সহ-অর্থায়নকারীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করেছি। একটি সহ-অর্থায়নকারী হিসেবে বর্তমান কাঠামোয় আমাদের প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। আমাদের নীতিতে নৈতিকতার সর্বোচ্চ মানের দরকার হয়।
অন্যদিকে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গেলেও অন্য কোন প্রকল্পে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির বাংলাদেশ অফিসের দায়িত্বশীল একটি সূত্র শনিবার জনকণ্ঠকে জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশে তাদের ৩৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে প্রায় ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ ছাড় হয়েছে। যেখানে গত অর্থবছরে পুরো সময়টাতে ছাড় হয়েছিল প্রায় ৪০ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থবছর শেষে তা প্রায় ৬০ কোটি মার্কিন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে।
পদ্মা সেতুতে অর্থায়নকারী ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) বাংলাদেশ অফিস সূত্র জানায়, তারা চুক্তি বাতিল নাও করতে পারে। বিশ্বব্যাংকের থাকা না থাকার সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।
এদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দুই মাসের মধ্যেই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছি। কেননা আগামী মাসে টেন্ডার আহ্বান করব এবং এর পর ৪৫ দিন সময় লাগবে। শনিবার চট্টগ্রামে কাস্টমস এ্যান্ড ভ্যাট আন্তঃক্লাব ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বাস্তবায়ন যেভাবেই হোক করব। নিজের টাকায় করা হবে, তা না পারলে কারও কাছ থেকে চেয়ে নেয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা (বিশ্বব্যাংক) দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে, সেটাতো তদন্ত করছি। তারা যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই করছি। তারপরও যখন হচ্ছে না, তখন সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয় আমাদের। ভাল কি মন্দ, সেটা ৫০ বছর পর বিচার হবে।
রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সকালে অনুষ্ঠিত হবে দাতাদের সঙ্গে স্থানীয় পরামর্শক গ্রুপের (এলসিজি) বৈঠক। এতে সভাপতিত্বে করবেন এলসিজির কো-চেয়ার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি নেলওয়াকার।
সূত্র জানায়, নিজস্ব অর্থায়নের ক্ষেত্রে এর আগে উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দের ব্যয় না হওয়া অর্থ পদ্মা সেতু প্রকল্পে খরচ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এ প্রসঙ্গে আইএমইডি সচিব মোজাম্মেল হক খান জনকণ্ঠকে জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে শুরু করতে পরিকল্পনা কমিশন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বা বাইরের উৎস থেকে অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো তৈরির মূল কাজ চলতি অর্থবছরেই শুরু করার একটি রূপরেখাও তৈরি করেছিল পরিকল্পনা কমিশন।
২০১২ সালের ৯ জুলাই মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে প্রণীত এ পরিকল্পনায় চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) ৪১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মোট বরাদ্দের ৫ শতাংশ অর্থ কেটে নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া অনুন্নয়ন ব্যয় কমানোর পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অর্থ কাটছাঁট করে তা পদ্মা সেতু প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী একে খন্দকারের সভাকক্ষে ২০১২ সালের ১৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যদের এক জরুরীসভা অনুষ্ঠিত হয়, ওই সভায় শুরুতে আইএমইডি সচিব মোজাম্মেল হক খান নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, আগামী চার বছরে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি অর্থবছরে প্রকল্পে প্রয়োজন তিন হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এ অর্থ যোগাতে এডিপিতে অব্যয়িত ৫ শতাংশ অর্থ পদ্মা সেতুতে বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে। তবে অগ্রাধিকার খাতগুলো কাটছাঁট থেকে বিরত রাখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কৃষি, বিদ্যুত ও যোগাযোগ খাত থেকে কোন অর্থ নেয়া যাবে না। বাকি ৪১ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে ৫ শতাংশ অর্থ কেটে নিলে মোট এক হাজার ৩৯ কোটি টাকা উঠবে। আর চলতি অর্থবছরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে সরকারী কোষাগার থেকে ৫৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা আছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে এ প্রকল্পে মোট এক হাজার ৬১১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে। বাকি অর্থ সরকারের অন্য কোন উৎস বা এডিবি, জাইকা ও আইডিবি থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। সভায় সর্বসম্মতভাবে এ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল।
নতুন কনসোর্টিয়াম তৈরির বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আরস্তু খান জনকণ্ঠকে জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অর্থায়নের বিষয়টি শেষ হয়ে যাওয়ার পর নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সহ-অর্থায়নকারী হিসেবে অন্য দাতাদের সঙ্গে করা চুক্তিও বাতিল হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আলাদা কনসোর্টিয়াম করতে চাইলে নতুন করে আগ্রহী দাতাদের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সেসব বিষয়েও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন থেকে সরে আসার বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. ফরাস উদ্দিন মনে করেন, বিশ্বব্যাংকের জন্য তো সরকার বসে থাকবে না। সরকারকে এর কাজ শুরু করতে হবে, কেননা এটি সরকারের অন্যতম নির্বাচনী ওয়াদা ছিল।
অন্যদিকে শনিবার এক অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেক সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হলে দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। আবার বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে করতে গেলে বেশি সুদ দিতে হবে। বিশ্বব্যাংক না থাকায় ভাল পরামর্শক ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাজ করানো কঠিন হবে।
No comments