সম্পাদক সমীপে

বাংলাদেশে ২০টি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল চলছে, যার মধ্যে একটিও বাংলা সিনেমা চ্যানেল নেই, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত দুঃখজনক। এই ডিজিটালযুগে আমাদের দেশে বাংলা সিনেমা নিয়ে সরকার তেমন কোন উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিচ্ছে না।
যদিও এফডিসি কর্তৃপক্ষ সিনেমা চ্যানেল নির্মাণে প্রাথমিক যে পরিকল্পনা সরকারের কাছে জমা দিয়েছে তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার বিধায় আজও সেই উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। ঢাকা ফিল্ম সিটি নির্মাণের জন্য ৩৩ বছর যাবত জায়গা নির্ধারণ করে রেখেছে যা আজও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তাই বাংলা সিনেমা চানেলটি বেসরকারীভাবে অনুমোদন দেয়া একান্ত দরকার, বিধায় আমরা সেই উদ্যোগ নিয়ে সিনেমা চ্যানেল অনুমোদনের আবেদন জমা দেই। জমা দেয়ার ৭০ দিন অতিবাহিত হওয়ার আবেদনটি গৃহীত হয়নি। যেখানে ২০টি টিভি চ্যানেল অনুমোদন হয়েছে পুরনো নিয়মে। সেখানে কেবল ১টি সিনেমা চ্যানেল অনুমোদনের জন্য নতুন নিয়ম দেয়া হচ্ছে কেন? আমাদের প্রস্তাবিত বাংলা সিনেমা চ্যানেলটি পুরনো নীতি মোতাবেক গৃহীত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিকভাবে অনুরোধ করা হলো। কেবলমাত্র ওই চলচ্চিত্র শিল্পই অলাভজনক অবস্থায় ধ্বংসের দারপ্রাস্তে দাঁড়িয়ে আছে বিধায় চলচ্চিত্র শিল্প উন্নয়নে আমরা এই ব্যতিক্রম চ্যানেলের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। দর্শকদের আগ্রহ বাড়াতে আমরা এই প্রচারণা কার্যক্রম চালাতে সক্ষম হতে পারি সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশে সেই পুরনো ১২৬০টি সিনেমা হল থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫৫০টি সিনেমা হল। তন্মধ্যে ৪০/৪৫টি সিনেমা হল ডিজিটাল করা হয়েছে। বর্তমানে অনেক ভাল ভাল চলচ্চিত্র নির্মাতা, শিল্পী ও দর্শক বাড়ছে কিন্তু সিনেমা হল ও সিনেমার উন্নতি হচ্ছে না তেমন। এর একমাত্র কারণ স্যাটেলাইট চ্যানেল ও সরকার? বাংলাদেশে চলচ্চিত্র শিল্পকে উন্নত করতে এবং দর্শকদের আবার নতুন সিনেমা হলে গিয়ে দেখাতে হলে এর জন্য যথাযথ প্রচারণা ও পরিবেশ দরকার। তার জন্য চলচ্চিত্র বাজেট বৃদ্ধিকরণ জরুরী।
উল্লেখ্য, সবাই এখন স্যাটেলাইট চ্যানেলনির্ভর দর্শক, হোম থিয়েটারে পরিবারের সকল সদস্য বিনোদনের জন্য টেলিভিশনকেই প্রাধান্য দেয়। বিধায় বিনোদকেন্দ্রিক বাংলা সিনেমা চ্যানেল যদি শুরু করা যায় তাহলে চলচ্চিত্রের প্রচারণা, প্রতিযোগিতামূলক চিন্তাচেতানা শুরু হলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পের দ্রুত উন্নয়ন ও পরিবর্তন করা সম্ভব। যেমন ৯০ দশক হতে স্যাটেলাইট ডিণ চ্যানেল বাংলাদেশে আগমন করার পর সব শ্রেণীর দর্শক জনপ্রিয়তা পায়। বিদেশী চ্যানেলগুলোর মতো বর্তমানে আমাদের দেশেও একটি বাংলা সিনেমা চ্যানেল দর্শকদের জন্য প্রয়োজন।
মোঃ জুলফিকার আলী প্রিন্স
তাজমহল রোড,মোহাম্মদপুর, ঢাকা।


বিলুপ্তির পথে বেতশিল্প

সময়ের বিবর্তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে প্লাস্টিকের রকমারি আসবাবের কাছে হেরে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বেতের ফার্নিচার শিল্প। এতে বিলুপ্তির কাছাকাছি এসে গেছে শৌখিনতার প্রতীক এই বেতশিল্প। কাঁচামালের সঙ্কট আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ঐতিহ্যবাহী বেতের ফার্নিচার হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ সরকারী উদ্যোগে গল্লা চাষ বৃদ্ধি ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ সুবিধা পেলে বেতের অনিন্দ্যসুন্দর হরেক রকম আসবাবপত্র বিদেশে রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হতো। পাশাপাশি বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতো। বেতের শৌখিন আসবাব থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার সম্ভাবনা থাকলেও কাঁচামাল সঙ্কট ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এই শিল্পের দুর্দিন যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকে অন্য পেশায় চলে গেছেন। এক সময় বেতের নানা রকম শৌখিন আসবাব অভিজাত পরিবারের বসার ঘরে বা বাংলোয় শোভা পেত। কিন্তু আজকাল তা আর চোখে পড়ে না। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারী সুযোগ-সুবিধাসহ শর্তে ব্যাংক ঋণ, সরকারী উদ্যোগে গল্লা বেতের চাষ ও বিদেশে রফতানির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
ছালামত প্রধান, মহাখালী নিউডিওএইচএস, ঢাকা।
মহাজনী কারবার

বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা বিশ্বের দরবারে অন্যতম আলোচিত বিষয়। এই সফল ব্যবস্থাকে রোল মডেল হিসেবে নিয়ে যখন বিশ্বের অনেক দেশ তাদের সমাজে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা চালু করেছে, তখন আমাদের দেশে সুদের মহাজনি কারবারের রমরমা ব্যবস্থা সবাইকে অবাক করেছে। বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে সুদখোর মহাজনেরা সুদের কারবার খুলে দিনকে রাত আর রাতকে দিন করছেন। তারা ১০০ টাকায় সাত দিনে ১০ টাকা সুদ নিচ্ছে। এতে বার্ষিক সুদের হার দাঁড়ায় ৫২১ টাকা। উল্লেখ্য, সুদের এই টাকা মহাজনদের নিজেদের পকেটের নয়। বেসরকারী সংস্থা থেকে টাকা তুলে তারা হতদরিদ্রদের মাঝে সেগুলো বিতরণ করছে। এভাবে দরিদ্র ব্যক্তিদের কাছ থেকে মহাজনেরা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ ঘটনার পর ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার দুর্বল দিক প্রতিফলিত হয়। এখনও এদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একাংশ ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তার ওপর গরিবদের জন্য বরাদ্দ ঋণ নিয়ে মহাজনেরা সুদের কারবার খুলে বসেছে। মনে হচ্ছে এখনও অনেক হতদরিদ্র ক্ষুদ্রঋণ সুবিধার বাইরে রয়ে গেছে। তাই রাজশাহীতে সুদের মহাজনি কারবারের বিষয়টি ভালভাবে খতিয়ে দেখা দরকার। যারা এসব করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

জাহেদুর রহমান ইকবাল, তাহেরপুর পৌরসভা, বাগমারা, রাজশাহী।

No comments

Powered by Blogger.