সংসদ অধিবেশন পহেলা মার্চ পর্যন্ত মুলতবি
টানা পাঁচ কার্যদিবসে উপস্থিত থাকলেও বৃহস্পতিবার সংসদে ছিলে না বিরোধী দল। বিরোধী দলবিহীন অধিবেশনে তাই ছিল না কোন উত্তাপ, পাল্টাপাল্টি প্রাণবন্ত বিতর্ক।
নিষপ্রাণ সংসদে দিনের কার্যসূচী শেষ করে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ।রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মহাজোট নেতারা বলেছেন, লিখিত বক্তব্য পাঠ করলেই স্বাধীনতার ঘোষক হওয়া যায় না। ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচারি। বিরোধী দল বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচারের রায় কার্যকরের পর খুবই মর্মাহত। নীড় হারা পাখির মতো বিরোধী দল আজ ছটফট করছে।
বিকেল সোয়া তিনটায় স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরম্ন হয়। রাজনৈতিক কর্মসূচী থাকায় বৃহস্পতিবার সংসদে যোগ দেয়নি বিরোধী দল। বেসরকারী দিবসে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপন, বেসরকারী সদস্যদের সিদ্ধানত্ম-প্রসত্মাব নিষ্পত্তি শেষে শুরম্ন হয় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা। আলোচনায় অংশ নেন সরকারী দলের ভূমি প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোসত্মাফিজুর রহমান ফিজার, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও আকরাম হোসেন চৌধুরী। আলোচনা শেষে স্পীকার সংসদের অধিবেশন আগামী পহেলা মার্চ বিকেল ৩টা পর্যনত্ম মুলতবি ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, বিরোধী দল সংসদে যোগ দেয়ায় অধিবেশনের মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধানত্ম নেন স্পীকার। কার্যোপদেষ্টা কমিটিতে ১৮ ফেব্রম্নয়ারি পর্যনত্ম চলতি চতুর্থ অধিবেশন চলার কথা ছিল। আগামী শনিবার স্পীকার একটি আনত্মর্জাতিক সেমিনারে যোগ দিতে কাল শনিবার নিউজিল্যান্ড যাচ্ছেন। এ জন্য অধিবেশনে লম্বা বিরতি দিয়ে আগামী পহেলা মার্চ ফের শুরম্ন হবে। মধ্য মার্চ পর্যনত্ম এ অধিবেশন চলবে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ভূমি প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোসত্মাফিজুর রহমান ফিজার বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেন, জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর সমান করার চেষ্টা করছেন কোন্ বিবেক থেকে? যিনি অন্য সেনানায়কের অধীনে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেছেন, তিনি কীভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন? এ সাধারণ জিনিসটাও কী বোঝেন না। তিনি বলেন, দৈনন্দিন যারা খবর পাঠ করেন, তাঁরা কী ওই খবরের বিষয়বস্তু তৈরি করেন? বঙ্গবন্ধু হত্যাকা- সম্পর্কে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার হওয়ায় বিরোধী দল নীড় হারা পাখির মতো ছটফট করছে। তারা কখনও ভাবতেও পারেনি খুনীদের বিচার হবে, রায়ও কার্যকর হবে। বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মহানায়ক ও স্বাধীনতার স্থপতির সঙ্গে জিয়াকে সমান করার চেষ্টা সত্যিই হাস্যকর।
সরকারী দলের মোয়াজ্জেম হোসেন রতন স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যাচারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, লিখিত বক্তব্যে পাঠ করলেই স্বাধীনতার ঘোষক হওয়া যায় না। ১৯৭১ সালের ২ ও ৩ মার্চ জিয়াউর রহমানের পাকিসত্মানের পৰে সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসে ব্যসত্ম ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতারা চাপের মুখে জিয়া মুক্তিযুদ্ধের পৰে একাত্মতা প্রকাশ করলেও ২২ মার্চ সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে আবারও সোয়াত জাহাজে যান। ২৫ মার্চ বাঙালী হত্যা শুরম্ন হলে জিয়া পালিয়ে চলে যান। ২৬ মার্চ এমএ হান্নান চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর পৰে সর্বপ্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তাই জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে বিরোধী দলের মিথ্যাচার জাতি আর পছন্দ করছে না।
No comments