সাতক্ষীরা আদালতে ১৬ আসামির ৰমা প্রার্থনা- বিডিআরের মামলা
সাতক্ষীরা বিডিআর বিদ্রোহ বিচারের তৃতীয় দিনে বুধবার সাতক্ষীরার নীলডুমুর ব্যাটালিয়নের অভিযুক্ত ৬০ বিডিআর সদস্যের মধ্যে ১৬ জন তাদের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এসব বিডিআর সদস্য প্রথমে নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেও এখন তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছেন।
সাতক্ষীরার নীলডুমুর ৭ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের ৬০ বিডিআর সদস্যের বিরম্নদ্ধে গত সোমবার চার্জ গঠন করা হলে তারা প্রথম দফায় সকলে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। বুধবার আদালতের তৃতীয় কার্যদিবসে বিডিআরের যেসব সদস্য তাদের আগের জবানবন্দী প্রত্যাহার করে অপরাধ স্বীকার এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন তারা হলেন ল্যান্স নায়েক মিনহাজ উদ্দিন, সিপাহী জিয়াউর রহমান, সিপাহী জায়েদুল ইসলাম, নায়েক সুবেদার আকমল হোসেন, হাবিলদার বাতেন ভূঁইয়া, হাবিলদার সিগন্যাল তাহমিদ, হাবিলদার গোলাম মাসুদ, হাবিলদার আবু খাজা, হাবিলদার জাহাঙ্গীর হোসেন, হাবিলদার আবুল কাশেম, নায়েক মকবুল হোসেন, নায়েক আব্দুর রহিম সরদার, সিপাহী আনোয়ার হোসেন, সিপাহী নূর হোসেন, সিপাহী ইউসুফ নূর ও সিপাহী গোলাম মোসত্মফা সগির। আদালতে লিখিতভাবে তারা বলেন, তারা বিডিআর আইনে অভিযুক্ত হয়ে বিচারাধীন রয়েছেন। গত ১৮ জানুয়ারি চার্জ গঠনের পর তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তারা বলেন, প্রকৃতপক্ষে তারা এ বিদ্রোহে জড়িত ছিলেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণে তারা বুঝতে পারছেন যে ওই অপরাধের জন্য তাদের ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। লিখিতভাবে তারা আরও বলেন, তাদেরকে ক্ষমা করা হলে কৃতজ্ঞ থাকবেন। অপরাধ স্বীকার করার সময় অনেক বিডিআর সদস্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।এদিকে ৭ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সে সময়কার অধিনায়ক লে. কর্নেল আমির মোঃ আরিফ ২৫ ও ২৬ ফেব্রম্নয়ারির বিদ্রোহ ঘটনাবলীর লোমহর্ষক বিবরণ তুলে ধরে বলেন, তিনিসহ দু'তিন বিডিআর সদস্য এবং বেসামরিক লোকজনের সহায়তায় ব্যাটালিয়ন ছেড়ে আত্মরক্ষা করেন। আদালতে একই ব্যাটালিয়নের মেডিক্যাল অফিসার মেজর রিয়াজুল ইসলাম খান তাঁর সাক্ষ্য প্রদান করেন। বিপজ্জনক অবস্থা থেকে আত্মরক্ষা করতে পারায় তিনি মনে করেন এটি তার দ্বিতীয় জীবন।
বুধবার সকাল পৌনে ১০টায় আদালতের কার্যক্রম শুরম্ন হলে তিন সাক্ষীকে অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যরা বিভিন্ন প্রশ্নে জেরা করেন। বুধবার পর্যনত্ম ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এরা হলেন লে. কর্নেল আরিফ, মেজর রিয়াজুল, নায়েক শহীদুল, হাবিলদার দেলোয়ার, হাবিলদার মশিউর, ল্যান্স নায়েক নিয়ামুল, নায়েক মহব্বত, সিপাহী আতিকুর এবং স্কুলশিক্ষক বশির আহমেদ। আদালতে অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যদের আইনী সহায়তা দেন মেজর শামিম রেজা।
বুধবার আদালতে বিচারক প্যানেলের প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম। প্যানেলের অপর সদস্যরা হলেন লে. কর্নেল গাজী মোঃ খালিদ, মেজর লুৎফুল কবির এবং এ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতিনিধি ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ্যাড. খসরম্নজ্জামান। এছাড়া পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাড. মোশাররফ হোসেন কাজল এবং এ্যাড. শাহীদুর রহমান ছাড়াও আদালতে বিডিআরের খুলনা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল খন্দকার ওবায়দুল আহসান, ৪১ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল একেএম ইকবাল আজিম, প্রসিকিউটর লে. কর্নেল বদরম্নল আলম, মামলার বাদী সুবেদার মেজর এমএম সরোয়ার জাহান এবং পর্যবেক্ষক হিসেবে সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় আবার বিচার কাজ শুরম্ন হবে।
No comments